সন্ধ্যা প্রদীপ'এর ব্লগ
অপেক্ষা
আকাশ জুড়ে ভাড়ি কালো মেঘ,
অপেক্ষা এক পশলা স্বস্তির বৃষ্টির
আর নিশির অপেক্ষা ;
সেই গভীর চোখ দুটো দেখার।
আরো একবার ; আর একটিবার,
হাতে হাত রাখার অপেক্ষা
পাতার পরে পাতা জুড়ে তাকে নিয়ে লেখা
চিঠি পড়ার অপেক্ষা।
অপেক্ষা রাস্তা পারাপারে চোখে চোখ রাখার
এক ঝুম বৃষ্টিতে মুখোমুখি দাঁড়াবার।
অপেক্ষা আর একটিবার, আর একটি বার নিজের মতো করে বাঁচার।
বোধ
আজকের সকাল টা নিশির জন্য খুব একটা সুখের ছিলনা। তারপরও সবকিছুকে পাশে ফেলে ভ্রু যুগলের মাঝে দু'খানা ভাজ নিয়ে ছুটতে ছুটতে বের হওয়া। গন্তব্য চাকুরিস্থল।
দশ মিনিট দেরী মানে আধাঘন্টা জ্যাম।
ধানমন্ডি সাতাশ এর গলি থেকে রিক্সায় উঠে বসল নিশি।কোনদিকে তকাবার সুযোগ হয়নি ওর। উঠে বসেই রিক্সাওয়ালাকে তাড়া দিল...'ভাই একটু জলদি চালান সময় নাই।' রিক্সাওয়ালা নিশির মুখের দিকে তাকিয়ে একটু হাসি ছুড়ে দিল। হাসির কারন বোধগম্য নয়।মেজাজ টা একটু খারাপ হল বৈকি। নিশি নিজ ভাবনায় ডুব দিল।
ভাবনার জাল থেকে বের হয়ে নিশি খেয়াল করল কোথায় যেন একটু গোলমেলে লাগছে। ভালো ভাবে তাকাতে নিশি চমকে উঠল, রিক্সাওয়ালার ছুড়ে দেয়া হাসির মানে স্পষ্ট হল।
একটি মাত্র পা যার সম্বল সে কি পারবে নিশির গতির সাথে তাল মেলাতে।একটা অসস্তি নিশি কে মূহুর্তে গ্রাস করল।একটা বোধ নিশি কে নাড়া দিয়ে গেল।
যদি বলো
যদি বলো, তুমি চাঁদ হবে......
আমি প্রতিরাত বিনীদ্র কাটাবো।
তোমার জোৎস্না আলোয় স্নান করার জন্য।
তুমি যদি বলো; তুমি স্নিগ্ধ বিকেলের সেই শান্ত বাতাস,
আমি দু'হাত বাড়িয়ে নিজেকে ছড়িয়ে দেবো..
সেই শান্ত বাতাসে গা ভাসাবো।
যদি বলো- তুমি ঐ রং ছড়ানো গোধুলি..
আমি সন্ধ্যার শীতল চাদর হয়ে
তোমায় জড়াবো।
তুমি যদি এসে আমার সামনে দাড়াও; বলো-
আমি তোমার ছায়া হব...
আমি সত্যি বলছি ....।
তোমার মাঝে বিলীন হব।।
কষ্ট
স্বপ্ন ভাঙার শব্দ কি পাওয়া যায়।? পাওয়া কি যায় মন ভাঙার আওয়াজ?
নিজের বিবেক এর কাছে হার মানি আর চিৎকার করে বলি...বাবা-মা আর কিছু পারে নাই..এত ভদ্রতা..সভ্যতার বীজ কেন রোপন করে দিয়েছে ভেতরে।
কেন মিথ্যা, অন্যায় আচরণ এর সামনে মাথা নুইয়ে দেই শান্তি রক্ষায়?..আর নিজের ভেতরের নিজের সাথে লড়াই করি..।শিক্ষিত সমাজে শিক্ষিত মানুষদের কি জঘন্য রূপ..অবাক হই, বিস্মিত হই....
আর দোষারোপ করে যাই বাবা মা এর দেয়া শিক্ষা কে..
বদলে যাওয়া জীবনের মানে
হঠাৎ বুঝতে পারলাম বদলে যাচ্ছে আমার জীবনের মানে। আমার সামনে সুন্দর সাজানো ডালা ....আমাকে ঘিরে এত এত আয়োজন....। একটা চাপা ব্যাথা অনুভব করছি... .। একটা চৌকাঠ এ দাঁড়ানো.. আমি .।যার একপ্রান্তে আমার ২৪ বছরের নিজের ইচ্ছে অনুযায়ি পার করে আসা জীবন..... অন্য প্রান্তে নতুন জীবনের হাতছানি।
কাগজে একটা দস্তখত... আমার সকল দায়িত্ব অর্পণ হল আমার জীবন সঙ্গীর হাতে..
নতুন একটা পরিচয় হল আমার...একই সাথে পেয়ে গেলাম কতশত সম্পর্ক.....। একটা বিষয় আজ আমি বেশ বুঝতে পারলাম.. মানুষের জীবনে আনন্দ আর কষ্টের সময় গুলো পালা করে আসে....অথচ বিয়ে..প্রতিটা মেয়ের জীবনের এমন একটা দিন..যেখানে ছেড়ে যাবার কষ্ট আর নতুন জীবনের আনন্দ পাশপাশি তালে তাল মিলিয়ে হেটে চলে....
সুখ সান্তনা দেয় কষ্টকে.... আশ্বাস দেয়.. সুন্দর জীবনের..।
আমি জীবনের নতুন এক সিড়িতে পা রেখেছি..........সব কিছু মঙ্গল আর শুভ হবে এই আশায়।
বুনে চলা ধুসর ভাবনার জাল
ক্রমাগত বুনে চলেছি ভাবনার জাল
রঙের স্পর্ষে হয়ে ওঠেনি এখনো রঙিন,
ধুসরতার মাঝে বসবাস যার।
মুহুর্ত থেকে মুহুর্তে গড়ে উঠছে
নতুন এক ঘর।
বাড়ছে পরিধি ক্রমাগত বুনে চলা
ধুসর ভাবনার জাল।
পরে আছে ধুলো জমা ক্যানভাস
তুলির স্পর্ষ পায়না বহুকাল,
সাদা পাতার ওপর চলেনা
কোন বর্তমান এর আকিঁবুকি।
নিস্তব্ধ জীবন,
মুহুর্ত থেকে মুহুর্তে কেবল বেড়ে চলছে
এক একটি ঘর,
ক্রমাগত বাড়ছে পরিধি
ধুসর ভাবনার জাল।
[ শব্দগুলো জোড়া লাগতে চায়না..। ..]
যদি সতি্য না হয়ে গল্প হতো।
স্কুল এর টানা বারান্দায় দাড়িয়ে জমিয়ে আড্ডা চলছে।স্কুল এর সিনিয়র মোস্ট; আমাদের দাপট টাই যেন আলাদা । টিফিন আওয়ার এর শেষ ঘন্টা পরবে মিনিট পাঁচেকের মধে্য। জানালা দিয়ে ক্লাস রুম এ দেখতে পাচ্ছি মৌরিকে; ধরে বেধেও আজ ওকে বাহিরে আনতে পারলামনা। সেই তখন থেকে পুরো ঘর জুড়ে পায়চারী করছে আর রফিক স্যার এর দেয়া গদ্য আর পদ্য এর ব্যাখ্যা গুলো তখন থেকে আওরে যাচ্ছে।
আজ পড়া দিতে না পাড়লে জোড়া স্কেল এর মার ভাগ্যে জুটবে। কি যে করে না মৌরিটা; পড়া গুলো একদম মুখস্থ করে বসে থেকেও রফিক স্যার সামনে এসে দাড়ালে সে মুখে কুলুপ এটেঁ রাখে। আমি পাশে বসে ওকে অবাক হয়ে দেখি। এরপর যথারীতি শাস্তি।মাঝে মাঝে কি যে হয়না ওর।
এলোমেলো
কোন প্রত্যাশা থেকে নয়....কোন অপ্রাপ্তি নয়....অথবা প্রাপ্তির পরে তৄপ্তির কোন অনুভূতিও না। কোন কিছুই না তবু কিছু তো একটা.........যা অনবরত খঁুচিয়ে যাচ্ছে।
ছাদের দক্ষিণ কোন যা অলিখিতভাবেই িলখেপড়ে নেয়া হয়েছে নিশির। ছাদের ঐ কোনাটা যেনও তারই। এখানে বসেই চলে যত রাজে্যর ভাবনা-চিন্তা। দক্ষিণ হাওয়ার উন্মাদনায় িনজেকে ছেড়ে দিয়ে চলতে থাকে অনবড়ত হিসেব-নিকেষ।
যার ফলাফল বরাবর এর মতই আসে শূন্য। এলোমেলো বাতাসের মত ভাবনা গুলো ও ছন্নছাড়া হতে থাকে। সুতোর মালায় যখন ভাবনা গুলো বাধা পড়েনা তখন অজান্তেই নিশির ভ্রূ যুগলের মাঝে ভাঁজখানা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
নিল জলের দুর্দশা......
সাগড় পাড় মােনই একটা শান্ত পরিবেশ যেখানে সমুদ্রের গর্জন ছাড়া আর কোন কোলাহল থাকবেনা। দীর্ঘ ৮ বছর বাদে পতেঙ্গা সিভিল বীচ এ গিয়েছিলাম গত ২ দিন আগে। সেখানে সাগড় পাড় দেখে মুগ্ধ হবার পরিবর্তে বিরক্তিতে আমার কপাল জুড়ে ভাঁজ ফুটে উঠল। সমুদ্রের গর্জন ছািপয়ে মানুষের গর্জন শুধু শুনতে পাচ্ছিলাম।
মানুষের ভীরে সাগড় এর মাতাল করা হাওয়া আমা অবধি পৌছাচ্ছিলনা। মনটা ভার হল আবর্জনা ফেলতে দেখে। খানিক পরেই অতিষ্ট প্রাণ নিয়ে সেখান থেকে এসে একটু সাগড় এর হাওয়া প্রাণ ভরে লাগাব বলে নেভাল বীচ এর পথে রওনা করলাম।
রবিবার ছিল বিধায় মানুষের আনাগোনা ছিল কম। আপন মনে কিছুটা সময় নিজের সাথে কাটিয়ে বাড়ি ফিরে আসার পথে মনটা ভার হয়ে উঠছিল দারূচিনি দ্বীপ (সেইন্ট মার্টিন) এর নিলাভ সৌন্দর্যের কথা ভেবে।
আমরা যদি আজ সচেতন না হই তবে হয়ত সাগড়ের ওই নিলাভ সৌন্দর্য টিকবেনা বেশিদিন।।
অনুভবে ।
ফেব্র্রুয়ারি মাসের পর আজ আমার প্রানের জায়গাতে গিয়েছিলাম সকালবেলা । প্রতি শুক্রবার কোন না কাজ ,কোন না কোন ঝামেলা এসে ভর করে বসে। িনয়মিত হতে চাইলেও কেন যেন নিয়মিত ভাবেই আমি অনিয়মিত। আমার বিরূদ্ধে তাই গাদাগাদা অভিযোগ,,,,ইচ্ছার অভাব,মনের টানের ঘাটতি,,আরও কত কি।
কিন্তু কি করে বোঝাই কবিতার অ আ ক খ না বুঝলেও,মন্এ মুগ্ধ করে ফেলার মত আবৄত্তি করতে না জানলেও আমার ভালোলাগা যে কতটা আছে ঐ জায়গাটার প্রতি.।।।
আজ বেশ নস্টালজিক হয়ে গিেয়ছিলাম। বেশ কিছু নতুন মুখ দেখলাম।ভালো লাগল।
কিন্তু পুরানো কিছু প্রিয় মুখ চোখের সামনে ভেসে উঠে বারবার অসহ্য যন্এনা দিয়ে খোঁচাতে লাগল। টেনে নিয়ে যেতে লাগল বৄন্দ আবৄত্তির সময় করা রিহাের্সল,আড্ডা, ফুর্তি,,,কি যে প্রানের মেলা।
কিছু কথা
ভাবছিলাম কি লিখব,।শব্দ গুলো এলমেলো হয়ে ছড়িয়ে আছে। সাজাতে গিয়ে আমি হিমশীম ।
আমার দিনলিপি লেখার অভ্যাস আছে।তবে তা খুবই সোজাসাপ্টা ভাষায়। কোন কাবি্য ঢঙে নয় । বছরের পর বছর জমে ওঠা দিনলিপি গুলো দেখলে বেশ পুলকিত বোধ করি।
আমি শখ করে আমার জমে ওঠা দিনলিপি গুলোর নাম দিয়েছি স্মৄতির ঝাঁপি।যখন মনের মাঝে কালো মেঘ গুলো বড় বেশী আনাগোনা করে তখন স্মৄতির ঝাঁপি খুলে বসি।
ফেলে আসা মূহর্ত গুলো যেন জীবন্ত হয়ে ভেসে ওঠে। অলক্ষে কখনও ঠোঁটের কোনে ফুটে ওঠে এক চিলতে হাসি তো কখন অজান্তে চোখের কোন ভরে গড়িয়ে পড়ে দু'ফোটা জল।
হিসেব গড়মিল
ক্ষনিকের না চাওয়া ভুলে এখন বিনীদ্র রাত কাটে অপেক্ষার যন্এনা সাথে নিয়ে। নিশ্চুপ রাতে পাওয়া না পাওয়ার হিসাব মেলাতে গড়মিল হয় বড় । পাওয়ার চেয়ে না পাওয়ার ঝুরি ভরে যায়।
বাড়তে থাকে হতাশা আর অবসাদ। গ্রাস করে জীবনের রঙ্গিন মূহূর্ত কে। ঠেলে ফেলে দেয় অনাকাঙ্খিত অন্ধকারে। জলের গভীরে ডুবতে থাকা মানুষের মতো আমি খুঁজতে থাকি একটু আশ্রয়।
ভুলে যাই বারবার বড় নিষ্ঠুর এই দুনিয়া। প্রতি মূহূর্ত বাঁচার জন্য লড়তে হয়। লড়তে হয় নিজের সাথে।