বাড়ি ফেরার ভ্রমণক্লান্তি
১
ঠিক ঠিক ঘরে ফিরি- ফেরা হয়। কবুতরের চুম্বক থাকে- দিক চিনে ঠিকই খোঁপে আসে সন্ধ্যায়। আমি শহুরে জীবন্ত মনুমেন্ট, আমার ভিতরে তড়িৎচুম্বকীয় ব্যাপারস্যাপার। তাই ফিরি। নিজের চুলের ভাঁজে, আঙুলে, চোখের বয়ামে অসংখ্য গল্পের পাণ্ডুলিপি নিয়ে যেগুলো আমি যত্ন করে লিখতে চেয়েছিলাম, হয়ত আমার আগে কোন পূর্বপুরুষ- আমাদের লুকানো দুঃখ-সুখ-স্বপ্ন-বন্ধনের শব্দাবলি- নাগরিক জীবনের বৃত্তজীবিতাকে সম্বল করে।
ট্রেনে প্রচুর প্রযুক্তি- গান শোনা, খবর দেখা, আবহাওয়া বার্তা জানা, বাণিজ্যিকধারার টিভি দেখা- তবু-ও নিজের দের্ঘ্যের অর্ধেক সমান জানালার উপারের আকাশ দেখতে ভালো লাগে। কারো বিকেল ওখানে স্বপ্নচিল। তারপর, বাসে উঠা। সচেতন মাতাল ট্রেনের জানালায় টেনেলের অন্ধকার লেগে থাকে, আকাশ দেখা যায় না। বাসে ঠিকই দেখা মেলে। কানে গোঁজা আইপডের সংগীত কিছুটা আলগা করে দেয় বাইরের পরিবেশ থেকে। বেশ মজা। হয়ত কোন দৃশ্য দেখছি- নিজে নিজে ভেবে নেয়া যায় কী ঘটছে; কেউ একজন কথা বলছে কারো সাথে- নিজে নিজে কল্পনা করে নেয়া যায় প্রচলিত সংলাপসমূহ।
মানুষ হয়ে এসব চারপাশের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে আসি। সেইসব কিছু-ও আমার ভিতরে সতেজ ভাস্কর্য হয়ে যায়- অলৌকিক-লৌকিক সব মনুমেন্ট।
২
প্রিয় কোন নারীর পাশে এসে দাঁড়ানোর চে' কয়েকটি প্রজাপতির সাথে খেলার জন্য সাহসী হয়ে উঠি!
শূন্য লাগে প্রিয় মানুষ ও পশুদের বন; পরষ্পরের অহঙ
তুলে নিয়ে বাড়ি ফিরে চলে নীল চড়ুই।
৩
আমরা, মানে ক্রমশ জীর্ণ বাঙালিরা আগে গান গাইতাম, 'তুমি এসে আঁচলে মুখ মুছে দাও।' সেই ধারা হারিয়ে গেলে নির্মলেন্দু বললেন, "আমি হাতপাখা নিয়ে
কাউকে আমার পাশে বসে থাকতে বলছি না" কেউ অন্তত বলুক ''তোমার চোখ লাল কেন?''
আমরা এই অভাগারা আরেকটু হারিয়ে ফেলি। এবং বলতে থাকি, 'আমার চোখ লাল না কালো সেটা জিজ্ঞেস করো আর না করো অন্তত একবার চোখ পানে তাকাও!'
না, ঠিক এসব না। তোমার কাছে এরকম চাই না। শুধু ঘুম থেকে উঠলে আমার মুখের কাছ থেকে পরিচিত চুল সরিয়ে বলবে, 'কালরাতে কী স্বপ্ন দেখেছিলে?'
৪
বিছানা গোছাতে বরাবরই আলসে লাগে। সকালবেলায় সিথানে ঘুম ও স্বপ্নসমূহকে শো-পিসের মতো সাজিয়ে রেখে বিছানা ছাড়ি, আর রাতে শোয়ার আগে কিছুটা গুছিয়ে নিয়ে শো-পিসগুলোতে নিজেকে সঞ্চারণ করি। বিছানা গোছানোর চেয়ে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বেলিমেঘগুলোকে সাজাতে- গাঁথতে আমার ঢের পছন্দ- বিকেলটুকু ঠিক ঠিক অবসরের।
৫
কন্যাদায়গ্রস্থ পিতার মতো করে গাড়িদায়গ্রস্থ ব্রিজটি ভেসে থাকে- নদী ও হাওয়ার 'পরে- শ্যাম্পেন ব্রিজের জল শীতে প্রাক্তন প্রেমিকা হাতের মতো বরফ! তবু-ও চেয়ে চেয়ে থাকতে ভালো লাগে। প্রথা, ধর্ম, বিশ্বাস-অবিশ্বাসগুলো একদিন মানুষের তাপমাত্রা ভেদে কঠিন-তরল-বায়বীয় অবস্থা ধারণ করে।
৬
নাট্যমঞ্চের মেয়েরা বরাবরই রাস্তায় জেব্রাক্রসিঙ
জমাতে অপরিদর্শী হলে-ও অঙ্গনিপুণা
কয়েকটি শ্বেতসরালী জলের ট্র্যাফিকে বিশ্বস্ত আরোহী
মানুষ মাত্রই গ্ল্যাডিওলাসের রঙ-সচেতন
তবু-ও অলসার্ত চোখে ঘুমহীনতা নিয়ে কয়েকজন চলে
গেলে কস্তুরীবনে
অচেতন বাইপোলার সীমাবদ্ধতা ভর করে
জেব্রাক্রসিঙের রঙ মূলত সাদা হয়
বাকি পথটা নিজে নিজে পাড়ি দেয়া যায়
করোটিতে হিমায়িত রোদ নিয়ে কিংবা কালোতিতিরের
বিহঙ্গপনা দেখতে দেখতে
হয়তো কোন এক যুবক বুকপকেটের কাছাকাছি পথের
বিমোহন নিয়ে হেঁটে যাবে ধুলি-সংহিত স্যান্ডেলে জীবনের
আকারপ্রকার নিয়ে
নাট্যমঞ্চের মেয়েরা মূলত জীবনের কাছে পৃথিবীর খোরাক
৭
ভ্রমণের এক ধরনের ক্লান্তি আছে। দেখতে দেখতে এক সময় চোখ পচে আসে। তবু-ও দেখা হয়; জন্মান্ধ বা বর্ণান্ধ তো নই। আমার খুব ইচ্ছে জন্মান্ধ কারো সাথে কথা বলি- এই জীবনে এখনো সেরকম কারো দেখা পাই নি। হয়ত কখনোই হবে না। প্রতিবন্ধী কারো পাশে এসে দাঁড়ালে আমি কুঁকড়ে যাই- নিজের এই চলন-গ্রহণ-রিপুর ব্যবহার এসবকে বড্ড বেশি পাওয়া বলে মনে হয়।
বাড়ি ফেরাটা অনেক মধুর। রাত করে কাজ থেকে ফেরা, পাঠশালা থেকে ফেরা, নিছক ফেরার জন্য ফেরা সবকিছু; কই কোনদিন তো পথ ভুল করি না!
গন্ধ ও স্পর্শ ভালো লাগে। একবার বলেছিল আমার লেখায় এসব বেশি আসে। সে থেকে চেষ্টা করি পাশ কাটিয়ে যেতে। গন্ধ আর স্পর্শ মানুষের জন্য শ্রেষ্ঠ বীজ- জ্ঞান কিংবা অপজ্ঞান যায় হোক না কেন।
আমার ফুল স্পর্শ করতে ভালো লাগে না; কারণ, একবার ছুঁয়ে ফেললে যে ভাললাগাটুকু ভিতরে সঞ্চারিত হবে তার বেগ অনেক বেশি আবেগীয়।
একটি মানুষ কখনোই ফুল হয়ে ওঠে না- কারণ মানুষের মনে 'মালী' হওয়ার বীজ অঙ্কুরে থাকে।
[১০/১/২০১০]
[অন্যত্র পূর্বপ্রকাশিত]
পছন্দের লেখা প্রিয়তে না নিয়ে পারা গেলো না।
=========================================== তিনটা শব্দ একটুখানি এডিট করা যায় কিনা ভেবে দেখার অনুরোধ রইলো।
ট্রেনে প্রচুর প্রযুক্তি- গান শোনা, খবর দেখা, আবহাওয়া বার্তা জানা, বাণিজ্যিকধারার টিভি দেখা- তবু-ও নিজের দের্ঘ্যের অর্ধেক সমান জানালার উপারের আকাশ দেখতে ভালো লাগে।(ওপারের)
কানে গুঁজানো আইপডের সংগীত কিছুটা আলগা করে দেয় বাইরের পরিবেশ থেকে। (গোঁজা)
একটি মানুষ কখনোই ফুল হয়ে উঠে না- (ওঠে না) [উঠে=অসমাপিকা ক্রিয়ারূপ; এর পরে আরেকটা সমাপিকা ক্রিয়ার প্রয়োজন হয় বাক্য সম্পূর্ণ করতে; যেমন উঠে পড়া। ]
ইয়ে, মানে...। কী বলব ভেবে পাচ্ছি না। লেখাটার একটা ছোট ইতিহাস আছে, একটু ফরমায়েশী লেখা-ও বলা চলে।
উপারে শব্দটা নিরিক্ষামূলক (বানান ঠিক আছে?) অন্য দু'টোর ক্ষেত্রে উপদেশ কলমধার্য!
[সচলের 'আলমগীর' কি আমাদের তিনি? ;)]
উপারে? আমি তো ভেবেছিলাম টাইপো... শব্দটা কেমন যেন বেখাপ্পা লাগছে আমার... হয়তো প্রথম দেখছি বলেই
[এই টপিক বাদ]
কী জানি!
[বুঝিলাম।]
উপারে মানে ওপারে-ই। একটু ইস্টাইল করে লেখা আরকি।
৫ নম্বর টা ভালো লাগলো, বেশ অন্যরকম, গাড়িদায়গ্রস্থ ব্রীজ কথাটা পছন্দ হইছে;
৬ নম্বরের কবিতা টা কঠিন লাগলো (মাথার ওপর দিয়া গেল);
"নাট্যমঞ্চের মেয়েরা বরাবরই রাস্তায় জেব্রাক্রসিঙ............নাট্যমঞ্চের মেয়েরা মূলত জীবনের কাছে পৃথিবীর খোরাক" -- শেষ পর্যন্ত নাট্যমঞ্চের মেয়েদের জন্য ওটা নিছক পেশা
কারো কাছে আরেকটু বেশি হলে মনের খোরাক তোমার যেমন লিখালিখি
দিন শেষে সে ঐ কন্যা-জায়া-জননী ই।
আমার নিজের ধারনা ফেরায় ভ্রমনক্লান্তি ছাড়াও আরো কিছু ক্লান্তি থাকে; ফিরবো ফিরছি এই ব্যাপারটায় স্বপ্ন থাকে কল্পনা থাকে অতীতস্মৃতি থাকে ফেরার পর কিছুই ঠিক আগের বারের মতন থাকে না;
কল্পনা বা স্বপ্নের মতন থাকেনা;
ঠিক যে সময়টায় যেভাবে ফিরতে চাওয়া হয় সেভাবে ফেরা যায় না কখনোই।
অট:
উপারে শব্দটা নিরিক্ষামূলক (বানান ঠিক আছে?) -- উপারে শব্দটার অর্থ কি?এটাকি ওপারে/ঐপারে অর্থেই ব্যাবহৃত?
জ্ঞান কিংবা অপজ্ঞান যায় হোক না কেন। -- এখানে যায় হোক কি যাই হোক অর্থে ব্যাবহৃত?
উরে, মেলাদিন পরে একখানা বিশাল সমালোচনামূলক মন্তব্য পাইলাম।
==================
নাট্যমঞ্চের মেয়েদের নিয়ে শেষ লাইনটা তুমি ভুল পাঠ করেছ। 'জীবনের কাছে' মানে তারা জীবনের জন্যই এসব; কিন্তু তাবৎ পৃথিবীর কাছে সেটা খোরাক- সেটা যে কোন কিছুর হতে পারে: গল্পের, কথার, ঠাট্টার, অবজ্ঞার।
তুমি তো জানোই আরেকটা লেখায় বলেছিলাম 'লিঙ্গধারী মানুষেরা মানুষ হয়ে উঠে না।' এটা আমি বিশ্বাস করি, তাই লিখেছিলাম। নাট্যমঞ্চের মেয়েদের আমরা প্রথমদৃষ্টিতে সেরকমভাবে মাপি, যেটা অনুচিত। অথচ সবকিছু অন্যরকম।
আমি প্রকৃত অর্থে নারী কিংবা পুরুষের মাঝে মানুষ খুঁজি, প্রথম থেকেই। অন্য কেউ হয়ত বন্ধু বা প্রেমিকা হতে পারে। সেটা সম্পর্ক; পরিচয় নির্ধারণের চাবিকাঠি নয়। বোঝানো গেল?
আরো অনেক ধরনের ক্লান্তি থাকে। ব্যাখ্যাতীত। সহমত জানাই।
যাই আর যায় এর মাঝে পার্থক্য আছে। সর্বনাম বা পুরুষভেদে (ব্যকরণের পুরুষ, ব্যক্তি নয় । যেমন ধরো- আমি যাই; কিন্তু 'আবার যাওয়া যায়'। এখানে 'আবার যাওয়া যাই' হবে না।
আছো কেমন?
সবাই এতো প্রশংসা করলো। আমার তো পুরা মাথার উপর দিয়া গেলো
আগেই পড়েছি অন্যত্র...
মন্তব্যটা অপেক্ষা করুক নতুন লেখার জন্য...
ধন্যবাদ
অন্যায়, অন্যায়। কোন জায়গায় তো মন্তব্য পেলাম না!
এইরকম লেখা লিখতে থাকলে ভক্ত ভক্তিনীর হিসেব রাখা কঠিন হয়ে যাবে আপনার। আমি পাংখা তালিকায় আরো একজনের নাম বাড়াইলাম
হা হা। আবার কাকে পড়ে শোনালেন?
এটা কৈ জানি পড়ছিলাম। সবাই কি পুরান লেখা ডাম্প করা শুর করলো এইখানে !
কোন লেখক নিজের লেখাকে "ডাম্প" করতে পারে!?!
এখানে কয়েকদিন আগেই কোন একটা পোস্টে আলোচনা হচ্ছিলো; তাতে এমন কথা এসেছে যে অন্য কোন কমিউনিটি ব্লগে পূর্বে প্রকাশিত লেখা এখানকার ব্লগারদের পাঠ-প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রথম পাতায় না দিয়ে নিজের পাতায় রাখা যেতে পারে। কিন্তু সমস্যা হলো, ডেভুরা এখনও সাইটের সব অপশন নিয়ে কাজ করতে শুরু করেননি (স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ চলছে এমন জানানো হয়েছে)।
গ. বন্ধুদের কাছে অনুরোধ, এখানে নতুন লেখা পোস্ট দিন। অন্য কোনো কমিউনিটি
ব্লগে প্রকাশিত লেখা এখানে না দিতে অনুরোধ রইলো। পত্রিকায় বা ব্যক্তিগত
ব্লগে প্রকাশিত নিজের লেখা এখানে প্রকাশ করা যাবে। আর এখানে প্রকাশিত কোনো
লেখা অন্তত ৪৮ ঘন্টায় অন্য কোনো কমিউনিটি ব্লগে প্রকাশ করা যাবে না।
@ মাহবুব সুমন
ধরে নিচ্ছি আপনি মদারেশন প্যানেলের কেউ একজন।
জ্বি, আমি প্রথম পোস্টেই বলেছিলাম যে আমার পক্ষে নীতিমালার এই ধারাটি সর্বদা অনুসরণ করা হবে না। কারণগুলো বলছি। আমি সামু, সচল, আমারব্লগ এবং এখানে- সব মিলিয়ে চারটি বাঙলাভাষী সাইটে লেখালেখি করি (এছাড়া শুধু সাহিত্যধর্মী কিছু সাইটে)। এখন এই ধারাটির সাথে খাঁপ খাওয়াতে হলে আমাকে ৪টি করে লেখা লিখতে হবে। চটুলবাজি লেখা আমি-ও লিখতে জানি, তবে ওসবে আগ্রহ নেই। তাছাড়া, পাঠক-ও নিশ্চয় ভালো কিছু আশা করে।
সব পাঠক সব জায়গায় থাকে না, তবে একজন লেখক সব জায়গায় থাকার ক্ষমতা বা ইচ্ছে রাখেন। সব ধরনের লেখা আমি বিভিন্নব্লগে প্রকাশ-ও করি না।
বিনয়ার্থে একটা কথা বলি, একজন লেখককে স্বাধীনতা দেন; সে নিজেই স্বাধীনতার মূল্য দিবে একদিন।
(আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায়।)
@ সুপ্রিয় আশরাফ মাহমুদ,
প্রথমেই আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমি মডারেশন প্যানেলের কেউ নই।
আপনার মতো সবাই যদি প্রথম পোস্টেই যদি বলে বসেন অমুক তমুক ধারা মানা সম্ভব হবে না তবে তো মগের মুল্লুক হয়ে যাবে। আপনার কথা অনুসারে, আপনি প্রথম পোস্টে বলেছিলেন " গ " ধারাটি আপনার পক্ষে সর্বদা অনুসরন করা হবে না ; এখন যদি অন্য কেউ এসে বলে নীতিমালার "ঘ" ধারাটি তার পক্ষে সর্বদা অনুসরন করা সম্ভব হবে না ও সে অনুসারে কেউ অন্য এক বন্ধুকে অসম্মান করে বসলো তবে সে ক্ষেত্রে কি করা হবে !!
নাকি একই যাত্রায় দু বিচার হবে?
জেনে খুশী হলাম যে আপনি সব গুলো ব্লগেই লিখেন সেই সাথে অন্যান্য সাইটেও। আপনার মতো বন্ধুই আমাদের দরকার।
প্রত্যেকটি ব্লগ বা সাইটই একটি নীতিমালা রেখেছে যা মেনে বা সম্মান করেই আমরা সেখানে লিখি। আমরা বন্ধুর নীতিলামায় কিছু চাপিয়ে দেয়া হয়নি যা অন্যান্য ব্লগ বা সাইটে করা হয়েছে। 'আমরা বন্ধু'র নীতিমালার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে ও মেনেই আমরা এখানে লিখছি, যা আপনিও করছেন। আমাদের উচিৎ এ নীতিমালাকে সম্মান করা।
আপনার এ লেখাটি সচলে পূর্বেই প্রকাশ করা হয়েছিলো। সচলের নিয়ম অনুসারে সেখানে কোনো লেখা পূর্বে অন্য কোনো কমিউনিটি ব্লগে প্রকাশ করা হলে তা প্রথম পাতা থেকে মুছে দেয়া হয় বা ক্ষেত্র বিশেষে মুছেও দেয়া হয় কোনো রকম নোটিশ ছাড়াই ( যেটা ভাস্করদার ক্ষেত্রে হয়েছিলো, যদিও উনি সেসময় ডুয়াল পোস্টিং সে সময় করেননি )। যদি সৎ সাহসথেকে থাকে তবে যে কমেন্ট এখানে করেছেন সেটা সচলেও করুন ও "আমারা বন্ধু" তে প্রথমে লেখা দিয়ে সেই একই লেখা সাথে সাথে সচলেও দিন। অর্ধ চন্দ্র পেতে সময় লাগবে না।
আপনি ৪ টি লেখা লিখবেন কি ৮ টি লিখবেন সেটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যপার। এখানের নীতিমালার প্রতি সম্মান দেখানো সম্ভব না কিন্তু অন্য পাড়ায় নীতিমালার প্রতি মাথা পেতে সম্মান প্রদর্শন এবং খাপ খাওয়ানো সম্ভব- অসম্ভব নিয়ে প্রশ্ন তোলা , কেমন যেনো দ্বি সত্বা হয়ে গেলো।
"আমরা বন্ধু" এখন নবিন ব্লগ , বেশী ভারি লেখা লিখলে ব্লগ ব্যথা পেতে পারে, সহ্য না করতে পেরে কস্ট পেতে পারে। আশা করি সেটা লেখক গন মনে রাখবেন। কঠিন কঠিন কিছু শব্দকে স্প্যাগাটির মতো প্যাঁচিয়ে প্যাঁচিয়ে লেখাই যদি ভালো হয় এবং সহজ সরল শব্দে লেখা সাবলিল লেখা যদি চটুল লেখা হয়ে তবে কাকও ধ্রুপদি সংগিত শিল্পী।
আপনার স্বাধীনতা হরন বা দেয়া কোনোটার অধিকারই আমার নেই। এ পৃথিবীতে সবাই স্বাধীন। তবে স্বাধীনতা পেতে পেতে কেউ কেউ স্বেচ্ছাচারীতাকেও স্বাধীনতা ভেবে বসেন।
আমি আপনার লেখা ভক্ত না হলেও নিরন্তর শুভ কামনা।
ধারা মানা হবে না সেটা বলি নি। বরং বলেছি সবসময় অনুসরণ করা হবে না।
তাছাড়া আমার ইচ্ছে যেসব লেখা নিজের-ও খুব ভালো লাগে সেসব লেখা সবখানে দেয়ার। অনেকটা ব্যাকাপ রাখা-ও বলতে পারেন; বিভিন্ন পাঠকের পাঠ-প্রতিক্রিয়ার বিষয়টা তো আছেই।
সচল সম্পর্কিত আলোচনায় যেতে চাচ্ছি না। একটা কাজ বা ঘটনা বিশ্লেষণে অন্য একাজ বা ঘটনা উদাহরণ হিসেবে আসতে পারে- যুক্তি হিসেবে নয়; সচলে আছে, আমারব্লগে-ও সেরকম হবে ব্যাপারটা এরকম যে- তুমি খেলে আমি-ও খাব; কিন্তু খাওয়াটা দরকারী কিনা সেটা চিন্তার বিষয়।
নীতিমালার প্রতি সম্মান আছে; আবার নবীন সাইটের উপর ভাললাগা আছে- ফলে ভাললাগার স্থানটুকু যদি নীতিমালা ম্লান করে দেয় তখন ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশে দ্বিধা করি না।
সচলের কথা যখন টেনেছেন তখন বলি যে সচলে ব্যক্তিগত ব্লগে পুরানো লেখা প্রকাশের সুযোগ আছে। আর সচল করছে দেখে আমরা-বন্ধু-ব্লগ করবে এটা তো মনে হচ্ছে সচলের নীতিমালাকে আমরা-বন্ধু-ব্লগই ডুয়েলিং করছে! হা হা।
নবীন ব্লগ দেখেই কষ্ট দেয়া চলে; জীবন সবসময় আদুরে নয়; কষ্ট না পেলে সুখ উপলব্ধি করা কঠিন- তাই বিকশিত হওয়ার জন্য দু'টোই দরকার। আপনারা সুখ দেন, আমি না হয় একটু কষ্ট বা ব্যথা দিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করি।
"কঠিন কঠিন কিছু শব্দকে স্প্যাগাটির মতো প্যাঁচিয়ে প্যাঁচিয়ে লেখাই যদি ভালো হয় এবং সহজ সরল শব্দে লেখা সাবলিল লেখা যদি চটুল লেখা হয়ে তবে কাকও ধ্রুপদি সংগিত শিল্পী"
======== শব্দের কঠিন নরম কিছু আছে নাকি? জানতাম না তো! একটু বিস্তারিত বলবেন। একটা শব্দ কখন কঠিন আর কখন নরম হয়ে ওঠে। একটি ভাষার প্রচলিত শব্দগুলো যদি পাঠক না জানেন তবে তার দায় লেখকের নয়; সেটা পাঠকের অজ্ঞতা আর এর জন্য লেখককে দায়ী করে সেটা নির্বুদ্ধিতা।
সহজ সরল সাবলীল তো রসময়-ও লেখেন। সেটা কি চটুল লেখা নয়? অবশ্যই আপনি দোহাই দিতে পারেন যে ব্যক্তিগত অভিরুচির উপর। সেক্ষেত্রে আপনাকে বলার কিছু নেই, কারণ কারো ব্যক্তিগত ব্যাপারে খবরদারি করা আমার না-পছন্দ।
স্বেচ্ছাচারীতা দূরের ব্যাপার। আগে স্বাধীনতার দরকার। সেটা না পেলে বেড়ে উঠা কষ্টকর।
শুভেচ্ছা।
সুপ্রিয় আফরাফ মাহমুদ,
অশেষ ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
নীতিমালা অনুসরন না করা নিয়ে কিছু কারিগরী সমস্যা দেখা দিতে পারে যার সুযোগ কেউ বুঝে বা না বুঝে নিতে পারে বলেই নীতিমালাকে সম্মান করার কথা বলেছি।
প্রত্যেক লেখক সে যে মানের লেখাই লিখুক না কেনো , প্রতিটি লেখা সন্তানসম ভালোবেসে থাকেন। তার চাওয়া থাকে তার লেখা সবাই পড়ুক, চেস্টা থাকে সবার কাছে সেই ভালোলাগা লেখা পৌঁছে দেয়া। এতে দোষের কিছু নেই অবশ্যই। এই নবীন ব্লগে নীতিমালায় যেহেতু অন্য কমিউনিটি ব্লগে পূর্বে প্রকাশিত লেখা এখানে না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে, সে জন্যই মনে করিয়ে দেবার জন্য বলেছিলাম, অন্য কোনো কারনে নয়।
পাশের বাড়ীর উদাহরন এনেছিলাম তুলনা করার জন্য। যুক্তি খাতিরে এটা আনা হয়েছিলো। যে কাজ আমি অন্য বাড়ীতে করি না ও যে আইন/নীতিমালা আমি অন্য বাড়ীতে মানি সেই একই আইন/নীতিমালা নতুন বাড়ীতে মানি না, এ স্ব-বিরোধীতা বড্ড চোখে লাগে।
এ নবীন ব্লগে যেহেতু নিজস্ব পাতার ব্যবস্থা এখনো হয়নি ( যা ভবিষ্যতে হবে ) তখন সে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করলে কি আর ক্ষতি হতো এ পৃথিবীর? কিছুই হতো না, অহেতুক নীতিমালাকে না মানা বা অনুসরন না করবার প্রবনতাকেই উৎসাহিত করা হলো।
পাঠককে যে লেখক নির্বুদ্ধি ভাবে সেই লেখকের মানসিক পরিপক্কতা নিয়ে আমার মনে প্রশ্ন জাগছে। একটি ভাষার প্রতিটি প্রচলিত শব্দ প্রতিটি পাঠেকের পক্ষে যেমন জানা সম্ভব নয় তেমন সম্ভব নয় প্রতিটি লেখকের পক্ষে প্রতিটি প্রচলিত শব্দকে জানা। এটা মানুষের সীমাবদ্ধতা। যে এই সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন নয় তার সম্পর্কে কি বলা যাবে সেটা বুঝে উঠতে পারছি না। এজন্যই মনে হয় অনেক তথাকথিত ভালো ও ভারী লেখা সাধারন পাঠক তো দূরের কথা বোদ্ধা পাঠকও পড়ে দেখে না, যার শেষ ঠিকানা হয় উই পোকার পেট। অথচ সেই তথাকথিত ভালো লেখক বেকুবের মতো আত্মতৃপ্তিতে ভুগে থাকেন, "কি এক লিখে ফেল্লুম" ভেবে !!
আপনি চটুল লেখা লিখেন না অথচ এই নবীন ব্লগেই এসেই " এলাম " জাতীয় পোস্ট লিখেছেন !! যাই হোক, চটুল লেখা কোনটা আর ভালো লেখা কোনটা সেটা পাঠকই বিচার করবে। লেখক হয়তো মনে করছে বিশাল কিছু লিখে ফেলেছে, ভালো কিছু ছাড়া সে লেখেই না আর সেটাকে সাহিত্যমানে বিশাল কিছু, অন্যরা যা লেখে সেটা চটুল বলে হেয় করে দেখে অথচ সে যা লেখা তা প্রায়শই মানে-গুনে রদ্দি মাল
আপনার লেখার ক্ষমতা দারুন। যেহেতু অনেক পড়া হয়নি সেহেতু ভক্ত হবার সুযোগ হয়নি। আশা করি সেটা হতে পারবো। আপনার সুন্দর লেখাটি আমার অনেক রুঢ় বাক্যদিয়ে নস্ট করেছি বলে দূঃখিত। আরেকটি কথা, আত্ববিশ্বাষ থাকা ভালো তবে অন্যকে ছোট করে দেখলে সেই আত্মবিশ্বাষে ফাটল ধরে। পৃথিবীটা অনেক বড়।
অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।
( এর পরে এই বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করবো না এই পোস্টে , হয়তো অন্য কোনো পোস্টে আপনার দিকে কামান দাগাবো )
@ মাহবুব সুমন
বিনয়ার্থে, আমার মন্তব্য সুন্দর ছিল না; করি নি। আপনার কিছু কথার প্রেক্ষিতে (ডাম্প লেখা, শব্দ, স্প্যাগ ইত্যাদি) বিপরীতে কিছু সূঁচালো কথা বলেছিলাম।
তবে একটা অনুরোধ আবারো করি। নীতিমালার অই ধারাটি রহিত করুন; সাইট আরো বন্ধুসুলভ হবে- ইউজার বাড়বে, মিথস্ক্রিয়া বাড়বে।
অপেক্ষায় থাকলে তো পৃথিবীর গতিশীলতা ব্যহত হবে। সাইটের কারিগরী সমস্যা দ্রুত সমাধান করা হোক; নাহলে তার আগ পর্যন্ত নিবন্ধন বন্ধ থাকুক। শুধু ভাত খেতে দিলে তো হজম হয় না; তরকারী-ও লাগে বৈকি- পোলাও-কোর্মা না হয় নাই পেলাম।
পাঠককে নির্বোধ বলি নি; সে শিষ্টাচার আমার মাঝে নেই; বরং বলেছি পাঠকের সংকীর্ণতা লেখকের উপর বর্তায় না- কেউ বর্তাতে চাইলে সেটা নির্বুদ্ধিতা।
ভালো লেখা, খারাপ লেখা- এসব আপেক্ষিক। সাহিত্যের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মানদণ্ড নেয় বলেই কারো কাছে হুমায়ুন আহমেদ শ্রেষ্ঠ; কিন্তু কেউ আবার শহীদুল জহিরের পাংখা।
"কী এক লিখে ফেল্লুম" এই ঢেঁকুর ওঠার যোগ্য হলে উঠুক- পাঠকের কিংবা লেখকের। আর ভালো লেখার পাঠক বরাবরই কম। সবসময়েই এটা সত্যি। রাষ্ট্রনায়ক একজন হন- সব জনগণই রাষ্ট্রনায়ক নন; তবে জনগণ মাত্রই রাষ্ট্রনায়কের শক্তির উৎস।
জ্বি, সেইজন্যই বলেছিলাম যে চটুল লেখা আমি-ও লিখতে জানি। আপনি কি চান যে আমি "এলাম" "মুড়ি খাইলাম" পোস্ট দিই যাতে পাঠক কষ্ট না পায়? বিশ্বাস করি একজন লেখকের নিজস্ব আত্মবিশ্বাস থাকা দরকার; তবে কতটুকু সেটা কে নির্ধারণ করবে তা অজানা। আত্মবিশ্বাস না থাকলে সবাই যৌবনের ডায়েরী-কবি হয়; রবী-নজরুল হয়ে ওঠা হয় না। আত্মবিশ্বাস মনশক্তি দেয়; উদ্দাম নিশ্চিত করে।
পৃথিবী অনেক বড়। তবু-ও আমরা নিজেদের মুঠোয় আনতে চাই। এই চাওয়া আমাদের উত্তরণের চালিকাশক্তি।
আমি আপনার লেখা পড়ি নি। দুঃখিত। আপনি-ও আমাকে পাঠ করেন নি। তবে পরষ্পরকে জানার আগ্রহ রাখছি।
শুভকামনা। বিনীত।
আমি অবশ্য অন্য কোথাও যাইনা বইলা ডুয়েল পোস্টিংয়ের অভিযোগ ধরতেই পারি না। যদি আমরা বন্ধু'র নীতিমালা এইরম হয় তাইলেও কি করতে হইবো তা'ও কইতে পারি না...অন্য এক পাড়ায় এই ডুয়েল পোস্টিং নিয়া আমার লগে বিরোধ হইছিলো...তারা তো নীতিমালা তৈরীর আগেই আমার এক পোস্ট মুইছা দিছিলো আরেক পাড়ায় দেওনের আগেই...আমি ডুয়েল পোস্টিং বিষয়ে কোন বিধি নিষেধে ক্যানো জানি বিশ্বাসী হইতে পারি না এখনো। হয়তো এইটা আমার ব্যর্থতা-অথবা উদারতা :P।
যাউগ্গা এই লেখাটা ভালো লাগলো কারণ লিখনীর এই ফর্মটা আমার ইদানিংকার প্রিয়...তয় আশরাফরেও কই নতুন লেখা দিয়েন কিছু পাঠকের দাবী মাইনা নিয়া...
আন্তর্জালের মতো মহাযজ্ঞে ডুয়েল পোস্ট নামক ভূত চাপাতে চাইলে ভীতির আশঙ্কা থাকে; আসতে পারে ওঝা, মন্ত্রপাঠ বিবিধ কলাকৌশল। এরকম দেখলে মনে হয় লেখা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে, লেখা লিখতে নয়।
ভাস্করদা, আপনার ভালো লাগল জেনে আমার-ও ভালো লাগল।
অবশ্যই নতুন লেখা দেয়ার ইচ্ছে রাখি; তবে সবসময় তো সম্ভব হয়ে উঠবে না; হয়ে ওঠে না।
দারুন ।
ধন্যু।
সুপার্ব...
কয়েক দিন দেখি নাই... বিজি? আঠা লাগানো পোস্ট খিয়াল কৈরেন
ঠিক ব্যস্ত না; তবে জীবন তো থেমে নেয়।
একজন সর্বোচ্চ কয়টা লেখা দিতে পারবে?
....লেখার বিস্তারটা আমারে খাইয়া ফেল্লো, অনেক্ষন অনেক কথা কওয়ার ছিলো, কিন্তু শেষের দিকে আইসা এই লেখাটার সাথে কোনো কথাই কৈতে মন্চাইলোনা, বাইচ্যা গেলা!!
অল্প কয়টা কথা পছন্দ হয়নাই, কিন্তু লেখাটা এতই ভালো লাগলো যে, প্রিয়তে ঢুকাইলাম...
শাব্বাস...
বিলাই (কেন জানি বিলাই ডাকতে ভালো লাগে! বিলাই আমার নিজের-ও পছন্দের), কোন কথা নিয়ে কথা থাকলে কথা হোক। আর প্রিয়তে ঢুকানোর জন্য তিন ছটাক ধইন্যা ও এক থালা দুধ বেশি দিলাম।
কবিতাটা বেশি জোশ।
মুক্ত, ধন্যবাদ জানাই।
সুন্দর
তাই বুঝি?
মন্তব্য করুন