ছবি ব্লগ: হঠাৎ বান্দরবনে একদিন :)
ইটকাঠ ঘেরা এই পাথরের শহরেতে হৃদয়ের কারবার? লোকসান বারবার। বাট... আমরাতো হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল... তাহলে? উপায় একটাই... আমরা সবুজে বাঁচি... সবুজে থাকি... সবুজ করি আমাদের এই মন... চির সবুজ এই দেশের সবুজ গালিচায় গড়াগড়ি করে সবুজ হয়ে আবার কর্মোদ্দিপনার সংগ্রহ নিয়ে ফেরা।
হুটহাট আয়োজন ছাড়া আসলে কিছু হয় না... তারপরেও ঋহানের কথা মাথায় রেখে কিছুটা হিসাব নিকাশ... রবিবার জন্মাষ্টমীর ছুটি হওয়াতে প্রায় ৩ দিনের একটা লম্বা অবসর। অনেক দিন ঢাকার বাইরে বের হওয়া হয় না... কিছুটা হাঁসফাঁস ছিলোই ... এমন সুযোগ কি কখনো হাতছাড়া করা যায়? এবারের ট্রিপ বান্দরবন এবং তার আশপাশ...
সন্ধ্যায় একটা জন্মদিনের দাওয়াত এবং রাতে একটা বিয়ের দাওয়াত... সামাজিকতার বেড়াজাল আবদ্ধ এই জীবনে সব কিছু সুচারু রূপে সম্পন্য না করলেও চারিদিকে রি রি করে উঠবে সবাই। মধ্যবিত্তের এই দায়বদ্ধ জীবনের ফাকেই ছুটে চলা... যাস্ট ১১:৩০ এর শ্যামলী পরিবহনের (নন এসি) টিকেট কাটা হলো... এসি বাস সন্ধ্যায় ।
বাসের পাইলটের দুর্দান্ত পার্ফমেন্সে পাহাড়ের ফাঁকফোকর দিয়ে ভোরের সূর্যের উঁকি ঝুঁকি দেখতে আমরা সকাল ৭টায় বান্দরবান শহরে হাজির ... হুটহাট প্লানিংয়ের কারণে আগে থেকে কোন হোটেল বুকিং ছিল না। বাস থেকে নেমেই ১ মিনিট দূরত্বের একটা হেটেলের দিকে শুভাগমন ... কারণ বনি যদি ঠিকঠাক মত না হয় তাইলে দিন খারাপ... মুরব্বীদের কথা ... হোটেল হিল ভিউর ম্যানেজার খুউ্উউবই ভালো লোক... আমাদের নিরাশ করল না। হোটেলটা পছন্দ হইছে... এবং পরে জানতে পারি যে, বান্দরবানের ১/২টা ভালো হোটেলের একটা ছিল হিল ভিউ। বিশেষ করে এটার রেস্টুরেন্টাও বান্দরবানের ২টা ভালো খাবারের রেস্টুরেন্টের একটা। ওই যে বলছিলাম বনি যদি ঠিকঠাক মত হয় ... তাইলে সবি ঠিকঠাক
চট্টগ্রাম থেকে ৯২ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে পাহাড়ী শহর বান্দরবান। বান্দরবান জেলা হচ্ছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এর আয়তন ৪,৪৭৯ বর্গ কিলোমিটার। প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্যের অবারিত সবুজের সমারোহ এবং মেঘে ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে যার আছে সে পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান অবশ্যই একটা ঘুরুন্তিস দিয়ে নিজেকে একটু রিচার্জ করে নেবেন অবশ্যই।
আপনাদের জন্য...
ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে বান্দরবান অথবা ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম থেকে বাসে বান্দরবান যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে এস আলম, হানিফ, শ্যামলী, ইত্যাদি বাস ছাড়ে ফকিরাপুল থেকে। তবে বেশী রাত্রের বাস গাবতলী থেকে শুরু হয়। আর চট্টগ্রাম শহরের বহদ্দার হাট থেকে বান্দরবানের বাস পাওয়া যাবে। এসি বাসে ৯৫০ টাকা ভাড়া আর নন এসি বাসে ৬২০টাকা পরবে প্রত্যেক সিটের জন্য
হোটেল হিল ভিউ: ০১৮২৮৮৬৬০০০... এখানেই আমরা ছিলাম... আমাদের ডাবল বেডের রুম ভাড়া নিয়েছে ১৩০০ (একটু দামাদামি করতে হইছে )। আর আমাদের বন্ধুরা ৫ জন ছিল ৩টা ডাবল বেডের রুমে সেটার ভাড়া ছিল ১৫০০... চাইছিল ২৫০০
এই হোটেলটার সুবিধা হইলে বান্দরবনে ঘুরাঘুরির জন্য চাঁদের গাড়িগুলো সব আশেপাশেই। চাঁদের গাড়ি হলো ফোর হুইল ড্রাইভের ছাদ খোলা জিপ... পাহাড়ে চলার জন্য উপযোগী।
এই অল্প সময়ে আমরা নীলগিরি, স্বর্ণমন্দির এবং নীলাচল প্রথম দিন এবং দ্বিতীয় দিন মিলে দুইবার চক্কর দিয়েছিলাম। কারণ নীলাচলটা রিনোভেশন শেষে দুর্দান্ত লাগছে।
প্রথম দিন আমরা হোটেলে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে একটু গড়াগড়ি করি... দ্যান চাঁদের গাড়ি ভাড়া করি আশপাশ দেখার জন্য.. ২,২০০ টাকা নেয়। দুপুর ১টার আগে স্বর্ণ মন্দির ওপেন হয় না বিধায় আমরা লাঞ্চ করেই যাত্রা শুরু করি... (স্বর্ণ মন্দিরে হাফ প্যান্ট/থ্রি কোয়ার্টার এলাউ না)। স্বর্ণ মন্দির শেষে রামজাদি মন্দিরে যাই চাঁদের গাড়ির ড্রাইভারের কথা মত.. এটা একটা ভুয়া জায়গা ... আন্ডারকন্সট্রাকশন একটা জায়গা দেখাটাও বিরক্তি কর... কারণ অনেক উপরে হেঁটে উঠতে হয় ... এর পর নীলাচল ... দিন শেষ
সকালে চাঁদের গাড়ি রিজার্ভ করে (৫৫০০ টাকায়) নীলগিরি যাই... যাওয়ার সময় চিম্বুক একটা চক্কর দেয়া যেতে পারে... এবং আসার সময় শৈলপ্রপাত... সেখানে ঘুরন্তিস দিয়ে দুপুরে মিলন ছড়িতে খাওয়া দাওয়া শেষে হোটেলে ফেরি। বাস যেহেতু রাত ৮টায় তাই বিকেলে আবার নীলাচলে ... এবার চাঁদের গাড়ি নেয় ৫০০+কার পার্কিং ৬০ টাকা + ২৫টাকা জনপ্রতি টিকেট।
উপরের জায়গাগুলোর বাইরে অন্যরা হাতে সময় নিয়ে বান্দরবানে নিচের জায়গাগুলো দেখতে পারেন।
মেঘলা (আহামরি সুন্দর না) , সাঙ্গু নদী, তাজিলডং, কেওক্রাডং, জাদিপাই ঝরণা, বগালেক, মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স, প্রান্তিক লেক, ঋজুক জলপ্রপাত, নাফাখুম জলপ্রপাত
যে কোন জলপ্রপাত বর্ষার মৌসুম ছাড়া সুন্দর লাগবে না... আর বর্ষায় নীলগিরি যেই অপরূপ সাজ নিয়ে হাজির হয়... সেটা অন্য কোন সিজনের সাথে তুলনীয় নয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য.. সাথে ঋহাণ থাকায় বাড়তি সাবধানতা এবং কঠিন জায়গাগুলো সচেতন ভাবেই এড়িয়ে যাওয়া হইছে
স্বর্ণ মন্দির
মিলনছড়ি
মিলনছড়ি
মিলনছড়ি
মিলনছড়ি
মিলনছড়ি
নীলাচল
নীলাচল-০১
নীলাচল-০২
নীলাচল-০৩
নীলাচল-০৪
নীলাচল-০৫
নীলাচল-০৬
নীলগিরির পথে...
হায়রে বান্দরবনের কলা...
নীলগিরি-০১
নীলগিরি-০২
নীলগিরি-০৩
নীলগিরি-০৪
নীলগিরি-০৫
চিম্বুকের পথে...
শৈল প্রপাত
শৈল প্রপাত
নীলাচল-০৭
নীলাচল-০৮
নীলাচল-০৯
এবং আমরা
দুর্দান্তিস..
ধইন্যা
আহ, চোখ জুড়ে গেল, ছবি দেখে
অনেক আগে গিয়েছিলাম। পোস্টের সুবাদে আরেকবার ঘুরে এলাম।
অনেক অনেক ধন্যবাদ
খুব খুব খুবই সুন্দর। অবশ্য অবশ্যই নীলাচল যাব এবং তিন নাম্বার জায়গাটাতে বসব। ইনশাআল্লাহ এই বছরের মধ্যেই যাব।
ধন্যবাদ টুটুল ভাই এত্ত সুন্দর একটা ভ্রমণকাহিনী আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
গেলে অবশ্যই বর্ষায়
দারুন!
থ্যাংকিউ
ফটোগ্রাফির হাত ভালো। বাট বেশি ভালো হচ্ছে লেখার বর্ণনা।
রিয়েলি। আই মিন ইট...
কতদিন বান্দরবান যাওয়া হয় না...
জীবনে বহুত ঘুরন্তিস দিছেন...
এইবার মনোযোগ দিয়া ২ বছর জব করেন... তারপর বের হইয়েন
১৩ নম্বর ছবিটা (নদী) কি শঙ্খ নদী ? মিলন ছড়ি থেকে সামান্য সামনে গেলে রাস্তার বা পাশে ? যদি হ্যাঁ হয়- তাহলে নদীর ঠিক ডানপাশের উঁচু জায়গাটাই আমাদের স্বপ্ন... একখান রিসোর্ট করার কাজ চলছে...
হ্যা বস
আপনাদের রিসোর্ট কবে শুরু হবে?
দারুণ সুন্দর সব ছবি, মন জুড়ানো
ইয়ে, এই সমস্ত জায়গায় আমাদেরও ছবি আছে তবে আপনারগুলার মতো এতো সুন্দর না
আস্তে আস্তে সব সুন্দর হয়ে যাবো আপা
আরিব্বাছ। চমৎকার।
ধন্যবাদ
দারুন
ধন্যবাদ
চমৎকার।
ধন্যবাদ
ভাল লাগল টুটুল ভাই...
মন্তব্য করুন