ইউজার লগইন

সানজানা'এর ব্লগ

এলোমেলো

আমার এলোমেলো লেখার খাতা,
কখনো গান কখনোবা কবিতা।
মন মেঘের আড়ালে উঁকি দেয়া স্বপ্নগুলো,
আজ পেয়েছে প্রাণ নির্বাক শব্দগুলো।
হাজারো কাজের ভিড়ে, ইচ্ছেগুলোর সমাধিতে,
জ্বলছে আমার স্বপ্ন প্রদীপসম।
ঠিকানা আমার সাড়ে তিন হাত মাটি
চিহ্ন শুধু কাফনের কাপড়খানি,
তবুও এ পথ চলা
গানের খাতা ভর্তি করে লেখা।
ছড়ানো ছিটানো কাগজ যত্রতত্র,
পড়ে আছে কলমের মুখটা হতভম্ব।
অজস্র কাটাকুটি আর অনিয়মের ভিড়ে,
আমার নিরর্থ এ গান লেখা জীবনকে ঘিরে।

ষোল কোটি টিয়া পাখির আত্মকাহীনি

পূবাকাশে সামান্য রক্তিম রেখা ফুটে উঠেছে। সূর্যটা উঠি উঠি করছে। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে অসংখ্য কাক কা কা করেই চলেছে। বারান্দায় রাখা খাঁচার ভিতরে বন্দী টিয়া পাখিটা আড়মোড়া ভেঙ্গে নিল। তার সঙ্গীর ঘুম এখনো ভাঙ্গেনি।

“আরে ওঠো ওঠো। ভোর যে হয়ে এল।”

“তোমার আমার কি এমন কাজ আছে যে আমরা সকাল সকাল না উঠলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে?”

“তবুও কেমন জানি অপরাধ বোধ হয়।”

“যাদের অপরাধ বোধ হওয়া দরকার তাদের তো হয়না। তোমার হয়ে লাভটা কি?”

“দেশের যা অবস্থা তাতে কি আর শান্তিতে বসে থাকা যায়?”

“যারা দেশের স্টিয়ারিং হুইল ধরে আছে তারা তো দিব্যি নরম গদির বিছানায় লেপ গায়ে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। তোমার কেন দেশ নিয়ে এতো মাথা ব্যথা বুঝিনা বাপু।”

“আহা দেশের প্রতি একটা দায়িত্ব আছে তো। এই মাটিতে আমাদের জন্ম, তার ঋণ কি মরেও শোধ করা যাবে!”

পাহাড় আর নদীর গল্প

ছোট্ট একটি গল্প শোনাবো আজ, নদী আর সবুজ পাহাড়ের গল্প।
এই পাহাড়ের বুক চিঁড়ে , কতকাল ধরে ধেয়ে চলেছে
খরস্রোতা দুরন্ত এক নদী।
নদী আর পাহাড়ে কতো দিনের সখ্য
দুটিতে কত ভাব, কী গভীর বন্ধুত্ব।
তবুও জানো পাহাড়টা পারলো না, পারলো না নদীকে ধরে রাখতে।
আর পারবেই বা কিভাবে বলো?
নদীর যে ধর্মই ছুটে চলা।
গ্রাম থেকে শহরে, দেশ দেশান্তরে;
কালের স্রোতে সে গিয়ে পড়ল সাগরে।
শত তপস্যার বৃষ্টি যখন ঝরে, তপ্ত ধু ধু মরুপ্রান্তরে,
সে সুখ, সে তৃপ্তি শুধু মরুভুমিই জানে।
বাঁধ ভাঙ্গা নদীকে তাই আজ আর কে পায়!
সে কি আর বারণ মানে?
যারে পাবার আশায় এতকাল বয়ে চলেছে,
পাহাড়কেও ফেলে আসেছে দূর বহু দূরে।

পাহাড়ের আজ বড্ড মন খারাপ।
আজ নাকি নদীর বিয়ে, সাগরের সাথে।
পাহাড়ের চোখের জল যে নদী হয়েই বয়ে চলে, নদীতেই মিশে একাকার হয়।
তাই পাহাড়ের কান্না প্রকৃতি দেখতে পায় না।
মনের গভীরে, স্মৃতির কোন গহীন কুঠরিতে আজও যে নদী বেঁচে আছে,
বেঁচে আছে সেই আদিম ভালবাসা, তার হদিশ কে রাখে?
পাহাড়ের কী বা ক্ষমতা যে মহাকালের লেখা রীতি সে বদলাবে?
নদীকে যে সাগর পানেই ছুটে যেতে হবে,
নদী কখনো উল্টো দিকে বহমান নয়,

বুয়েটের ক্যাফেটেরিয়া

বুয়েট থেকে পাস করে বেরিয়েছি আজ প্রায় ছয় বছর। তবুও কোন এক অজ্ঞাত কারণে বারবার ফিরে যেতে ইচ্ছা করে ফেলে আসা সেই সব দিনগুলোতে। ক্লাশ আর সেশনাল এর রোলার কোস্টারে চেপে কেটেছে কতো অগনিত দিন রাত্রি। শত যন্ত্র আর যন্ত্রণার ভিড়েও সেই সময়টাকে আমরা রাঙিয়ে নিয়েছিলাম নিজেদের রঙ তুলি দিয়ে।

কারণে অকারণে অটো নেয়া, এক ক্লাসে বসে অন্য subject এর assignment করা, কতো আবোলতাবোল চিরকুট আদান-প্রদান করা। এখনো মনে পড়ে মেকানিক্স ম্যাডাম এর ক্লাস কারো ভালো লাগত না। ম্যাডাম black board এর দিকে ঘুরলেই সবাই চক, কাগজ - যার হাতে যা আছে তাই ছোঁড়া শুরু করতো। ম্যাডাম ফিরে তাকানো মাত্রই সব শান্ত। যেন ভাঁজা মাছটিও কেউ উল্টে খেতে জানে না।