৮০ এর ঢাকা ---- মধ্যবিত্তের চোখে (আপডেটেড)
যা হারিয়ে যায় জীবন থেকে তা চিরতরেই হারিয়ে যায়। এলেবেলে শৈশব, আড়ি দেয়া সেই সব বন্ধুরা, প্রেমময় সেইসব মুহূর্ত, প্রেমিকের ঘামে ভেজা উষ্ণ হাত, বলা না বলা কথার সেই ক্ষন, চিরচেনা শহর, ঝিম ধরা দুপুর, মন কেমন করা গোধূলি বেলা, মন উদাস করা বৃষ্টি, সূর্য তারা সব। পরে থাকে পাহাড়সম স্মৃতি আর এক বুক ব্যাথা। এক সময় জীবন হয়ে ওঠে স্মৃতির রেলগাড়ি।
আশির দশকে আমরা স্কুলে টিফিন খেতাম ক্রীমরোল, বাটারবন, বনরুটি ইত্যাদি। ক্রীমরোল খেতে খুবই ভালো ছিল। আমি এখনো ঢাকাতে গেলে ক্রীমরোল খাই। নিউমার্কেট আর পান্থ পথের সুইস বেকারীতে পাওয়া যায়। বাটারবন আমার কোনদিনও পছন্দ ছিল না, খাচ্ছি খাচ্ছি কিন্তু শেষ হতো না। রঙীন কাগজে মোড়া টফি পাওয়া যেতো যেটা সম্ভবত চকলেটের চেয়ে দাম বেশি ছিল। টফির গায়ে ঘর ঘর ডিজাইন কাটা থাকতো। আজ অব্ধি আমার প্রিয় মিল্ক ভিটা চকলেট দুধ আশিতেই বোধহয় প্রথম ঢাকার মার্কেটে আসে। মিমি চকলেট খুব খেতাম কিন্তু সেটা কি আশির দশকে প্রথম এসেছিলো? নিউমার্কেটে তখন একটা দুটো করে খাবারের দোকান খোলা হচ্ছিল। আজকের মতো এতো রোল আর বার্গার তখন ছিল না, তখন ছিল ফুচকা, চটপটি, লাচ্ছি, জিলিপী, পেষ্ট্রি জাতীয় খাবার আর কাঁচের বোতলের কোক। আশির দশকের মধ্যভাগে যোগ হয় পোলার আইসক্রীম। আমরা আগে যে চকবার খেতাম তার উন্নত মডেল। পোলারের আগে ছিল মিল্ক ভিটার ইগলু ।
তবে আশির দশকের প্রথম দিকে তিতাসের কিংবা ছায়ানীড়ের কেক, বিস্কিট, বাটার, আর শেষদিকে কুপারসের কেক ও স্ন্যাকস বেশ জনপ্রিয় ছিল। আর ছিল স্নো হোয়াইটের কোন আইসক্রীম। ভ্যানিলা আর চকলেট ফ্লেভারে পাওয়া যেতো। বাড়ি থেকে সব সময় ভেবে যেতাম যেভাবেই হোক দুটো খাবো, কিন্তু এতো বড়ো থাকতোযে একটাই শেষ করতে পারতাম না। কোন আইসক্রীম খেতে যাওয়া তখন এক ধরনের আউটিং এর মধ্যে পরতো। অনেক ধরনের আনন্দ জীবনে ছিল যেগুলো আজকের ছেলে পেলের কাছে হাস্যকর মনে হবে। রানী এলিজাবেথ একবার বাংলাদেশে আসবেন দুদিনের জন্য। তার খাবার আসবে সিঙ্গাপুর থেকে, আরো কি কি সব ব্যাপার। সারাক্ষন ইত্তেফাক পেপার আর টিভিতে এই নিয়ে খবর হচ্ছে। আমাদেরকে যে খবর আকর্ষিত করলো তাহলো রানী আসা উপলক্ষ্যে সমস্ত রাস্তা কার্পেটিং করা হবে। রাস্তা কার্পেটিং কি বস্তু তখন আমরা জানি না। কিন্তু রানী আসবেন। নার্সারী রাইমস মনে পরে সারাক্ষন, পুষি ক্যাট পুষি ক্যাট হোয়ার হ্যাভ ইউ বীন? আই হ্যাভ বীন টু লান্ডান টু লুক এট দা কুইন। আমাদের প্যাচরা প্যাচরীতে বিরক্ত হয়ে রাতের দশটায় আব্বু গাড়ি বের করে আমাদের নিয়ে এয়ারপোর্ট রওয়ানা হলেন কার্পেটিং দেখাতে। আমরা পুরো পরিবার মানে আম্মি, আব্বু, তখনের আমরা তিন ভাইবোন, সাথে আমার দুই খালাতো বোন এক খালাতো ভাই আর খালাম্মা। আমরা সবাই ঐ টয়োটা করোলা ডিলাক্সের মধ্যে কোথায় জায়গা হয়েছিলাম এখনো আমি তার হদিস পাই না। তখন নিরাপত্তা ব্যবস্থা আজকের মতো ছিল না। জীবন তখন খুবই সহজ সরল ছিল। আমরা সারা রাস্তা লাল কার্পেট খুঁজতে খুঁজতে এয়ারপোর্টের খুব কাছ থেকে মনঃক্ষুন্ন হয়ে ফিরে এলাম। যতোই আব্বু বুঝান আসলে কার্পেটিং মানে কি আমাদেরতো মন মানে না।
ইত্তেফাক তখন খুবই নামকরা প্রতাপশালী পত্রিকা ছিল। ছোটদের আকর্ষন ছিল দাদুভাইয়ের রোববারের পাতা। তবে সামরিকজান্তার বিপক্ষে প্রথম যায় যায় দিন বেশ চলেছিল। তখন যায় যায় দিন সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিল। শিশু বলে মাসিক একটি পত্রিকা বের হতো, নবারুন ছিল। আর ছিল সেবা প্রকাশনীর পেপারব্যাক রহস্য পত্রিকা, কিশোর পত্রিকা। মায়েদের ছিল বেগম নামের একটি মাসিক পত্রিকা। সিনেমা কিংবা অন্যান্য আইটেমের বাহার ছিল বিচিত্রা নামক সাপ্তাহিকটিতে। আশির দশকের শেষের দিকে আনন্দ বিচিত্রা বের হতো পাক্ষিক, তারা প্রথমে ফটো সুন্দরী আইডিয়াটি নিয়ে কাজ করেন, যাতে নুসরাত ইয়াসমিন টিসা প্রথম ফটো সুন্দরী হন। আমাদের হাতে হাতে ঘুরতো রুশ দেশের উপকথা, সিন্দাবাদের বানিজ্য যাত্রা, নন্টে ফন্টের কীর্তি টাইপ জিনিসগুলো। সাধারন জ্ঞান বাড়ানোর জন্য তখন বাচ্চাদের আর একটা জিনিস গিলানো হতো তার নাম ছিল বাংলাদেশ ও বিশ্বের ডায়েরী ভবেশ রায় সম্পাদিত। সাতটি আশ্চর্যের নাম, সাতটি উপমহাদেশ কিংবা পাঁচটি মহাসাগরের নাম এগুলো থাকতো সেই বইয়ে। উন্মাদ তখন খুবই জনপ্রিয় ছিল।
আশির দশক পুরোটাই ধরতে গেলে ছিল সামরিক শাসন। জিয়া – এরশাদ। যদিও আমি মাত্র দুই দশক বাংলাদেশের বাস করেছি। সামরিক আর অসামরিক শাসনের কোন তফাৎ আমার জীবন যাত্রায় আমি অনুভব করি নাই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাহা বাহান্ন তাহাই কেমন করে যেনো পয়ষট্টি হয়ে যায়। বিটিভিতে শুধু সেট বদলায়। প্রথম ছিল এরশাদ – রওশন সেট, তারপর এলো খালেদা সেট আবার হাসিনা সেট। তবে সেসময় বাংলাদেশে ইসলামীকরন প্রক্রিয়া শুরু হয়। সংবিধানে ইসলাম আসে, সাপ্তাহিক ছুটি শনি রবিবার বদলে শুক্রবার করা হয়। একটাই আনন্দ ছিল অল্প কিছুদিন পর পর হ্যা ভোট না ভোট, এই নির্বাচন সেই নির্বাচন হতো। আর সেই উপলক্ষ্যে টিভিতে সারা রাত ভরে ভালো ভালো অনুষ্ঠান হতো। তবে রাষ্ট্রক্ষমতায় এরশাদের স্বেচ্ছাচার শিশুকিশোরের মনেও প্রভাব রেখেছিলো। আশির দশকের দ্বিতীয়ার্ধে এরশাদবিরোধী মিছিল সংস্কৃতিতে সামিল হয়েছিলো গুডবয় ধরণের কিশোরতরুণও। সামরিক শাসকদের আরো একটি বড় অবদান ছিল সার্ক আর সাফ গেমস। সার্ক উপলক্ষ্যে ভালো ভালো ভিনদেশি সিনেমা দেখতে পেতাম, গান শুনতে পেতাম।
খেলাধূলার সামগ্রীতেও আসে তখন বেশ পরিবর্তন। তিতাসে তখন ছয়শ – আটশ টাকায় বড় বড় পুতুল পাওয়া যেতো। যার মুখ থেকে চুষনী বের করে নিলে ওয়া ওয়া শব্দে কাঁদতো সেই পুতুল। ব্যাটারীতে চলতো সেসব খেলনা। চাবি ঘুরালে বাঁদর ঢোল বাজায়, ট্রেনের লাইন পেতে ব্যাটারীতে চলা ট্রেন ইত্যাদি, গেমস ওয়াচ। যদিও ক্যারাম, লুডু তখনো প্রধান খেলনা। আবার অনেক বাড়িতেই তখন এক্যুরিয়াম পেতে মাছ পোষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু বস্তুবাদের চর্চা বোধহয় তখন থেকেই মধ্যবিত্তকে আক্রমন করছিলো। আবাহানী আর মোহামেডানের ফুটবল ছিল মধ্যবিত্তের একমাত্র বিলাস। বাড়িতে বাড়িতে পতাকা টানানো হতো দুদলের। সর্মথকদের মারামারি ঠেকাতে ষ্টেডিয়ামে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হতো। ঢাকায় ফাইন্যাল খেলার দিন সাজ সাজ রব পরে যেতো। সালাহউদ্দিন তখন তারকা, লাইফবয় সাবানের বিজ্ঞাপনে তাকে দেখা যেতো।। সবাইকে আমরা জিজ্ঞেস করতাম, আবাহানী না মোহামেডান?
আশির দশক থেকে আমরা আস্তে আস্তে স্মার্ট হতে শুরু করি। আমাদের গান বাজনায় আসে লক্ষ্যনীয় পরিবর্তন, সুরে ছন্দে গায়কীতে। বিদেশি সাংস্কৃতিকেও সাদরে আমন্ত্রন জানিয়ে ঘরে নিয়ে আসি। নাজিয়া জোহেবের ডিস্কো দিওয়ানে শুনিনি কিংবা মুগ্ধ হইনি এমন শিশু আমরা খুব কমই ছিলাম। স্কুলের পিকনিকে নাচিনি এই গানে সেই প্রজাতিও বোধহয় বিরল। এটা বোধহয় আশির প্রথম দিকের ঘটনা, মাঝের দিকে মাইকেল জ্যাকসন আসেন ঢাকায় তার জাষ্ট বীট ইট, জাষ্ট বীট ইট নিয়ে। তাতে ভাইয়াদের ব্রেক ড্যান্স করার কসরত দেখেছি। তবে সেই সময় শোয়েব – কুমার বিশ্বজিত, তপন চৌধুরী আর শুভ্র দেবও খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। আজ থেকে বারোটি বছর, তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে, মন শুধু মন ছুঁয়েছে কিংবা কৃষ্ণচূড়ার ছায়ে ছায়ে নির্জন পূর্নিমা রাতে ক্যাসেটে, টিভির ফিলারে সারাক্ষন বাজতো। আর অনেক মেয়েরাও তখন বোধ হয় রুনা লায়লাকে দেখে অনুপ্রাণিত হতেন, নেচে নেচে আধুনিক গান গাইতেন। পিলু মমতাজ আর সাবা পন্নীর কথা এখনো মনে পরে। একদিনতো চলে যাবো গানটি কিংবা বন্ধু আমার ওগো প্রিয় তখন বেশ জনপ্রিয় ছিল। সাবা পন্নী অবশ্য তার অত্যাধুনিক সাজের জন্যও আলোচনায় আসতেন বার বার। ফীডব্যাক, সোলস এদের কনসার্ট মধ্য আশির পরে অভিজাত হোটেলের বাইরে সাধারন জনগনের কাছে আসতে শুরু করলো বাংলা গানের মাধ্যমে। প্রথম দিকে তারা বোধহয় ইংরেজী গানই শুধু গাইতেন। তবে আশির শেষের দিকে ব্যান্ড সংগীতের চূড়ান্ত বিস্ফোরন ঘটে বাংলাদেশে। যার যা ছিল তাই নিয়েই নেমে পরেছিলেন ব্যান্ড বাজাতে।
আমাদের চলচিত্রও তখন পিছিয়ে নেই। সাদাকালোর পরিবর্তে রঙীন ছবি চলে তখন প্রেক্ষাগৃহে। শাবানা, ববিতাকে পাশ কাটিয়ে তখন আছেন চোখে তিন খানা পাপড়ি শুদ্ধ অঞ্জু ঘোষ, ফাইভ ষ্টার হোটেলের ওয়েটারদের ড্রেস পরা ওয়াসিম। আধুনিক ক্যারাটে নিয়ে রুবেল। গাড়ি পোড়ানো কিংবা ওপর থেকে লাফ দেয়া ইংলিশ টাইপ সিনেমার জন্য ববিতা, সোহেল রানা। মিষ্টি মেয়ে সুচরিতা কিংবা দুষ্ট ছেলে ইলিয়াস কাঞ্চন। সিনেমা দেখার জন্য তখন কতো কেঁদেছি কেটেছি। কিন্তু সবাই এক ধমক মেরে অঙ্ক বই কিংবা ইংলিশ গ্রামার বই হাতে ধরিয়ে দিয়েছে কিন্তু সিনেমা আজো দেখা হয়নি। একবার এক সিনেমা এলো দূরদেশ, সবাই দেখলো আর আমরা কতো কাঁদলাম কিন্তু হায়……। অনেক কিছু মনে করতে পারি না আজকাল তাই ভেবেছিলাম ছোটবেলার কথা এখন ততো মনে নেই কিন্তু অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম সিনেমা পার্টটা বেশ মনে আছে। বিটিভির ছায়াছন্দের কল্যানে গানগুলোতো দেখতাম। গোগ্রাসে গিলতাম। আজো মনে পড়ে চ্যালেঞ্জ নামে একটা সিনেমায় ম্যাক্সি পরা ববিতার হ্যাল্লো হ্যাল্লো হ্যাল্লো একটা গানের কথা, সুচুরিতার আঁখি মিলন সিনেমার আমার গরুর গাড়ি গানের কথা্……।। আশির শুরুর দিকে ছুটির ঘন্টা, পুরস্কার, এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী সিনেমাগুলো মধ্যবিত্ত দর্শকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। আর শেষের দিকে বেদের মেয়ে জ্যোস্না বোধহয় ব্যবসায়িক সাফল্যের সব রেকর্ড ভেঙ্গেছে।
ঢাকায় তখন আস্তে আস্তে মধ্যবিত্তের ড্রইং রুমে রঙীন টিভি, ভিসিআর ঢুকছে। বাংলা সিনেমা দেখতে যাওয়া নিষেধ বটে কিন্তু বাসায় হিন্দী ফ্লিম দেখা হচ্ছে। ওয়াসিম দেখা নিষেধ কিন্তু জিতেন্দ্র ওপেন। অঞ্জু ঘোষ থার্ড রেট কিন্তু জয়াপ্রদা বা শ্রীদেবী চালু। নাগ – নাগিনী টাইপ সিনেমা ভদ্রলোকেরা দেখে না কিন্তু নাগিন দেখে। মাওয়ালি আমার ছোটবেলায় দেখা প্রিয় সিনেমা ছিল। জিতু আঙ্কেল আমার প্রথম ক্রাশ। কতো টিফিনের ঝালমুড়ির পয়সা আমার গিয়েছে জিতু আঙ্কেলের ভিউকার্ডের পিছনে। জাষ্টিস চৌধুরী মামনিয়া পম পম গানটা আহা। কিংবা তোফা বা সংযোগ। এমনিতে সিনেমা দেখা নিষেধ হলেও গ্রাম থেকে কেউ আসলে কোন কাজে তারা শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানার সাথে সাথে একটু ভি।সি আরও দেখতে চাইতো। আর আমরা থাকতাম এই অপেক্ষায়। ভুজুং ভাজুং দিয়ে মাওয়ালি কিংবা ডিস্কো ড্যান্সার লাগিয়ে দিতাম। কিংবা কখনো কুলীর লাম্বুজী লাম্বুজী বলো টিংকুজী।
বিটিভিও তখন দারুন ফর্মে ছিল। দুর্দান্ত জনপ্রিয় সব ধারাবাহিক নাটক হতো টিভিতে প্রতি মংগলবার বাংলা খবরের পরে। ঢাকায় থাকি, সকাল সন্ধ্যা, এইসব দিনরাত্রি, বহুব্রীহি সবই আশির দশকের ফসল। হুমায়ূন আহমেদ নাট্যকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান তখন। আগে ঈদে ছিল সবসময় আমজাদ হোসেনের লেখা ও অভিনীত নাটক স্পেশাল। সে সিংহাসনও তার কাছ থেকে হুমায়ূন আহমেদ কেড়ে নেন। ঈদের নাটক চলে যায় হুমায়ূন আহমেদের দখলে। আমজাদ হোসেনের ভাড়ামি শেষ হয়ে শুরু হয় হুমায়ূন আহমেদের ভাড়ামি যদিও প্রথম দিকে প্রচন্ড জনপ্রিয় ছিলেন। কিন্তু একই অস্ত্র ব্যবহার করে করে যক্ষতিতা করে ছেড়েছেন তারা দর্শকদেরকে। সে সময় একটি এ্যাড হতো টিভিতে, যতো সম্ভব এ্যাডটি আফজাল হোসেনের বানানো ছিলো, পিয়ারসন্স এর এ্যাড। রু রু রু মিউজিকের তালে একদল সাদা ঘোড়া দৌড়াত। আজো স্মৃতিতে সেই ভালো লাগার রেশ রয়ে গেছে। ফজলে লোহানী পরিচালিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান “যদি কিছু মনে না করেন” এর হাত ধরে আসে “ইত্যাদি”। দ্যা ফল গাই, ম্যাকগাইভার, হার্ট টু হার্ট আর থান্ডার ক্যাটস ছিল আমাদের সেই সময়ের আরো কিছু উজ্জল মাইল ফলক। চার্লিস এঞ্জেলস হতো বোধহয় সোমবারে, আমরা অনেকেই তখন তাদের মতো নিজেদেরকে ভাবতে চাইতাম, সাব্রিনা, ফারাহ ফসেট, তাদের চুলের স্টাইল তখন ঢাকায় বেশ জনপ্রিয়। মুভি অফ দ্যা উইকে আসতো ভালো ভালো সব ইংরেজি সিনেমা। ছোটদের জন্য ডাবল ডেকার, থ্রী স্টুজেস, বিল কসবি শো ছিল দারুন উপভোগ্য। শুক্রবার সকালের ফ্যামিলি টাইজ ছিলো দুর্দান্ত আকর্ষণ। মাইকেল ডগলাস ছিলেন আকর্ষনের একটা উল্লেখযোগ্য উৎস। ডালাস সিরিজটি তখনকার টিভি দর্শকদের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিল।
ঢাকায় তখন মেয়েরা বেশ ফ্যাশন সচেতেন হয়ে উঠছেন। নতুন নতুন বেশ পার্লার খোলা হচ্ছে। উৎসবে হাল ফ্যাশনের চুল কাটা, চুল বাঁধা চলতো। রেখা তখন অনেক মেয়েদেরই হার্ট থ্রব। রেখার মতো জামা বানানো, চুল বাঁধা, হাতে চুড়ি পরা কিংবা জয়াপ্রদার ব্লাউজের ডিজাইন দিয়ে ব্লাউজ বানানো তখন ঢাকাতেও বেশ চালু ছিল। আশির দশকের শুরুতে ছেলেরা তখনও বেলবটম পরতো, মেয়েরা ছোট চিপা কামিজ বিশাল ঢোলা সালোয়ার। ছিয়াশি সাতাশির দিকে ব্যাগি স্টাইল গ্রাস করে নেয়া পুরো দেশ। ঢাকার পুরো বাজার ভারতীয় কাপড়ে তখন সয়লাব থাকা সত্বেও কিছু কিছু সাহসী দেশ প্রেমিক দেশীয় কাপড় ব্যবহার করে নিজেরা ফ্যাশন হাউজ করার উদ্যোগ নেন। মধ্য আশিতে পুরো ধানমন্ডি জুড়ে ইষ্ট ওয়েষ্ট ডিসপ্লে, পুষ্প, বো-মোনড, পার্বনী, বুননের পদচারনা ছিল যা দেশের অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখে সাথে সাথে দেশীয় ফ্যাশনকে মধ্যবিত্তের দরজায় আনে ও জনপ্রিয় করে তুলে। এ সমস্ত ফ্যাশন হাউজের মধ্যে আড়ং সবচেয়ে সফল আর সর্ববৃহৎ বলা চলে।
সমস্ত সাপ্তাহিক, পাক্ষিক পত্রিকায় তখন রুপচর্চার টিপস দেয়া শুরু হলো। আটা, ময়দা, বেসন, লেবু, মধু, টমেটো, শসা সব কিছু দেয়া থাকতো মুখে মাখার জন্য। চোখ বড় হলে আর চোখ ছোট হলে কোথা থেক কাজল আঁকতে হবে সেগুলোও লিখে দেয়া শুরু করলেন এক্সপার্টরা। সমস্ত ঢাকা জুড়ে তখন চার তলা, পাঁচতলা বাড়ি ওঠার হিড়িক লেগে গেলো। বাড়ির সামনের পিছনের বাগান ছেটে দিয়ে সেখানে গ্যারাজ তৈরী হলো। বিকেলে ছাঁদে বেড়ানোর কিংবা ঘুড়ি ওড়ানোর একটা রেওয়াজ হলো। যেটাকে অনেকে আবার অশুদ্ধ ভাষায় টাংকি নামেও ডেকে থাকেন। তখন টেলিফোনে কলার আইডির যন্ত্রনা ছিল না, মাঝেই মাঝেই ফোনের উৎপাত হতো। উৎপাত দু তরফ থেকেই হতো। এটা একটা চালু মজার গেম ছিল। বান্ধবীরা একসাথে হলেই আমরাও ফোন টেনে এনে হাবিজাবি সব নাম্বারে ফোন করে উল্টোপাল্টা সব কথা বলতাম। নিজেদের পছন্দের তারকা, খেলোয়ারদের রঙীন সব ভিউকার্ড জমানোর তখন রেওয়াজ ছিল। আজাদ প্রোডাক্টস এর ঈদকার্ড ও অন্যান্য গ্রীটিংস কার্ড তখন বাজারে বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বন্ধু বান্ধবকে কার্ড দেয়া তখন একটা ফ্যাশন হয়ে ওঠল।
তানবীরা
১২.১০.১০
কৃতজ্ঞতা ঃ নুশেরা তাজরিন
হায় হায় তণু আপা এইটা কী করলেন?!! এই দশক নিয়া তো আমার লেখার কথা
আপনার লেখার পরে আবার আমি লিখলে আবার না কপিরাইট মামলায় ফেঁসে যাই!
আপ্নে লেখেন, আমি ডিলিট করে দিবোনে
না আপা, আপনার লেখাই মুচমুচে চানাচুরের মতো সুস্বাদু হয়েছে। আমি যদি লিখি তাহলে লিখবো আশির দশকের বখাটেপনা
চেনা চেনা ছেলাবেলা দূরথেকে হাত নাড়লো,
যাবো বলে বাড়িয়েই দিয়েছিলাম পা....
লিখা শেষে জানা হয়ে গেলো....ছেলেবেলা অনেকদূরে ফেলে এসেছি....
চাইলেও যাওয়া হবেনা তার কাছে...
কিন্তু হুটহাট এভাবে মায়াময় শব্দের হাতধরে সেসব স্মৃতি এসে দাঁড়াবে বার বার!
অনেকককককককককককক ভালো লাগা জানাই তানুবু
এই যে সময়কে ধরলেন মুঠোর ভিতর, এ এক অসম্ভবকে সম্ভব করলেন। নাহলে কত শ'ত কথা চাপা পড়ে থাকত বুকের গভীরে।
আমরা এই ফেলে আসা সময়কে বন্দী করার কথা কখনো ভাবিনা বলে অসম্ভব বললাম।
বাতিঘর আর মেঘকে অনেক ধন্যবাদ তাদের সুন্দর মন্তব্যের জন্য
সত্তর দশকের মতো আশির দশেকও আমার অতি চেনা অতি প্রিয় দৃশ্যগুলো তুলে আনলেন। খাবারের নাম, খেলনার নাম, সিনেমার নাম, টিভি নাটক অনুষ্ঠানের নাম, পত্রিকার নাম, সবকিছু এক ঝলকে সামনে চলে এল। কেবল একটা পত্রিকার নাম বাদ গেছে যেটা আমার ভীষণ প্রিয় ছিল। কিশোর বাংলা। মনে আছে? চাদের হাট বলে একটা শিশু সংগঠন ছিল। কি রোমাঞ্চকর দিন। পুরোনো দিন মানেই রোমাঞ্চকর বোধহয়।
তয় অবাক হলাম, এত কিছু মনে রাখছেন কি করে? মেয়েদের 'ব্রেন' নাকি ছেলেদের চেয়ে মজবুত হয়। কথাটা মিথ্যে নয় দেখি।
বস তাতা আপনার মত বুইড়া না। কিশোর বাংলার সময় ও মনে হয় ওয়া ওয়া করত।
* আপনার = আপনার আমার
মনেতো সব ছিল না, তাই আপনাদের মন্তব্য থেকে যোগ করে দিয়েছি
এক পোস্টেই শেষ করে দিলেন? আমিতো ৪টা পোস্ট লিখে রাখছিলাম আরো বছর ২ আগে... দেয়া হয় নাই... সামুতে একবার শুরু করছিলাম... পরে মুইছা দিছি...
যাউকগা... আপনে শেষ করেন... মামুন ভাইয়ের পর আমি ধরমুনে
আপনার আর মামুন ভাইয়েরটা থেকে নিয়ে আমারটা ঠিক করবো, ক্লাশ নাইনের নোটের মতো
অনেক অনেক ভাল্লাগছে। আশির দশক আমার শৈশবকাল। খুব খুব মিস করি।
মুকুল যে, ভালোতো? ভালো লাগলো আমার বাড়ি আসলে দেখে।
দুস্তাইন
তোমার স্মৃতিশক্তি আর পর্যবেক্ষণশক্তি দুইই দুর্দান্ত। কীভাবে সাজিয়ে এনেছো এতোকিছু!
তবে পর্যবেক্ষণটা ঠিক মধ্যবিত্তের চোখে হয়নি, আমার বিবেচনায়, শিরোনামে বিশেষায়ণটা না থাকলেই বোধহয় যথাযথ হতো।
আমার জন্ম পঁচাত্তরে, একান্ত নিজস্ব স্মৃতি (বড়দের মুখে শোনা গল্প-নির্ভর না) আছে ঊনআশি থেকে। সে হিসেবে বলতে পারি, সত্তরের দশকের শেষ আর আশির দশকের শুরুর দিকটাতে নগরবাসী মধ্যবিত্তের জীবনযাপনের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য ছিলো। তখনকার প্রচ্ছন্ন অথবা প্রকাশ্য সামরিক শাসনের প্রভাব পড়েছিলো সর্বত্র। বাজারে কসকর বা ন্যায্যমূল্যের দোকান, রেশন দোকানের সামনে রেশন কার্ড হাতে নিয়ে দীর্ঘ লাইন, ঘরে কেরোসিনের স্টোভ, ড্রামবসানো রিকশাভ্যানে কেরোসিনের বেচাবিক্রি- এসবে অভ্যস্ত ছিলাম আমরা। তারপর এলো সীমিত সাপ্লাইয়ের এবং সিলিন্ডারে ভরা গ্যাসের চুলা। হিটারের কয়েল কিনে মাটির চুলায় বসিয়ে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া রীতিমতো কুটির শিল্পে পরিণত হয়েছিলো নাগরিক মধ্যবিত্তের জীবনে।
সাপ্তাহিক ছুটি শনি-রবি ছিলো, শুক্রবার জুমা পড়ার জন্য একটু বড় ব্রেক দেয়া হতো। জিয়া নাকি এরশাদ কে যেন শুক্রবার ছুটির আদেশ দেন।
মানসম্মত দৈনিক পত্রিকার বড়ই আকাল চলছিলো। দৈনিক বাংলা আর ইত্তেফাক, সঙ্গে সংবাদ। সাপ্তাহিক বিচিত্রা প্রবল প্রতাপে বিরাজিত, দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সাপ্তাহিক রোববার আর সচিত্র সন্ধানী। যায় যায় দিন তখনও পচে যায়নি, দফায় দফায় সামরিক শাসকের খড়্গে পড়ছিলো। সম্ভবত আটাশির দিকে মূলধারা নামে একটা পত্রিকা আসে, বেশ রুচিসম্মত। তরুণদের জন্য উন্মাদ আর রহস্য পত্রিকা ছিলো দারুণ মানসম্পন্ন আকর্ষণ, ছোটদের জন্য শিশু, কিশোর জগত, বিজ্ঞান সাময়িকী। আশির দশকের শেষের দিকে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র নাগরিক কিশোরদের পাঠাভ্যাস তৈরিতে অভাবিত ভূমিকা রাখে। তাদের পত্রিকা আসন্ন সম্ভাবনাময় ছিলো।
বিখ্যাত বক্সার মোহাম্মদ আলীর বাংলাদেশে আগমন ছিলো আশি সালের বিশাল ঘটনা। ঢাকা নগরীর সোনার চাবি ছাড়াও পুরানো ঢাকায় তাকে প্লটও উপহার দেয়া হয়েছিলো!
ফুটবলের প্রভাব ছিলো একচেটিয়া, আবাহনী মোহামেডানের পাড়াভার্সনের টুর্নামেন্ট্ও ব্যাপক জাঁকজমক করে চলতো। দরজির দোকানে নীলহলুদ আর সাদাকালো পতাকা সেলাই হতো নিয়মিত। নাগরিক বহুতলের ছাদ থেকে গ্রামেগঞ্জের হাটেমাঠে উড়তো সেসব।
নাগরিক মধ্যবিত্ত সত্তরের দশকেই সিনেমা হলে যাওয়া কমিয়ে দিয়েছিলো, আশির দশকে সূর্য দীঘল বাড়ী, ঘুড্ডি (এটা বড় পর্দায় দেখানো হয়েছিলো কিনা নিশ্চিত নই), সুরুজ মিয়া, ছুটির ঘন্টা, পুরস্কার, যৌথ প্রযোজনার দূরদেশ আর ক্যান্সার তহবিল গড়ার লক্ষ্যে বহিরাগত দর্দ কা রিস্তা (স্মিতা পাতিল, সুনীল দত্ত, বেবী খুশবু) ছাড়া আর কোন মুভি দেখতে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত আগ্রহী হয়েছিলো বলে মনে হয় না। ব্যতিক্রম দশকের শেষের দিকে মুক্তিপ্রাপ্ত বেদের মেয়ে জোসনার মিরাকল অথবা ফ্লুক।
টিভিতে রঙীন সম্প্রচার যুগের শুরু হয় আশি সাল থেকে। প্রথম জিঙ্গেলভিত্তিক বিজ্ঞাপনও আসে সে বছর। নাজমা জামানের পেপস ফ্লুরাইড টুথপেস্ট। এপির দশন চূর্ণ, মোজাহের ঔষধালয়ের দন্ত সংস্কার, সাধনা ঔষধালয়ের পুষ্পরাজ কেশতেল তার পরপরই আসে। আধুনিক বিজ্ঞাপনের সূচনা আফজালের হাতে, পিয়ারসন্স (পিয়েরে কার্ডিন না হে) নামের একটি পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন ছিলো সেগুলো। লিভার ব্রাদার্স লাক্স আর সানসিল্কে সীমাবদ্ধ ছিলো অনেকদিন। বিপরীতে মাল্টিদেশী ফাইসন্স, আর দেশী কোহিনূর কেমিক্যালের তিব্বত ঝড় তুলে গেছে স্পন্সরশিপে। সুমনা হক জিঙ্গেল গায়িকা হিসেবে একচেটিয়া রাজত্ব করেছেন বহু বছর। আফরোজা বানু বিরক্তির উদ্রেক করে গেছেন ত্রপা মজুমদার বিজ্ঞাপনের ভোকালে নাম লেখানো পর্যন্ত।
বিটিভির মুভি অফ দ্য উইকে দারুণ সব মুভি দেখাতেন মোস্তফা কামাল সৈয়দ। সন্ধ্যার দিকে কমেডি সিরিয়াল চলতো- ডাবল ডেকার, ডিফারেন্ট স্ট্রোক, বিউইচড, লুসি বল শো থেকে শেষে এসে বিল কসবি শো, পারফেক্ট স্ট্রেঞ্জারস। শুক্রবার সকালের ফ্যামিলি টাইজ ছিলো দুর্দান্ত আকর্ষণ। আশির দশকের গোড়া থেকেই ফ্যান্টাসি-নির্ভর সুপার হিরো-হিরোইনদের সিরিয়াল সমানে চলেছে বিটিভিতে, তবে ডাবিংয়ের যন্ত্রণা শুরু হয়নি তখনও। সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যান, বায়োনিক ওমেন, ওয়ান্ডার ওমেন, চার্লিজ অ্যাঞ্জেলস, ইনক্রেডিবল হাল্ক, দ্য ফল গাই, ম্যানিমেল, ম্যান ফ্রম আটলান্টিয়াস, কী না চলেছে! শেষদিকে এসেছিলো তুলনামূলকভাবে বাস্তবানুগ ম্যাকগাইভার। এরশাদ আর তার স্ত্রী রওশনের প্রতি প্রবল জনবিরক্তির অন্যতম উৎস ছিলো বিটিভিতে বিভিন্ন উছিলায় তাদের উপস্থিতি। আটটার সংবাদ ঢুকে যায় বাংলা বাগধারায়: ঠাট্টার সংবাদ হয়ে।
যে কোন নির্বাচন উপলক্ষে বিটিভিতে দেশী-বিদেশী মুভি, গানবাজনা (সত্তরের সেই সলিড গোল্ড কে না দেখেছে!) এসব দেখানোর হিড়িক পড়ে যেতো। বনিএমের গান ব্যাপক হিট করে। হানিফ সংকেত তখন নেহাত ভাঁড়ের ভূমিকায়, প্যারোডি করে ক্যাসেট বের করতেন।
সার্ক সম্মেলন আর সাফ গেমস ছিলো বিদেশী অনুষ্ঠান দেখার আরেক বড় উপলক্ষ। ৮৯ সালে বিটিভির রজত জয়ন্তীতে অনেক শিল্পী আসেন মূলত ভারত-পাকিস্তান থেকে, মূলত লিপসিঙ্ক করে যান, ঐ এক সংগ্রহ দিয়ে বিটিভি পরের দশ বছর ফিলার নিয়ে চিন্তা করেনি। সদ্য তরুণ পিয়ানোবাদক হিসেবে আদনান সামী খান (অনেক পরে মুম্বাইয়ের বিখ্যাত তারকা) আর আরেক পাকিস্তানী শিল্পী আলমগীর বাংলাদেশের তরুণীসমাজকে ব্যাপক আলোড়িত করতে সক্ষম হয়েছিলো
পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ স্থাপনের জন্য সাহায্য চেয়ে মাইকিং এর সূচনা ঘটে আশির দশকে। আজানে, মিলাদে ওরসে যান্ত্রিক যুগের প্রবেশ ঘটে।
ঢাকায় কিন্তু মিল্ক ভিটার ইগলু বা পোলারের আগে সনি আইসক্রিম ছিলো। প্লাস্টিকের কাপে কাঠের কাঠিসহ পাওয়া যেতো। চেরনোবিল দুর্ঘটনার পর ইউরোপ থেকে আসা দুধ খেতো না কেউ, সেগুলো সব পোলার আইসক্রিমের কাঁচামাল হিসেবে সদ্ব্যবহৃত হয়েছে। পোলার বাংলাদেশে প্লাস্টিকের ১ লিটার বক্স্রে ফ্লেভারড আইসক্রিম ছাড়াও টিনএইজারদের পছন্দের চকবারের পাইওনিয়ার, ঐ এক আইটেমেই বাজিমাত।
আশির দশকের শুরুতে ছেলেরা তখনও বেলবটম পরতো, মেয়েরা ছোট চিপা কামিজ বিশাল ঢোলা সালোয়ার। আস্তে আস্তে ছাঁটকাট কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। আবার ছিয়াশি সাতাশির দিকে ব্যাগি স্টাইল গ্রাস করে নেয়া পুরো দেশ। সাবা তানি তখনও সাবা পন্নী। ব্রুক শিল্ডের অনুকরণে মোটা ভ্রু, পাঙ্ক বালা, আবার নাকে নোলক- সবমিলে ফ্যাশন জগতে তার দারুণ প্রভাব ছিলো।
তরুণতরুণীরা সত্তরের দশকের ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপন আর পত্রমিতালীর চর্চা আশির দশকে অব্যহত রাখে, সঙ্গে যোগ হয় অ্যানালগ ফোনযুগের ক্রস কানেকশন আর ইচ্ছেমতো নম্বর ঘুরিয়ে "যদি লাইগা যায়"।
রাষ্ট্রক্ষমতায় এরশাদের স্বেচ্ছাচার শিশুকিশোরের মনেও প্রভাব রেখেছিলো। আশির দশকের দ্বিতীয়ার্ধে এরশাদবিরোধী মিছিল সংস্কৃতিতে সামিল হয়েছিলো গুডবয় ধরণের কিশোরতরুণও।
সব কিছু চৈলা আইছে
কতো কী বাদ গেলো! ভি্উকার্ড আর ঈদকার্ড কালচারের সূচনা, ললিপপে ছুটির ঘন্টার ব্র্যান্ডিং...
জীবন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া।
ফেয়ার অ্যান্ড লাভলীর উৎপাদন/বিজ্ঞাপন এবং আনন্দবিচিত্রা ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতা এক বীভতস ভোগবাদী এবং পণ্যায়ণী প্রবৃত্তির সূচনা করে আশির দশকে..
বিল কসবি শো, পারফেক্ট স্ট্রেঞ্জার্স এ দুইটা আর্লি নাইন্টিজের। এই খানে ইস্মিরিতি আপনের লগে প্রতারণা করছে আন্টি...
সখী,
মধ্যবিত্তদের জীবন বিচিত্র। কোথাও এরকমতো কোথাও সেরকম। আমার শর্ট কামিং হলো আমি বানিয়ে কিছু লিখতে পারি না, তাই আমি আমার পরিচিত মধ্যবিত্ত জগত থেকেই লিখলাম। আমিও তোমার কাছাকাছি সময়েই জন্মেছি। তাই তোমার মন্তব্য থেকে যা যা বাদ গেছে তা আপডেট করে দিয়েছি। আমিতো চিন্তা ভাবনা করে লিখতে পারি না জানোই, যা মনে আসে একটানে লিখে দিয়ে দেই। অবশ্য আমি জানতাম তোমরা যেগুলো বাদ গেছে, জানিয়ে দিবে আর আমি আপডেট করতে পারবো
তবে কিছু কিছু জিনিস প্রথমে ইচ্ছাকৃত বাদ দিয়েছিলাম, যেমন কাপড়ের ফ্যাশনের বিবরন পরে ভাবলাম থাক সংক্ষেপে কিছু দেই। পোষ্ট বেশি বড় হলে অনেকেই পড়তে চায় না, তাই। তবে আবাহানী - মোহামেডান, চার্লিস এঞ্জেলস, ফ্যামিলি টাইজ এগুলো কি করে ভুললাম বলতো। বয়স তাহলে সত্যিই হচ্ছে।
ভালো থেকো আর পরের পোষ্টেও ঠিক এরকম মন্তব্য আশা করবো। এটা হলো সত্যিকারের সইয়ের লক্ষন
এই দেখো, তোমার পর্যবেক্ষণ নিয়ে কোন কথা নেই, সেটা অতুলনীয়। লেখা আর বর্ণনা অনুযায়ী বোঝা গেলো তুমি নিজে মধ্যবিত্ত ছিলে না, তাই বলেছি। আর কিছু না!
রোবোট নানা তোমার কাজটা খুব পছন্দ করেছেন। এই বিষয়টা নাকি উনিও খুব ফিল করেন, লিখতে চেয়েছিলেন, তুমি লিখে ফেলায় "খেলুম না" বলে দিচ্ছেন (আমি স্বেচ্ছায় ডাকপিওনের ভূমিকা নিলাম )। উনার মতে সময়ের গ্যাপটা এমন: আমরা কেউ আমাদের ডায়রি পড়ে ফেললে রাগ করতাম, আর এখন ছেলেমেয়েরা তাদের ব্লগ কেউ না পড়লে মন খারাপ করে।
সই,
আমার কমেন্ট পড়ে কি তোমার মনে হলো আমি তোমাকে ভুল বুঝেছি? তাহলে দুঃখিত সই। আমার ধারনা আমি তোমার মন্তব্য ঠিকই ধরতে পেরেছিলামগো, আমি যা বলতে চাচ্ছিলাম সেটা হলো, কোনরকমে ঢাকার কেরোসিন পার্টটা আমি মিস করে ফেলেছি আর কী।
আমার লেখা বর্ননা সব নিয়ে আমার নিজেরই প্রচুর সন্দেহ আছে সই। কথা বলার কেউ নাই ব্লগের কল্যানে করে খাই আর কি। একটা কিছু নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখা।
আগামীতেও তোমার এমন গঠনমূলক মন্তব্য আশা করবো। দুইবার না ভেবে প্রথমবার তোমার মনে যা আসবে তাই লিখে দিবা। তবেই না "সই"।
রোবট নানাকে ঠিক চিনলাম না। ওনি আছেন আমরা বন্ধুতে? ওনিও লিখুক, একটা দশকতো কম না। কত কী বাদ দিয়ে লিখলাম। চকলেট হরলিক্স, মাইলো, নসিলা, ফুজি নুডুলস এগুলোও কিন্তু আশির কথা। আটাশির বন্যা, উড়িরচরের ঘূর্নি ঝড় সেগুলোও আসা দরকার ছিল। কিছু ভুলে গেছি আর কিছু লেখাটা ছোট রাখতে যেয়ে বাদ গেলো। শমী কায়সার, বিপাশা হায়াত, তৌকির, জাহিদ হাসান, মৌ।
ভালো থাকা হোক
এ যে দেখি নেখার মাঝে নেখা! সিনডা কি?
বাটার বন , ক্রিম রোল আহ। টিফিনে আম্মো কিন্যা খাইতাম।, দাম ছিল এক টাকা।। বড় লোকের পোলাপান সাথে মিরিন্ডা টিরিন্ডা কিনা খাইত। আমার খুব ইচ্ছা করত কিন্তু কোনদিন আর কিনা হয় নাই।
এখানে একটা মজা আছে। আমাদের সময় কলেজে কোক রেগুলার ব্যাপার। এটা আর তখন বড়লোকের ব্যাপার না। আমার মা রোজ পয়সা দিতে মোচরাতো। বাসায়তো খাস আবার রোজ কলেজে কি? অন্য বান্ধবীদেরও সেই অবস্থা। রোজ আমরা আগের দিনের কোকের পয়সা শোধ দিয়ে তওবা করতাম কোক খাবো না। আবার রোজ পরে যেয়ে বাকি খেয়ে আসতাম
আপনে ৭০ দশকেও স্কুলে পড়তেন, ৮০ দশকেও?
ওরে, এইটাতে এত ডিটেইলস আসছে, পড়তে পড়তে হারাই গেছিলাম, আমার সময়ের একটু পিছনে।
দারুন হৈছে কাকী।
আপনার লেখার হাতও আগের চাইতে অনেক আগাইছে।
আপনার লেখার হাতও আগের চাইতে অনেক আগাইছে।
দেইখো একদিন আমিও ভালো রাধুনী থুক্কু ভালো লেখনী হবো
ম্যানিমেল'এর কথা মনে করাইয়া দিলেন। শেষ দিকে ছবিটা ২০/২৫ মিনিট দেখাইতো মনে আছে। সেন্সর করতে করতে মনে হয় বিটিভিআলাগো জান বাইর হইয়া যাইতো।
এটা কি বস্তু ভাস্করদা, মনে করতে পারছি না
ওরে তনু আফা এমন বুইড়া হইছে যে ম্যানিমেল ভুইল্লা গেছে। ১৯৮৩ সালে এইটা বানানি হইলেও দেখানি হইছে ৯০ এর দিকে। মাইনষে খাউশ হইলেই জন্তু হইয়া যাইতো গো তনু আপা! সাপ হইয়া কাটত আবার ওঝা হইয়া ঝাড়ত
এতো পরে না, ৮৭র দিকেই দেখাইছে
সাইফ, যেখানে বিশ বছর ধরে ধূলা পরে যাচ্ছে তাতে কিছু ড্যামেজতো থাকবেই। স্মৃতির এই সেক্টরে হাত দেয়া হয়নি বহুদিন। এবার ঢাকা যেয়ে এতো দুর্দশা প্রানপ্রিয় ঢাকার না দেখলে হয়তো কোনদিন এধরনের কিছু লেখার কথা ভাবতামই না।
এখন একটু একটু মনে পড়ছে। নতুন জীবনের পিছনে এতো দৌড়েছি আর দৌড়াচ্ছি যে পুরনো জীবন ভুলেই গেছি।
তোমাকে আমার বাড়ি দেখে ভালো লাগলো
আপনে তো দেখি ম্যালা বুড়া ........ আমরা তো পিচ্চি পাচ্চা নাদান পুলাপান বয়স বারো কি তেরো ,,, রূপকথার মত লাগলো আপনের পুষ্ট
তোমার কমেন্ট দেইখা একটা উপমা না দিয়া পারলাম্না!
ছালুর উপমা বাধাই কইরা বিমারে গিফট করা হোক
অনেক দিন পর আপনার কাছে শিশু আর নবারুনের নাম শুনে বুঝলাম পত্রিকা দুইটার একমাত্র গ্রাহক আমিই ছিলাম না। আহা বিশ্বশিশু দিবস সংখ্যা বা ঈদ সংখ্যা শিশু বা নবারুন কি যে প্রিয় ছিলো...
বাংলাদেশ ও বিশ্বের ডায়েরী ভবেশ রায় সম্পাদিত। উফ ইয়া মোটা একটা বই। আমার পছন্দ ছিলো শেষের দিকে বিভিন্ন দেশের নাম আর রাজধানী আর মুদ্রার নাম থাকতো না? ঐ পার্টটা।
সাবা পন্নী না সাবা তানি? আমার যদ্দুর মনে পড়ে উনার নাম ছিলো সাবা তানি। আর একজন ছিলো। আজরা জেবীন। জাদুশিল্পী। মনে হয় একটা নাটকে অভিনয় করেছিলো। এরপর পেপারে খবর হিসেবে এসেছিল ছিন্তাইকারীর হাত থেকে কারাটে এপ্লাই করে বাঁচার জন্য। মেবি আহতও হয়েছিলো।
ইত্তেফাকে আমার প্রিয় ছিলো টারজান কমিক। আর প্রিয় ছিলো পেপারের গন্ধ। বাসায় পেপার আসলে অবধারিত ভাবে আমার হাতে সবার আগে দিতে হবে পেপারের গন্ধ নেবার জন্যে। দাদুভাইয়ের কচিকাঁচার আসর মনেহয় এখনো ইত্তেফাকে চলছে...
আজরা জেবিন!!!
আমার স্মৃতি শক্তি মারাত্মক!! আমারো মনে পড়ছে পুরা ঘটনাই, মায় কার লগে জানি আলাপ করছিলো!!
সাবাতানি, কপালে পট্টি বাইন্ধা গান করতো!!
ঝিলমিলঝিলমিল চিকিমিকি!!
সাবা প্রথমে বোধহয় পন্নী ছিলেন পরে তানি হন
টিভি তে আংশিক রঙীন কিংবা আংশিক রঙীন সিনেমার কথা বাদ পৈড়া গেছে।
টিভির কার্টুন আর ইংলিশ সিরিয়াল ছিলো আমাদের মহা বিনোদনের উৎস।
বাবুল বিস্কুট, ফুল বস্কুটের কথাও বাদ গেছে।
এই বিস্কুটের নাম জীবনেও শুনি নাই
খুব ভাল লাগলো, মন চলে গেল সুদূর অতীতে।
বাপরে আপনার ধৈর্যতো মারাত্মক-এই বিশাল লেখা শুধুমাত্র স্মৃতির উপর লেখা একটানা পড়ে গেলাম।ভাল লাগল-অসাধারণ।
সবারই দেখি নিজস্ব একটা দশক থাকে। আমার যেমন '৯০ এর দশক।।.
বড়ই স্মৃতিময়।
মারাত্নক হয়ছে।
লেখাটা দারুণ লাগলো। একদম সেরা মাপের স্মৃতিচারণ।
নবারুন পত্রিকার বেশ কিছু কপি আমিও দেখেছি অনেক পরে। রহস্য পত্রিকা যে কত বেশি জনপ্রিয় ছিলো সেটা বোঝাই যায়
ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে...
ঢাকায় আমি আসি ৯০ এর দিকে, এ সময়ের টুকু বলতে পারবো কিছুটা। তবে মফস্বলের মধ্যবিত্তদের সাথে ঢাকার মধ্যবিত্তদের মাঝে ফারাকটা মনে হয় বিশাল ছিলো না
অতিথি, আশফাকুর, তায়েফ, রাসেল, মাহমুদ, বৃত্তবন্দী, সুমন ভাই, শাওন সবাইকে অসংখ্য কৃতজ্ঞতা সহৃদয় মন্তব্যের জন্য
তানবীরা'পুর এই লেখাগুলো অদ্ভুত হচ্ছে। ভাললাগা জানিয়ে গেলাম।
মীরকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগা জানানোর জন্যে
আপনি আর নুশেরাপু মিলে আলোচনা করে পোস্ট দেন তাইলে একবারেই সব পড়া হবে
বুদ্ধিটা খুবই ভালো তানিম
তাতা, বিটিভিতে ফজলে লোহানী পরবর্তী যুগে একটা ভালো ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান হতো "কথার কথা"। আনিসুল হকের। ইত্যাদির আগে আগে বন্ধ হয়। সেখানে হানিফ সংকেত একটা রম্যরচনা পড়তেন। ঈদের আনন্দমেলায় আবেদ খান-সানজিদা খান- জুয়েল আইচরা আসতেন। প্রবাসী এক বাবা-মেয়ে জুটি ফান করতেন, অনেক ভাষার গানের স্টাইলে গান করতেন। গান কু্ইজ টাইপ কিছু অনুষ্ঠান খুব পপুলার ছিলো: "শিরোপা" নামে একটা অনেকদিন চলেছিলো। এরশাদ কাকুর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক টিভি নাটকে পাকিস্তান, রাজাকার এসব টার্মের বদলে হানাদার ইত্যাদি ব্যবহৃত হতো। তবে কাকুর ঘনিষ্ঠ একজন "দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া" নামের অনুষ্ঠান করতেন, চমতকারভাবে সারা দেশের পুরাকীর্তি তুলে ধরা হতো।
সই, টিভি দেখা ছাড়া আর কিছু কি করতা?
আনিসুল হককে আমার খুবই পছন্দ ছিল, হ্যান্ডসাম হাঙ্ক। এখন বুড়ো হয়ে গেছে
কথার কথা এর কথা তুমি বলাতে মনে পড়লগো।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়াটা আমিও দেখতাম। হীরামন ছিল একটা মনে আছে, লোক কাহিনী ভিত্তিক নাটক হতো যে।
৮০ এর দশকের সেরা জিনিষ ছিল টিভির নাটক। শঙ্খ নীল কারাগার, বরফ গলা নদী, ইডিয়েট, মুথরা রমনী বশিকরণ, রক্তের আঙ্গুর লতা-আরও কত কী। শাহজাদীর কাল নেকাব ছিল প্রথম রঙিন এ মাসের নাটক।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ছিল এনামুল হকের।
আর ছিল বায়োনিক ওম্যান, সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যান, ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড ওয়েস্ট।
ভোট হলে ২/৩ দিন ধরে টানা টিভি দেখা।
কতো কিছুই না মনে পড়ে।
বায়োনিক ওম্যান আর সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যান, ওয়ান্ডার ওম্যান এগুলো সত্তর এর দশকের ছিল না?
এই পোষ্ট আবার আপডেট করবো সব ইনফর্মেশন দিয়ে। এনসাইক্লোপেডিয়া হবে আশির দশকের
আচ্ছা লিটল হাউস অন দ্য প্রেইরী আর হাইওয়ে টু হেভেন এই দুইটা সিরিজের কথা কি সবাই ভুইলা গেছে?
(
ডালাস ও তো ভুলে গেছি (
আশির দশকে তো আমি মোটামুটি দুগ্ধপোষ্য, কিন্তু শেষের দিকের ব্যাপারস্যাপার গুলা মনে হয় কিছু আমরাও পাইসি... দারুণ লেখা তানবীরা'পু। ছোটবেলাটা চোখের সামনে চলে আসলো...
অসাধারণ এই লেখাটা পড়ে আমার একটা আইডিয়া কাজ করল --- রিমেক পোস্ট বলে একধরণের পোস্ট চালু করব । আমার মত অলসদের জন্য আইডিয়া অন্যরা বের করে দেবে , আমি জাস্ট আমার কথাগুলো বসিয়ে দেব । আপনার নব্বই দশকের অপেক্ষায় থাকলাম , কারণ আমার দেখা ঢাকার জন্ম ৯৫ এ
আনিকা আর মেহরাবকে ধন্যবাদ। নব্বই এর লেখা আপনাদের প্রত্যাশা পূরন করতে পারবে কি না জানি না তবে চেষ্টা করবো
অসাধারণ লেখা।আমি ৭০ অথবা ৮০'এর এই রুপ খুব বেশি দেখি নাই।যখন বুঝতে শিখলাম তখন ৮০ শেষ।তাই আপনার লেখা সময় টা পাই নাই।কিন্তু আপনার লেখা পরে মনে হলো টাইম মেশিনে আবার ওই সময়ে ফিরে গিয়েছি
প্রিয় তাতা, তোমার ৭০ এর দশকের লেখাটার প্রতি লাইনে লাইনে আমি আমার শৈশব খুঁজে পেয়েছি। আবার ৮০ এর দশকেও তাই। পুরো শৈশবটাকে এত অল্প কথায় কি করে মুঠোয় ভরলে ভেবে পাইনা।
আমযাদ হোসেনের ঈদ নাটকের সেই "টাকা দাও দুবাই যাব," আজও ভুলতে পারিনা। আচ্ছা আরেকটা ইংরেজী সিনেমা খুব ভালো লাগতো, ওটা কোন সময়ের? "হার্ট টু হার্ট?"
টিভিতে নার্গিস কিন্তু তখন বেশ জনপ্রিয় ছিলেন, তার গ্যাকোটাস সাবানের বিজ্ঞাপণটা দেখে তো- সেই রঙ্গীন মোড়কটার জন্য জীবনে প্রথম ও শেষ একটা সাবান চুরি করেছিলাম। সাবানটা ফেলে দিয়ে মোড়কটা রেখেছিলাম। তারপরই বোধ হ্য় এলো কসকো। সুচরিতা আর অঞ্জনাকে আমার খুব ভালো লাগত। পরেও সবাইকে কমবেশী দেখা গেছে, কিন্তু সুচরিতার খোঁজ একেবারেই জানিনা। টিভিতে জনপ্রিয় ছিলেন, লুতফুন্নাহার লতা, তারানা হালিম। আচ্ছা রঙ্গীন টিভি কখন এলো?
অনুমতি ছাড়াই তুমি বলে ফেললাম। ক্ষমা করো।
ভালো থেকো ভাই
আমি কি হাসিনা না খালেদা যে আমাকে "তুমি" বলতে অনুমতি লাগবে?
রঙীন টিভি আশির প্রথম দিকে এসেছে মনে হয়
OCEAN TV SERIAL
তাতাপু, আপনার এই পোষ্টগুলি বান্ধাইয়া রাখার মতো হচ্ছে। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। কত কি মিলে যায়!দারুণ পোষ্ট।
জয়ি, শরীর ভালো হয়েছে একটু? শরীর খারাপের বৃত্তান্ত জানিয়েই একখানা পোষ্ট দাও না হয়
Little House on the Prairie series one of my favorite series on that time...
এমন একটি চমৎকার লেখার জন্য তানবীরা আপুকে ধন্যবাদ।
আমার জন্ম ৮০ এর দশকের মাঝামাঝি। তখন মুখে মুখে আজরা জেবিন ও সাবাতানি'র কথা বেশ শুনতাম। তবে পুরো কাহিনী জানতাম না। তবে এতটুকু মনে পড়ে আজরা জেবিন একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন যেখানে উনার নাম ছিল "লিন্ডা"। আর একটি ম্যগাজিন অনুষ্ঠানেও উনি এসেছিলেন ও যাদু দেখিয়েছিলেন । আমার স্মৃতি শক্তি বেশ দুর্বল। কেউ কি একটু আজরা জেবিন ও সাবাতানি'র চেহারা, চালচলন ও কার্যক্রমের বর্ণনা দিবেন? তাহলে আমার সেই পুরোনো স্মৃতিগুলো রোমান্থন করতে পারতাম।
আশির দশকের প্রচণ্ড জনপ্রিয় হওয়া মডার্ন টকিং এর গান গুলির কথা কি সবাই ভুলে গেছে? ওই যে, 'ইউ মাই হার্ট, ইউ মাই সোল', 'শেরি শেরি লেডি'। তখন আরেক জন খুব জন প্রিয় পপ গায়িকা ছিলেন। পিলু মমতাজ। এ ছাড়া আশির একদম শেষদিকে মেয়েদের ফ্রক ডিজাইন এর জামাগুলো...।.
আশির দশকের প্রচণ্ড জনপ্রিয় হওয়া মডার্ন টকিং এর গান গুলির কথা কি সবাই ভুলে গেছে? ওই যে, 'ইউ মাই হার্ট, ইউ মাই সোল', 'শেরি শেরি লেডি'। তখন আরেক জন খুব জন প্রিয় পপ গায়িকা ছিলেন। পিলু মমতাজ। এ ছাড়া আশির একদম শেষদিকে মেয়েদের ফ্রক ডিজাইন এর জামাগুলো...।.
আশির দশকের প্রচণ্ড জনপ্রিয় হওয়া মডার্ন টকিং এর গান গুলির কথা কি সবাই ভুলে গেছে? ওই যে, 'ইউ মাই হার্ট, ইউ মাই সোল', 'শেরি শেরি লেডি'। তখন আরেক জন খুব জন প্রিয় পপ গায়িকা ছিলেন। পিলু মমতাজ। এ ছাড়া আশির একদম শেষদিকে মেয়েদের ফ্রক ডিজাইন এর জামাগুলো...।.
যেন ছোটবেলায় ফিরে গেলাম...খুব চমৎকার একটি লেখা...পড়ে খুব ভালো লাগল
মন্তব্য করুন