কখুগ
১৯৭২ সালের ৪ঠা জুন নগর দর্পনের পাদটিকায় আহমেদ হুমায়ুন লিখেছিলেন
ঘুর্ণিঝুড়ের পরে শোনা দুজন বিষন্ন মৌলবীর সংলাপঃ
১ম ব্যক্তিঃ হইব না, পথেঘাটে বেপর্দা, বেহায়া আওরত।
অশালীন পোশাকের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ অভিযান যে কোন মুহূর্তে নারী লাঞ্ছনার উপলক্ষ্যে পরিণত হওয়ার সম্ভবনা। এককালে আমাদের সমাজে বোরখার কালো মোড়ক ছিল শালীনতার অক্ষয় মোড়ক। ১৯৪৮ সালে রিকশায় পর্দা জড়িয়ে পথ না চলার দায়ে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন জনৈকা বোরখা-বিহীন তরুণী। আবার এই ঢাকা শহরেই ষাটের দশকে চোঙ্গা ট্রাউজার পরা আধুনিক তরুণ স্টেডিয়ামের কাছে জনতার ধাওয়া খেয়েছিলেন, কেন না উপস্থিত জনগণের কাছে চোঙা প্যান্ট অশালীন মনে হয়েছিলো।
সেই ঢাকা শহরে এখন পোশাক বিপ্লব ঘটেছে, দৈনিক পত্রিকার ফ্যাশন সাপ্লিমেন্টে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা সৈন্দর্য বিশারদ আর ট্রেন্ড সেটারদের বানী পাওয়া যায়। এবারের বৈশাখের রঙ, ফাল্গুনের রঙ, ভ্যালেন্টাইন ডে'র রঙ নিয়ে তারা আলোচনা করে। পূঁজিবাদী ব্যবস্থায় অনেক ধরণের মোহ চারপাশে ছড়িয়ে রাখতে হয় যেনো মানুষ নিজেকে নিয়েই ব্যতিব্যস্ত থাকে আর সামাজিক অন্ধকারগুলো তাদের চোখ এড়িয়ে যায়।
ধীরে ধীরে বাংলাদেশের তরুণদের পোশাক অনেকটাই ইউনিসেক্স হয়ে উঠেছে, তবে এমনি শো রুমে ঢুকলে বুঝা যায় ছেলে আর মেয়েদের পোশাক একই রকম হলেও সেখানে ছাঁটের পার্থক্য আছে।
পার্থক্য আছে আয়োজনেও। সামাজিক উপলক্ষ্যে ভিন্ন ভিন্ন পোশাকের আবির্ভাব ঘটেছে, শুক্রবার দুপুরের পাঞ্জাবীর সাথে সন্ধ্যার পার্টি শার্টের কোনো মিল নেই। বিভিন্ন দোকানে যেসব মেয়েদের টপস দেখি, তার চাহিদা আছে এমনটাই মনে হয় কিন্তু সেসব টপস পরা মেয়েদের আমি রাস্তায় দেখি না।
মন্তব্য করুন