একটি বই আলোচনা অনুষ্ঠান ও অন্যান্য...
গতকাল চট্টগ্রামের বিশদ বাংলায় চমৎকার একটি সন্ধ্যা কাটলো। এর আগে কখনো কোন বই আলোচনা অনুষ্ঠানে যাওয়া হয়নি। লেখক নিজের জানাশুনা এত নিখুত ভাবে বলে যেতে পারেন, সে সম্পর্কেও কোন ধারনা ছিল না।
প্রথমবারের মত বিশদ বাংলাতে গিয়ে মনে হল একদম পারফেক্ট একটা জায়গা। সৃজনশীল উপাদান ছড়ানো সবখানে। বই নিয়ে আলোচনা জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা হতে পারে না।
অনুষ্ঠানে কি কি হল? প্রথমেই একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ব্যাখ্যা করলেন অটিজম নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্হান। জানাগেল, প্রধান মন্ত্রী কন্যা পুতুল বর্তমানে পিএইচডি করছেন অটিজম নিয়ে। অটিজম নিয়ে সরকারের বেশ কিছু প্রদক্ষেপের কথা উল্লেখ করলেন।
"শিশুর অটিজম:তথ্য ও ব্যবহারিক সহায়তা" বইটি সম্পর্কে প্রসংশা করতে গিয়ে, বইটির সহজ ভাষায় লেখার ব্যাপারটিতে দৃষ্টি আকর্ষন করলেন। উনি লেখকে অনুরোধ করলেন আরো একটি বই লেখার জন্য, যাতে বইটি লেখার ব্যাকগ্রাউন্ডটা উঠে আসে।
বইটির মোড়ক উন্মোচন হল এরপর।
লেখক খুব সাবলীল ভাষায় তুলে ধরলেন অটিজমের নানা দিক। কি ভাবে চেনা যাবে একজন অটিস্টিক শিশুকে, অটিস্টিক শিশুর চিন্তা করার প্রক্রিয়া, লেখকের ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা, প্রবাস জীবনে অভিজ্ঞতা। এত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় যে শিশুর মানসিকতায় প্রভাব ফেলে শুনে অবাক হলাম। যেমন একজন অটিসটিক শিশুকে বলা যাবে না জুতোটা পরে নাও, বলতে হবে দুই জোড়া জুতোর মধ্যে কোনটা পছন্দ কিংবা কাজের ইনস্ট্রাকশন ছবির মাধ্যমে দেয়া, অটিস্টিক শিশুর ভিজুয়াল দক্ষতাটাকে কাজে লাগানো। আমার যে ব্যাপারটি চমৎকার লেগেছে, সেটা লেখকের জানার আগ্রহ... বিষেশজ্ঞ ডাক্তাররা কিভাবে চিকৎসা দেয়, সেটা পর্যবেক্ষন করে শেখার আইডিয়াটা।
এরপরের সেশন ছিল অভিজ্ঞতা বিনিময়ের। এই পর্বটি ছিল খুবই প্রানবন্ত, অটিজমে আক্রান্ত এক শিশুর অভিভাবক বললেন তার অভিজ্ঞতার কথা, পাশাপাশি কিভাবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে লেখকের সাথে পরিচয় হল। অনেকেই শেয়ার করলেন তাদের অভিমত। নামগুলো ঠিক মনে রাখতে পারিনাই বলে দুঃখিত, কারন এর মাঝে মঝে ছবি উঠানোর কাজটাও করতে হচ্ছিল।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করছিলেন বিশদ বাংলার আলম খোরশেদ ভাই। দর্শকের সারিতে বসে অনুষ্ঠান পরিচালনা ব্যাপারটিও অন্যরকম লাগল।
অটিজম নিয়ে আমাদের দেশে সচেতনতা খুবই কম, নাই বললেই চলে। এরচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার ভুল চিকিৎসা আর অটিজম সম্পর্কে জানাশোনার অভাব। অটিজম নিয়ে অজ্ঞতা কাটানোর জন্য একজন ভুক্তভুগী মায়ের এগিয়ে আসাটা অসাধারন। ইন্টারনেটে লেখালেখি, কাগজে বই ছাপানো, পাশাপাশি এইধরনের অনুষ্ঠনে অন্যান্য অভিভাবকদের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময়... এক কথায় হ্যাটস অফ। এইখানে অবশ্য নুশেরা আপু নিয়ে কিছু বলা ঠিক হচ্ছে না, ব্যাপারটা মায়ের কাছে নানার বাড়ীর গল্পের মত হয়ে যায়। তবে আমার ভিউটা লিখলাম আরকি। আপুর জন্য অনেক অনেক শুভকামনা...
অনুষ্ঠানে নুশেরা আপুর মা, ব্লগার তারার হাসি সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
শিরোনাম পড়েই বুঝতে পেরেছি।সে আর কেও না আমাদের নুশেরা আপু।
আজমের সাথে গলা মিলিয়ে বলতে চাই আপু,''আপনাকে স্যালুট''।
ব্যাপারটি জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর এও বলি, নুশেরা এগিয়ে যান তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে।
ব্যাক্তিগত দুঃখকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে ওঠে মানুষকে আলো দেখানো সহজ কথা নয়। শুধু স্যালুট দিলেও কম। এরাই ইতিহাসের অংশ হয়। ইতিহাসের পাতায় থাকুক "নুশেরার" নাম।
সহমত তাতাপু।
নুশেরা'পুকে কি যে বলি, বুঝতে পারছি না। আপাতত শুধু শুভকামনাই জানিয়ে রাখি বরং। আজম ভাইকেও ধন্যবাদ। তবে এটা কিছুটা খালি চা'এর মতো হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে, সঙ্গে টা'এর ব্যবস্থা (অর্থাৎ ছবি) থাকলে আরো খুশি হৈতাম। খাস বাঙালি কি না, বসতে দিলেই..
ছবি থাকলে কি আর বলতে হতো? আমি ছিলাম ক্যামরাম্যান, ক্যামরার মালিক ছিল অন্য কেউ প্রফেশনাল ফটোগ্রাপার তারার হাসির কাছেই ভালো ছবি গুলো সব।আর আমি যে ক্যামরার দিয়ে ছবি উঠিয়েছি তার মালিককেও অনুরোধ করা গেল ছবি আপলোড করার জন্য
কেউ একটুও জানায়না। সব মিস করি।
তারার হাসি আপাকে বলেন কিছু ছবি (প্রকাশ যোগ্য) যেন আপলোড করে...
ধন্যবাদ সব্বাইকে
তারার হাসি আপু মনে হয় বিজি আছেন।যে দিন অনুষ্ঠান হল তার পরের দিন ঢাকা যাওয়ার কথা বলেছিলেন।
ছবির জন্য ধন্যবাদ টুটুল ভাই...
রাস্তার জ্যামে আটকে অনুষ্ঠানটা মিস করলাম সেদিন।
আপনার সাথে দেখা হওয়াটা মিস করলাম
নুশেরা, আমি বিস্তারিত জানতে চাই ! আমি একটু কম বুঝি, দেরীতেও ।
ভালো লাগলো। আমি ঠিক কম বুঝিনা তবে দেরিতে বুঝি...
লেখাটা আসলে হুট করে উপস্হিত হওয়া একজন দর্শকের অনেক কিছুই জানি না,এই আলোচনা অনুষ্ঠান সম্ভবত আলম খোরশেদ ভাই আয়োজন করেছেন।অনুষ্ঠানে যারা অথিতি ছিলেন তাদের নিয়ে বলা হয়নি কিছু...দুঃখীত আমি।
নুশেরা আপুর মুখ থেকে শুনলে ভালো হয়...
এইটা একটা দারুণ কাজ হইছে।
ধন্যবাদ আজম, নুশেরার বইটি নিয়ে বিস্তারিত নুশেরার কাছেও শুনতে চাই ।
নুশেরার বইটি পড়ে মনে হয়েছে, এটা যদি অটিস্টিক বাচ্চাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া যেত, খুব ভালো হতো। কারো বাচ্চা অটিস্টিক শুনলে আমি তাদের এই বইটার কথা বলি।
আলমভাইকে অশেষ কৃতজ্ঞতা অভাবিত ও সুন্দর আয়োজনটির জন্য। দারুণ একটা উপহার পেয়েছি, উনারই অনুবাদ করা "বোর্হেসের সঙ্গে কথোপকথন"।
সকৃতজ্ঞ ধন্যবাদ শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মাহমুদ আরজু এবং বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক (ও চিকিৎসক) কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর এবং লেখক সৈকত দে-কে, তাদের মূল্যবান আলোচনা ও পরামর্শের জন্য। ব্লগার তারার হাসি আর আজমকে নতুন করে ধন্যবাদ দেবো না, এই বইটি লেখার কাজ ব্লগেই শুরু হয়েছিলো। এবি ব্লগেই অতিথি হিসেবে মন্তব্য করে পরিচিত হয়েছিলেন এমন একজোড়া অভিভাবক এসেছিলেন, সে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। আরেকজন ব্লগার ছিলেন, বিশদ বাংলারই একজন, বাবু। বাবু অবশ্য তার নিক জানাতে চান না।
==========================================
মন্তব্যে সবার শুভকামনা মাথা পেতে নিলাম।
তাতাকে বলি, ব্যক্তিগত দুঃখ ঝেড়ে ফেলার মতো মনের জোর যাদের আছে, তাদের প্রতি সশ্রদ্ধ ঈর্ষা পোষণ করি...
বইটি ইতিমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। সব মিলিয়ে দারুণ একটা কাজ।
শেষ ছবিতে নুশেরার পাশের জনরে খুব চেনা চেনা লাগে। কিন্তু নামটা ইয়াদ হইতাছে না।
নুশেরাপুর বইটা নিজ গুনেই জায়গা করে নিছে, আর, বিষয়বস্তুর কারনেই জায়গা কৈরা নেয়াটা অনেকের জন্যই উপকারের হৈছে। অনেক বেশি শুভেচ্ছা, আর আপুর প্রচেষ্টা আরো অনেক বেশি সফলতার মুখ দেখুক।
শুভকামনা।
আজমকে এমন একটা খবর শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
-------------------------
দর্শকের সারিতে বসে আছেন লেখকের শ্রদ্ধেয় মা।
--------------------------------
দর্শকের মাঝে দেখা যাচ্ছে মনোযোগী শ্রোতা হিসেবে ব্লগার আযমকে।
----------------------------
--------------------------------------
একজন ভুক্তভোগী যিনি তার বাচ্চার সমস্যার সমাধান খুঁজতে গিয়ে পান ব্লগের সন্ধান এবং লেখকের লেখা।
-----------------------------------------
উপস্থিত দর্শকের কৌতুহলী প্রশ্ন।
------------------------------------------------------------------------
আমি খুব দুঃখিত ছবি শেয়ারে বিলম্বের জন্য।
ধন্যবাদ আযম, ধন্যবাদ নুশেরা।
ধন্যবাদ পাওয়ার মত তেমন কিছু করিনি আসলে
...দারুন সব ছবি তুলেছেন
আজব কান্ড, ছবি যেভাবে আপ করলাম সেভাবে আসেনি, অর্ধেক ছবি দেখা যাচ্ছে।
আমার খুব ভাল লেগেছে এমন একটা অনুষ্ঠানে আমার কিছু সময় কাটাতে পেরে।
সবার কৌতুহলী প্রশ্ন এবং সেসব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন লেখক অনেক দক্ষতায়।
কোন একটা বিষয় নিয়ে জানা এবং তা নিয়ে জার্নাল ঘেটে বই হয়তো লেখা যায় কিন্তু তা নিয়ে বিশাল পরিসরে জ্ঞানের যে দরকার আছে তা বুঝতে পারলাম প্রশ্নোত্তর পর্বে। নুশেরা খুব শান্ত হয়ে শুনছিলেন সবার কথা এবং খুব ধীরে তার গভীরে গিয়ে সমাধান দিচ্ছিলেন। আমার মনে হচ্ছিল তিনি যা বলছিলেন, সব তার যাপিত জীবনের উপলব্ধি থেকে আন্তরিক অনুভূতির সাথে একাত্ম হয়ে।
ভাল থাকুক পৃথিবীর সব মা এবং তাদের সন্তানেরা।
নুশেরাপুর প্রচেষ্টা সফল হোক। অনেক অনেক শুভকামনা।
নুশেরা'পুর সুখপাঠ্য বইটি নিজগুণেই জায়গা করে নিবে সেই বিশ্বাস ছিলো ।
পোস্টের লেখক এবং তারাপুকেও ধন্যবাদ, চমৎকার ছবিগুলোর জন্য ।
এই পোস্টের পর থেকে নুশেরা'পুর কোন খোঁজ-খবর পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনাটা কি??
তাইতো আমিতো ঠিক বুঝতেছিনা।
কোথাও কি কোন ভুল করে ফেললাম নাকি ভাইয়া?
নুশেরা আপু কোথায় আপনি
মনটাই খারপ হয়ে গেল
মন্তব্য করুন