"দেভদাস" ৪
এদিকে নারায়ণ মুখোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী কৌশল্যা অর্থাৎ দেভুর পিতা মাতা বড়ই অস্থির হইতে লাগিলেন। দেভু বিলাত হইতে আসিয়া ঘরের বাহির হয়না, চাকুরির সন্ধান করেনা। সারাক্ষন তাহার ল্যাপটপ খানি খুলিয়া কি যেন কি করিতে থাকে। অপরদিকে পারুর মাতা সুমিত্রাও ইদানিং এই বাড়িতে যাতায়ত বাড়াইয়া দিয়াছে। পূর্বে দেখা যাইতো সকাল দুপুর কি রাত, সুমিত্রা পারু কে কয়েকখানা কাচা লঙ্কা কিংবা একটু চিনি কিংবা ঘি চাহিতে পাঠাইতো, সেই সুমিত্রা নানা ব্যাঞ্জন সাজাইয়া আসিতে শুরু করিয়াছে। তাহার এরুপ ব্যঞ্জনা সাজাইয়া আনা কৌশল্যা স্বাভাবিক ভাবে লইতে পারিতেছে না।
দেভু তাহার কক্ষে বসিয়া ফেসবুক হাতড়াইতেছিল। পারুর বন্ধু তালিকায় থাকা প্রায় সকলকেই ইতঃমধ্যে দেভু তাহার বন্ধু তালিকায় যোগ করিয়া লইয়াছে। ইহাদের কাহারো সহিত তাহার ফোনালাপও হইয়া গিয়াছে এরই মধ্যে। দেভু ফেসবুক হাতড়াইতেছিল , এমন সময় তাহার ফোন বাজিয়া উঠিলো। দেখিতে পাইলো পারু "মিসড কল" দিয়াছে। দেভু এই কয়দিনেই খেয়াল করিয়া দেখিলো, এদেশের নারীরা সর্বদা মিসড কল প্রদান করে। তাহাদের কে পুনরায় কল করিতে হয়, কথা কহিবার জন্যে। দেভু ঠিক করিলো, আজ পারুকে বলিতেই হইবে সে তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে ব্যাকুল হইয়া রহিয়াছে।
এমন সময় বাসার গৃহ পরিচারিকা আসিয়া খবর দিলো যে দেভুর পিতা তাহাকে ডাকিয়া পাঠাইয়াছে।
- বাবা ডেকেছেন? পিতার কক্ষে প্রবেশ করিতে করিতে দেভু জিজ্ঞাসা করিলো।
নারায়ণ মুখোপাধ্যায় বিছানায় বসিয়া "দৈনিক তাহাদের সময়" পড়িতেছিল, ইহাই বর্তমানে সবচাইতে সস্তা পত্রিকা।
- হুম। বস । নারায়ণ মুখোপাধ্যায় কহিলেন।
দেভু চুপ করিয়া খাটের এক ধারে গিয়া বসিলো। ছোটবেলা হইতেই সে তাহার পিতাকে চরম ভয় পায়। অদ্যবধি সেই ভয় কাটে নাই তাহার। সে ভয়ে কাটাইতে নিজের নখ কামড়াইতে লাগিলো।
পত্রিকা পড়া শেষ হইলে নারায়ণ বাবু কহিলেন -
- বিলাত থেকে আসার পর সারাদিন যে ঘরেই বসে থাকো কারণ টা কি ? চাকরী বাকরি কি কিছু খুঁজতেছো ?
- জ্বী বাবা, মানে অনলাইনে ........ দেভু তোতলাইতে তোতলাইতে কহিতে আরম্ভ করিলো , এমন সময় তাহার মোবাইল বাজিয়া উঠিলো। এইবার তাহা মিসড কলেইর ন্যায় একবার বাজিয়াই থামিলো না। তাহা বাজিতেই লাগিলো। দেভু দেখিলো পারু পুনরায় ফোন করিয়াছে।
নারায়ণ বাবু পুত্রের কথা মন দিয়ে শুনিতেছিলেন , তাহার মধ্যে হঠাৎ করিয়া অশ্লীল শব্দ দ্বারা নির্মিত রিংটোন শুনিয়া চমকাইয়া উঠিলেন।
- যাও আগে কথা বলে আসো। বেদ্দপ পোলাপান।
দেভু দ্রুত পিতার ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল। নিজের কক্ষে পৌছাইয়া যেন হাঁপ ছাড়িয়া বাঁচিল। তাহারপর পারু কে ফোন করিলো।
- উফ। এমন সময়ে ফোন করেছ, আমি বাবার সাথে কথা বলতেছিলাম। দেভু কহিলো
- ওহ। বুঝি নাই। তোমাকে খুব মিস করতেছিলাম তাই কল দিলাম। পারুর উত্তর
- মিস না ছাই। আজ কয়দিন ধরে দেখা করার জন্য বলতেছি, তোমার সময়ই হয় না। আবার বলো মিস করতেছিলে।
- আরে দেখা তো হবেই। সত্যই কি দেখা করতে চাও? আগে বলো তুমি কি আমাকে আগের মতই পছন্দ করো ? দেখা করে পরে যদি পছন্দ না করো, সেই ভয়েই দেখা করিনা দেভু। তুমি জানোনা, আমি তোমাকে সেই আগের মতই ভালোবাসি।
পারুর এমন নাটকীয় কথা শুনিয়া দেভুর মাথার তার ছিড়িয়া যাইবার উপক্রম। ইহার মধ্যে পিতার সম্মুখে বেইজ্জতি হইয়াছে রিংটোনের কল্যাণে। অনেকটা চিৎকার করিয়াই দেভু কহিলো -
পারু। প্লিজ স্টপ ইট। আমি কালকেই তোমার সাথে দেখা করতে চাই। কালকে কোথায় , কখন দেখা করবা আমারে জানাও। আমি কোন না শুনতে চাইনা। কালকেই যদি দেখা করতে না পারো, আর কোনদিন দেখা হবে না বা কথা হবে না। এই আমার শেষ কথা বলে দিলাম।
পারু ফোন রাখিয়া কিছুক্ষন চুপ করিয়া বসিয়া রহিলো। তারপর ঠান্ডা মস্তিষ্কে ভাবিলো , যাহা হইবার হইবে। কপালে যাহা আছে, তাহাই হইবে। কালকেই সে সাক্ষাৎ করিবে দেভুর সহিত। অতঃপর সে সময় ও স্থান উল্লেখ করিয়া দেভুর মোবাইলে টেক্সট পাঠাইয়া দিলো।
প্রত্যুতরে দেভু ঠিক আছে লিখিয়া চুম্বন ও হৃদয়ের ইমো প্রদান করিয়া পারুকে টেক্সট পাঠাইয়া দিয়া পারুর কোন এক বান্ধবির সহিত চ্যাটে মশগুল হইয়া গেল।
পরদিন বিকাল ৫ ঘটিকা। দেভু এক গুচ্ছ গোলাপ রইয়া দাঁড়াইয়া রহিয়াছে রমনা পার্কে, বকুল তলে। পারু সেখানেই তাহাকে দাঁড়াইতে বলিয়াছিলো। পারু দেখিতে কেমন হইয়াছে, তাহাকে দেখিলে সে কি করিবে, পারুই বা কি করিবে , সেই মুহুর্ত কেমন হইবে নানাবিধ চিন্তা করিতে লাগিলো। দূরে বেঞ্চিতে বেঞ্চিতে কপোত কপোতি জোড়ায় জোড়ায় বসিয়া রহিয়াছে, তাহারাও কি সেরুপ কোথাও গিয়া বসিবে নাকি কোন রেস্টুরেন্টে বসিবে - এইরুপ নানান চিন্তা করিতে করিতে দেখিলো একজন মহিলা তাহার দিকে আসিতেছে।
দেভু খেয়াল করিয়া দেখিলো একটি হস্তিনী শাবক এর ন্যায় একজন তাহার দিকেই আসিতেছে। তাহার শরীরের প্রস্থে হিসাবে কাপড় বানাইতে হইলে মশারী কাটিয়া কাপড় বানাইতে হইবে। তাহার আগমন খেয়াল করিয়া দেখিতে লাগিলো এবং ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করিতে লাগিলো , এ যেনো অন্য দিকে ফিরিয়া যায়।
ঈশ্বর তাহার প্রার্থনা শুনিবার আগেই সে নারী আসিয়া দাঁড়াইলো দেভুর সম্মুখে। একখানা বিগলিত হাসি ছুড়িয়া দিলো । দেভু চেহারার দিকে তাকাইয়া দেখিলো এ যেন সাক্ষাৎ মন্ত্রী তাহেরা খাতুন।
তাহার কথা শুনিবার আগেই দেভু মুর্ছা গেল। সোজা হইয়া পড়িয়া গেল রমনা উদ্যানের মাটিতে।
হাসতে হাসতএ গড়াগড়ি খাচ্ছি
তাহার কথা শুনিবার আগেই দেভু মুর্ছা গেল। সোজা হইয়া পড়িয়া গেল রমনা উদ্যানের মাটিতে।
কৈ থেইকা কৈ লৈযা যায়...!!!
শুদু টিপসই মারেন কেন ?
কলেজের এক বান্ধবীকে বেবী এলিফ্যান্ট বলে ক্ষেপাতাম। হস্তিনী শাবক শব্দটা পড়ে তার কথা মনে হলো।
লেখা বরাবরের মতোই জোশ।
পারুকে এইভাবে পঁচাইলেন? আপনারে ধিক্কার।
পচাইলাম কই , স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল এটাই বুঝাইলাম।
কি যে একটা অবস্থা! পুরাই যা তা। হাসতে হাসতে কানের হেডফোন নিচে পড়ে গেলো!
পুরাই যা তা একদম

আমার আর কি দুষ, এই নিয়া সিনেমা দেখলে অনেক আগেই আত্মহত্যা কর্তো ,
সাঈদভাইরে
করতে মন্চাইতেছে।
এহ, ক্যান ? আমার কি দুষ ?
পরের পর্ব কই? বেচারা দেভু আর বেচারী পারু :(। পারু এই পোষ্ট পড়লে আপনাকে গুল্লি করতো।
কালকে আসবে পরের পর্ব।
শরতাংকেল ভুল করছিলো, সেই ভুল শুধরায়ে দিছি।
ইয়েয়েয়ে..
বাঙালী ললনাকে এইভাবে পঁচানো কি ঠিক হৈছে ভাইজান ?

পঁচাইলাম কই
যা সত্য তাই কইলাম
মজা পাইছি।
পরের পর্ব কই? ফাঁকিবাজি শুরু হইছে!!
ঠিক ঠিক ফাঁকিবাজি শুরু হইসে।
আরে , ইফতারি নিয়ে বিজি ছিলাম না ? তাই লিখতে পারি নাই
মন্তব্য করুন