ইউজার লগইন

ভাস্কর'এর ব্লগ

পথ আর পথিকের সংঘাত বিষয়ক ভাবনা (১)

...

একটা পথ এলোমেলো ছড়িয়ে পড়েছে,
আর পথিকেরা ছুটেছে চারপাশে ব্যস্ত,
নতুবা গন্তব্য কখন বদলে যাবে
তার নিশ্চয়তা নেই, আছে
অ্যামনেশিয়া ভীতি, বিষ্ফোরণের সম্ভাব্য
ইতিহাসে শংকিত হৃদয়ে অস্থিরতা বোধ।

কেউ অনুসরণে রয়েছে অলস প্রজাপতিরে
সে হয়তো তাদের নিয়ে যাবে ফুলের বাগানে।
কেউ কেউ পিছু নিয়েছে বেপথু বিড়ালের
তার জন্য অপেক্ষাতে আছে সুসজ্জিত মালকিন।
অনেকেই চলেছে নিজের ঠিকানাতে
পথ যেদিকেই চলে যাক, ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাক
যোগাযোগের সমস্ত নদী-রেললাইন-মেঠোপথ
পরিবার নিয়ে ঘরে আবদ্ধ সুখের মূল্যমান
তাদের নিকট যেনো সবচেয়ে বেশি।

পথের এমন ভাষা অচেনা ঠেকেছে
সব পথিকের, যারা যারা মাসের বাজার করে,
কিম্বা যারা দিন আনে দিন খায়, সকলের কাছে।
চিরকাল মানুষ জেনেছে তারা পথের সৃজন করে,
পথিক নিজের প্রয়োজনে একেছে পথের রেখা।
পথ যখন নিজের মতো এলোমেলো ছড়িয়েছে

প্যাট্রিয়ার্ক

[উপলক্ষ্য পেলেই কবিতা বেজে ওঠে। কেবল অ্যালিগরীগুলো সাজিয়ে সাজিয়ে সময় কাটানো অথবা সময়কে কেটে অসময়ের সাইরেন বাজাতে উৎসুক হয়ে পড়ে সেল্ফ, স্রেফ কবিতার শব্দ বাক্যে। আমি এই কবিতা উগড়াইলাম জুডিথ বাটলারের পোস্ট স্ট্রাকচারাল এনালিসিস জেন্ডার ট্রাবল বইটা পড়তে পড়তে। অগাস্ট মাস এলেই মনে পড়ে একদিন নারীর অধিকার আদায়ে সোচ্চার ছিলাম ভীষণ। মনে পড়ে শ্লোগানে শ্লোগানে মুষ্টিবদ্ধ ছিলাম পথের প্রান্তরে...]


পিতা তোমার অভ্যাসে আমি কেমন ডুবেছি দেখো
আমিও পুরুষ হয়ে অধঃস্তন করেছি নারীর মূদ্রালেখ্য;

খুঁজেছি নধর ঠোট
ভেজা ঠোটে এঁকেছি অনেক আঁকাবাঁকা
খেলুড়ে চুম্বন, তবু
তৃষ্ণা মেটে নাই বেলা-অবেলায়।
আহা! স্বপ্ন-স্বপ্ন ফ্যান্টাসীতে আমি
শরীরের চড়াই অথবা উৎরাই পেরিয়ে
পৌছে গেছি পুরুষালি ত্যাগের মহিমা
মেনে, কিম্বা কখনো না মেনে।

করপুটে কোমল পৃথিবী

ঢাকাবাসী-আদিবাসী-অভিবাসী আর বীনবাঁশির তত্ত্ব: যেদিক চাইবেন তিনি, বিভ্রান্ত ইদুরের দল সেদিকেই ঝাপ দিবে

মাঝে মাঝে এক অযৌক্তিক অহম তৈরী হয়, এই শহরটারে মনে হয় একেবারে নিজের আর যারা অভিবাসী হইছে বিবিধ কারনে তাদের অসহনীয় লাগতে থাকে। মনে হয় এই শহরের শরীরে তারা আছে জীবানুর মতো, অনাহুত, দখলদারী মনোবৃত্তিতে। আমার মনে হইতে থাকে এই শহরটারে ভালোবাইসা জীবনের ৪০টা শরীরি বছর কাটাইয়া দিছি, তারো আগে আরো এক-দেড়শ বছর জেনেটিক্যালি এই শহরেই ছিলাম আমি। এই রকম মনে হওয়াতে অপরাধবোধ তৈরী হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিলো, একবিংশ শতকের উত্তরাধুনিক দুনিয়ায় একটা শহর নিয়া এমন জাত্যাভিমান বেশ বিব্রতকর। অথচ জানি গতো শতকের শেষভাগেও পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে অভিবাসীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হইছে। ফিজি, সিঙ্গাপুর, পাপুয়া নিউ গিনি...

বিড়ালের গলায় তবে ঘণ্টাটা বাঁধতেই হয়...

পুলিশ কোনো এককালে এই দেশে জনগণের সেবক ছিলো। বা একটা গল্পের শুরু হইতে পারে এক দেশে এক সৎ পুলিশ ছিলো। কালের প্রবাহে সততা আর পুলিশত্ব এই দুই বিশেষণ আর ক্রিয়া পদ যেনো আজ তেল আর জল। তারা একসাথে মিশে না। তাপমাত্রা বাড়লে ছিটকাইয়া উঠে। যারা কাছাকাছি থাকে তারা তেল কিম্বা জলের আক্রমণের শিকার হয়। শরীরে ফোষ্কা পড়ে। আমাদের প্রত্যাশা হইলো সততা আর পুলিশের কর্মকাণ্ড তার পুলিশত্ব এই দুইয়ের দা-নকুল সম্পর্কের দায়ে আমরা সামাজিক ফোষ্কা নিয়া ঘোরাফেরা করি। সেই ফোষ্কার কোনো প্রতিষেধক নাই। ধীরে ধীরে আমরা মাইনা নিতে শুরু করি, পুলিশ মানে সমাজের সেই ক্ষমতার অপব্যবহারকারী অংশ যারা আমাদের আরোপ কইরা দেয়া চাওয়া-পাওয়া দিয়া চলে না। তাদের সামাজিক উপস্থিতি কেবল সহজ উপায়ে ধনী হইবার জন্য। পুলিশের আত্মীয়-স্বজনরাও এই সমাজে নিরাপদ থাকে। অপরাধ আর অপরাধীরে নিষ্কণ্টক করবার জন্যই এখন প্রত্যেক ঘরে ঘরে একজন কইরা পুলিশ জন্ম দিবার শপথ ন

মরণরে তুহু মম শ্যাম সমান...

তুমি যেভাবেই চলো, যতো সাবধানে;
মৃত্যু এসে দাঁড়াবে তোমার পাশে,
ঘাড় ফেরাতেই মৃত্যুর মুখশ্রী তোমার চোখের
দোড়গোড়ায় নাড়াবে মৃত্যুময়তারে।

বর্ষা চলে গেছে, তবু বর্ষণ থামে না
এখন বৃষ্টিতে ভিজে রোমান্টিক হতে
ইচ্ছা করেনা একেবারেই,
বন্ধ কাঁচের জানালা বরং অনেক
আবেগময়তা আঁকে শরীরে শরীরে
সেখানে যেমন ঠিকড়ায় রোদ্দুর
তেমনি আঁধার একেছে স্থিরতা...
কেবল জলের ঘ্রাণহীন নীরবতা
মৃত্যুর মতোন তারে আকড়ে থাকে
বিলাসী বিশ্বাসে।

বালুকনা নিয়মমতো স্ফটিক স্বচ্ছতায়
পাল্টে যায়, তার ইতিহাসে মৃত্যু
না লেখা হলেও, কাঁচ বলে আমরা
আসলে জল-রোদ্দুর-আঁধারের সাথে
তার পরকাল দেখি; মৃত্যু মানে দেহান্তরে যাওয়া
মৃত্যু মানে আড়ালের কাহিনী রচনা।

বৃষ্টি বলে বেরিয়ে পড়ি না
বৃষ্টি বলে কাঁচের এপাশে
অসহায় রূপকল্প আঁকি
জীবন অথবা জীবনের মতো মায়া,

আর সেসময় কিছু মানুষ, যাদের

রাত পোহালেই মৃত্যু এসে দাঁড়ায় চৌকাঠে

এক.
রাত শান্তিময়।
সময়কে ছেড়ে দিলে সেও পৌছে যায়
রাতের গহ্বরে, গহীন জঠরে।
রাতের পরিধী জুড়ে ঘুম
রাতের ভেতরে সুনসান
রাতের অন্তরে প্রিয়তমা,
ওম!

দুই.
শান্তির শুলুকে যখন তোমার পেছন পেছন ঘুরছি,
তখন তখন চোরাচোখে রাতের শরীর দেখা,
রাতের শরীরে ঘাম;
রাতের শরীরে ঘ্রাণ
রাতের শরীরে প্রেম
রাত আর শরীরের গল্প এভাবে একক হয়ে যায়।
শরীরের সব কাহিনী রাতের...শরীর হয়তোবা
শরীর হয়েছে রাতের ছোঁয়ায়।

তিন
ভোর রাতে বেজেছে সাইরেন
অনেকে হয়তো স্বপ্নের নাগাল থেকে
যাবে কাজের সন্ধানে।
রাত মানে আপন চৌহদ্দিময়
গোনাগুনতি, জাল বোনা;
মাছ ধরতে যাবো মাঝরাতে, ঢেউয়ে ঢেউয়ে
উলুখড় ভেসে যায়...তাহাদের খোঁজ কে রেখেছে
কোনোকালে।
কেবল রাতের কাছে তারা দামী,
রাতের শরীর ভেদ করে জাল ছুড়ে দিলে
উলুখড় জড়ানো মাছেরা তাকায় করুণ চোখে।

এরচে' মরে যাওয়া ভালো, রাতের আঁধারে চোখে
সংশয়ী শব্দেরা ভীড় করে, কেমন ভাষাহীন

এই পোস্ট কেবল মাসুম ভাইয়ের জন্য...

শওকত হোসেন মাসুম। একজন ব্লগার কিম্বা একজন সাংবাদিক হিসাবে উনারে যতোটা পছন্দ করি তার চাইতে অনেক অনেক বেশি পছন্দ করি একজন মানুষ হিসাবে। অনেকরেই দেখি উনারে নিয়মিত টেলিভিশনে দেইখা বেশ আহ্লাদিত হইয়া যাইতে। একজন সাংবাদিক, একজন ব্লগার হওয়ার পাশাপাশি উনি সবার কাছে একজন টিভি ব্যক্তিত্য হিসাবেও অ্যাপিয়ার করেন। কিন্তু আমি কষ্ট কইরা রাত জাইগা সংবাদপত্র বিশ্লেষণ শোনার আগ্রহটা কখনোই পোষণ করি নাই। মাসুম ভাই কখনোই আমার কাছে বৃহৎ মাপের কোনো ব্যক্তিত্য হিসাবে প্রতিভাত হন নাই।

বয়সে আমার চাইতে উনি কতো বড় হইতে পারেন? সেইদিন এক কাছের মানুষ উনার বয়স আন্দাজ করতে গিয়া কইলো, "উনি তোমার সমান বা একবছরের ছোট হইতে পারেন।" আমি সাথে সাথে তুমুল প্রতিবাদ জানাইলাম। কারণ মাসুম ভাই আমার ছয় বছর আগে এসএসসি পাস করছেন। বয়সে নিদেন পক্ষে আমার চাইতে ৫/৬ বছরের বড় হইবেন।

নৈতিকতা বিষয়ক কিছু এলোমেলো ভাবনা...

একবার হযরত মুহাম্মদের কাছে তার এক উম্মত পুত্রের চিনি প্রীতি বিষয়ে অভিযোগ নিয়া আসলেন। পুত্র চিনি খাইয়া সব উড়াইয়া ফেলতেছে এমনকি পিপীলিকারাও নষ্ট করবার অধিকার পাইতেছে না। মুহাম্মদ পুরা অভিযোগটা শুনলেন, তারপর তাকে এক সপ্তাহ পর পুত্রকে নিয়া আসতে বললেন। এক সপ্তাহ পর পুত্র সহ উম্মত আবারো হযরতের নিকটে যাওনের পর তিনি তৎক্ষণাৎ পূত্রকে অধিক চিনি খাওয়ার কুফল বুঝাইয়া দিলেন। উম্মত এবং তার পুত্র উভয়েই খুশী মনে হুজুরের বিশ্লেষণে-ব্যবস্থা মাইনা নিলো। সবশেষে উম্মত ঠিক বিদায় নেওয়ার সময় হযরত মুহাম্মদরে জিজ্ঞাসিলেন এই সামান্য নিদানে হুজুর কেনো এক সপ্তাহ সময় নিলেন? হযরত স্মিত হাইসা জবাব দিলেন, তার নিজেরো চিনির প্রতি আসক্তি ছিলো এই এক হপ্তা তিনি নিজের অভ্যাস পরিবর্তন করছেন। অন্যরে উপদেশ দেওয়ার আগে তিনি নিজে আগে বদভ্যাস ত্যাগ করছেন।

বোতাম সংস্কৃতির বৈষম্য অথবা নারীর চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ্য বিষয়ে কিছু ভাবনা...

ইন্টারভিউ বোর্ডে শার্টের দুইটা বোতাম খোলা রাইখা গেলো একজন ছেলে আর একজন মেয়ে। মেয়েটার চাকরী হইলো ছেলেটার হইলো না।

নিরীহ ভঙ্গীতে উপস্থাপিত একটা গল্প। প্রথমবার যখন পড়ছি আমি মজাটা ধইরা উঠতে পারি নাই। আমার প্রথম পাঠে বোতাম খোলা রাখার সিগনিফিকেন্সটা শুরুতেই কেনো জানি ধরা দেয় নাই। সম্ভবতঃ উপস্থাপন ভঙ্গীর সরলতা শুরুতেই গল্পের উদ্দেশ্যটারে বুঝতে দেয় না। গল্পটার গল্প হইয়া উঠবার আগে পাঠকের জন্য একটা ধাঁধাঁ তৈরী করে। পাঠকের দায়িত্ব এই অকথিত ধাঁধাঁময় বাস্তবতারে বুইঝা নেয়া। একজন পুরুষের ক্ষেত্রে শার্টের বোতাম খোলা রাখা আর একজন নারীর বেলায় বোতাম খোলা রাখার অর্থ যে এক না সেই বিষয়ক প্রচলিত বিবেচনারে ইঙ্গিত করা হইছে দুই লাইনের ধাঁধাঁময় গল্পে।

রহস্যময়তা আর আমার মা বিষয়ক কবিতা...

শৈশবে আমার মা কবুতর পুষতেন। ছোট ছোট ঘুলঘুলিময় খোপে হরেক রকম কবুতর। তাদের গায়ের রঙে, শরীরের আয়তনে, চোখের সম্মোহনিতে নাম পাল্টে যেতো। আমার মা সেইসব নামের আড়ালে নিজেকে আবদ্ধ রেখে খুঁজতেন রহস্যরে। তার একতালিতে উড়েছে রহস্যরা, আরেক তালিতে ফিরে আসতো রহস্য গাঁথা।

একজোড়া কবুতর ছিলো যারা লুটে আনতো অন্য কবুতর পাল। ওপিয়াম রসে নিমগ্ন শিরাজী কবুতর জোড়া নারী ও পুরুষ ভেদে ঠুকরে দিতো চোখে...অন্ধপ্রেমে তারা পিছু নিয়ে আমার মায়ের ঘুলঘুলিতে ঠাই নিতে এসেছে তখন। এক যোগ এক করে এভাবে রহস্যময়তায় বেড়েছে কবুতরের পাল।

কবুতর রহস্যে হারিয়ে যাওয়া মা আমার, তালি বাজাতো অন্তর নিঃসৃত আবেগে...উড়ে যেতো কবুতর। আবার সময় গেলে ঠিক ফিরে আসতো আপন খোপে। আমার মায়ের কাছে এই ফিরে আসার কোনোই অর্থ ছিলো না কখনো...

মাতৃত্বের দায়িত্ব নাকি দায়িত্বের মাতৃত্ব?

শেষ বয়সে আমার সংগ্রামী স্বভাবের নানী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। প্রায় শয্যাশায়ী অবস্থায় একবার তিনি হঠাৎ কইরা নিখোঁজ হন। প্রায় ঘণ্টা তিনেক পরে তার সন্ধান মিলে বাড়ির পেছনের তিড়তিড় করে বহমান বুড়িগঙ্গার ছোট্ট শাখাটার পারে। অর্ধনগ্ন অবস্থায় হাটু গাইড়া সে বেলে মাটি মাখতেছিলো সারা শরীরের। সেইখান থেইকা আবার তারে ঘরে ফিরাইয়া আননের সময় তার তারস্বরে চিৎকার আমার কৈশোর প্রাণে কেমন স্তব্ধতা মাখছিলো...সেই অনুভূতির কথা মনে হইলে আমি আজো শিউড়ে উঠি। বড় মা মানে নানার মা'ও তার মৃত্যুর আগে আগে কেমন উদ্ভট আচরণ করতো! একেবারেই বালকবেলার স্মৃতি হিসাবে একদিন সারাদিন বিছানায় শুইয়া গোঙাইতে থাকা বড় মা'রে দরজার চৌকাঠ ধইরা দাঁড়াইতে দেইখা আমি তব্ধা খাইছিলাম মনে পড়ে। বড় মা'র গায়ে কোনো কাপড় ছিলো না...

চোখে নিয়ে স্বপ্ন আর বুকে নিয়ে অনেক অনেক কথা, আমার বয়স বাড়ে, আমি বাড়ি না...

শৈশবে টিচার জিগাইলো বড় হইলে কে কী হইতে চাও? তখনো আমি আসলে জানতাম না আমি কী হইতে চাই, তাই বেশিরভাগ বন্ধুর জবাব অনুসরণ কইরা বলছিলাম পাইলট হবো টীচার! পাইলট হইতে চাওয়াটা মনে হয় তখনকার পোলাপাইনের কাছে ফ্যাশনের মতোন ছিলো। আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখতো সেই আমলের শিশুরা...তখনো আমার তেমন কোনো স্বপ্ন তৈরী না হইলেও আমিও পাইলট হইলাম। কিন্তু আসলে তখন থাকতাম একেবারেই নিজের ভেতর। একটা ছোট্ট নিজের রাজ্য ছিলো, সমব্রানিয়া। সেই রাজ্যের ত্রাতা ছিলাম আমি।

তাহের পূত্রের দণ্ড মওকুফ একটা স্বাভাবিক আওয়ামি পদক্ষেপ...

জীবনে একবার আমি লক্ষীপুর গেছিলাম। তখন সক্রিয় রাজনীতি করি। সংগঠনের একটা শিক্ষানীতি বিষয়ক প্রকাশনা বিক্রি ছিলো উদ্দেশ্য। চারদিনের সফরে লক্ষীপুরের চারটা থানায় প্রাক্তন বামদের সাথে দেখা হবে এইরকম উত্তেজনা তৈরী হইতেছিলো। বাংলাদেশের বাম আন্দোলনের ইতিহাসে লক্ষীপুরে জন্ম নেয়া সংগঠকদের বিশাল ভূমিকা ঐতিহাসিকভাবেই জানা ছিলো। কমরেড তোয়াহা, আ.স.ম আব্দুর রব, দিলীপ বড়ুয়া এমন অনেকেরই রাজনৈতিক সূচনা লক্ষীপুরের মাটিতেই হইছিলো। ফেনী থেইকা দুপুরের দিকে রওনা দিয়া যখন লক্ষীপুরে পৌছাইলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা। আমার হাতে কেবল তিনটা যোগাযোগের ঠিকানা, যাদের সাথে দেখা কইরা আমার রাতের থাকা-খাওয়া আর পরবর্তী দিনের পরিকল্পণা করতে হইবো। শহরে ঢোকার মুখেই বাস স্ট্যান্ড। ফেনীর নিখিলদা আমারে ছোট শহরের ম্যাপটা ভালো মতোই বুঝাইয়া দিছেন। আর সেই মতোই হাটতে শুরু করলাম।

মৃত্যু বিষয়ক উপলব্ধি অথবা একটি মৃত্যু বিষয়ক উপপাদ্য

অপঘাতে মৃত্যু সুখের, প্রতিশোধের মৃত্যু বিস্ময়ের

আমাকে না জানিয়ে চোখ খুবলে নিলে,
পরদিনও আকাশ দেখতে চাইবো,
আমার আকাশ তখন ধারণ করবে কৃষ্ণবর্ণ,
অথচ জানবোই না আমার পরিচিত চোখ
এখন এলিয়ে পড়ে আছে তোমার ব্যালকনিতে...

আমি তো আসলে জানতে চাই...
অন্ধ হওয়ার আগে আমার চোখের আর্তি
তোমাকে আনন্দ দেবে,
আমি স্মৃতির বিরহে কাতর তাকাবো
অথচ তখন দৃষ্টিটাই নেই আমার,
দেখতে না পেলে অক্ষিকোটরের কোনো মূল্য নেই।

একটা সাদা দেয়ালের শান্ত গায়ে
লিখে রাখি জীবনের উপপাদ্য
মৃত্যু + অভিজ্ঞতা = ০ (শূন্য)

স্মৃতি আর বর্তমান বিষয়ক কবিতা

সেই শহরের বালুকনা
ইট-কাঠ-লাবণ্য-বিনয় কিম্বা সমর্পণ
সব আমার নিকটাত্মীয় মনে হয়।
সেইখানে যা কিছু রোপিত নিয়মের
অথবা অনিয়মের শষ্যদানা
তার বেড়ে ওঠায় দেখেছি
আবেগের প্রজাপতি খেলা করে।

সেই শহরে নৈতিকতার সীমারেখা নাই
সেই শহরে আঁধার কিম্বা আলোকের বিভাজন
নাই; যা কিছু জেনেছি ভালো, সব
সেই শহর সাজায় তার শরীরের বাঁকে।

একান্ত বাধিত বলে তোমাদের শহরে রয়েছি,
সময়ক্ষেপন করি ফিরে যাবো পুনরায়।
অন্তরাল আর অন্তরায় ভেঙে দিয়ে
তুমুল গতির ঝলকানিতে-কারসাজিতে,
এই শহরের মৃত্যু হবে এক নিমিষেই।

সেই শহরের সব আমার ভীষণ চেনা
চোখ বুজে বলে দিতে পারি
ঠিক কতোদূর গেলে মিলে যাবে
স্বপ্নের পাজল, অনৈতিক ভালোবাসা।
সেই শহরের হৃৎপিণ্ড ঠিক কতোবার টিক টিক
করে, সেই শহরের ইস্টিশানে সময়ের রেলগাড়ি
সন্ধ্যা নামবার আগেই কেমন করে
মিটারগেজ অথবা ব্রডগেজ ছেড়ে সুর্যাস্ত দেখতে
চলে যায় তার সব জানি...