১৪ ফেব্রুয়ারি : যে ইতিহাস আমরা ভুলতে বসেছি
১৪ই ফেব্রুয়ারী ১৯৮৩:
কলা ভবন থেকে শিক্ষা ভবন অভিমুখে ছাত্রদের মিছিল... স্লোগানে মিছিলে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয়... সামরিক শাষন মানিনা... মজিদ খানের শিক্ষানীতি বাতিল কর... করতে হবে... হঠাৎ করেই গুলিতে প্রকম্পিত চারিদিক... মিছিলে পুলিশে ট্রাক তুলে দিয়ে শুরু হয় বর্বরতার এক ভয়াল নিদর্শন। স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদের হিংস্র পুলিশ বাহিনির উন্মত্ততায় একে এক লুটিয়ে পরে জাফর, জয়নাল, দিপালী সাহা। আহতদের আহাজারীত হাসপাতাল গুলোতে তৈরী হয় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের... কলাভবনেও গুলি টিয়ার সেলের আঘাতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নৃশংস হামলা। গ্রেফতার হাজার হাজার ছাত্র-জনতা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা.. কারফিউ জারি। ১৫ই ফেব্রুয়ারী সারাদেশে হরতাল। ওইদিন পুলিশের গুলতে জবি ছাত্র আইয়ুব ও কাঞ্চন। বছর দুই পর এই মধ্য ফেব্রুয়ারীতেই হত্যা করা হয় রাউফুন বসুনিয়াকে...
১৪ ফেব্রুয়ারী, স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে পালিত হয় স্বৈারাচার প্রতিরোধ দিবস। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ, সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখল করেন স্বৈরাচার এরশাদ সরকার। সামরিক আইন জারি করে মৌলিক অধিকারের ভূ-লুণ্ঠন এবং বিরোধী দলীয় কর্মী ধরপাকড়, নির্যাতনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এরশাদ আমল। প্রথম থেকেই তিনি ইসলাম ধর্মকে অত্যাচারের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। এরশাদের শাসনামলে ২১ ফেব্রুয়ারীর বিভিন্ন অনুষ্ঠান ইসলাম পরিপণ্থী বলে ঘোষনা করা হয় এবং আল্পনা অংকনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন তিনি!
সেই সময় ছাত্র আন্দোলনের পালে হাওয়া লাগায় তৎকালীন আমলে প্রণিত “মজিদ খান শিক্ষানীতি”। সাম্প্রদায়িকতা, শিক্ষা বাণিজ্যিকীকরণ আর শিক্ষা সংকোচন-কে ভিত্তি ধরে প্রণিত এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব ও শিক্ষার ব্যয়ভার যারা ৫০% বহন করতে পারবে তাদের রেজাল্ট খারাপ হলেও উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয়ার কথা বলা হয়- এই শিক্ষানীতিতে। মোদ্দাকথা, শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তরিত করার হীন প্রয়াস থাকে এই শিক্ষানীতিতে!
গণবিরোধী এই শিক্ষানীতির প্রতিবাদে, তিলে তিলে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলন ফুঁসে ওঠে ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী। মধুর ক্যান্টিনে সকল ছাত্র সংগঠনের সম্মিলিত রূপ, সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ -এর উত্থান ঘটে। একই ধারার অবৈতনিক বৈষম্যহীন সেক্যুলার শিক্ষানীতির দাবিতে ‘৮৩ এর ১৪ ফেব্রুয়ারী বিশাল মিছিলে শামিল হয় শত শত ছাত্র। মিছিলের অগ্রভাগে ছিল ছাত্রীবৃন্দ। হাইকোর্টের গেইট এবং কার্জন হল সংলগ্ন এলাকায় কাঁটাতারের সামনে এসে ছাত্রীরা বসে পড়ে; নেতৃবৃন্দ কাঁটাতারের উপর দাঁড়িয়ে জানাতে থাকে বিক্ষোভ। অতর্কিত পুলিশী হামলার শিকার হয় ছাত্র জনতা। শিক্ষার্থীদের উপর গরম পানি ছিঁটিয়ে গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। নিহত হয় জয়নাল, দিপালীসহ অনেকে। শিশু একাডেমীর অনুষ্ঠানে যোগদান দিতে গিয়ে নিহত হয় শিশু দিপালী, তাঁর লাশ গুম করে ফেলে পুলিশ। জয়নালের গুলিবিদ্ধ দেহকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে তবে শান্ত হয় পশুরা। ১৫ তারিখ আন্দোলন আরো ছড়িয়ে পড়লে নির্যাতনের পাল্লা বাড়তে থাকে। চট্টগ্রামে প্রতিবাদী কাঞ্চন নিহত হয় ১৫ তারিখ! শত শত ছাত্রকে নির্বিচারে গ্রেফতার করা হয়, অত্যাচার চালানো হয়। তবু সেই মহান আন্দোলনের ফল আসে, পতন ঘটে স্বৈরাচার সরকারের।
আন্দোলনের ডাক...
দেয়ালে দেয়াল প্রতিবাদ... ছাত্রদের আন্দোলন শুধু শিক্ষানীতি নয় সামরিকতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রূপ নেয়।
১৯৮২ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্ররা মিছিল বের করলে সামরিক স্বৈরাচারের পুলিশ বাহিনী নির্বিচারে ছাত্রদের লাঠিচার্জ করে। স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনের সূত্রপাত।
১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সচিবালয় অভিমূখে মিছিলের পূর্বে কলাভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সমাবেশ।
১৪ ফেব্রুয়ারির মিছিলে বাধা দিতে প্রস্তুত পুলিশ।
১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সচিবালয় অভিমূখে মিছিলের পূর্বে কলাভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সমাবেশ।
১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সচিবালয় অভিমূখে মিছিল এগিয়ে চলছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সচিবালয় অভিমূখে মিছিল এগিয়ে চলছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সচিবালয় অভিমূখে মিছিল এগিয়ে চলছে।
ছাত্রদের মিছিলে বাধা দিতে পুলিশের রাস্তায় ব্যারিকেড। ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩।
স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একুশে ফেব্রুয়ারির বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাতিল করে এবং আলপনাসহ বাঙালী ঐতিহ্যের অনেক কিছুকে ইসলামবিরোধী বলে ঘোষণা করে। শিক্ষা সঙ্কোচন ও সাম্প্রদায়িকীকরণসহ জনস্বার্থ এবং শিক্ষাবিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে থাকে। স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে প্রথম থেকে আন্দোলন শুরু হলেও সামরিক আইন ভঙ্গ করে বিভিন্ন দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশাল মিছিল বের হয়। ছাত্রদের দাবি ছিল- "ছাত্র-স্বার্থবিরোধী শিক্ষা সঙ্কোচনের মজিদ খানের শিক্ষানীতি বাতিল, সামরিক শাসন প্রত্যাহার, সাম্প্রদায়িক শিক্ষা বাতিল করে সেক্যুলার শিক্ষা চালু কর"।
১৪ই ফেব্রুয়ারী ১৯৯৩
বাংলাদেশে ভালবাসা দিবস শুরু হয় সাপ্তাহিক যায়যায় দিন পত্রিকার শফিক রেহমানের মাধ্যমে। ধীরে ধীরে আমাদের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরে যায়। নতুন প্রজন্ম ভুলতে বসে ইতিহাসের কালো অধ্যায়। শুরু হয় দেশে ভ্যালেন্টাইন দিবস পালন উৎসব। জাফর, জয়নাল, দিপালীর জন্য কারো মনে কোন ভালোবাসা থাকে না। মাঝে মাঝে কেউ কেউ হয়তো স্মৃতী হাতরায়... ওই পর্যন্তই। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গনতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য যারা প্রান দিলো তারা হারিয়ে যায় ভালোবাসা দিবসের কাছে।
সেই সময়ে স্মৃতি ছোঁয়া একটি কবিতা। শিমুল মুস্তাফার কন্ঠে আবৃত্তিতে
http://www.esnips.com/doc/8b4ead39-f78a-42d5-beee-4e401d25d953/Tomake-Mone-Pore
মধুর কেন্টিনে যাই
অরুনের চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে
বসু, তোমাকে মনে পড়ে যায়।
তোমার সেই সদা হাসিমাখা ফুল্ল ঠোঁট,
উজ্জ্বল চোখের দ্যুতি
সারাক্ষন চোখে চোখে ভাসে
বুঝি এখনই সংগ্রাম পরিষদের মিছিল শুরু করার তাগিদ দিবে তুমি
ওই তো, ওই তো সবার আগে তুমি মিছিলে
কি সুঠাম তোমার এগিয়ে যাবার ভঙ্গিমা
প্রতিটি পা ফেলছো কি দৃঢ় প্রত্যয়ে
কি উচ্চকিত তোমার কন্ঠের শ্লোগান
যেন আকাশ ফেটে পড়বে নিনাদে
হাত ঊঠছে হাত নামছে
মাথা ঝুকছে ঘাড় দুলছে চুল উড়ছে বাতাসে
ওই তো, ওই তো আমাদের ঐক্যের পতাকা হাতে এগিয়ে যাচ্ছ তুমি
মধুর কেন্টিনে যাই
নিত্য নতুন প্রোগ্রাম, মিছিল সভা বটতলা
অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে দুর্জয় শপথ
সামরিক জান্তার ছোবল থেকে
শিক্ষাজীবন, শিক্ষাঙ্গনের স্বায়ত্বশাসন রক্ষার অঙ্গীকারে
ডাক দেই দেশবাসীকে
তোমারি মত নিরাপত্বাহীনতায়
প্রতিটি ছাত্রের দুর্বিষহ জিম্মীজীবন এখনো এ ক্যাম্পাসে
হলে গেটে গেটে পড়ে থাকে ভংকর বিস্ফোরন্মোখ তাজা বোমা
প্রতিদিন চর দখলের মত হল দখলের হিংস্র মহড়া
গুলি ও বোমা ফাটার শব্দ
এখনো আমাদের প্রতিদিনের জীবনের অংশ
এ অস্ত্রের উৎস কোথায়?
মধুর কেন্টিনে যাই
প্রতিদিন আমাদের জীবন হাতের মুঠোয়
প্রতিদিন হামলা রুখতে হয়
বসু, আজ সেই প্রতিরোধের সারিতে তুমি নেই
আজ বড়ই অভাব অনুভব করছি তোমার
শিক্ষাভবন অভিমুখে সামরিক শাসন ভাঙ্গার প্রথম মিছিলে তুমি ছিলে
রক্তাক্ত ১৪ই ফেব্রুয়ারীর কাফেলায় তুমি ছিলে
৪ঠা আগস্ট সশস্ত্র দুবৃত্তদের কবল থেকে
আমাদের পবিত্র মাটি রক্ষা করার সম্মুখ সমরে তুমি ছিলে
এমন কোন ধর্মঘট, হরতাল, ঘেরাও, মিছিল আন্দোলন নেই যে তুমি ছিলে না
সেই নৃশংস ঘাতক রাতেও
তুমি অস্ত্রধারীদের দূর্গের দিকে অবিচল যাত্রা অব্যাহত রেখেছিলে
ঘাতক বুলেট ভেদ করে গেছে তোমাকে
কিন্তু তুমি পিছু হটনি
তুমি বীর, তুমি সাহসী যোদ্ধা, তুমি সময়ের শ্রেষ্ঠ সন্তান
যুগে যুগে সংগ্রামীদের অফুরান প্রেরণা
মধুর কেন্টিনে যাই
অরুনের চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে
বসু, তোমাকে মনে পড়ে যায়।
কাউন্টারের সামনে কতদিন
তোমার সঙ্গে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চা খেয়েছি
কতদিন তুমি আমাকে চায়ের পয়সা দিতে দাওনি
কতদিন চায়ের সঙ্গে একটি সিঙ্গারা বা কেকের আবদার করেছ
কতদিন তোমার সঙ্গে খোশগল্প হাসিঠাট্টায় মেতে উঠেছি
বসু, আজ সব কথা মনে পড়ে যায়।
রিপার বিয়েতে তুমি বলেছিলে
অ্যাকশনে আপনার আর আগে থাকার দরকার নেই,
আমরা তো আছি
বসু, তুমি রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে সে কথা প্রমান করে গেলে
বসু, তুমি আমার শ্রেষ্ঠ ভালোবাসার একটি রক্তকরবী বৃক্ষ
মধুর কেন্টিনে যাই
বসু, তোমাকে মনে পড়ে যায়।
তোমার মৃত্যুর সেই নৃশংস ঘাতক রাত্রিতে
আমি ছিলাম ঢাকার বাইরে
তোমার গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত লাশ আমি দেখিনি
তোমার মৃত্যুর খবর শুনে
বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিলো মন
তবু সেই রাত্রেই আড়াইশত মাইল দূর থেকে
সঙ্গে সঙ্গে রওয়ানা দিয়েছিলাম
তোমার হত্যার প্রতিশোধ নিতে
তোমার খুনীদের রক্তে হাত রাঙ্গাতে
বসু, আমরা বহুবার তোমার হত্যার প্রতিশোধ নেবার শপথ গ্রহন করেছি
অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে, শহীদ মিনারে, বটতলায়, বায়তুল মোকারমে,
সারাদেশ তোমার হত্যার বদলা চায়
কিন্তু এখনো তোমার খুনীরা প্রকাশ্যে সগর্বে ঘুরে বেড়ায়
এখনো তোমার ঘাতকেরা ক্ষমতার কালো কেদারায় বসে
রাইফেল তাক করে আছে আমাদের প্রতি
বসু, আমাদের শিক্ষানীতি এখনো বদলায়নি
সামরিক খাতে ব্যয় শিক্ষাখাতের চেয়ে আরো বেড়েছে
নতুন নতুন ক্যান্টনমেন্ট তৈরীর পরিকল্পনা হলেও
সংস্কারের অভাবে জগন্নাথ হলের জীর্ন ছাদ ধ্বসে
তোমার অনেক বন্ধু মারা গেছে
এখনো হলে হলে মেধাভিত্তিক সিট বন্টন চালু হয়নি
বসু, তুমি এসবের পরিবর্তন চেয়ে জীবন দিয়েছ
কিন্তু আমরা এখন তোমার একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করতে পারিনি
বসু, আমরা তোমার কাঙ্খিত লড়াই চুড়ান্ত করতে পারিনি
আমরা তোমার হত্যার প্রতিশোধ নিতে পারিনি
আমরা এখনো অজস্র বসু হতে পারিনি বলেই...
মধুর কেন্টিনে যাই
বসু, তোমাকে মনে পড়ে যায়।
খুব মনে পড়ে।
সহায়তা নেয়া হয়েছে: আসছে ভ্যালেন্টাইন … আসছে জয়নাল দিপালী …
আরেকটি লেখা:
রক্তের অক্ষরে লেখা শহীদের নাম ভেসে গেছে ভ্যালেন্টাইনের জোয়ারে
১৪ ফেব্রুয়ারি, স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র প্রতিরোধ দিবস।
স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একুশে ফেব্রুয়ারির বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাতিল করে এবং আলপনাসহ বাঙালী ঐতিহ্যের অনেক কিছুকে ইসলামবিরোধী বলে ঘোষণা করে। শিক্ষা সঙ্কোচন ও সাম্প্রদায়িকীকরণসহ জনস্বার্থ এবং শিক্ষাবিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে থাকে। স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে প্রথম থেকে আন্দোলন শুরু হলেও সামরিক আইন ভঙ্গ করে বিভিন্ন দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশাল মিছিল বের হয়। ছাত্রদের দাবি ছিল- "ছাত্র-স্বার্থবিরোধী শিক্ষা সঙ্কোচনের মজিদ খানের শিক্ষানীতি বাতিল, সামরিক শাসন প্রত্যাহার, সাম্প্রদায়িক শিক্ষা বাতিল করে সেক্যুলার শিক্ষা চালু কর"।
আমরা যেন ভুলে না যাই।
পোস্টটার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
অশেষ ধন্যবাদ ভাই। জানা ছিলো না।
কোথাকার কোন ভ্যালেন্টাইনকে নিয়ে কত লাফঝাঁপ, অথচ দেশের ভালবাসায় তাজা প্রাণ দিয়ে গেল এঁরা, আমরা এদের কথা জানিই না!
অনেক অনেক ধন্যবাদ জানানোর জন্য। আমি জানতাম না।
এসব ইতিহাস ক'জন জানে এই প্রজন্মের......কিন্তু এই জানানোর উদ্যেগ এর জন্য আপনাকে ...ভেলেণ্টাইন এ দিনে অনেক অভিনন্দন।
মধুর কেন্টিনে যাই
অরুনের চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে
বসু, তোমাকে মনে পড়ে যায়।
*************************
প্রথম ভালো লাগা শিমুল মুস্তফার কন্ঠে খুব প্রিয় এই আবৃত্তিটা.........
সত্যি ভুলে গিয়েছিলাম ওদের! দুরাচার লম্পট বদমাশ স্বৈরাচারী এরশাদের সেই দুঃশাসনের কথা আমরা ভুলতে বসেছিলাম। মনে করিয়ে দেবার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা!!
এমন একটা পোস্ট প্রয়োজন ছিলো...টুটুল আবারো আপনেরে ধন্যবাদ...
এই পোস্টটা স্টিকি করার জন্য মডারেটরের বিবেচনা আশা করছি।
।এই ইতিহাস জানতাম না , কিন্তু এই মানুষদের কথা শুনেছি, জানার আগ্রহ ছিল।
ধন্যবাদ ভাই । দারুন।
এই পোস্ট স্টিকি করা হোক...আজকের জন্য হলেও...
মিছিলের উপর ট্রাক তুইলা দেওনের মতোন দুঃসাহসে গেছে স্বৈরাচারের তল্পিবাহকেরা...কী নৃশংস!
আমার প্রিয় বন্ধু ৮৩ সালের এদিনে বুকে গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ে রাস্তায়।
১৮ দিন কুমিল্লার সম্বিলিত সামরিক হাসপাতালে আইসিইউতে অচেতন থাকার পর তার জ্ঞান ফিরে।
বুকের ডানপাশ থেকে গুলিটা বের করলেও তার স্মৃতি নিয়ে বন্ধুটি
দিব্যি বেঁচে বর্তে আছে। সেইসব দিনের কথা কি ভোলা যায়...?
ধন্যবাদ, জানা ছিলো না বিষয়টা...স্টিকি করার অনুরোধ রইল।
অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পোস্ট... স্টিকি করা হোক...
আমরা সবাই এই লেখাটা আমাদের বন্ধুদের মাঝেও শেয়ার করতে পারি, বিশেষ করে ফেইসবুক-এ
গতকাল সচলের ব্যানার দেখে প্রথমবারের মত এই ব্যাপারটা জানতে পারি। ঐখানে আরেকটা পোস্টে এই নিয়ে বিস্তারিত লেখা। ভালো লাগে।
এই লেখাটা পড়ে দেখার অনুরোধ রইল সবাইকে।
http://www.sachalayatan.com/aninda21/30309#comment-300259
সবশেষে টুটুল ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বিষয়টা নিয়ে বিস্তারিত লেখার জন্য।
অ:ট: ব্যানারটা জুশ হইছে। কোথায় বলতে হবে, জানি না, তাই এইখানেই বললাম।
ধন্যবাদ টুটুল।অনেক ধন্যবাদ।পোষ্ট ষ্টিকি করায় মডুকে ধন্যবাদ। ভালোবাসার জন্য একটা দিন কেন!ভালো ত বাসি প্রতিদিন। তবে স্বৈরাচারী সরকারের নির্যাতনের এমন একটা দিনকে যেন কখনো ভুলে না যাই।
মডু ভাইজানের একটা ব্যানার লৈয়া পোস্ট আছে
"বসু, আমরা বহুবার তোমার হত্যার প্রতিশোধ নেবার শপথ গ্রহন করেছি
অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে, শহীদ মিনারে, বটতলায়, বায়তুল মোকারমে,
সারাদেশ তোমার হত্যার বদলা চায়
কিন্তু এখনো তোমার খুনীরা প্রকাশ্যে সগর্বে ঘুরে বেড়ায়
এখনো তোমার ঘাতকেরা ক্ষমতার কালো কেদারায় বসে
রাইফেল তাক করে আছে আমাদের প্রতি"
এই লাইনগুলোর পর আর কিছু বলার থাকেনা ।
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের লাল সালাম ।
আমি সে বছর ১০ম শ্রেণীর ছাত্র। সচেতন ছাত্রছাত্রীদেরকে ঘটনাটি আলোড়িত করেছিল এবং ২১শে ফেব্রুয়ারির স্কুলফাংশনে পরের বছর থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারিও উদ্যাপনের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল (তখন আমরা ভালোবাসা দিবস অবশ্য চিনতাম না:(); কিন্তু হয় নি।
ঘটনাটি আমরা ভুলে গেছি:(
কবিতাটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ।
শেয়ার করলাম
ভালো লাগলো লেখাটা। ধন্যবাদ
সৈরাচার এখন ক্ষমতার স্বাদ আস্বাদন করছে!!! হাহ........
থুতু দিতেও ঘৃণা হয়
ধন্যবাদ
কতো কিছু জানার বাইরে আছে। ভালোবাসা দিবস নিয়ে ঢাকা তোলপার অথচ এটা আমরা জানিই না।
আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন টুটুল ভাই।
রক্তের অক্ষরে লেখা শহীদের নাম ভেসে গেছে ভ্যালেন্টাইনের জোয়ারে....
আসুন ১৪ ফেব্রুয়ারী স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করি। ভালোবাসা-বাসিও হবে, তবে তা কোনভাবেই শরীরবৃত্তীয় না, এই ভালোবাসা প্রতিরোধের জন্য ভালোবাসা। এই প্রতিরোধ আর ভালোবাসার দিনে তরুণ-তরুণীরা হাত ধরাধরি করে রাস্তায় আসুক, প্রতিবাদ করুক।
১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস, অন্য কিছু নয়। একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক ভূখণ্ডের জন্য এ জনপদের মানুষ বারবার অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। যুগে যুগে সামরিক-বেসামরিক ছদ্মবেশে স্বৈরাচারীরা ক্ষমতা দখল করেছে। জনগণ প্রতিবাদ করলে জুটেছে বেয়নেট, বুট, গুলি, টিয়ারশেল। এরকমই ১৪ মার্চ ১৯৮২ সালে সামরিক আইন জারি করে ক্ষমতা দখল করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সামরিক আইন জারি করে সংবিধান ও মৌলিক অধিকার স্থগিত করা, রাজনৈতিক নেতাদের ধড়পাকড় শুরু করা_এসব বিভিন্ন কারণে তাঁর এ ক্ষমতা দখলকে কোনো রাজনৈতিক দল শক্তভাবে প্রতিরোধ করতে পারেনি। তবে ছাত্ররা প্রথম থেকেই এরশাদের শাসনক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। শুরু হয় প্রতিরোধ আন্দোলন। স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্রদের প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রথম শহীদের নাম জয়নাল দিপালী কাঞ্চন। এরপর থেকেই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন জোরদার হয়ে ওঠে। পশ্চিম থেকে আগত ভ্যালেন্টাইনের জোয়ারে ভেসে গেছে রক্তের অক্ষরে লেখা, এ প্রজন্ম ভুলে যাচ্ছে সেই সব শহীদের নাম।
একুশে ফেব্রুয়ারী’১৯৫২
1. ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস
2. আসুন ১৪ ফেব্রুয়ারি "স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস" হিসেবে পালন করি
3. রক্তের অক্ষরে লেখা শহীদের নাম ভেসে গেছে ভ্যালেন্টাইনের জোয়ারে
4. গরুর কোন দুঃখ নাই
5. ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩
সকল শহীদের জন্য শ্রদ্ধা
সকল শহীদের জন্য শ্রদ্ধা।
টুটুল ভাইকে ধন্যবাদ।
মডুকে এই পোস্টটা আজকে স্টিকি করে রাখার অনুরোধ
এবং ভালোবাসা সবার জন্য।
সকল শহীদের জন্য শ্রদ্ধা।
টুটুল ভাইকে ধন্যবাদ।
মডুকে এই পোস্টটা আজকে স্টিকি করে রাখার অনুরোধ
এবং ভালোবাসা সবার জন্য।
‘কর্পোরেট ভালোবাসা’র জোয়ারে ভেসে যাওয়া জাফর-দীপালি
শিশু একাডেমির ভেতরে পুলিশের গুলিতে কতজন মারা গিয়েছিলেন সেদিন ? শিশু একাডেমির সামনের গ্রীলের ফাঁক দিয়ে সারি বেধে পুলিশের গুলি করার ছবিটা এখনো চোখে ভাসে। কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল? কারো সংগ্রহে আছে?
মন্তব্য করুন