তুমি ঠিক
মরমার আগে দাদু বলেছিলেন। তোকে দিয়ে কিছু হলোনা। এতো এতো পড়াশুনা করলি।
এমবিত্র পাশ করলি, কিছুই হলোনা।তোকে নিয়ে সত্যি খুব দুঃখ হয়।কি এক পাঠশালা দিয়েছিস, তাতে কি তোর কোন রোজগার হয়। গরীবদের জন্য পাঠশালা। কোন টাকা পাচ্ছিস। তাতো পাচ্ছিস না। অথচ তোর বয়সী মেয়েরা কতটাকা রোজগার করে। সত্যি তোর জন্য বড়ই চিন্তা হয়। সেদিন হেসে উঠেছিলাম ঠিকই তবে ভিতরের আমি কুঁচকে কেচোর মতো একাকার হয়ে গিয়েছিলাম।একরাশ লজ্জায়। তাইতো এই অর্থের জন্যে দাদুর জন্য কিছুই নিয়ে যেতে পারিনি। একটু কসা মাংসই তো খেতে চেয়েছিল। তাই একটু নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর তো কিছুই পারিনি। না ভুল হলো আর ক'খানা আপেল নিয়ে গিয়েছিলাম। এইটুকু জিনিসের ব্যবস্থা করতে আমার কত কষ্ট হয়েছে। তুমি ঠিক বলেছো দাদু এই পাঠশালা দিয়ে আমি কিছুই করতে পারিনি। জানি না জীবনে পারবো কিনা। তার সাতদিন বাদেই তুমি ঈশ্বর দর্শনে চলে গেলে। এই অর্থের জন্যে তোমাকে শেষ দেখা দেখতে পারিনি। তোমার শ্রাদ্ধেও যেতে পারেনি তোমার অতি আদরের লেদি। যাকে তুমি খুব আদর করে ডাকতে। আমি যতদূর জানি, তোমার ঐ শ্যামল ছায়ায় বাড়ির মধ্যে আমার আগমন ঘটে। তুমি আমার জন্য কত কিছু করলে অথচ আমি কিছুই করতে পারিনি। হা-হা-হা করে আজ আমার হাসতে ইচ্ছে করছে।এ হাসি নিজেকে ধিক্কার জানানো হাসি। এ হাসি লজ্জার হাসি। এ হাসি জীবনে বেঁচে খেকে মরে যাবার হাসি। এ হাসিই আমার এখন একমাত্র সম্বল। ইচ্ছে করছে সীতা মায়ের মতো ধরিত্রীর বুকে মুখ লুকিয়ে থাকি। মাটিকে চিরদিনের মতো আঁকড়ে ধরি। আর কোনদিনও বের হয়ে আসতে ইচ্ছে করছে না। সবার কাছেই কতনা ছোট হচ্ছি। শুধু বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-পরিজন সকলে আমাকে মেপে থাকে টাকার দণ্ডায়ণে। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো কে পছন্দ করে। আমি হলে কি করতাম।
স্বপ্নধরা। একটি সুন্দর-স্বপ্নীল পৃথিবী। যেখানে আগত শিশু হেসে খেলে বেড়াবে। আনন্দ-উৎসবে পড়াশুনা করবে। কই দিতে কি পারলাম। পারলাম না। ৭ই জুলাই ২০০৬ এই বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড সমান স্বপ্ন নিয়ে দেশকে আলোকিত করতে অনেকর মতো আমি আর সোহাগ এই পাঠশালাটি প্রতিষ্ঠিত করি। দেখতে দেখতে আজ কতগুলো বছর পার হয়ে গেল। সোহাগও চলে গেল একদিন। এখন আমি আর আমর কজন। কিন্তু সবারতো পরিবার আছে। তাদের বাদ দিয়ে পাঠশালার পিছনে কে আসতে চায়। আমার ও একটি পরিবার হয়েছে। খুব বেশিদিনের নয়। কিন্তু আমি কেন পারি না। কেন এই পাঠশালার ছোট ছোট মানুষগুলোর পাশে থাকতে মন চায়। কেন অর্থ আমাকে টানে না। কিন্তু এটাতো ঠিক নয়। কাছের কিছু মানুষের প্রতিতো আমার ও কিছু দায়-দায়িত্ব থাকা উচিত। যা শুধু অর্থ দিয়ে পূরণ করা সম্ভব। তাই না।
সবাইকে অর্থের পেছনে দৌঁড়াতে হবে এমুন কুনু কথা নাইক্কা।
লেখা এবং আপনার চিন্তা ভালো লেগেছে।
পাঠশালা নিশ্চয়ই আপনার কাছের কিছু তাই হয়তো পাঠশালা বা পাঠশালার মানুষ গুলো থেকে দূরে থাকতে পারছেন না! আশা করি পাঠশালা ও কাছের মানুষ গুলোর প্রতি দায়িত্ব গুলো সুন্দর ভাবে পালন করতে পারবেন!
আপনার দাদু ঠিক বলেননি। আপনাকে দিয়েই আসল কাজটা হতে পারে।
আপনার জন্য শ্রদ্ধা ও শুভকামনা.
পাঠশালা নিশ্চয়ই আপনার কাছের কিছু তাই হয়তো পাঠশালা বা পাঠশালার মানুষ গুলো থেকে দূরে থাকতে পারছেন না! আশা করি পাঠশালা ও কাছের মানুষ গুলোর প্রতি দায়িত্ব গুলো সুন্দর ভাবে পালন করতে পারবেন!
অবিরাম শুভ কামনা রইল।সমাজে আপনার মত কিছু নির্লোভ মানুষ আছে বলেইতো অসহায় মানুষগুলো এখনো স্বপ্ন দেখে।
মন্তব্য করুন