আমাদের ছাতা অনুভুতিতে আঘাত!
ছাতা আমাদের ঐতিহ্য। আবহমান কাল ধরেই আমরা দেখে আসছি একজন সৎ ব্যাক্তি তার ছাতাখানি বোগল দাবা করে দরিদ্র জীবনের বিভিন্ন চড়াই উতরাই পার হচ্ছেন, দুয়ারে দুয়ারে উষ্ঠা লাত্থে খাচ্ছেন। বাংলা সিনেমার গরীব বাবা সবসময় বাড়ি থেকে বের হবার সময় ছাতা হাতে নিতে ভুলেননা। বাংলা সিনেমার সৎ কেরানীর চরিত্রটিকে যখন কোন প্রাইভেটকার বা ট্রাক এসে নির্দয় ভাবে চাপা দেয় তখন সবার আগে ছাতাটিকে দেখা যায় আকাশ পানে ছুড়ে দিতে।
আবার ছাতা হচ্ছে বাঙালীর সন্মানের একছত্র প্রতিক। বিভিন্ন জমিদার বাড়ির সামনে দিয়ে ছাতা মাথায় দিয়ে হাটা ছিল চরম বেয়াদবী ও অন্যায়। এই ক্ষেত্রে নায়কের বাবা যখন জমিদার বাড়ির সামনে দিয়ে বেখেয়ালে ছাতা মাথায় দিয়ে হেটে যান তখন তাকে পেয়াদা দিয়ে ধরে এনে চাবুকের আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত করা হয়। বেয়াদব কত্তোবড় সাহস, ছাতা মাথায় দিয়ে জমিদারের ইজ্জত মারিস।
যে সৎ শিক্ষকটি সারা জীবন শিক্ষার আলো বিলি করে এসে বুড়ো বয়সে অবসর নেন, তার ফেয়ার ওয়েল/ বিদায় অনুষ্ঠানে তাকে সন্মাননা দেয়া হয়। প্রতি ক্লাস থেকে চাঁদা তুলে তাকে একটি করে ছাতা উপহার দেয়া হয়, ক্লাস সিক্সের থেকে একটি ছাতা, ক্লাস সেভেন থেকে একটি ছাতা ও একটি কলম, ক্লাস এইট থেকে একটি ছাতা ও একটি দেয়াল ঘড়ি, ক্লাস নাইন থেকে একটি ছাতা ও একটি পাইলট কলম ও দোয়াত, ক্লাস টেন থেকে একটি ছাতা ও একটি সিকো ফাইফ হাত ঘড়ি। তাছাড়া সহকারী শিক্ষিকরা মিলে দেন একটি ছাতা ও একটি পিতলের কলসী। এইভাবে আবহমানকাল ধরেই আমাদের ত্যাগী বিদ্যান শিক্ষকদের সন্মানীত করা হয়েছে ছাতা দিয়ে।
কিন্তু আজ বাংলার আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা, বাংলার ছাতা ঐতিহ্যকে খর্ব করতে উদ্যত বিদেশী শক্তি। তারা তাদের গোপন মিশনে নেমে আমাদের ছাতা অনুভুতিতে বারবার আঘাত করে চলছে।
১)
এই ছবির নারী দেখুন কিভাবে ছাতাকে ব্যাঙ্গ করে পোষাক বানিয়ে আমাদের ছাতা অনুভুতিতে আঘাত করেছেন। এইভাবে কাপড়ের সাথে ছাতা সেলাই করে পানির উপড় দাঁড়িয়ে এই নারী আসলে কি বুঝাতে চাচ্ছে?
২)
এই বেতমিজ নারী দেখুন কি ভাবে আমাদের সন্মানকে ব্যাঙ্গ করেছেন। উপ্রেদিয়া সদরঘাট আর নিচে দিয়া চার চারটা ছাতা বেভার করে উনি আসলে আমাদের ছাতানুভুতিতে আঘাত করেছেন, উনি বুঝাইতে চাইছেন আমাদের ছাতা দিয়া সন্মান রক্ষার প্রয়াস নিছকই ফালতু তাই চার ছাতা বেভার করেও বাঙ্গালী সন্মান রক্ষা করতে পারবে না। আমরা আগামী বাদ জুম্মা বাইতুল মোকারমের উত্তর গেইটে এই নারীর কুশপুত্তুলিকা দাহন করতে চাই।
৩)
এই বেহায়া নারী এইভাবে ছাতা উঠায়া ধইরা আসলে কি বুঝাতে চাইছে তা আমরা জানি। ছাতার তলায়ই অন্ধকার এই কথা নতুন করে শিখানোর কিছু নাই ফাজিল মাইয়া লোক। তবে তুমি যে ইচ্ছে করেই আমাদের ছাতা অনুভুতিতে আঘাত দেয়ার জন্য এমন পোষাক পরিধান করেছ তা আমরা বুঝেছি, তোমার জন্য কঠিন সমালোচনা অপেক্ষা করতেছে। ফেসবুক দিয়া সমালোচনা কইরা তোমারে এক্কেরে ফাডাইয়া লামু।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এই পোষ্টের সাথে সাম্প্রতিক ব্লাউজ অনুভুতিতে আঘাত করে শাড়ির উপ্রে ব্লাউজ পড়া মডেলের ইস্যুর সাথে কোন প্রকার যোগ সাজোস নাই। কেউ কোন মিল খুঁজে পেলে উহা নিছকই কাকতাল বলে গন্য হবে।
পোস্টে মজা করে লেখা কথাগুলো পড়ে হাসিও পাচ্ছে আবার ২ দিন ধরে ফেসবুকে এক ব্লাউজ নিয়ে ত্যানা প্যাচানো দেখে রাগে গা জ্বলছে। ব্লাউজ উপড়ে পড়ে মান উজ্জত শেষ করে ফেলছে। আসলে নারীকে আপনারা মনে হয় নারীকে বোরখা পড়া দেখলেই ভালো বলবেন কিনা তাও জানিনা। চেনাজানা অনেক পুরুষের কাছে নারীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য শুনে তব্দা খেয়ে এসব সমালোচনা দেখেও নতুন করে কিছু মনে হয় না।
জ্যোতিফা, আমাদের মত পুরুষরা আসলে জগতের সকল বালামুসিবতের জন্য নারীকে দুষার জন্য মুখায়া থাকি।
যদিও এই পোষ্টের সাথে ব্লাউজানুভুতিতে আঘাতপ্রাপ্তদের কোন মিল নাই তবু বলি। একজন পুরুষ যদি পেন্টের উপ্রে জাইঙ্গা পইড়া সুপার ম্যান হইতারে তয় নারীর বেলায় কেন সেটা দৃষ্টি কটু? এইটা আসলেই বুঝি না!
মন্তব্য করুন