দাস
১.
ওপার বাংলার সাহিত্যিক সুনীলবাবু বলেছেন, ঔপন্যাসিকদের নাকি স্মৃতিশক্তি ভাল থাকতে হয়। আমি উপন্যাস লেখিনি, লেখার কোনো দরকারও পড়ছে না। তবে স্মৃতিশক্তির দরকার পড়ছে। এই যেমন এখন। খুলে বলি।
খুব নাম শুনেছি অপরাহ নামের এক মহিলার দুর্দান্ত টিভি শো'র। একদিন রিমোট গুতানোর এক ফাঁকে হঠাৎ সামনে পড়ে গেল। দেখতে লাগলাম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কোন এক নাৎসী ক্যাম্প নিয়ে সেবারের পর্ব। খুব সম্ভবত অশ্বউইৎজ*। অপরাহ'র সাথে আছে একজন নোবেলজয়ী সাহিত্যিক যিনি এই নাৎসী ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরা অল্প কয়েক হাজারদের* মধ্যে একজন। অপরাহ'র শো'তেই দেখলাম সেই নাৎসী ক্যাম্পের স্থানে এখন একটা জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে, আজকের সভ্য মানুষদেরকে তাদের পূর্বপুরুষদের অসভ্যতার ইতিহাস মনে করিয়ে দেবার জন্য। সে জাদুঘরে স্তূপ করে রাখা ছোট ছোট বাচ্চার লাখ লাখ জুতা, কেটে রাখা চুল, কাপড়-চোপড়। লাখ-লাখ* নিরপরাধ শিশু বিনা দোষে মারা গিয়েছিল সে নাৎসী ক্যাম্পে। অশ্রুভেজা চোখে নোবেলজয়ী সাহিত্যিক এ বর্ণনা দিচ্ছিলেন, শেষে এসে বললেন, "অল্প কয়েক হাজার* মানুষ বেঁচে ফিরেছিল, তার মধ্যে আমি একজন নোবেল জিতেছি। ভেবে দেখুন, এই লাখ লাখ* শিশুর কতোজন নোবেল পেতে পারতো...কতোজন অস্কার পেতে পারতো..."
(*চিহ্নগুলো মোবাইল ফোনের শর্ত না, আমার স্মৃতির দুর্বলতা।)
২.
বাবা হঠাৎ করেই এক মহাঝামেলায় পড়েছে। এইটুকুন পিচ্চি যে এতো বিড়ম্বনার কারণ হয়ে উঠবে, কে জানতো?! বাবাকে দেখলেই সে কারণে-অকারণে দুহাত বাড়িয়ে দেয়। বাবা না-না করে যদিবা দূরে সরার চেষ্টা করে, সে আকাশ-পাতাল ফাটিয়ে চেঁচায়। বাধ্য হয়েই বাবাকে কোলে নিতে হয়। নিতে যাওবা দেরি...জলবিয়োগে তার কিছুমাত্র দেরি নয়
অনেকদিন বাদে আমাদের বাসায় এমন দুগ্ধপোষ্য শিশুর আবির্ভাব, তাও আবার হঠাৎ করেই। আমাদের বাসার সবচাইতে ছোট আমার ছোটভাই, তার বয়স এখন সতের। সুতরাং চার মাস বয়েসী বাচ্চা ঘরে থাকলে কি কি জ্বালা পোহাতে হয় সবাই এর মধ্যেই ভুলে বসে আছে। এ নবাগতা ক্ষণে-ক্ষণে তরলে-আধাতরলে কিংবা হাসিতে-চেঁচামেচিতে মনে করিয়ে দিচ্ছে সে কথা। নবাগতার নাম এখনো ঠিক করা হয়নি। এখুনি নাম ধরে ডাকার প্রয়োজনও পড়ছে না। তাই কারো তেমন কোনো গরজ নেই। যে যার মত করে নাম ঠিক করে ডাকছে। মা'র দেয়া নামেই অবশ্য বেশি ডাকা হচ্ছে। ফুলমতি। নামে কিবা আসে যায়- কথাটা এ যুগে অচলপ্রায়। নামেই বুঝে ফেলা উচিৎ নবাগতা ফুলমতি আমাদের কাজের মেয়ের কন্যা।
ঠিক এই লেখাটা যখন লিখছি, তখন হঠাৎ ট্যা-ট্যা কান্নার শব্দে কিছুটা মনোযোগ নষ্ট হল। কারেন্ট গিয়েছে কিছুক্ষণ, গরমে ফুলমতির কান্না শুরু হয়েছে। ফুলমতির ভাগ্যও বটে...গ্রামে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকতে হতো, ভাঙ্গা কুঁড়েঘরে; কোনো কোনো রাতে হয়তো কুপি-হারিকেনও জ্বলে না। সেখান থেকে একেবারে শহুরে বাসা, ঝকমারি টাইলসের মেঝে, মাথার উপরে ফ্যান, কারেন্ট গেলে জেনারেটর! ফুলমতি কপাল নিয়ে এসেছে বটে...এ শহরের নতুন সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন! দুকলম লেখতে পড়তে শিখবে হয়তো, কিন্তু তারপর? মায়ের মতোই... এ বাড়ি ... ও বাড়ি ... এই তো?
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম বছরে গিয়েছিলাম শ্রীমঙ্গল। বন্ধুর মামার বাংলো আছে ডানকানের চা বাগানে। ট্রেনে করে পৌঁছতে পৌঁছতে রাত। শীতের সময় ছিল, গরম পানি দিয়ে হাত-মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা করলো চাকর-বাকরেরা। এর মধ্যে একজন চাকর একটা খালি ট্রে নিয়ে আসলো। আমাদের জুতা খুলে সে ট্রেতে নিয়ে গেল! আমি থ হয়ে গেলাম। পরে শুনি, এরা নাকি নিজেদের কাজ করতে পছন্দ করে। আমি নিজের জুতা খুলে নিজে রাখতে চাইলে মাইন্ড করবে! দুতিনদিন ছিলাম, ফায়ারপ্লেসের কাঠ কাটা থেকে শুরু করে বাংলোর লাগোয়া বাগান সাফ, অতিথি-সেবা, রান্না-বান্না সবকিছু চাকরেরা করছে। আমাদের দেশে সবসময়ই চাকরেরাই এই কাজ করে, কিন্তু প্রথমবারের মতো পুরুষদের এই কাজ করতে দেখলো আমার অনভ্যস্ত চোখ। বংশ পরিক্রমায় এরা চা-বাগানের চাকর। যে কাজ করে তার ছেলেও একদিন একই কাজ করবে... অন্য কিছু করার কিংবা জীবনটা অন্যভাবে এগিয়ে নেবার কোনো স্বপ্ন তাদের নাই। আমাদের চেনাজানা জগতের বাইরে অন্য এক জগত!
৩.
চা-বাগানের শ্রমিক আর ফুলমতিই শুধু না, পথশিশুদের জীবনও...এমনকি নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুদের জীবনও ঠিক এমনই কানাগলিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। অচেনা এ জগতের জীবনে শিক্ষার কোনো মূল্য নেই। এনজিওদের ধরে বেঁধে অ-আ পড়ানো কোনো কাজে আসে না। জীবনের ধারায় কোনো বৈচিত্র্য আসবে না, কোনোদিন পথশিশু থেকে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে যাবে না।
প্রতিবছর কয়েকশো কোটি টাকার বাজেট হয় শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে। এ বাজেট তো স্বচ্ছলদের জন্য প্রয়োজন নেই। দু-তিন বছরের টাকাগুলো এক করে হয়তো সুযোগ না পাওয়া সব শিশুদের জন্য থাকা-খাওয়া-লেখাপড়ার ব্যবস্থা করতে পারতো সরকার, যেখানে লেখাপড়া শিখবে তারা আর শিখবে স্বপ্ন দেখতে। এতো এতো শিশুর সম্ভাবনা কানাগলিতে ঘুরপাক খাচ্ছে, খাবে... এ অবস্থার যেন কোন পরিবর্তন নেই। ফুলমতিরা ঘরে ঘরে কাজ করার স্বপ্ন বাদে আর কিইবা স্বপ্ন দেখতে পারে?
অশ্বউইৎজ থেকে বেঁচে ফেরা সেই নোবেলজয়ী সাহিত্যিকের কথামতো এদের মধ্যেও কয়েকজনের নোবেল জেতার কথা ছিল ... আফসোস!
ভালো লাগল।
চা বাগানের দাসপ্রথার গল্প শুনেছি। অন্য একটা জগত যেন ওটা। চক্র ভেঙ্গে বেরুবার নিয়ম নেই। তবু কেউ কেউ হয়তো শেকল ছিড়তে পারে। বৃটিশটা রাজকীয় আরামের জন্য যে সেবা চালু করেছিল, তা এই দেশীয় নবাবেরাও চালু রেখেছে বৃটিশ কুঐতিহ্য রক্ষার নামে। গরমের দিনে কোর্টরূমে টাইজোব্বা পড়ে ঘামতে থাকা উকিলদের দেখেও সেই কু ঐতিহ্যের কথা মনে পড়ে।
চা বাগানের দাসেরা নাহয় অনিচ্ছায় দাস রয়ে গেছে। কিন্তু হাইকোর্টের উচ্চস্তরের মানুষেরা কার আদেশে দাস হয়ে আছে শত বছর আগের অপ্রয়োজনীয় ড্রেস কোডে? এসব জাতীয় পর্যায়ের দাসপনা ব্যক্তিগত মানসিক সীমাবদ্ধতারই সমষ্টিক ফসল। এই দাসপনার জন্য করুণাও হয় না।
স্পট অন। একদম আমার চিন্তাটা বলছেন। এমনকী সরকার শপথ গ্রহণের সময়ে দেখবেন মাথায় দড়ির পরচুলা লাগায়। বৃটিশ থেকে স্বাধীন হয়ে, পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়েও আরো চল্লিশ বছর কাটল, কিন্তু সেই দাসত্ব টেনেই যাচ্ছি।
মজার ব্যাপার, আইনের বইতে পষ্টাপষ্টি বলা আছে, ন্যায়বিচার শুধু করলেই হবে না, ন্যায়বিচার করা হয়েছে- এই ব্যাপারটা "দেখাতে"ও হবে। সেইজন্যই এইসব ড্রেস আর অ্যাকসেসরিজ কোড মানা বাধ্যতামূলক
তাইলে দড়িদড়ার বদলে মাথায় গামছা বান্ধা হোক, ন্যয়বিচার যদি "দেখাতে"ই হয়!
হাইকোর্টের দাসত্ব আসলে ফ্যাক্টর না। আমার কাছে ফ্যাক্টর এটাই মনে হয় যে বংশানুক্রমে তাদের উন্নতির কোন চিহ্ন নাই...তাদের কোন স্বপ্ন নাই। এতো এতো শিশুর কতো কি করার কিংবা হবার সম্ভাবনা...
তানিমের লেখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ন। ফুটপাতে ফুল বিক্রি করা শিশুটি দেখলে সাথে অনেক পেয়ে পেয়ে কোন কিছুতেই মন না ওঠা নিজের মেয়েকে দেখলে মনে হয় ওদের জীবনে অনেক কিছু পাওয়ার ছিল। অনেকেরই নোবেল পাওয়ার কথা ছিল।
নীড়দার কথা সত্যি। ঢাকায় এখনো বড় চাকুরেদেরকে কোট টাই পরে অফিস করতে হয়, ড্রেস কোড, হাসি পায়। এখানে যা বাদ হয়ে গেছে তা এখনো আমাদের ওখানে চালু রয়ে গেছে।
সমস্যাটা সিস্টেমের, লাখো শিশু স্বপ্ন দেখতে পারছে না...বড় বড় শিক্ষা বাজেট বেহুদা খরচ করার ফায়দা নাই। পথ থেকে শিশুদের উঠায় নিতে হবে স্কুলে-হোস্টেলে, মাধ্যমিক পর্যন্ত জোর করে হলেও সবাইকে পড়াতে হবে...সবাই মীনা না। মা-বাবা যদি সন্তানকে লেখাপড়া করায়া স্বপ্ন দেখতে না শিখাতে পারে, তাইলে বাচ্চা-কাচ্চা কাছে রাখার অধিকার তার নাই। সুতরাং লেখাপড়া না করা/লেখাপড়ার পরিবেশ না পাওয়া শিশুদের আলাদা করে নিয়ে আসতেই হবে। ২০-৩০ বছর এই কষ্ট হয়তো করতে হবে...তারপরে সব পালটে যাবে।
এইটা অবশ্য আমার স্বপ্ন...বাস্তব হয়তো আরো কঠিন।
একটা ভালো থট দিছো...
চমৎকার লাগলো...
ধন্যবাদ।
পড়ে মন খারাপ হলো। যেখানে আপনি ভাবছেন এই শিশুদের শিক্ষিত করে তোলার কথা, সেখানে ওরা দিন দিন অন্ধকার থেকে আরো অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে।
চা-বাগানের এইসব রীতিনীতি আজব লাগে!... কি করে এখনও একদল এমন আয়েশি , অন্যদল এমন গোলামি জীবনযাপন করে!!...
সুন্দর একটা লেখা...
প্রতিবছর যে কত হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন ব্যয়ের নামে অপচয় হয় তার একটা হিসেব করা গেলে আফসুসটা আরও বাড়ে। অপচয়ের টাকা দিয়েও কত কিছু করা সম্ভব!
লেখাটা পড়ে একটা মিশ্র অনুভুতি হচ্ছে। তাতে মন খারাপ, রাগ, আফসোস ইত্যাদি সব বিষয়ই আছে। তবে ভাল লাগলো যে কেউ কেউ এখনও এভাবে চিন্তা করে। চিন্তাটা ধরে রাখেন, নিশ্চয়ই কিছু একটা হবে।
আমার চিন্তায় আর কি হবে...অন্য কারো এ চিন্তা করার দরকার ছিল। তাদের চিন্তা করার সময় নাই
ভাবনা, লেখা সবকিছু প্রশংসনীয়। এমন লেখা আরও চাই ভাঙ্গা পেন্সিলের কাছ থেকে।
হয়তো অপ্রাসঙ্গিক- দেশে আসার পর থেকে বিকাশগত প্রতিবন্ধকতার শিকার শিশুদের জন্য কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। দেখছি এদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা, অসীম যন্ত্রণাময় অনিশ্চিত জীবন। মনটা তছনছ হয়ে যায়... স্বাভাবিক শিশুদের কী ভাগ্যবান মনে হয়, হোক সে সুবিধাবঞ্চিত, তবু্ও...
স্বাভাবিক শিশুদেরই যা অবস্থা... প্রতিবন্ধকতার শিকার শিশুদের কথা কল্পনাও করা যায় না।
মানে কথা হৈলো, এদের কে সচেতন করলে, আমাদের অনেকেরই তো সমস্যা। সুতরাং আমরা রেডি কিনা?
একদিকে একদল লোক সচেতন হবে, আরেকদিকে একদল লোক, পিছনে টাইনা রাখবে, এডি ভালোনা!!
র্যাণ্ডম এক্ট অফ কাইণ্ডনেস বলে একটা ব্যাপার আছে। আমরা যে যার যার ঘরের কাজের লোকদের শিক্ষিত করতে পারি। তাতে ঝামেলা আছে, যেমন বাসায় হয়তো কাজের লোকই পাওয়া যাবে না..."ওমুকের বাসায় কাজ করতে হইলে লেখাপড়াও শিখতে হয়
"
তবে তারপরেও এসব র্যান্ডম এক্টে শেষ রেজাল্ট শূন্য। একটা সামগ্রিক পরিকল্পনা না থাকলে আমার বাসার কাজের মেয়ের কন্যাটা নাম-সাক্ষর জানা আরেকজন কাজের মেয়েই হবে। কানাগলির ভবিষ্যত যারে বলে...
আপনার ভাবনাকে স্যালুট ভাইটি! উত্তরসূরীদের বরং অব্যহতি দেই আমরা, তাঁরা হয়ত সেভাবে স্বপ্ন বুঁনে দেবার কাজটা করতে ব্যর্থ হয়েছেন আমাদের মাঝেও( ব্যতিক্রম উদাহরণ না ) তাই শুধুই ফুলমতিরা নয়, বরং, আমাদের প্রজন্মের একটা বিরাট অংশই আজকে অন্ধকারে হাতড়ে মরছে..ভেবে নিতে বাধ্য হচ্ছে জীবনের ইঁদুর দৌড়ে সামনে এগিয়ে যাওয়াটাই চরম সার্থকতা। যা আমাদের আত্নকেন্দ্রিক হয়ে ওঠা ছাড়া সেভাবে সাহায্য করছে বলে মনে হয় না।
সেভাবে কী সম্ভব না বলতে পারা, স্বপ্ন বঞ্চিত মানুষদের উদ্দেশ্য: " ভেঙে ভেঙে মন, ভাঙছে জীবন, কিছুটা তবুও বাকি..আমরা তবুও স্বপ্ন দেখছি তুমিও দেখবে নাকি?"
ঘর থেকে শুরুটা করিনা আমরা।বারডেমের একজন 'ডাঃ ইব্রাহীম' যদি সমাজে তাঁর যোগ্যতার আলোকমশাল জ্বেলে যেতে পারেন, তবে কেনো একজন 'ফুলমতি'র জন্য সেটাকে দুঃসাধ্য ভাবছি! রোমান্টিক ভাবনা নয় রে ভাইটি, আসুন আমরা যারা এখনো স্বপ্ন দেখি, তারা গুটিকয়েকজনই শুরু করি স্বপ্ন বুঁনবার, স্বপ্ন ছড়িয়ে দেবার এই কাজটা....কী জানেন? আমার এক বন্ধু, যে কিনা অস্ট্রেলিয়ায় একটা নিরাপদ জীবনের গ্যারান্টি পেয়েও, এইসব মানুষদের চোখে স্বপ্ন বুঁনবে বলে, আমাদের চাকুরী লাভের জন্যই কেবলমাত্র শিক্ষা গ্রহণের মানসিকতাটা ঘুরিয়ে দেবে বলে, লোভনীয় ঐ হাতছানিকে অবজ্ঞা দেখাবার সাহস করেছে। কারণ সে ভীষণ রকমের আশাবাদী একজন মানুষ। এরকম মানুষেরা এখনো সমাজে আছে বলেই না ঘুরে দাঁড়াবার ইচ্ছেতে ধুয়ো দিতে পারি..কী পারিনা? আমি..আপনি..কিংবা আমরা সবাই?????
অপপ্রার শো'তে যিনি এসেছিলেন তাঁর নামটি খুব সম্ভবতঃ ই্যলে ইউজেল্(Elie wiesel) শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন তাঁর কথা বলছেন কী?
পোষ্টের জন্য এক পৃথিবী ভালোবাসা জানবেন ভাইটি। ভালো থাকা হোক।
আমার আসলে মনে নাই
***পূর্বসূরী'দের পড়তে অনুরোধ থাকলো

ভাই ভাঙা পেন্সিল, আপনার লেখাটার মধ্যে সরলতা আছে। আমাকে আকর্ষণ করেছে। নিয়মিত লিখুন। ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ
সবাই ভাবি কিন্তু কিছু করি না তো! নিজের কথাই বলি...
ঢাকায় অধিকাংশ বাড়িতেই কাজের লোক আছে। তাদের প্রতি আমরা কেমন ব্যবহার করছি? চেয়ারে/খাটে/সোফায় বসা নিষেধ, মাটিতে বসে খেতে হবে...এগুলো তো প্রায় বাড়িতেই কমন...কোনোদিন মন থেকে মানতে পারিনি কিন্তু প্রতিবাদ করার মতন শক্তিও পাইনি। নিজেরাও যেমন দাস হয়ে আছি, আবার কিছু মানুষকে দাস বানিয়ে রেখেও আমরা স্বস্তি পাই বোধ হয়
আমরা সবাই কিছুমাত্রায় বর্ণবাদী
চাবাগানের ব্যাপারটা পরিকল্পিত, দীর্ঘমেয়াদী্ এবং নিষ্টুরতম।
বৃটিশরা অবিভক্ত ভারতের সবচাইতে অনুন্নত এলাকার কিছু লোক নিয়ে চাবাগানে এনে ফেলেছিল। সেই থেকে তারা এবং তাদের বংশধররার এখনো্ চাবাগানেই আছে। অন্য কিছু করার চেষ্টাও করছে না। কেউ তাদের নিয়ে ভাবছেও না। ভাবার চেষ্টা করলেও চাবাগানেরনিজশ্রমিকেরা নিজেরাই তাতে বাধ সাধছে।
একটা জনগোষ্ঠী তারা, যারা চা বাগানে নামমাত্র মুল্যে কাজ করবে, তাদের ছেলেমেয়েও নামমাত্র মুল্যে একি বাগানে কাজ করবে। এমন শ্রমিক সাপ্লাই ঠিক রাখতে চা বাগান তাদের আবদ্ধ রাখে। তাদের রেশন দেয়। চা শ্রমিকদের বাড়িতে কিছুই কিনতে হয় না। সবই তারা কতৃপক্ষের থেকে পায়, তাই তারা খুব একটা উন্নতির চিন্তাও করে না। যদি করতে চায় ও তাহলে আছে বাংলা মদ। বিপুল পরিমানে সেটা চা বাগানের শ্রমিকদের জন্যে ব্যবস্থা করে দেয়ার ব্যবস্থা নেয় বাগান কতৃপক্ষই। যদি বাগান শ্রমিকের কেউ বাগানের বাইরে কোন চিন্তা করতে চিন্তাও করে তাহলে মদে ডুবে সেটা ভুলবে।
এভাবেই চলছে।
কেউ এই চক্র ভাঙবে না।
পুরাতন এই পোস্টটা হঠাৎই পড়লাম!
এক কথায় দারুন।
তানিম কেমন আছো? হাসপাতাল গেছিলা কোথায় যেন পড়লাম, এখন কী অবস্থা?
নতুন লেখা আসবে কবে???
এখন সুস্থ
হাসপাতাল পর্ব শেষে বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান হলো। সামনে বৌভাতে আসবো চট্টলা। এগুলার প্ল্যানিং, তার সাথে বিয়ে সংক্রান্ত ব্যস্ততা। লেখালেখিতে মন বসানোর সময় কই?
পরীক্ষা সংক্রান্ত ব্যস্ততা*
স্বপ্ন দেখতে হবে, স্বপ্ন দেখাতে হবে । এই সব ম্লান, মূঢ়, মুক মুখে দিতে হবে ভাষা । অন্তত স্বপ্ন দেখাবার স্বপ্ন দেখা যেন অক্ষুন্ন থাকে ।
খুব ভালো লাগলো।
মন্তব্য করুন