বিহারের নাসিমার আশ্রয়ে থাকা আমাদের রুমা ফিরতে পারবে না?
আল-জাজিরা টিভির একটি প্রতিবেদনে ভারতের বিহার রাজ্যের তরুণী নাসিমা নামের এক বাতিঘর সম্পর্কে জানলাম। শ্রদ্ধায় অবনত হলাম। নাসিমা নিষিদ্ধ পল্লীতে বেড়ে ওঠা একজন বিদ্রোহী তরুণী। অন্ধকারে আটকে পড়া মেয়েদের রক্ষা করতে তাঁর যাবতীয় সংগ্রাম। একটি এনজিও গড়ে তুলেছেন। একটি পত্রিকার সম্পাদকও তিনি। শুরুতে চার পাতার পত্রিকাটি হাতে লিখে বিতরণ করত তাঁর সহযোগী মেয়েরা। সেটি আজ ৩২ পাতার পত্রিকা। বিলি হয় সারা বিশ্বে। পতিতাপল্লীতে প্রথম যে কাজটি নাসিমা সফলভাবে সম্পাদন করেছেন, তা হচ্ছে, নতুন কোনো মেয়েকে আনা হলে তাকে রক্ষা করে আপনজনের কাছে ফেরত পাঠানো।
তাঁদের আশ্রয় একদিন পুড়িয়ে দিল স্বার্থান্বেষীরা। পুলিশ গেল, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও গেল। কিন্তু আগুন নেভাতে পানি ছিটাল না তারা। এক পর্যায়ে খোলা মাঠে আশ্রয় নেয়া অসহায় শিশু-তরুণী-বয়স্কদের তাড়িয়ে দিল পুলিশ। নাসিমা এদের নিয়ে হাজির হলো স্থানীয় মন্ত্রীর বাড়ীর আঙ্গিনায়। মন্ত্রী তিরস্কার করে নাসিমাদের বললেন, তোদের আচরণ ভাল না। নাসিমা পাল্টা জবাব দিল, ভারতীয় সংবিধানের কোথায় লেখা আছে আচরণ ভাল না হলে আগুন দিতে হবে? যদি লেখাই থাকে, আমাদের সবাইকে জিন্দা পুড়িয়ে ফেলুন। যদি তা না পারেন, তাহলে আপনার বাড়ীর সামনে আমরা পতিতাপল্লী প্রতিষ্ঠা করবো।
চালাক রাজনীতিক হিসেবে মন্ত্রী যথারীতি বললেন, 'ঠিক আছে। তোমাদের সমস্যা দেখব। এজন্য কী করতে হবে?' নাসিমা বললেন, 'আমাদের পেশার অধিকার চাই। মানুষ হিসেবে সম্মান চাই। ভারতের সব নাগরিকের মতই আমরা বাঁচতে চাই'। নাসিমার ব্যক্তিত্বের কাছে নতি স্বীকার করলেন মন্ত্রী। উপরন্তু তাঁকে দায়িত্ব দিলেন বিহারের অন্যান্য পতিতাপল্লীতে নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ করতে ভূমিকা রাখতে। নাসিমার সংগ্রাম আরো বেগবান হলো।
বাংলাদেশের মেয়ে রুমা পাচার হয় বিহারে। ১৯ বছরের এই তরুণী নানা হাত ঘুরে আশ্রয় পায় নাসিমার আশ্রয় কেন্দ্রে। নাসিমা অনেক মেয়েকে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে ফেরত পাঠাতে পেরেছে। কিন্তু রুমার বেলায় সফল হয়নি। বারবার বাড়ীতে যোগাযোগ করেও রুমা ফিরতে পারেনি। ভাইকে ফোন করে কান্নাকাটি করার পরও ভাই বলছে, এইতো আসছি। বেশী দেরি হবে না। মাসের পর মাস যায় বাড়ীর কেউ যায় না রুমাকে উদ্ধার করতে। আল-জাজিরার প্রতিবেদক মোবাইলে সংযোগ মিলিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করে, কিন্তু বুঝতে পারে রুমার ফিরে যাওয়ার কোনো আশা নেই। রুমার চোখের জল বিদেশী প্রতিবেদককে স্পর্শ করলেও ভাইয়ের হৃদয় স্পর্শ করতে পারেনি।
ভিডিওটা দেখালাম।
কিছুই বলার নাই
মাইনষের ভিত্রেই স্বর্গ নরক
মাইনষেতেই সুরাসুর
রুমার ভাই সামাজিক কারণেই কী বোনটিকে নিতে পারছে না? ধিক এই সামাজিক ব্যবস্থাকে।
মনটা খারাপ হয়ে গেল
অন্ততঃ দেশে ফিরিয়ে আনা যায়না ?
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। আমি চেষ্টা করবো। আপনারাও দেখুন।
অন্ততঃ দেশে ফিরিয়ে আনা যায়না ?
ওমরাওজান সিনেমাটার কথা মনে পড়ল। ভাই কি কারসাজি করে দুলাভাইয়ের সাথে পাঠিয়েছে কি না কে জানে
মেয়েটিকে উদ্ধার করা জরুরি। আলজাজিরায় মেইল পাঠালাম সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে যদি কোনো তথ্য যদি পাওয়া যায়। প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করাটা প্রথম কাজ।
মন্তব্য করুন