শিশুদের অবক্ষয়
এই লেখাটা শিশুদের নিয়ে হলেও আঠারোর নিচে যাদের বয়স, তাদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করা হলো।
১.
উপরের ডিসক্লেইমারটা লিখেই ভাবতে বসলাম, আঠারোর দাগটা কি আমরা আরেকটু নামিয়ে আনবো নাকি! আমাদের দেশে এখন স্কুলের ছেলেপেলেরা প্রেমের জন্য খুন করার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে দিয়েছে। আরো আছে এলাকায় প্রভাব বিস্তারে বড়দের মতো করেই লাঠি-সোটা হাতে মিছিলের উদাহরণ। তারপরেই আছে সামান্য মোবাইল নিয়ে কলহের পরিণামে সহপাঠীদের হাতে নিহত হয়েছে আরেক স্কুলছাত্র। উপরের তিনটা ঘটনা বাদেও সাম্প্রতিক সময়ে স্কুলের এক ছাত্রীর চোখে গুলি করে চোখটাই নষ্ট করে দিয়েছে আরেক বখাটে, সেও আবার স্কুল-ছাত্র!
একটু বয়স হলেই কিংবা একটু মুরুব্বী বনে গেলেই অনেকেই বলেন, "আমাদের সময় তো এরকম হইতো...আজকালকার পোলাপান..." --এই ধরণের আলগা মুরুব্বীপনা আমার খুবই বিরক্ত লাগে। তবে এবার কিছু একটা না বলে রাগ দমাতে পারছি না। উপরের উদাহরণ কয়টা স্পষ্টতই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের অবক্ষয়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অবক্ষয়ের মাত্রা বেড়েই চলছে। এ অবক্ষয় মাত্রা ছাড়িয়ে এখন এতোই ভয়াবহ যে শিশু শব্দের আগে 'নিষ্পাপ' বিশেষণটা আর বসানো যাবে কিনা সন্দেহ!
প্রশ্ন আসবেই, দোষটা কার?আসুন দেখি, খুঁজে পাই কিনা... ...
প্রেমের জন্য এবং সেই সাথে স্কুলের শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করা নিয়ে খুনের ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মন্তব্যঃ
বিদ্যালয়ের ছাত্ররা কেন এমন অমানবিক কাজ করল_জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা বেগম বলেন, 'আমার স্কুলের ছাত্ররা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, তা আমি জানি না। আর যদি তারা সেটা করেও থাকে, তা করেছে বিদ্যালয় কম্পাউন্ডের বাইরে। এর দায়দায়িত্ব আমার নয়।'
একই ঘটনায় এক অভিযুক্তের মায়ের প্রতিক্রিয়াঃ
গতকাল সন্ধ্যায় আত্মগোপনে থাকা এক ছাত্রের চান্দগাঁও এলাকার বাসায় যোগাযোগ করা হলে তার মা ফোন ধরেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আমার ছেলে ঢাকায় গেছে।’ এরপর তিনি ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
মোবাইলের জন্য খুনের ঘটনার খবরে অভিযুক্তদের পরিবারের প্রতিক্রিয়াঃ
এদিকে মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যার সঙ্গে স্বাধীনের বিরোধ দেখা দেয়, সেই রুবেলের বাবা আমিনুল ইসলাম হাসু দাবি করেন, তাঁর ছেলে খুনের ঘটনায় জড়িত নয়। তিনি গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মোবাইল ফোন সেট নিয়ে বিরোধের মীমাংসা অনেক আগেই হয়ে গেছে। ওই ঘটনার পর স্বাধীনের সঙ্গে আমার ছেলে চলাফেরা করত না। এ ছাড়া খুনের ঘটনার সময় সে বাসায় ঘুমিয়ে ছিল।' অন্যদিকে গ্রেপ্তার হওয়া মিরানের সৎ মা ফাহিমা জানান, মিরানের বাবা নুরুল ইসলাম ভৈরবে ব্যবসা করেন। ছেলেকে নিয়ে তিনি (ফাহিমা) জামালপুর শহরে থাকেন। আগে সে মাদকাসক্ত ছিল। তবে এখন সে আর নেশা করে না।
"পাখি শিকার করা ভাল না"--এরকম একটা নির্দোষ মন্তব্যের জবাবে "তাহলে তোরেই শিকার করি" বলে চোখে গুলি করে বসা বখাটেদের বাঁচাতে সমাজের হর্তা-কর্তাদের একশনঃ
মুন্সীরহাট ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম মোল্লা জানান, দুই পক্ষের হানাহানি বন্ধে এবং এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও পপির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিসের মাধ্যমে বখাটেদের তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের প্রশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বাকি খবর যে যার মতো করে পড়ে নিবেন। আমার যা বলার তা তো বললামই!
২.
গুগল রিডারে আমি বেশ সক্রিয়ভাবে ঘোরাঘুরি করি। রিকমেন্ডেড আইটেম দেখি। নানাপদের হাস্যরসমূলক সাইটগুলোর ফীড আমার যুক্ত করা। পরীক্ষার পড়ার মাঝে সিরিয়াস কিছু পড়তে চাই না বলেই ব্লগ থেকে দূরে দূরে থেকে বিভিন্ন সাইটে ঘুরে-ফিরে ছবি-টবি দেখা। ঘুরতে ঘুরতে একটা ছবি দেখলাম।
ছবিটা লিঙ্কে ক্লিক করে বড় করে দেখুন।
নিষ্পাপদর্শন একটা ছেলে ভিডিও চ্যাট করছে। প্রথম চ্যাটেই তার মায়ের বয়সী এক মেয়েকে বলছে স্তন দেখাতে! দ্বিতীয়টাতেও একই অবস্থা, সাথে সিনেমা কিংবা আশেপাশে দেখে শেখা গালাগালি তো আছেই! তিন নম্বরটা দেখে অনেকে বুঝতে শুরু করবেন পশ্চিমা শিশুদের মাঝে বুলিইং এর বিস্তার কি পর্যায়ে পৌঁছেছে। পুরো চ্যাট লগ পড়ে শোনাতে রুচি হচ্ছে না দেখে এখানেই ক্ষান্ত দিলাম। তবে চাইনিজ(কিংবা অন্য কোনো জাতি) এক মেয়েকে দেখে যেভাবে চোখ টেনে ভেঙিয়ে রেসিস্ট মনোভাব দেখালো কিংবা where from? এর উত্তরে যখন বললো My mom's vagina ; তখন আমি মনে করি এই শিশুটার স্বাভাবিক বিকাশ অপূরণীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর খুব সম্ভবত তা পরিবার এর অবেহেলার জন্যই।
পশ্চিমা মা'দের একটা উদাহরণও দেখাবার লোভ সামলাতে পারছি না!
একই সাথে জমজ পুত্র-কন্যা হবে, এই সংবাদে আনন্দিত না হয়ে একটা পুত্র কিভাবে ফেলে দেয়া যায় চিন্তায় মগ্ন এই ইন্টেরিওর ডিজাইনার মা(!)। স্রষ্টাকে ধন্যবাদ, এমন মায়ের ঘরে জন্ম নিতে হয় নাই!
ঠোঁট উল্টিয়ে বলতে পারেন, এ তো পশ্চিমা বিশ্বের খবর। আমাদের এইখানে এরকম কখনো হবে না।
তাই কি? স্ক্রল করে এই পোস্টের শুরুটা আরেকবার ঘুরে আসুন। তারপর নিজেকেই জিজ্ঞেস করে দেখুন না!
আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও কি এইভাবে অধঃপতিত হবে?
অসাধারণ ভাঙ্গা পেন্সিল!
লেখাটিকে এই ব্লগের পরিসরে সীমাবদ্ধ না রেখে কোন জাতীয় দৈনিকে ছাপালে খুব ভালো হবে। আপনি একজন অনুসন্ধিৎসু সাংবাদিকের মতো কাজ করেছেন।
সাংবাদিকেরাই কিন্তু তথ্যগুলো খবরের মাঝে লিখেছেন, আমি শুধু হাইলাইট করলাম কারণগুলো আমার দৃষ্টিতে কি হতে পারে।
আর জাতীয় দৈনিকই শুধু না, ব্লগেও এই লেখাটা দেয়া ঠিক কিনা আমি সন্দিহান, কারণ নিচের ছবি দুটো প্রাইভেসি রক্ষা করে না। নেহায়েতই অন্য সাইটের আপলোডেড ছবি দেখে আমি একটু স্বস্তিতে ব্যবহার করছি।
শিশুদের মুখে এসব শুনে হয়ত রাগ হয় শিশুটির উপর। কিনতু এগুলো শিখে কার কাছ থেকে। বড়দের কাছ থেকে। মিডিয়ায়া আমাদের হাত নাই, ইনটারনেটে কিছুটা আছে। এজন্য ইনটারনেট ফোরামে, ব্লগে, ফেইসবুকে, চ্যাটে কি লিখি সেটা যেন মনে রাখি। বাংলাদেশেও ৭-৮ বছরে বাচ্চারা প্রয়োজনে,অপ্রয়োজনে ইনটারনেটে যায় এটা যেন ভুলে না যাই।
আমারও কথা সেটাই। লাগামছাড়া বাক-স্বাধীনতার প্রয়োগ আমরা ব্লগেই ঘটাচ্ছি। দল বেঁধে আক্রমণ, বুলিইং, ইত্যাদি তো ব্লগে এসে যেকোন শিশুও শিখবে। মনে আছে সামহোয়ারে বেশ কিছু শিশু ব্লগার ছিল। এখনো থাকলে আমি তাদের মনস্তত্বও ঝুঁকির মুখে আছে বলবো।
সংযত হতে হবে আমাদের...বড়সড়দের কথা বলে লাভ নেই। এই ছোটখাট আমরাই আমাদের অবস্থান থেকে সতর্ক থাকতে পারি।
আমি তো মূল দোষ দেবো কর্পোরেট সংস্থার আর মিডিয়ার। বাণিজ্য নির্ভর মিডিয়াতে মুল্যবোধের কোন বালাই নেই। এর দীর্ঘমেয়াদী মনস্তাত্তিক প্রভাব পড়ছে সবার মাঝে। মূল্যবোধহীনতাই হয়তো এখন স্মার্টনেস!
দোষ আমাদেরও কম নাই। সবচাইতে বড় দোষ বাবা-মা আর পরিবারের। মিডিয়ার না।
আমাদের ছোটবেলায় মিডিয়ার স্বর্ণালি যুগ ছিল, সেই আমলেও আমাদের টিভি দেখার উপর আমার বাবা-মা কড়া নিয়ন্ত্রণ রেখেছিলেন। বেছে বেছে কিছু অনুষ্ঠান দেখতে পারতাম। আর এখন অনেক শিশু দুই-তিন বছর বয়সেই ইশক-ভিশক-পেয়ার-পেয়ার শিক্ষা লাভ করছে। ফলাফল এই ক্ষুদে রোমিওরা দেশ কাঁপায় ফেলতাছে। পত্রিকার দিকে তাকান, গত কয়েকদিনে শুধু প্রেমের জন্যই এতো খুন-খারাপি হয়েছে...দেশ তো ভালোবাসায় সয়লাব হয়ে গেল!
বাবা মায়ের মগজও তো মিডিয়া অনেক আগেই ধোলাই করে ফেলছে। তাছাড়া এই যুগে অভিভাবক সন্তানের উপরে আগেকার কালের মত কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে, এটাও কি সম্ভব?
আমাদের যুগেও একই কথা শুনছে আমাদের বাবা-মা'রা। মিডিয়ারে ধোয়া তুলসীপাতা বানাই নাই, তবে ঘর থেকেই শিক্ষার শুরু হতে হবে। বাবা-মাদের সতর্কতার প্রয়োজন শিশুর চারপাশ নিয়ে। আমরা যারা ভাই-বোন, তাদেরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন; কারণ আমরাও শিশুদের চারপাশে থাকি। ছোটবেলায় অনেক অন্যায় ছিল যা করলে বাবা-মা বকা দিতে পারতো; আর আমরা ধরে নিতাম যে বাবা-মা তো সারাক্ষণ বকে, এ আর এমন কি? তখন বাবা-মা ঐসব নিয়ে না বকে খালা-মামা-তুতো ভাইদের হাতে ধরিয়ে দিত। তারা যখন কোন একটা বিষয় নিয়ে আমাদের বলতো, আমরা ভীষণ লজ্জা পেতাম। এভাবেই শিশুর চারপাশ গড়ে ওঠে কিন্তু।
মিডিয়াটার নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নাই, আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রণ করি, সে-ই কি ভাল না?
বাচ্চারা মোটামুটি সবই বড়োদের কপি করে ।
মাংকি সি মাংকি ডু ।
এসব নিয়ে চিন্তা করি না -- সিক্সটিজে এমন কোন এক্সপেরিমেন্ট নাই পোলাপান করে নাই --- এরপর সব সেটেল ডাউন হৈসে ।
এমন থাকবেই । কিছু কিছু মানুষরে দড়ি দিয়ে বেধেও সুস্থ সুন্দর ডিসেন্ট করা যাবে না ।
ঘটনাটা কিছু কিছু হইলে সমস্যা ছিল না। এই কিছু কিছুরা পত্রিকার পাতায় উঠে আসছে। তাদের বাবা-মা-শিক্ষক আর সমাজের হর্তা-কর্তাদের আচরণে অন্যান্য অনেক শিশু অপরাধের ভ্যালিডেশনের খোয়াব দেখবে, তখন আর কিছু কিছু থাকবে না। একটা পুরা প্রজন্ম পাল্টে যাবে।
১. প্রাপ্তবয়স্ক ফ্রিক সবযুগেই কমবেশী ছিলো এবং আছে। এদের সংস্পর্শে শিশুকিশোর নিরাপদ থাকে না।
২. শিশুকিশোরের কর্মকাণ্ডে বিকৃতি এবং তজ্জনিত অপরাধ বৃদ্ধির দায় তিনজনের। এরা হলো- অভিভাবক, অভিভাবক, এবং অভিভাবক। এই অভিভাবক মূলতঃ পিতামাতা (পরিবার)। মূল্যবোধ গঠনে ভূমিকা রাখার দায়বদ্ধতা থেকে বৃহত্তর কনসেপ্টে সমাজ-রাষ্ট্র এবং শিক্ষকও অভিভাবক।
৩. প্রযুক্তি, কর্পোরেট সংস্থা, মিডিয়াকে দুষে লাভ নেই। এগুলো শিশুর কাছে কী মাত্রায় এবং কী ভূমিকায় পৌঁছাবে তা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব অভিভাবকের। অভিভাবককে হাতেকলমে সচেতন করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
==========================================
একটা ঘটনা, বাংলাদেশের। সরকারী কর্মকর্তা পিতা জেলা-উপজেলায় বদলি হন, একাই কর্মস্থলে থাকেন, খরচ সাশ্রয়ের জন্য ডালেভাতে থাকেন। পুত্র যেন ভালো পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য স্ত্রীর তত্ত্বাবধানে ঢাকায় রাখেন পরিবারকে। ছেলে ক্লাস এইটে ওঠার পর কম্পিউটার লোন নিয়ে কম্পিউটার কিনে দেন, নেট যোগাযোগের সুযোগ দেন। বাসায় বুড়ো দাদা-দাদী এলেও ছেলে দু'দিনের জন্য নিজের রুম ছাড়ে না, তার পড়াশোনায় অসুবিধা হবে। একদিন ছেলে রাত জেগে পড়ছে, মা দুধের গ্লাস নিয়ে তার ঘরে ঢুকে পিছন থেকে ছেলের কম্পিউটারের স্ক্রিনে যে দৃশ্য দেখেন তাতে অজ্ঞান হয়ে যান। পড়ার সময় দরজার নবে মাথার পিছনদিকে আঘাত পান, রক্তপাত হয়। সুপুত্রটি মাকে টেনে প্যাসেজে রেখে এসে দরজা বন্ধ করে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়।
প্যারেন্টিং কোন সহজ কাজ নয়। আবার খুব সহজ, যদি সন্তানের সঙ্গে সহজ সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়। চাহিদা তৈরীর আগেই পূরণ, এমনকি স্যাচুরেটেড করে ফেলার প্রবণতা দূর করা উচিত। মূল্যবোধ, সুকুমারবৃত্তি এগুলো চর্চা না করলে নিজে থেকে গড়ে ওঠার মতো সময় আর নেই।
শিশুপালনের একটা কথা অনেক শিশু বিশেষজ্ঞ বলেন, কাঁদলেই দুধ দেয়া চলবে না।
অবোধ শিশুকে যেখানে কাঁদলেই দুধ দিতে নিষেধ করা হচ্ছে, সেখানে আশেপাশে থেকে শিখতে থাকা শিশুদের বাবা-মায়েরা সব শখ-আহ্লাদ পূরণ করতে গিয়ে কিছু অন্যায় শখও পূরণ হতে দিচ্ছেন। ফলাফলটাই এরকম। আর এখন চিন্তা করার সময় আসছে সরকারেরও, আকাশ সংস্কৃতিতে নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। নিজেদের সংস্কৃতিতেও নিয়ন্ত্রণ দরকার আছে।
প্রাসংগিকতার খাতিরে ব্লগস্পটে করা মন্তব্যের জবাবটা তুলে দিই।
মাহমুদ ফয়সাল ভাই জিজ্ঞেস করছিল, আমাদের কি করার আছে?
আমার জবাবটা এরকমঃ
আপনার উদাহরণ কিন্তু বলছে, আমরাও পশ্চিমা ঐ উদাহরণ থেকে খুব পিছিয়ে নেই।
ভাঙ্গা প্রশংসনীয় কাজ করেছে পোস্টটা দিয়ে। বিষয়টা দরকারী।
আজকের শিশু ভবিষ্যতের একজন কর্ণধার । তার কাছ থেকে অবশ্য আমরা খারাপ কিছু আশা করিনা । প্রশংসনীয় পোষ্ট । আমি নিজেও এতটুকু জানতাম না । ধন্যবাদ ।
আমি নিজেও কি জানতাম?! পেপার পড়ে জানলাম
অনেক ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য।
পোষ্ট টি সকালেই পড়েছি। মন টা খারাপও হয়েছে। সকল অবক্ষয় থেকে মুক্ত থাকুক নতুন প্রজন্ম এই কামনাই করি।
পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ ভাঙ্গা কে। প্রয়োজনীয়, তথ্যবহুল পোষ্ট।
আমাদেরও সেই একই কামনা!
দারুন একটা লেখা...... হোক সবারই জানা একটা বিষয়, তাও হাইলাইট করার জন্যে ধন্যবাদ বলছি না সর্বক্ষেত্রে বাধা দেয়া উচিত আবার অবাধ ছাড়ও চাইনা, অন্যেরা কে কি করলো তা থেকেও শিশুরা মা-বাবা কে সবচেয়ে বেশি অএনুকরন করে,... তাই নিজেরা বুঝেশুনে চললে, কথাবার্তায় সেমত বুঝালে, বাচ্চারাও তেমন ভাবনায় নিজেদের গড়বে......
কোথায় বাধা দিতে হবে আর কোথায় ছাড় দিতে হবে এই সীমারেখাটাই সমস্যা!
সকালে পরিকা খুলেই আরেকবার স্তম্ভিত হতে হল ।আজকে চট্টগ্রামেই একদল কিশোর নাকি লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দিয়েছে !! এরপর আর কি দেখতে হবে কে জানে ??
শিশুদের এই অস্বাভাবিক ,আরোপিত বিকাশের পেছনের কারণটা বোধ করি আমরা সবাই জানি ,বা জেনেও না জানার ভান করি ।এই ব্যর্থতার পুরো দায় অভিভাবকের ওপর বর্তায় বলেই আমি মনে করি ।আজকে একেবারে দশ বার বছরের শিশুরাই নিজেদের মধ্যে যেসব কথা বলছে ,ঐ বয়সে সেটা আমাদের চিন্তারই বাইরে ছিল ।এসব কথা শুনলে আমরা আঁতকে উঠতেও বাধ্য ।আর এটা হলফ করে বলা যায় ,আগামী দশ বছর পরেও তাদেরই একই কথা মনে হবে ।
তবে সবার আগে পরিবারকেই এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে ।মানছি ,পুরো সিস্টেমটাই আজ ঘুণে ধরা ,কিন্তু একটা দুটো পরিবারের সুফল যদি সবার কাছে পৌছাতে শুরু করে ,তাহলে বৃহত্তর ক্ষেত্রে এর প্রয়োগও অনেক সহজ হবে ।
আমাদের সচকিত করতে এই পোস্টের বড় বেশি প্রয়োজন ছিল ।
সরকারের একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হলো মোবাইল সংযোগ ১৮ এর নিচে না কিনতে দেয়া।
এবার ঘরে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিক সব বাবা-মাঃ ১৮ এর নিচে টেলিভিশন-কম্পিউটার বাবা-মায়ের নিয়ন্ত্রণ বাদে ব্যবহার বন্ধ থাকুক।
সেই সাথে ভাস্করদার কথা মতো ইউনিতে ওঠার আগে সূর্যাস্ত আইনও জারি হোক প্রতি ঘরে।
যারা ইতোমধ্যে বাবা/মা তারা আরো ভাল কোনো সমাধান দিক।
মিডিয়াতেও সাম্প্রতিক এই কিশোর অপরাধের হঠাৎ মাথাচাড়া নিয়ে আলোচনা শুরু হোক। কতো কিছু নিয়েই তো প্যাচাল হয়, আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে নাহয় একটু বেশি করেই হোক!
নীড় সন্ধানীদার কথা মতো*
চমৎকার একটা পোষ্ট....আপনের অনুসন্ধানী পোষ্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ....
ছেলেবেলায় যে সরকারী কলোনীতে আমার বেড়ে ওঠা। সেই কলোনীর এক সরকারী কর্মকর্তার কিন্ডারগার্টেন পড়ুয়া ছেলে মোজার ভেতর ক্ষুর নিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করতো। তার সহপাঠি আমার এক ভাগ্নের কাছ থেকে শুনতাম ছেলেরা তাকে যমের মত ভয় পায়। স্যারকে বলার সাহসও কুলিয়ে উঠে না কারো। হাইস্কুলে ওঠার পর ছেলেটা ড্রাগ ও নারীশরীর চিনে যায়। এরপরের ঘটনা জানি না ততদিনে অন্য এলাকায় চলে আসি আমি। আশির দশকের ঘটনা এটা। মিডিয়া তখনো এতটা কুখ্যাত হয়নি। কিন্তু ছেলেটার মননে এই সমস্ত ব্যাপার ঢুকে গিয়েছিল সমাজের উচ্চস্তরে বিচরন ব্যস্ত বাবা মার কল্যানে। মা হাইসোসাইটি ওমেন হিসেবে ব্যস্ত, বাবা অফিসের পর বার আর ক্লাবে ব্যস্ত। অর্থের অভাব নেই, কিন্তু ছেলেমেয়ের জন্য তাদের সময় নাই।
আজকাল মিডিয়ার কারনে শিশুরা ইচড়েপাকা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু বাবামা যদি ঠিকমতো চোখ রাখার দায়িত্ব পালন করে, তাহলে শিশু সেভাবে বখে যেতে পারে না। আমি প্রচুর বাজে ছেলেদের সাথে মিশেছি ছেলেবেলায়। কিন্তু বখে যেতে পারিনি বাবামার কারনে। বিশেষত মার কারনে। খুব বেশী কড়াকড়ি না। কেবল সন্ধ্যার পর ঘরের বাইরে থাকার নিষেধাজ্ঞাটা ভার্সিটিতে যাতায়াত করার আগ পর্যন্ত বহাল ছিল। ওই সামান্য মনিটরিং এর কারনেই আমি আজ সামান্য যা, তা হতে পেরেছি।
আমার নিজচোখে দেখা আরো বেশ কজন বখে যাওয়া শিশুর কথা লিখতে পারবো সেই কলোনীর। সময় পেলে লিখবো। যারা চট্টগ্রামের নামকরা সন্ত্রাসী হয়েছিল বড় হয়ে। সবগুলো ক্ষেত্রে দেখা গেছে বাবা-মার অতি প্রশ্রয় কিংবা অতি অবহেলাই ১০০% দায়ী।
শতভাগ সহমত। বাবা-মার নজরদারি থাকলে শিশুদের খারাপ হওয়া খুব কঠিন বলেই আমি মনে করি।
দেশের অন্যতম সেরা স্কুলের ছাত্র হলেও ঝরে পড়া বেশ কিছু বন্ধুর গল্প জানি, তারাও সেরা স্কুলেরই ছাত্র...মেধাবীও ছিল, এখন পরিণতি অবশ্যই খারাপ। তাদের সবাই বাবা-মার অতি আহ্লাদে ঝরে পড়েছে। একজনের বাসায় সেই ক্লিনহার্টের সময় আগ্নেয়াস্ত্রের খোঁজে আর্মি গিয়েছিল। অস্ত্র পায়নি, তবে অস্ত্র ঠিকই লুকানো ছিল। স্কুলের কাছে বাসা হওয়ায় স্কুল-সংলগ্ন এলাকায় প্রভাব বিস্তার, আমাদের সামনে হিরো হতে চাওয়া আর বাবা-মা'র একগুয়ে বেখেয়ালে মেধাবী ঐ বন্ধুর জীবনটাই নষ্ট হয়ে গেছে। স্কুলবেলাতেই যেন শিশুরা ঝরে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখলে বাকিটা পথ খুব সহজ হয়।
আমার বাড়িতে আমার চলাফেরার উপর বাপ-মায়ের কখনোই কোন নিষেধাজ্ঞা ছিলো না। আমি এসএসসি'র পরেই গাঁজা খাওন ধরছি। বাড়িতে রাত কইরা ফিরতাম। মাস্তান টাইপ বন্ধু ছিলো। পর্নগ্রাফিতেও অনাগ্রহ ছিলো না। আপাতঃ অর্থে আমারে তো বইখা যাওয়া ছেলেই মনে হয় তাইলে। আমার মা কেবল আমারে শিখাইছিলো কোন কিছু তার কাছে না লুকাইতে। নেশা করতাম যখন, তখনো তার লগে শেয়ার করছি...তিনি কখনো আমারে জোর করেন নাই, কিন্তু তার চাওয়াটা বুঝছি। তিনি আমারে একটা কথাই কইতেন যে আমি যাতে অন্য মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করি। যুক্তি দিয়া একটা ঘটনা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করি।
এর লেইগাই আমি আপাতঃ বইখা যাওয়া ছেলে এখন মদ-গাঁজা খাইলেও নির্ভর করি না তার উপর। সাইবারে নোংরা প্র্যাক্টিস করি নাই এক্কেরে এইরম কমু না, কিন্তু ঐটারে কন্টিনিউয়াস চর্চা বানাই নাই কখনো।
এখন আপনের সিদ্ধান্তে নিজেরে বিবেচনা করতে গিয়া রীতিমতোন বখাটে লাগতেছে...
মাইন্ড খাইয়েন না, তবে আপনি যেই পরিমাণে গেছেন, তাতে ফিরে না আসার সম্ভাবনা কম ছিল না। এক্সেপশনরে এক্সাম্পল ভাইবেন না। আপনার এক্সাম্পল আশা করি আপনি আপনার ছেলেরে অনুসরণ করতে বলবেন না।
মানুষ ঘুরে দাঁড়ায়। কিন্তু শৈশবেই অন্ধকারে পা বাড়ালে ঘুরে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব। আপনি সম্ভব করছেন বলেই সবাই পারবে তা কিন্তু না।
সন্তান বইখা যাওয়া যাওয়া বলতে আমরা মূলতঃ বুঝি সামাজিক মূল্যবোধে সাফল্য কিম্বা নৈতিকতা থেইকা বিচ্যূত হওয়ারে। এখন এইটার লেইগা বাপ-মা'রে দোষী করলে আসলে একজন মূল অপরাধী বাইচা যায়। কেরম?
ধরেন আমরা নেশা করতাম আমাগো আমলে, এইটার কারণ কি? ঐ আমলে মাদকদ্রব্যরে প্রথম রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে এরশাদ অ্যাভেইলেবল কইরা দিছিলো...পুরানা কৌশল ঠিক যেমনটা ইয়াঙ্গুনের সামরিক সরকার করছিলো তার কিছুদিন আগে।
মাস্তানিটা কেনো হয়? কারণ এই সমাজে মাস্তানি করলে সহজে ধনী হওন যায়, নেতিবাচক অর্থে হইলেও সেলেব্রিটি হওন যায়। তাইলে সেইটার প্রতি মোহ কেনো পোলাপাইনের তৈরী হইবো না? আমার এক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধু ছিলো, নাম দীপু। সে নটরডেমিয়ান ছিলো। এসএসসি'তে প্রায় স্ট্যান্ড, এইচএসসিতে স্টার মার্ক্স পাইয়া জাবিতে ইংরাজীতে ভর্তি হয়। যদিও তার সম্পর্কে জানি সে নটরডেমিয়ান অবস্থাতেই কাজীপাড়ার মাস্তান হইয়া উঠে।
৯০ সংলগ্ন কালে এই দেশে বিরাট বিতর্ক ছিলো যে প্রতিযোগিতামূলক না হইলে সমাজের উন্নয়ণ থমকাইয়া যায়। এইটার উত্থাপন হইছিলো স্নায়ুযুদ্ধকালের সমাজতান্ত্রিক অবস্থানরে ঠেকানের তরে। সোভিয়েত পতনের পর বিশ্বব্যাপী এই মানসিক অবস্থাটা পাকাপোক্ত হইছে। তার ফলশ্রুতিতে মানুষ প্রতিযোগিতা করতেছে...আর নৈতিকতা তখন মুখ থুবরাইয়া পড়তেছে অধিকাংশ সময়। এইটা কিন্তু এই পোস্টের মতোই গ্লোবালাইজ্ড ফর্ম।
বাপ-মা হয়তো দায়ী কিন্তু সুপার হিরো সুব্রত বাইন কিম্বা সুইডেন আসলামেরা আমাগো টাইম থেইকা অনেক সামনে চইলা আসছে। রাষ্ট্র চাইছে তারা সামনে আসুক। তারা যদি হিরো হয় তাইলে রাষ্ট্র নিরাপদ থাকে...প্রতিবাদের মুখাপেক্ষী থাকার সম্ভাবনা কমে...আরামে চলতে পারে তারা। রাষ্ট্রের এই কুটকৌশল এখনো কার্য্যকরী...যেই কারণে ফারুকেরা চাকরী পাওনের আশায় আওয়ামি ছাত্রলীগে যোগ দেয়...আর অনভিজ্ঞতার কারণে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সহজ টার্গেটে পরিণত হয়।
আমার মায়ের শিক্ষাটা একটু কই তিনি আমারে কখনো চাপ প্রয়োগ করেন নাই কোন কিছুতে, স্বাধীনতার স্বাদ দিছেন। কিন্তু সবসময় রাষ্ট্র-রাজনীতিরে যুক্তি দিয়া বুঝনের তাগীদ যোগাইছেন। যেই কারণে আমি এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে কার্ফ্যুর টাইমে ঘর থেইকা বাইর হইছি মায়ের সামনে দিয়াই...মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি আমারে যুদ্ধে যাইতে কোনদিন নিষেধ করতেন না নিশ্চিত...মানুষের মানবিক মূল্যবোধের গুরুত্ব তার কাছে সামাজিক মূল্যবোধের চাইতে অনেক বেশী ছিলো সবসময়েই...
সামাজিক মূল্যবোধের একটা বিরাট ব্যাপার অবশ্যই আছে। কিন্তু সেই খারাপ মূল্যবোধটা সন্তানের উপর কিরকম প্রভাব পড়ছে সেটা খেয়াল রাখার দায়িত্ব বাবা-মার। আমি যে কটা কাছের বাল্যবন্ধুর নষ্ট হয়ে যাওয়া দেখেছি, প্রতিটি পরিবারেই বাবা মার প্রশ্রয় ছিল ছেলেবেলার সামান্য নষ্টামিতে। একজনের বাবাকে ছেলেবেলায়ই বলতে শুনতাম, "তোরে কেউ একটা মারলে, তুই দুইটা মেরে এসে জানাবি আমাকে। বিচার আমি করবো।" সেই ছেলে কৈশোর পার হবার পর খুনের মামলার আসামী হয়ে ফেরার। এরপর বাপের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেবার মতো অবস্থাও হয়েছিল। ফ্রাংকেনষ্টাইন এভাবেই তৈরী করে সমাজ।
আমি উল্টাটাও দেখছি বস। বাপ-মায়ের অত্যাচারে অতীষ্ঠ ছেলেরে ইউনিভার্সিটিতে গিয়া মাস্তানি করতেও দেখছি...এখন বাপ-মায়ের দায়িত্ব আসলে পোলাপাইনরে সামলানি মানি...কিন্তু সময়ের যেই অবস্থা তাতে বাপ-মায়ের জান যায় রুটি-রুজি করতেই...পোলাপাইনের উপর গোয়েন্দাগিরী অনেক দূরের বিষয়।
আপনের অনুধাবনটা সঠিক বইলা মাইনা নিতেছি...কিন্তু সম্পূর্ণ সঠিক কইতে পারতেছি না কারণ রাষ্ট্র আর সামাজিক মূল্যবোধের বাইরে তো আর তারা অবস্থান করে না। এখন সামাজিক মূল্যবোধই হইছে কেউ আক্রান্ত হইলে পাল্টা দিতে না পারলে দূর্বল বইলা চিহ্নিত হইতে হয়, যার ফলশ্রুতিতে নিজের মান-ইজ্জত নিয়া টিকা থাকাটা কষ্টের। আমি কইতেছি না যে ঐটা ঠিক আচরণ কিন্তু রাষ্ট্রের ব্যর্থতাটা ঢাকা পড়লে হাজার হাজার, লাখে লাখে বাপ-মা রোষাণলে পড়বেন কেবল, কাজে কাজ কিচ্ছু হইবো না।
এই সমস্যার সমাধান ফার্মের বা খোয়াড়ের মুরগী বানানোতে হইবো না...বরং শিক্ষা ব্যবস্থা বা জীবন দর্শনের সঠিক প্রয়োগ প্রয়োজন।
সামুতে প্রাচীন কালে একবার একটা বিতর্ক হইছিলো শিশু সাহিত্য কেরম হইবো, তার রকমফের নিয়া। সেইখানে সুমন চৌ, তার অবস্থান বলছিলো যে সে বাস্তবতার ধারে কাছে শিশু সাহিত্য চায়...আর যদ্দূর মনে পড়ে আমি নিজে শিশু সাহিত্যের ফ্যান্টাসাইজ্ড কাঠামোর প্রতি আস্থাশীল ছিলাম।
ঐ বিতর্কের পর সুমন চৌ একটা উপন্যাসের কাঠামো তৈরী করতেও শুরু করছিলো...আজকে এই পোস্ট দেখার পর সেইটা খুঁজতে গিয়া পাইলাম না...সে মনে হয় ড্রাফ্ট কইরা ফেলছে। যাউগ্গা এই পোস্টের সাথে এই কমেন্টের কোন আপাতঃ মিল না থাকলেও আসলে আমাগো শৈশব-কৈশোর কেমন হইলে ভালো হইতো বা ভবিষ্যত প্রজন্মের শৈশব কৈশোর কেরম হইলে সেইটা ঠিক হইবো এইরম একটা বিতর্কের আশা জাগতেছে মনে...
শিশু সাহিত্য অবশ্যই শিশুদের মন-মানসিকতা অনুযায়ী হবে। শিশু সাহিত্য নিশ্চয়ই রসময়ের সাহিত্যের মতো হবে না!! ঐ তর্ক দেখি নাই, তবে সুমন চৌ এর কি বলার আছে কে জানে!
আমি উল্টা একটা উদাহরণ দিয়া বুঝাই। ধরেন, আমি কম্পিউটার জানে না এমন এক লোকের জন্য কেমনে টাইপ করে, কেমনে সেভ করে, কেমনে ব্রাউজার খুলে এইসব টিউটোরিয়াল লেখবো। আমি যদি তারে কম্পিউটার এর পুরা আর্কিটেকচার -- ক্যাশ, র্যাম, প্রসেসর, মেমরি এলোকেশন, বিভিন্ন এলগরিদম বুঝাই তাহলে কম্পু না জানা লোক কী শিখতে পারবে? যদিবা কিছু বুঝতে চেষ্টা করে তাহলে ক্যাশ-র্যাম-প্রসেসর সম্পর্কে উল্টা-পাল্টা কিছু বুঝবে; আর ঐ অল্প-কিন্তু-ভয়ংকর-বিদ্যা নিয়া কম্পু গুতাইতে গেলে সিপিইউতে আগুন ধরানো বাদে আর কোনো কামে আসবে না।
শিশুদের জগতে অনেক অজানা, কৌতূহলী মানসিকতার জন্য তারা এগুলা জানতেও চায়। সুতরাং বয়স হলে আস্তে আস্তে জানবে এটাই আমার মত। আগ বাড়িয়ে জানাতে গেলে লাভের চাইতে ক্ষতি বেশি।
নীড়দার সাথে একমত। বাবা মা মূলতঃ দায়ী।
খুব ভালো লেখা ।
প্রিয়তে নিলাম ।
বিস্তারিত মন্তব্য করা উচিত!
কিন্তু আমার পরশু পরীক্ষা, সিরিয়াস বিষয়ে মন্তব্য করা উচিত হবে না!!!
মা বাবার দায় দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি । কিছু উদাহরণ দেয়া যেত । সময় হলে দিব । তবে শুধু বলতে চাই পত্রিকার খবর গুলা নিয়ে আমাদের চিন্তিত হওয়া উচিত ।
ইউনিভার্সিটির ছাত্র গুলার মুখ যখন রিকশাওয়ালার মত হয়, তখন মেজাজ গরম ই হয় (এবং পরে দুঃখের সাথে খেয়াল করি এই গুলার বিশাল অংশ তাদের বাপ মার কাছ থেকে শিখছে! )
মূল্যবোধের ব্যাপার গুলাও তো । বাপ মা যদি না শিখায় তবে শেখাটা অনেক কষ্টকর প্রায় অসম্ভব ।
charity begins at home.
ঘর থেকেই মূল্যবোধ শেখানোর শুরু হওয়া উচিৎ
দরকারি পোস্ট ।
আমি স্কুলে থাকতেই মদ গাঁজা খাইছি। গাবতলী টার্মিনালের হেল্পার কন্ডাক্টরগ লগে ক্যারম খেলছি দিনমান। শুক্রবার সকালে পর্বতে ১ টিকিটে ২ সিনেমা দেখাটার চেয়ে প্রিয় কাজ কিছু ছিলো না। বন্ধুর বাড়ি খালি হইলে ভিসিআর ভাড়া কইরা আইনা পর্ণোৎসব চলতো।
সরকার যখন দেশের শীর্ষ ২৩ সন্ত্রাসীর নাম ঘোষণা করলো, আমি দেখলাম তার দুইজনই আমার সাবেক বন্ধু। [দুইজনেই গুলিতে নিহত হইছে পরে] ঢাকায় পারিবারিক বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আমি বছরের পর বছর আলাদা বাড়ি নিয়া থাকছি।
কিন্তু আমার মাথায় বাপ খালি একটা কথাই ঢুকায়া দিছিলো, এখনো যেটা আমার মাথায় সবসময় কাজ করে "যা খুশি তাই কর, খালি মনে রাখিস, তোর জীবনটা তোরই যাপন করতে হইবো, আর কেউ যাপন কইরা দিবো না।"
আর কিছু লাগে নাই।
পোস্টে উত্তম জাঝা
আপনি এক্সামপল নাকি ঐ ২ জন এক্সাম্পল? আমার তো ধারণা আপনি এক্সেপশন, এক্সাম্পল না।
অনেক বাবা মারা আসলে সন্তানকে সবসময় হাতের তালুতে রাখতে চায়, ব্যক্তিত্ব গঠন করতে দেয় না, সবসময় একটা খবরদারীত্বে রাখে। সব কিছুই অভিভাবক নিয়ন্ত্রিত। নিজেদের বিচার বুদ্ধির জায়গাটা তৈরি হয় না। আর সারাক্ষণ প্রতিযোগিতামূলক সেরা সন্তান বানানোর মেশিন চালু রাখে।
এটা ঠিক না। আমি সেই ইঙ্গিতই দিতে চাইছি।
সন্তানকে কখনোই চোখে চোখে রাখা যায় না। একটু বড় হইলে, স্কুলের উঁচু ক্লাসে উঠলে সে খারাপ সঙ্গ পাবেই। কোনো বাপ মা এটাকে ঠেকাতে পারবে না। সিগারেট, গাঁজা, পর্ণতা এসবের প্রতি আকর্ষণ থাকতেই পারে। হুমকী ধমকী দিয়া এগুলো দিয়ে আটকানো যাবে না।
তারচেয়ে কৈশোরে অভিভাবকের দায়িত্ব হইলো নিজস্ব বিবেচনাবোধ আর নিজের জগতটা চিনতে সাহায্য করা। দড়ি দিয়ে না বেঁধে বোধ দিয়ে বেঁধে ফেলা। এই দিকটাই বোঝাতে চাইলাম নিজেকে দিয়ে।
নজরুল ভাই, মূল্যবোধের রশি দিয়ে বেঁধে ফেলার সাথে একমত, কিন্তু কথা হচ্ছে সবাই কিন্তু সমান না। বাবা-মাকে বুঝতে হবে তাঁরা সঠিকভাবে সন্তানের মাথায় মূল্যবোধ ঢুকাতে পারছেন কিনা কিংবা সন্তান ঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারল কিনা। সুতরাং মূল্যবোধের সাথে সাথে দরকারমত কঠিন/তরল শাসনেরও দরকার আছে বলে মনে করি।
এইগুলান্রে থাব্রার উপ্রে রাখা উচিত
মাইরের উপ্রে অষুধ নাই
) অতি সহজ সমাধান!
ভাঙ্গাকে অনেক ধন্যবাদ ভালো একটা আলোচনা শুরুর জন্য .... আলোচনাটা শিশুদের মানসিক বিকাশে কি করা উচিত... এমন একটা দিকে টার্ন নিক এটা চাই ... অথবা ভাঙ্গা পেন্সীলের পরবর্তী পোস্ট হোক শিশুদের মানসিক বিকাশ নিয়ে
সমস্যা দেখতে পারছি, সমাধানটা তো জানি না। অভিজ্ঞরা কথা বললেই ভাল হয়। আমার মতামতগুলো পোস্টে আর মন্তব্যে প্রায় পরিষ্কার। এখন শিশুদের মানসিক বিকাশ কিভাবে হওয়া উচিৎ তা নিয়ে বাবা-মা'রা কথা বললেই বেশি ভাল হয়।
ভাঙ্গা তোমারে অসংখ্য ধন্যবাদ। খুব ভালো একটা পোষ্ট হইছে এইটা।
ধন্যবাদ
এই পোষ্টটা ষ্টিক করার প্রয়োজন ছিল.........
মড়ুদের সু-নজর কামনা করছি.............
অসাধারন একটি লেখা পেন্সিল.........
কোন রকম ধন্যবাদেই যথেষ্ট নয়.........................শুভ কামনা সর্বদা
আমরাবন্ধুতে আসলে স্টিকির প্রয়োজন পড়ে না। অল্প যে কিছু ব্লগার আছেন, মোটামুটি সবাই পোস্ট পড়ে ফেলে!
ভাঙ্গা, পুরাই বিটিভির খবর এর কথা মনে হইলো। আমাদের চরিত্তির আস্ত তুলে আনছো তুমি।
লাইর্ক্ললাম।
থেঙ্কু কিন্তু অনটপিকে একেবারে কিছুই না কইলে কেমন দেখায়?
অতি জরুরি বিষয়। শুধু ভাল স্কুলে দিয়েই অভিভাবক যদি মনে করেন দায়িত্ব খালাস, তাহলেই সমস্যা। ভাঙ্গার সাথে একমত, এইসব সমস্যা সমাধানে অভিভাবককে সবার আগে আসতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি অভিভাবক যদি সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দেন (বলছি না তা খুব বেশি), তাহলেই অনেক সমস্যা এড়ানো সম্ভব। তবে বর্তমানের শহুরে ব্যস্ত জীবনে এই ব্যাপারটাই কঠিন হয়ে পড়ছে।
অ.ট. ভাঙ্গার লেখার ফ্যান হয়ে যাচ্ছি।
সময়ের চাইতে আমার মনে হয় মা'দের উচিত "শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে" প্রবাদের মতো করে কোমলে-কঠিনে শিশুপালন করা উচিত
পোস্টটা অসম্ভব দরকারি।
আমি যেভাবে চিন্তা করি সেটা হয়ত প্রতিক্রিয়াশীল মনে হতে পারে, তবুও বলছি।
আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যেসব ছেলে-মেয়েদের মা চাকরি করেন, বাসায় সময় দেয়ার সুযোগ নেই, বা চাকরি না করলেও বিভিন্ন ফাংশান-টাংশানে সারাদিন ব্যস্ত থাকেন, তাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশের সন্তান স্বাভাভিকভাবে বড় হয়না। এটা আমি অন্তত কমপক্ষে ৫/৬ জনের দৃষ্টান্ত দেখেছি। আমি নিজেকে নিয়েই চিন্তা করি। স্কুল থেকে এসে আমি বাসায় মাকে না দেখলে পাগল হয়ে যেতাম, মা যদি কোথাও গিয়ে থাকেন আসতে ১০ মিনিট দেরী হলেই আমি কান্নাকাটি করতাম, বাসায় সবাই থাকলেও। কল্পনাই করতে পারিনা যেসব শিশু দিনের পর দিন তাদের মাকে দেখেনা বাসায়, স্কুল থেকে আসার পর তার ব্যাগটা নিয়ে তাকে কাছে নিয়ে স্কুলে কেমন দিন গিয়েছে সেটা জিজ্ঞেস করেনা বা তার ঘামমাখা মুখ মুছে দেয়না, এসব শিশুরা তাদের শৈশবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা মায়ের স্নেহ সেটা থেকে বন্ঞিত হয়। আমি, আমার ভাইয়া, আমার ছোট ভাই আর ছোট বোন সবাই এই বয়েসে এসেও এখনও মন খারাপ থাকলে সবার আগে মাকে ফোন করি, মায়ের সাথে কথা বললেই মন ভাল হয়ে যায়। মা হচ্ছে ছেলে-মেয়েদের সবচেয়ে নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল। শিশুদের জন্য তো সেটা আরো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বাবাকে এখনও সেরকমভাবে খুব কাছের ভাবতে পারিনা। এখন যে শিশু মাকে কাছে না পায় সে তার মনের গভীর দুঃখের কথা, স্কুলে তাকে কেউ বুলিয়িং করতেছে কিনা, কে তাকে উপহাস করতেছে এসব কাকে বলবে? অভিমান জমা হতে হতে সে ক্রমশ দুরে সরে যায় এবং একসময় বাইরে আশ্রয় খুঁজবে। যুক্তরাষ্ঠ্র শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যার একটা বড় অংশ হয় মাকে কাছে না পাওয়াতে। কর্পরেইট জগৎ তথাকথিত নারীমুক্তির নামে হয়ত নারীর কিছু কর্মসংস্থান করে তাকে মাথা তুলে দাড়াতে দিচ্ছে, কিন্তু সেই মা কোনদিনই আমার মা যেরকম আনকন্ডিশনাল ভালবাসা আমাদের কাছ থেকে পায় সেটা কোনদিনই পাবেনা। বুড়া বয়সে এসব ছেলেরা মাকে ওল্ড হোমে দিয়ে ফিরে তাকাবেনা এতে আর আশ্চর্য্য কি? আমি প্রায়ই ভাবি আমার মায়ের কাজ করার যথেষ্ঠ সুযোগ থাকা স্বত্তেও না করাতে আমি, ভাইয়া আমার ছোট ভাই-বোনেরা সবাই মূল্যবোধ নিয়ে বড় হয়েছি। আমার মা হয়ত তার তথাকথিত অর্তনৈতিক স্বাধীনতাটা পাইনি, কিন্তু আমাদের সবার জীবনের সবটুকু অংশ জুড়ে তো মাই আছেন, আমাদের সব অর্জন, সব সফলতা সবকিছুই তো তার জন্যই, তার মাধ্যমে। এসবের মুল্য কি চাকরি করে টাকা ইনকাম করে সে টাকা দিয়ে কিনা যেত? কখনও না।
তাই পশ্চিমাদের দেখাদেখি হয়ত মেয়েদের চাকরি-বাকরি করে আমরা সাময়িকভাবে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাব, কিন্তু আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম হবে ভংগুর, সমাজের কাঠামো সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যাবে, পারভারশান হয়ে যাবে খুব কমন, বিশ্বাস একদমই উঠে যাবে, পারিবারিক বন্ধন কিছুই অবশিষ্ঠ থাকবেনা এবং সুখ কখনই আসবেনা। তাই আমি মনে করি সন্তান হওয়ার পর মায়েদের আসলেই চাকরি করা উচিৎ না, করলেও টিচিং বা এরকম প্রফেশান যাওয়া উচিৎ যেখানে তার সন্তানদের সময় দিতে সমস্যা হবেনা। বলা যেতে পারে বাবা কেন সে দায়িত্ব পালন করবেনা? আমার মতে মাকে সন্তানরা যেভাবে চাই, যেভাবে দরকার বাবাকে সেভাবে দরকার নেই। বাবা কখনও মায়ের ভূমিকা পালন করতে পারেনা। মায়ের অভাব বাবার পক্ষে পূরণ করা অসম্ভব।
মা বাসায় থাকলেও শিশু খারাপ হয়ে যেতে পারে, সেটা প্যারেন্টিং-এর সমস্যা। কিন্ত মা বাসায় না থাকলে শিশুর স্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে উঠে একধরণের অসম্ভব হয়ে যায়।
আমি জানি আমার চিন্তাভাবনা অনেকের কাছে ব্যাকডেটেড মনে হবে, কিন্ড়ু আমি নিজে কনভিন্সড যে আমি বিয়ে করলে সন্তান হওয়ার পর স্ত্রীকে কোনমতেই কাজ করতে দিবনা এবং সেটা অবশ্যই বিয়ের আগেই বলে দিব। এই শর্ত মেনে কেউ আমাকে বিয়ে করলে শুধু তখনই আমি বিয়ে করব। যে অসম্ভব ভালবাসা এবং মমতা আমি আমার শৈশবে আমার মায়ের কাছ থেকে সারাক্ষণ পেয়েছি সেটা আমার সন্তান যদি তার মায়ের কাছ থেকে না পায় তাহলে আমি নিজেকেই ক্ষমা করতে পারবনা।
যথেষ্ট যুক্তি আছে আপনার কথায়। কিন্তু আমি দ্বিমত জানাইলাম। কেন বলছি।
পুরো ব্যাপার নির্ভর করে ছেলেমেয়ে মানুষ করার পদ্ধতির উপরে। বাবা মা দুজনেই চাকরী করলে ছেলেমেয়ে বখে যাবে এটা ভুল ধারনা। ছেলেমেয়ে বখে যাবার সাথে মায়ের কর্মক্ষেত্রে যাবার কোন সম্পর্ক নেই। এটা নির্ভর করছে সেই মা ছেলেমেয়ের সাথে কতটুকু দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে। ছেলেমেয়েকে আদর যত্নে ভরপুর রাখাই দায়িত্বশীলতা নয়।
এক গৃহবধু আত্মীয়া ছেলেদেরকে বাচ্চাকাল থেকে দুধেভাতে অতি আদরযত্নে রাখতে রাখতে এমন অবস্থা করেছে, তারা কলেজও পাশ দিতে পারেনি বখাটেপনার জন্য। অর্থ, সময় দুটোই ছিল তার। কিন্তু ছিল না সঠিক মনোযোগ ও ব্যবস্থাপনা।
আরেক চাকরীজীবি আত্মীয়া কষ্ট করে চাকরী করেও ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা করিয়েছে। তার ছেলেমেয়ে দুজন ঢাকা আইবিএ থেকে সেরা ফলাফল করেছে। অর্থ সময় দুটোই ঘাটতি ছিল, কিন্তু ঘাটতি ছিলনা মনোযোগে।
নীড় সন্ধানী, ধন্যবাদ। প্রথমোক্ত স্পয়েল্ট সন্তানের কথা যেটা বললেন সেটা অনেকাংশেই সত্যি। বাচ্চাকে স্পয়েল্ট করে দেয়া সেটা প্যারেন্টিংয়ের সমস্যা, আমি আমার কমেন্টে সেটা বলেছি। আর সিংগল প্যারেন্ট যদি হয় সে ক্ষেত্রে তো মায়ের কাজ করা ছাড়া উপায় থাকবেনা, বাংলাদেশে সাধারণত সিংগল প্যারেন্টদের (বিশেষ করে সে প্যারেন্ট "মা" হলে) সন্তানরা ভাল করে, সমাজে টিকে থাকার জন্যই সে ক্ষেত্রে সন্তানদের নিজেদের মধ্যেই একটা মটিভেশান কাজ করে আর তাছাড়া মাও সন্তানদেরকে মানুষ করার জন্য আপ্রান চেষ্টা করেন এবং খুবই কেয়ারিং হন। আমি বলছি সাধারণ ক্ষেত্রে, ব্যতিক্রম তো আছেই। আমি মা কাজ করা সত্বেও সন্তানরা খুবই ভাল করেছে এবং সুসন্তান হয়েছে এবং মা বাসায় থাকা সত্বেও সন্তান কিছুই হয়নি, বেয়াদব হয়েছে সেরকমও অনেক দেখেছি। আমার অবজারভেশানটা ইন জেনারেল, ধরেন আমার মনে হয় ৬০-৭০% এর ক্ষেত্রে সত্যি মনে হয়েছে আমার কাছে। আপনার পর্যবেক্ষণ অবশ্যই ভিন্ন হতে পারে। আমি নিজে মনে করি মায়ের যদি বাইরে কাজ করা দরকার না থাকে, অর্থনৈতিক সমস্যা না হয়, তাহলে বাসায় সন্তানদেরকে দেখাশুনা করাই উচিৎ, তার মানে অতিরিক্ত আদরে স্পয়েল্ট করার কথা বলছিনা। আমার নানীর ছোটবোন কসভোতে চলে গিয়েছিলেন, তখন তাঁর বাচ্চা ক্লাস সিক্সে, এর আগেও তেমন সময় দিতে পারেননি যেহেতু এনজিওতে (গ্রামীনব্যাংকে) উচ্চপদে কাজ করতেন এবং রাত ৯/১০টার আগে বাসায় ফেরা উনার জন্য সম্ভব হতনা। তাঁর মেয়ের মেন্টাল গ্রোথটা অস্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল। এখন তিনি এজন্য কষ্টে আছেন। আমি আরো ৪/৫ টা কেইস এরকম দেখেছি। তবে কাজ করে যদি সন্তানদেরকে যথেষ্ঠ সময় দেয়া যায় এবং সন্তানরা মাকে কাছে পায়, তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা না। যদিও আমার কাছে মনে হয় মাকে কাজ করে আবার বাসায় সন্তানদেরকে সময় দেয়া খুবই কঠিন হয়ে যাবে, যদিনা কাজের ধরণ শিক্ষকতাটাইপ কিছু না হয়।
যাই হোক, এটা সম্পূর্ন ব্যক্তিগত মতামত। ভাল থাকুন।
র্যান্ডম স্যাম্পলিং করলে মনে হয় উল্টাটা পাবেন। আমাদের দেশের ছেলেপেলেরা মা'দের কষ্টে মোটিভেটেড হয়। সুতরাং আপনার আশংকা ভুল। বরং অতি আদর বা অতি শাসনে বা অতি অবহেলায় পোলাপান নষ্ট হয়। সাম্প্রতিক যে ঘটনাগুলো তুলে ধরলাম, খোঁজ নিয়ে দেখেন--প্রায় সবার মা-ই গৃহিণী।
মধ্যবিত্ত পরিবারের মা'দের চাকরি করার ফলে অনেকের মধ্যে এই মিসকনসেপশন তৈরি হয় যে বাচ্চার ঠিকমতো যত্ন নেয়া হয় না বলে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। কথাটা পুরোপুরি সত্য না। আমার ধারণা চাকরিজীবী মা'রা অন্য মাদের তুলনায় একটু বেশি ভালোভাবে শাসন করতে জানে। কারণ তারা কঠিন বাস্তবের সাথে ডীল করে প্রতিদিন।
আমার নিজের মা-ও ব্যাংকার। অনেক মহিলা ব্যাংকে চাকরি করেন, তাদের প্রত্যেকের সন্তানেরা বেশ ভাল জায়গায় আছে, যদিও তা নৈতিকতার মাপকাঠি না। তবে আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে এই পরিবারের সন্তানদের ধরা পড়ার রেকর্ড কম।
তবে চাকরিজীবী মা'দের সন্তানেরা কিছু জিনিস মিস করে। এর একটা অবশ্যই মায়ের সঙ্গ। তবে তার অভাবে অপরাধপ্রবণতার প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি, পরিসংখ্যান আমার এই কথাটা সমর্থন করবে।
সহমত দিলাম। মনে হল তুমি আমার কথা গুলাই সুন্দর করে বললা...আমি এইভাবে লিখতে পারতাম্না...
ধন্যবাদ।
@ভাংগাপেন্সিলঃ লেখাটা ফেসবুকে শেয়ার করলাম।
পাইকা গেছেগা...............অকালে ..........তাই এইসব বৈপরীত্য .তবে নিকট কালে এইসবই স্বাভাবিক হতে চলেচে...........আমরা আর এই ভুবনের বাসিন্দর হবার জন্য যোগ্য রইমলাম না
সেই রবিগুরুর লেখায় পড়ছিলাম, মুরুব্বীরা নাকি বলতো, কলিকাল আইসা পড়ছে। এখনো তাই বলে। সুতরাং কলিকাল এখনো আসে নাই, কোনোকালে আসবেও না!
প্রয়োজনীয় একটা পয়েন্ট সামনে নিয়া আসছেন জন্য ধন্যবাদ দিলাম। শিশুর নৈতিকতা বিকশে অভিভাবকের ভুমিকা প্রথম সেকথা অনস্বীকার্য কিন্তু সে সাথে সমাজেরও একটা বড় ভুমিকা আছে। লক্ষ করলে দেখবেন আমাদের সামজিক বন্ধন দিনে দিনে যতটা শিথিল হয়ে আসছে শিশুদের অপরাধ প্রবনতাটাও সে অনুপাতে বাড়ছে। আমার পরবর্তি কথাগুলো বোধ করি সকলের পছন্দ নাও হতে পারে কিন্তু তারপরেও বলি, আমাদের নিজেদেরকে তো সংযত হতেই হবে তার পাশাপাশি কোন শিশুকে বুলিং করতে দেখলে আমাদের উচিৎ তার গালের উপর কসে একটা চড় বসানো যাতে পরবর্তি সময়ে গালাগালি করতে গেলে চড়ের কথা মনে পড়ে। উল্লেখ্য এক মুরুব্বীর হাতে চড় খাওয়ার পর আমি গালি দেয়ার অভ্যাস ত্যাগ করেছিলাম।
আপনার সাথে সহমত। যেকোনো শিশু আমাদের সমাজের শিশু, আমাদেরই ভবিষ্যত প্রজন্ম। দায়িত্ব আমাদের আছে, মা-বাবাদের মতোই! আপনার উদাহরণ ও পরামর্শে আমার সহমত আছে। তবে আমরা কিছু দায়িত্ব ভুলেও যাই...
কয়েকটা উদাহরণ দিয়েই বলি, আন্তর্জালে আমরা কি ছড়াচ্ছি? বাংলায় একটা শিশু গুগল সার্চ করতে গেলে কি দেখতে পাবে? এরকম কিছু!
এর দায় কি আমরা এড়াতে পারি?
না দায় আমাদেরও আছে।
এ্যাডাল্ট ফোরাম/সাইট ফিলটার দিয়া ঠেকাবা, ব্লগরে কি করবা? চ্যাটরুম?
শিশুদের আগে কোমলমতি, নিষ্পাপ শব্দগুলো এখন আর জুড়ে দেয়া যাবে কিনা, সেটা আসলেই চিন্তার বিষয় ।
শিশুদের অবক্ষয় হচ্ছে । মোটাদাগেই হচ্ছে । পরিবার এবং সমাজ দুটোই এজন্য দায়ী ।
আরবদের বিষয়ে নানান কৌতুক আমাদের জানা । তবে, আরব শিশু কিশোরদের বিষয়ে জানলে মনে হবে, আমাদের শিশুরা এখন অবধি ফেরেস্তাই আছে ।
ছ'সাত বছরের আরব শিশুরা নিজেদের মধ্যে এমনসব আলাপ করবে, তৃতীয় পক্ষ হিসাবে আপনি যদি শুনে ফেলেন, কানে হাত চাপা দিবেন নিশ্চিত করে বলা যায় ।
চিন্তা এবং সামাজিক দৈনতার প্রকাশ এটি । আমরাতো জানিই, কুমড়ের নীচের অঙ্গেই আরবদে বুদ্ধি এবং ভাবনা আটকে থাকে ।
*কোমড়ের
* কোমরের
সামাজিক মূল্যবোধ দিয়া ভালো খারাপের জাজমেন্ট আমার বড়ো আউলা লাগে। আমার কাছে বাপ-মায়ের দায়িত্ব বইলা মনে হয় সন্তানরে দুনিয়ার স্বরূপ শিখানোটা, খোঁয়াড়ের মুর্গি বানাইলে মনুষ্যত্ব ঢুকে কিনা সন্দেহ আছে। আর নিজের ব্যক্তিসত্ত্বা গইড়া উঠনটা অনেক ব্যক্তিগত ব্যাপারও। আমার বাপ সারাজীবন কঠিন রকমের কড়া ছিলো, কিন্তু মায়ের কাছে অফুরান স্বাধীনতা ছিলো আজীবন। আমি নিজে ব্যক্তিগত ভাবে সামাজিক মূল্যবোধের বাইরে গিয়া খুব বেশি কিছু করি নাই, কিন্তু কিছু এমন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিছি যেইটা সমাজের বিচারে অন্যায়ের পর্যায়ে পড়ে, কিন্তু মানবিকতার বিচারে সেইগুলা খুবই সাধারণ ঘটনা। আমার কাছে সবসময়েই মনে হইছে পরিবারের মদ্য ওপেন ফ্লো থাকনটা অনেক জরুরী, যেইটা অনেক জটিল ব্যাপাররেও ঠিকঠাক ডিল করতে শিখায়। কিন্তু পরিবারই শেষ কথা না কিন্তু, সমাজ বা রাষ্ট্র যখন সুবিধাবাদী আচরণ শুরু করে তখন সব আউলায়। ধরেন অ্যামেরিকাতে অস্ত্র সুলভ হওয়ার কারণে কিন্তু ওইখানে বাচ্চাদের মধ্যে সহিংসতা'র হারও অনেক বেশি। ব্যাপারগুরারে বাপমায়ের অমনোযোগিতা বইলা জেনারালাইজ কইরা ফেলাটা সম্ভব কিনা আমি ঠিক জানিনা। আমার এক নাইজেরিয়ান সহপাঠী আমারে কইসিলো, আমার সমকামীদের প্রতি রিপালশান কাজ করেনা, কারণ আমার কাচ্চা-বাচ্চা নাই, হইলে নাকি আমি পজেসিভ হইয়া মত পাল্টামু, কিন্তু আমার বাচ্চা লেসবিয়ান হইতে চাইলে আমি কখনো আপত্তি করুম বইরা আমার মনে হয়না। নিজের জীবন আর অন্যের জীবন নিয়া হেলাফেলা যাতে না করে এই ব্যাপারটা শিখানো গেলে আলাদা কইরা ন্যায়-অন্যায় বোধ শিখাইয়া বা আটকাইয়া রাখা রাগে বইলা মনে হয়না। দুনিয়া পাল্টাইতেসে টেকনোলজী'র নামে, আমরা চিল্লাইলে এই পাল্টানো থামবোনা, আমাদেরকে লগে লগে শিক্ষার ব্যবস্থাটা সেই হারে পাল্টানি লাগবো.. নাইলো কেওস হওয়া ঠেকানো যাইবোনা।
মধ্যে ****
মন্তব্য করুন