বউয়ের প্রয়োজন কখন বেশী, যৌবনে না বৃদ্ধ বয়সে
সাত/আট বছর আগের কথা। বাংলা নব বর্ষের প্রথম সন্ধা। বারান্দায় বসে আছি। অনেক ছেলেরা সামনের রাস্তা ও মাঠে পটকা ফুটাচ্ছে। হরেক রকম পটকা। এক একটা পটকা ফুটে আর সবাই সমস্বরে চিৎকার করে উঠে। চিৎকার তো নয় যেন কার গলার আওয়াজ কত বড় তার প্রতিযোগিতা চলছে। কখনো কখনো আবার একসাথে অনেক গুলো পটকা ফুটা এবং সম্মিলিত চিৎকারে যে উচ্চ শব্দ হচ্ছে এই শব্দ শক্তি যদি মেকানিক্যাল শক্তিতে রুপান্তরিত হত তবে আশপাশের আধাপাকা বাড়িঘর গুলোর চেহেরা অবিকৃত থাকত কিনা বলা যাচ্ছে না।
আমার ছেলে এবং যাদের চিনি তাদের কয়েকবার বল্লাম,অনেক হয়েছে এবার বন্ধ কর।
যাদের বললাম তারা ভয়ে হউক বা সন্মান করেই হউক,স্থান পরিবর্তন করল বটে তবে খেলায় ক্ষান্ত দিল না।
প্রাকৃতিক কার্যে অন্তর বাটি গিয়ে কর্ম সম্পাদন করত বাহিরে এলাম। পটকার আয়োজন তিরোহিত হইলেও কোলাহল ততোধিক জোরে চলিতেছে। কি হইল জানিবার তরে বাহিরে এসে দেখি একজন ক্রুদ্ধ বৃদ্ধ তার হাতের লাঠি নিয়ে সম্মিলিত ছেলেদের দিকে দৌড়ে গিয়ে আঘাত করছে,কিন্তু বার বার হাওয়ায় লক্ষ্যভেদি লাঠিখানা বক্রাকারে বৃদ্ধের দিকেই ফিরে আসছে। বৃদ্ধের লক্ষ্যভেদে সম্মিলিত ছেলের দল হা হা করে হেসে একে অপরের গায়ে পড়ছে,আর তিরস্কার বাক্য উচ্চারন করত বৃদ্ধের দিকে ভেংচি কাটছে।
ভেংচি ও তিরক্সারে জর্জরিত বৃদ্ধ,সিংহ গতিতে আবার আক্রমনে যাচ্ছে। ক্ষনিকে রক্তারক্তি কান্ড ঘটে যেতে পারে,তাই তড়িৎ বাইরে এসে চিৎকার করত লাঠিসহ বৃদ্ধকে চেপে ধরলাম।
পাগলের মত এসব কি করছেন।
মাইরাই ফেলামু,আজ মাইরাই ফেলামু
শালারা বাপের রাস্তা পাইছে,রাস্তার উপর পটকা ফুটায়।
এক্ষনে বৃদ্ধকে চিনে ফেলেছি।
কেন মেরে ফেলবেন আপনার সমষ্যা কি?
আমার গায়ে পটকা লাইগাই গেছিল।
লাগে তো নাই,লাগ্লেই কি আপনি তো আর মারা যেতেন না।
কিন্তু আপনি যেভাবে লাঠি দিয়ে আঘাত করছিলেন তাতে দুই তিনটা খুন হয়ে যেত।
আমারে জ্ঞান দিতে আসবি না।
সব শালা বেজন্মা।
কথা বার্তা সাবধানে বলবেন।
এবার বৃদ্ধ ক্ষেপে লাঠি হাতে আমার দিকে তেরে এল।
জটলা থেকে আমার এক ভাতিজা বৃদ্ধকে ধরে ফেলে
হাত উঠাতেই আমি চিৎকার করে উঠলাম, করিস কি, করিস কি? (চলবে)
আবুল হোসেন
৩১ আষাঢ় ১৪২৪
১৫ জুলাই ২০১৭খ্রীঃ
চট্টগ্রাম
মন্তব্য করুন