কথারশিল্পী
যখন ছোট ছিলাম “আমার বই”, "চয়নিকা" আর “সবুজ পাতা” য় লেখা সব গল্প কবিতা গোগ্রাসে গিলতাম, আর ভাবতাম মানুষের মাথায় না জানি কত বুদ্ধি থাকলে, কত জ্ঞানী হলে লোকে এত সুন্দর করে লিখেন। কিছুদিন আগে আচমকা আবিষ্কার করলাম শুধু লিখে না, সুন্দর করে কথা বলেও কথাশিল্পী হয় লোকে। মুখচোরা হওয়ায় সব সময় যেকোন আলোচনা, ঝগড়ার পর মনে মনে ফুঁসিয়া মরতাম ঠিক সময়ে ঠিক কথাটি বলে দিতে না পারার মনবেদনায়; মনের মধ্যে কথাগুলো ঘুরঘুর করতো আর হাতপা নিশপিশ করতো, মনে হতো যেয়ে মনের ঝাল মিটিয়ে আসি। আমার এক সহকর্মীকে একদিন একটা কাজের কথা জিজ্ঞেষ করলাম, উনি জবাব দেয়ার কিছুক্ষনের মধ্যে সেটা ওনার উপস্থিতিতে ভুল প্রমাণিত হলে ওনাকে জিজ্ঞেষ করলাম কি ব্যাপার। উনি বললেন, আপনার প্রশ্নের সাথে জিজ্ঞেষ করা উচিৎ ছিল যে আমি বিষয়টা জেনে বলছি নাকি না জেনে। সবসময়ের মত এই কথাশিল্পীর কথায় মুগ্ধ আমি, আর একবার তার কথার মুন্সিয়ানার কাছে হার মানলাম।।
সহকর্মীর এরকম বাজিমাত করা কথা শুনে শুনে ভেবেছিলাম যাক নিজের মস্তিস্ক প্রসূত না হোক এতদিন যা শিখেছি তাই প্রয়োগ করব, কিন্তু বিভিন্ন ঘটনায় এত দিনের সমস্ত জানা অজানা সবগুলিয়ে গেল। ২/১ দিন আগে একটি বিয়েতে গিয়েছিলাম, বিয়ের স্টেজে বর ও বউ বসা, বিয়ের অনুষঠানের শেষপর্যায়ে বরকে বলা হল বউকে মিষ্টি খাওয়াতে, অবাক হয়ে দেখলাম বউ বলছে এই মিষ্টিটা খাবনা প্লেটের অন্য মিষ্টি দেখিয়ে বরকে বলছে ঐ মিষ্টিটা দাও। তার কিছুক্ষন পর বর যখন কন্যের মাকে সালাম করছেন কন্যেটি কল্লোলিনী তরঙ্গের মত, দুদ্দাড় করে বিয়ের মঞ্চ থেকে নেমে এসে শাশুড়িকে সালাম করার বাসনা প্রকাশ করলেন; নিজেকে হঠাৎ এই আবিষ্কারে মনে হল কলম্বাস, কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন আর আমি আবিষ্কার করলাম আমার বয়স কত হল। আর দুঃখ হল রবি ঠাকুরের “মধ্যবর্তিনী” গল্পের হরদাসুন্দরীর মত, আমার সেই দিন গুলি কি হেলায় হারাইল, কই, কবে, কোথায়? হরদাসুন্দরী তার সতীনের সাথে স্বামীর ভাব দেখে নিজের জীবনের সেই দিনগুলো কোথায় হারাইল তাই মন খারাপ করে ভেবেছিল। উপলব্ধি করলাম যে, আমি ১৯২১ সনে জন্মে ছিলাম, এই ২০১১ সনে আমি অচল।
এই ২০১১-র জেনারেশনরা কি ভাবে জানতে চান?
আমার ছেলেকে (তখন তার বয়স ছিল চার বছর) আমার ছোট বোনের বিয়ের সময় আমার আম্মু জিেজ্ঞষ করলেন,
দিদুঃ ভাইয়া তুমি বিয়ে করতে চাও?
নাতিঃ চাই (ভিষণ আগ্রহী হয়ে), করা যাবে?
দিদুঃ যাবে।।
নাতিঃ আমার বিয়েতে লাইট হবে দিদু? গান হবে? সবাই নাচ করবে? গাড়ি সাজাবে, পোলাও হবে?
তারপর ব্রহ্মাস্ত্র, দিদু আমি কি স্পাইডার ম্যানের মতো বউ কে চুমু খেতে পারব?
মেঘ ও খুব বিয়ে করতে ব্যাকুল তবে চুমু খাওয়ার জন্যে না, শাড়ি, টিকলি, মেহেদী, বোরহানী আর পার্লারে যেয়ে "খোখা" বাঁধার জন্যে। এত্তো মেয়েলি আমার মেয়েটা
লেখা খুবই উপাদেয় হয়েছে
খোখা বাঁধা বুড়ি একটা।
সবাইকে একটা করে বিবাহ করিয়ে দেয়া হোক
লেখা চমৎকার হইছে
অনেক টুটুল ভাই।
ইশ! চয়নিকা বইয়ের কথা মনে করিয়ে দিলেন। খুব মজা করে পড়তাম।
দিনে দিনে মানুষগণ বড়ই ইস্মার্ট হতিছে।
লেখা পড়ে বেশ লাগলো।
আমারও অনেক ভালো লাগতো, আমার গুলো পড়া শেষ হলে বড় ভাইবোনদের গুলোও পড়ে ফেলতা।। পড়ার জন্য
আপা আমার আম্মু বলেন - যার হয় না ৯ এ তার হয় না ৯০ এ।
লেখা ব্যাপক হইছে। আপনার ছেলের জন্য
জটিল...
দারুণ একটা লেখা ...
বিয়া করতে মঞ্চায়
লেখা ভাল পাইছি
ভাই কোন ইচছা বাকি রাখা উচিত না। বিয়ে করে ফেলেন।
আমাদেরকেও পোলাপানদের নতুন নতুন পাকনামির গলপ উপহার দেন।
আপনের পোলা তো ব্যাপক ইস্মাট।
লেখা উমদা হইছে।
জয়িতা আপনাকে পড়ার জন্য ধন্যবাদ, পোলার নিজের ও তাই ধারনা, ইদনিং আবার মাসল হচ্ছে কিনা দিন রাত আয়নার সামনে পরীক্ষা চলছে
বউ দিয়া কি করবে তা নিয়া আমার ছেলের একটা ঐতিহাসিক ডায়লগ আছে।
জানতে হলে আমার অন্য একটা পোস্ট পড়তে হবে।
মাসুম ভাই আমি আপনার লেখা সব সময় পড়ি, আপনার ছেলে তো যা দেখে তাই বলেছে।
নতুন পোষ্ট কই?
আপু এইটা একটা খবর বটে, আমার পোষ্ট এর জন্য কেউ অপেক্ষা করে আছে! WOW! ইয়ে এই লেখাটা ১ম পেইজ থেকে গেলে তারপর
আফামণি অফিসে গেছেন? কাজ কাম নাই নাকি? এবি তে তশরিফ রাখছেন যখন একটা পোস্ট দিয়াই ফালান।
পোস্টে কি লিখুম সেটও কন? আপনার জন্যি ই বাইচা আছি
মন্তব্য করুন