সুদিপ বসু রায়'এর ব্লগ
খেলা
পাঁচকড়ি হালদারের এখন ক্রাচের সাহায্য নিয়ে হাটতে হয়। আমরা যারা তাকে দেখি তারা তাকে ক্রাচে ভর দিয়েই হাটতে দেখি। আমরা তখন তার পা ভাঙ্গার রহস্য উদঘাটনে ব্যস্ত হয়ে পরি এবং আমরা অনুসন্ধানে থাকি।
বিয়ে, ত্বরা ও একটি অসুখ
বর পক্ষ ও কনে পক্ষের পূর্ণ সমর্থনে, হিন্দু ধর্মানুযায়ী পাটি-পত্রের মাধ্যমে বিয়ের দিন ধার্য করা হয়েছিলো জানুয়ারী মাসের ১১ তারিখ এবং ধার্যের তারিখ ছিলো ৬ নভেম্বর। প্রস্তুতি সেভাবেই চলছিলো। ধীর-স্থির ভাবে। হাতে যথেষ্ট সময় রয়েছে এখনো। এভাবেই চলছিলো। তারপর হঠাতই একদিন বিয়ের তারিখ পরিবর্তন করে জানুয়ারীর পরিবর্তে করা হয় ডিসেম্বরে। ত্বরা লেগে যায় চারিদিকে। বিয়ে হঠাতই অতি সন্নিকটে। বিয়ের প্রয়োজনীয় সবকিছু যোগারে এখন সবাই ভীষণ ব্যস্ত।
এই ফাকে পাঠকদের জানানো প্রয়োজন বোধ করছি যে ডিসেম্বরের ১ তারিখে কনের পিতা হঠাত অসুস্থ হোয়ে পরলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা পূর্বক জানান যে তার lungs cancer, আরো জানান যে তার সর্বোচ্চ আয়ু ১ মাস। এতক্ষণে পাঠকরা নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন হঠাতই এত তাড়া কেনো! বলে রাখা প্রয়োজন যে আমি যখন এই অনুগল্পটি লিখছি তখন বর্ষপঞ্জিতে ৩ ডিসেম্বর ২০১৪।
"৮ নাম্বার বাস"
“৮ নাম্বার বাস” নিয়ে লিখবো এরকম একটা ইচ্ছে বহুদিন ধরেই পুষে আসছি। লেখা হয়ে উঠেনি। কারণ নেই, স্রেফ হয়নি।
ইচ্ছে ছিল ৮ নাম্বার বাসের ঐ হেল্পারের দৃঢ় কন্ঠ নিয়ে গল্প লিখবো, যে কিনা অবিরত বলে চলে, “ঐ যাত্রাবাড়ি-মতিঝিল-পল্টন-শাহবাগ-ফারামগেট-কলেজগেট কিংবা গাবতলি-কল্যানপুর-শ্যামলী-ফারামগেট-মতিঝিল-শাহবাগ।“ বলবো তার খিস্তি খেউর খাওয়ার গল্প। কিভাবে যাত্রীরা তাকে অশ্রাব্য ভাষায় প্রায়শই গালিগালাজ করে। আর বলবো তার এসব ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করার গল্প। তার তো চটে গেলে চলবেনা, তার আরো কিছু রোজগার দরকার আরেকটু ভালো করে চলার জন্য। তাই সে এসব গ্রাহ্য না করে নিজের মত ডেকে যায় গলা খাকড়িয়ে, “ঐ যাত্রাবাড়ি……………………………,
কি লিখবো!
ভাবছিলাম একটা গল্প লিখবো
পারলামনা।
ভাবছিলাম একটা কবিতা লিখি
তাও হলোনা।
কি নিয়ে লিখবো? কি'ই বা লিখবো?
এ তো আষাঢ় মাস চলছে
তবে কি এবার একটা আষাঢ়ে গল্প লিখবো?
লিখবো কি একটা আষাঢ়ে কবিতা তবে?
মধ্যবিত্তের আষাঢ়ে চাহিদার গল্প লিখবো?
লিখবো তাদের আষাঢ়ে স্বপ্নের কবিতা?
কিভাবে লিখবো? কি'ই বা লিখবো?
ভাবতে গেলেই ভাবনাগুলো
কেমন যেনো এলোমেলো হয়ে যায়
মধ্যবিত্তের জীবনের মতই
বড্ড এলোমেলো বড্ড আষাঢ়ে।
নীরবতা
চায়ের দোকানদার এনামুল
আজকাল ওর দোকানেই বসি
মাঝে মাঝে দোকানে এ ও থাকে
তবে না থাকার পাল্লাটাই ভারি
আমি একা বসে থাকি
চা খাই, সিগারেট পুরাই…
আর, আর এনামুলের দিকে তাকিয়ে থাকি
কথা বলতে পারেনা এনামুল, না কানে শুনে
আপন মনে কাজ করেই যায়
মাঝে মাঝে ঠোটে সিগারেট পুরে কি যেনো ভাবে
ওর অস্পষ্ট সজল চোখের কিনারা দেখে ভাবি
ও কষ্টের খেত চষে বেড়াচ্ছে
মাঝে মাঝে ওর ঠোটের প্রান্তে ভেসে ওঠে অস্ফুট হাসি
বুঝতে বিলম্ব হয়না, এ হাসি ব্যঙ্গাত্মক
অনিশ্চিত, দারিদ্রতায় কন্টকিত জীবনের প্রতি
মাঝে মাঝে আশার ক্ষীণ আলোও ভাসে থাকে ওর চোখে
কি জানি কোন নেশায়!