ছোট্ট একটি অনুরোধ
চিঠিটা তার পকেটে ছিল,
ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা।
সময়কালটা ঠিক মনে নেই, আমার ফেলে আসা বালক বেলার কোন এক সময় প্রথম পড়েছিলাম কবিতাটি। অসম্ভব প্রিয় একটা কবিতা। আর এই লাইন দু’টি সেই সময় থেকেই মনে গেঁথে যায় গভীরভাবে। ছোট দু’টি লাইন কিন্তু কি বিশাল ব্যাপ্তি! লাইন দু’টির কথা ভাবলেই নিমেষেই মনে ভেসে ওঠে কবিতাটি আর সেইসাথে একাত্তরের দৃশ্যপট! ছেলের জন্য মায়ের অধীর প্রতীক্ষা, কবে ফিরবে খোকা!
একাত্তরে অনেক খোকাই আর ফেরেনি! অনেক মা ই চোখের জলে বুক ভাসিয়েছেন বাকীটা জীবন। তারপর, সেই শূন্য বুকেই হয়ত বেশীর ভাগ মা ই চলে গেছেন আজ অন্য ভুবনে। তাদের ত্যাগের বিনিময়ে আজ আমরা এই স্বাধীন বাংলায় বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। কিন্তু আমরা তাদের কি দিয়েছি?
যাদের কারণে জাতি হারিয়েছে তাদের সূর্য সন্তানদের, জাতিকে যারা মেধাশূন্য করার নীল নকশায় মেতেছিল, আজ তাদের বিচারের প্রশ্নে অনেক মানুষকেই দেখি দ্বিধান্বিত! খুব খারাপ লাগে, মনে প্রশ্ন জাগে এরা কি এ দেশের মানুষ? দেশের জন্য এদের মনে কি কোন ভালবাসা নেই? কি করে এরা এই ঘৃণ্য পশুদের পক্ষে কথা বলে!
যারা এখনো রাজাকারদের পক্ষে কথা বলছেন, যারা এখনো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে দ্বিধায় ভুগছেন তাদের প্রতি ছোট্ট একটি অনুরোধ-
-মুক্তিযুদ্ধে যে সন্তান তার পিতাকে হারিয়েছেন
-যে মা তার সন্তানকে হারিয়েছেন
-যে বোন তার ভাইকে হারিয়েছেন, অথবা
-যে ভাই তার বোনকে সর্বস্ব হারাতে দেখেছেন
শুধু একবার, একবার তাদের যে কারো জায়গায় নিজেকে দাঁড় করান, তারপর নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করুন- আপনি কি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান, না চান না ?
হে দ্বিধান্বিত জনতা, তোমরা জেগে ওঠো, জাতির মুক্তির প্রশ্নে এক হও, জাতির কলঙ্কমুক্তির মিছিলে শামিল হও। তাহলে কিছুটা হলেও অন্তত পূর্বপুরুষের ঋণ শোধের সুযোগ মিলবে...
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।
আমি বিচলিত স্নেহের কথা বলছি
গর্ভবতী বোনের মৃত্যুর কথা বলছি
ভাইয়ের যুদ্ধের কথা বলছি
আমি আমার ভালবাসার কথা বলছি।
উত্তাল শাহবাগে যখন চলছে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন, তারই এক ফাঁকে সবার অলক্ষ্যেই চলে গেল শ্রদ্ধেয় কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ’র জন্মদিন (৮ই ফেব্রুয়ারী)। দেরিতে হলেও প্রিয় কবিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।
শ্রদ্ধা জানাই কবি কে!
দেরিতে হলেও প্রিয় কবিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।
কবির জন্য শ্রদ্ধা।
লেখাটা ছোট হলেও অনেক ভাল লাগলো পড়তে।
শ্রদ্ধা জানাই কবি কে!
মন্তব্য করুন