বিনিময়ের ব্যাপারস্যাপার
প্রতিদিনের মত আজও অফিস থেকে বের হলাম একরাশ ক্লান্তি নিয়ে। মানুষের ভীড় ঠেলেঠুলে অনেকটা বাহুশক্তি প্রয়োগ করেই বাসে উঠলাম। দাঁড়ানোর জায়গা করে নিলাম কোনমতে। পিছুতে পিছুতে হঠাৎ করে পাশের সিটে বসা একটা বাচ্চা মেয়ের পা মাড়িয়ে দিলাম। মেয়েটা উফ করে উঠলো। আমি তো মনে মনে খুবই লজ্জিত। হাত বুলিয়ে একটু আদর করে দিলাম মেয়েটিকে। ওর মা মনে হয় আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে চেয়েছিলো। খেয়াল করিনি। আমি তখন ভীষন সংকুচিত হয়ে আছি আমার অসতর্ক চলাফেরার জন্যে। তবে আমার অতটা সংকোচের কিছু ছিলোনা। মহিলা তার মেয়েকে কোলে নিয়ে একটু পরে বলল,"আপনি এখানে বসতে পারেন"। বসার জায়গা পেয়ে তো আমি স্বস্তির শ্বাস ফেললাম। দুটি কারণে, এমনিতেই দীর্ঘ বাসযাত্রায় দাঁড়িয়ে যাওয়াটা খুব হ্যাপার, আর তার ওপরে জানলাম যে, আমার অনিচ্ছাকৃত উজবুক ব্যবহারে মহিলা কিছু মনে করেননি।
আমি বসলাম। মেয়েটি কাশছিলো একটু পরপর। অসুস্থ্য বোধ হয়। খুব মায়া লাগলো আমার। ইচ্ছে করছিলো মহিলাকে বলি, "আপনার বাচ্চাটাকে কিছুক্ষণের জন্যে আমার কোলে দিবেন?" আমার তো কোন মেয়ে নেই। অবশ্য থাকবে কিভাবে, বিয়েই যে করিনি। তবে আমার অনেকগুলো রাজপুত্র আর রাজকন্যার মত ভাগ্নে-ভাগ্নী আছে। আজকেই আমার ছোটপার একটা ছেলে হল। কিন্তু ছোট'পা....তুমি তো আমাদের সবাইকে ভুলে গিয়ে, (অথবা আমরা তোমাকে...)নিজস্ব জীবনযাপন বেছে নিয়েছো। কতদিন তোমার সাথে কথা হয়না, দেখা হয়না..তোমার ছেলেটাকে কবে দেখতে পাবো কে জানে। যতদূরেই থাকো, ভালো থেকো ছোট'পা...
কনডাকটর এসেছে ভাড়া চাইতে। আমি উদাসভাবে ভাড়াটা মিটিয়ে দিয়ে সেলফোনে গান শোনায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম আবার। সঙ্গে কিছু উটকো আদ্র অনুভূতির সাথেও কিসব হিসেব নিকেশ চলছিলো। প্রিয় ছোট'পা, তোমার ছেলেটা....আমার পাশে বসা ছোট্ট মেয়েটা..।
সামনের স্টপেজে কেউ একজন নেমে যাবে। আমাদের সামনের সিটেরই কেউ। আমার সহযাত্রিনী তা দেখে বলল, "সামনের সিট তো খালি হচ্ছে, একটু কষ্ট করে ওখানে গিয়ে বসুন"
আমি উঠলাম। একটু কষ্ট হয়েছিলো বৈ কি। ওরা এখন আরাম করে বসতে পারবে। মহিলাকেও আর বাড়তি পনের টাকা দিতে হবেনা। পনের টাকা এই মধ্যবিত্ত জীবনে অনেক বেশি জানি..কিন্তু আমার কেন যেন অভিমান হচ্ছিলো খুব। মধ্যবিত্ত লেনদেন....বলতে ইচ্ছে করছিলো, "আপনার পনের টাকা বাঁচিয়ে দিলাম, এবার আপনার বাবুটাকে আমার কোলে দিন না একটু"।
কিন্তু দোষ দিয়েই বা লাভ কি। এভাবে তো বিনিময় করা যায়না, জানি। যদি একটু অনুভূতির বিনিময় করতে পারতাম....
আমাদের অত সময় কই? আর সময় আমাদের এমনভাবে কব্জা করে রেখেছে, খুব সহজেই সব কিছু ভুলিয়ে দিতে পারে। সাদা মনে একের পর এক গাঢ় প্রলেপ ফেলে। সেই প্রলেপে ঢেকে যাওয়ার আগেই বলে নেই,
" নাম না জানা ছোট্ট মেয়ে, তুমি ভালো থেকো, তোমার শরীর খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে উঠুক......"
নাম জানা হামটি ডামটি, তুমি ভালো থেকো। তোমার দাঁত ব্যথা (যদি থেকে থাকে) ভালো হয়ে যাক।
এই হৈলো এক সমিস্যা। চেলিব্রেটিদের দাঁতব্যতা হৈলেও সাধারণ পাব্লিকগো কাচে খবর পৌছায় যায়।
" নাম না জানা ছোট্ট মেয়ে, তুমি ভালো থেকো, তোমার শরীর খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে উঠুক......"
সেদিন খুব মায়া লাগসিলো কেন যেন। ঐ ছোট্ট মেয়েটার কথা এখনও মনে পড়ে আমার..
যাপিত জীবন। ভালো লাগলও হামা। আপনি এই ধরনের লেখা সাধারনত লিখেন না। কিংবা আমি হয়তো মিস করছি। তাই আপনার ট্র্যাক ভিন্ন হওয়াতে জোরে হাততালি দিলাম।
এটা অনেক আগের লেখা, দীপ আহসান নিক থেকে। সামুর কোন চিপায় চুপায় পৈড়া আছে। ওয়াচে থাকা অবস্থায় দিসিলাম দেইখা কারো নজরে আসেনাই। আমি একটু সংশয়ে ছিলাম আমার এই ধরনের লেখা আপনাদের কেমন লাগবে। ভালো লাগলো জেনে আশ্বস্ত হলাম।
ঐ দিনটা কেমন যেন অন্যরকম ছিলো..আমার মনটা কেন যে এত আদ্র হয়েছিলো!
আবারো সেই দীপ আহসান!!!
হাহা! আইজকা দীপ আহসানেরই দিন!
দীপুসোনা দেক্লে কত খুশী হৈতো!
কেন! পুলাডা কি এতৈ খারাপ! আম্রা তো বলি ছুট্টু দুষ্টু দীপুসোনা
হ!!! ছুডু-মুডু যাই হোক!!!
এক একটা দিন এমন অন্যরকম হয়। সব কিছু অন্যরকম মনে হয়।
আমি অন্যরকম হয়ে যাই বৃষ্টিদিন এলে। সেদিন অবশ্য বৃষ্টি ছিলোনা।
আমার তো কোন মেয়ে নেই। অবশ্য থাকবে কিভাবে, বিয়েই যে করিনি।
কাজটা কি এতই কঠিন?
কোন কাজটা?
মেয়ে থাকার জন্য বিয়া করতেই হবে এইটা কোনো মেডিক্যাল সায়েন্স আজ অবদি প্রমান করতে পারছে বলে আমার জানা নাই। তুমি নিঃসন্দেহে ট্রাই কইরা দেখতে পার। সাফল্য সুনিশ্চিত।
আইছে আরেকজনা!
সমস্যা তো মেডিক্যাল সায়েন্সে না, সমস্যা হৈলো সোশ্যাল সায়েন্সে!
ঠা ঠা ঠা!
এই ঠা ঠা র জবাবটা চাইলে আমি দিতে পারি। ঠা ঠা ওয়ালী নিশ্চয় অবগত আছে।
খ্যাক খ্যাক!!!
সুশাল সায়েন্স আপচুচ!!!
এই টাইপের নরমাল লেখাও উচিত মনে হয় ।
বৈচিত্র্য আবশ্যক!!
এ কোন কোণা কাঞ্চিতে কমেন্ট দিসো, খুঁইজা পাইতেই তো হয়রান!
হাহা!! CTRL +F লিখ্যা বোহেমিয়ান লিখেন ( যদি অভ্র থাকে) পায়া যাইবেন ।
বিড়াট ক্যারফা
মাঝেমাঝে এই টাইপের লেখা লিখলে তো পারিস রে বাপ! আর কতদিন সুপ্রা হিউম্যান হয়ে থাকবি? মাঝেমাঝে একটু ধরার ধূলিতে নেমে আসলে ক্ষতি কি?
কথার বহর দেখো! আসলে এই টাইপ লেখা লিখতে আমার খুব কষ্ট হয়। প্যাচাইল্লা মানুষতো, সহজ সরল কথা ঠিকমত গুছায় বলতে পারিনা।
বাহ.. ভালৈ তো হল। এইরকম সহজ-সহজ লেখা দিবেন। কি সব কঠিন লেখা দেন, টাওয়ারের উপ্রে দিয়া যায় গা!!
তোমার কমেন্ট পৈড়া উৎসাহ পাইলাম। তয় সেইডা কুন ক্ষেত্রে তা কমুনা
বুঝছি.. টাওয়ারের উপ্রে দিয়া যাওয়াতে খুশি।
হ..এইবার তো টাওয়ার ঠিকমতৈ কাজ কর্সে দেহি
গল্পটা আজ আবার পড়ে মনে হলো বোধহয় কিছু নতুন সংযোজন করা হয়েছে... খুব অবাক হয়ে দীপুর ব্লগ খুলে দেখি, কই না তো! একই তো আছে!
হ বুচ্ছি। দীপু ছুট্টু তো, তাই হেরে পাত্তা দাওনাই
হুমম...মনে হয় ৩৬ এর কাহিনী
৩৬ কি? বয়স?
ওরে ৩৬ বয়স না, বাসের নাম্বার। ঐ যে মিরপুর ১২ থিকা ঢাকেশ্বরী তক যায়, ঐটাতে ছিলি নাকি উনি তাই জিগাইসেন। তয় আমার মুনয় ৩৬ না, ৯ কিংবা ১৪ তে আছিলি। ঠিক না?
ও এই ব্যাপার! না, ৩৬ নাম্বারতো আমার রুট না। আমি ছড়ি হৈলো গিয়া মেট্রো সার্ভিস, মিরপুর সুপার লিংক, ট্রান্স সিলভা আর বাহন এ। ঐদিন মনে হয় মেট্রো সার্ভিসে উঠসিলাম।
আমি ৩৬ নম্বর বাসের কাহিনী ভাবছিলাম। এরকম দৃশ্য ঐ বাসে প্রায়ই দেখি কিনা!
একেক বাসের চরিত্র কি একেকরকম?
হলে ভালই হতো, আপনি নতুনরকমের গল্প বলতেন...
" নাম না জানা ছোট্ট মেয়ে, তুমি ভালো থেকো, তোমার শরীর খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে উঠুক......"
==============
নাম না জানা ছোট্ট মেয়ে, দেখো আমরা সবাই তোমাকে কত্ত ভালোবাসি....
ভালো লাগলো
ভালো থাকুন...
মধ্যবিত্তের প্যাঁচ লাগানো জীবন......ভালই লাগলো
ধন্যবাদ নাহীদ। মধ্যবিত্ত অনুভূতিগুলো আসলেই বড় প্যাঁচ লাগানো।
" নাম না জানা ছোট্ট মেয়ে, তুমি ভালো থেকো, তোমার শরীর খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে উঠুক......"
সবারই একই প্রার্থনা....
ভাল লাগলো।
ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
নিকটা খুব সুন্দর।
হ!
আমার নিকের কথা বললেন? তাইলে থ্যাংকু ...
আপনের এই লেখা পড়তে গিয়া আমার সুনীল গাঙ্গুলীর নীললোহিত চরিত্রের কথা মনে পড়লো কেনো জানি...
এত বড় তুলনা! আমার ক্ষুদ্র এ লেখাটি তাহলে সার্থক। অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
মেয়েটা সুস্থ্য হোক। আপনি যে এমন লেখেন ঝানতাম না।সহজে পইড়া বুঝে ফেলছি।লাইক করছি।
থেংকু জয়িতা। আপনেরে নিয়া অঞ্জন দত্তের একটা গান আছে। খুবই সুন্দর।
শুনেছি। সুন্দর।আফসুস আমারে নিয়া না।
ও আইচ্ছা ঐডা আপ্নে না! আমি তো ভাবসিলাম অঞ্জনের জয়িতাই আসছে এখানে
হামা সুস্থ তে য ফলা নাই কিন্তু । এইটা টাইপো হইতেছে
থ্যাংকস একু। ধরায় দিলে খুশী হই। ঠিক করে নেবানি।
ভালো লাগলো
ধন্যবাদ কাঁকন। একটা ভালো খবর আছে, আরণ্যক আনব্যান হয়েছে
এইসব লেখা টানেনা...মনে হয় একটু কোমল আবেগ দিয়া, ফাঁকিবাজী একটা লেখা.....ব্লগে ব্লগে এইসব লেখা কত পড়লাম.....
মানাইলো না....
তোমার মত পোষ্ট দেও একটা....একজন বন্ধু স্থানীয় হিসেবে কৈলাম...
এটা আসলে দীপ আহসান নিকে সামুতে লিখসিলাম। তখন ওয়াচে ছিলোতো, সেফ করার জন্যে লেখা। দেখি, "আমার" মত লেখা দিতে পারি কিনা..
দিতো কোলে আর হিসু করে ফেলতো, বেশ হতো
হিসু করলে আপনার কাছ থেকে টিস্যু নিয়ে মুছে ফেলতাম
আমিও তো বিয়া করি নাই তাতে কি আমার একটা বেবী আছে ভারী টুকটুক ......
ওর জন্যই তো নুশেরা আপুর বইটা কিনতে হইছে
অনন্য একটা লেখা পড়লাম.............
আপনার বেবিটাকে আমার পক্ষ থেকে ক্যাডবেরি। লেখা পড়ার জন্যে ধন্যবাদ!
সুন্দর লেখা
ধন্যবাদ তানবীরা।
আরে, ঢুকে পড়ব নাকি এইখানে বস!!
কেন না!
খুবই সুন্দর গল্প হাসান ভাই , এটা খালি এখানেই দিসেন ?
না। সামুতে লিটল হামা নিক থেকেও দেয়া হৈসিলো।
ভাল লাগল।
লেখাটা ভাল লাগলো পড়তে...
মন্তব্য করুন