আমার সেই বন্ধুর সরল স্বীকারোক্তি - ৩
মাঝে মাঝে অনেক বেশি ঝগড়া হতো, কিন্তু তারপর আবার দেখা হলেই সব ঠিক। রেস্টুরেন্টে খুব কাছাকাছি বসে যখন ওর গালে হাত দিতাম তাতেই ওর সব রাগ ঠান্ডা। এভাবে কেটে গেল তিনটি বছর। মাঝে মাঝে রাত জেগে বন্ধুদের সাথে কার্ড খেলার খুব নেশা ছিল আমার, সাথে হাল্কা দেশী কিংবা বার পকেটের অবস্থা বুঝে বিদেশী রঙ্গীন পানীয়।
স্ম্ব্বতি কখনোই এসব পছন্দ করত না, তাই প্রথম দিকে সর্যি আর করবোনা টাইপ কথা এবং পরবর্তীতে না জানিয়ে রাতে কার্ড খেলতে যেতাম এবং সাথে যা আগে বললাম। এমন রাত গুলোতে মাথায় আজব আজব দুষ্টুমি বুদ্ধি আসতো মাথায়। তেমনি এক দুষ্টুমি বুদ্ধির ফল হলো মুমু। বন্ধুদের সাথে বাজী ধরে মোবাইলে কথা বললাম মুমু সাথে একদিন। পরিচয় গোপন করে কয়েকদিন কথা বলার পরে নিজের কাছে মনে হতে লাগলো মেয়েটি সত্যি সত্যি আমার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছে। মুমুর সাথে কথা বলতে অনেক বেশি ভাল লাগতো। খুব বেশি সহজ সরল, কোন জড়তা ছিলনা এবং কথা মনে হতো সে বুঝে আমার সব কথা মানে। সত্যি তাই ছিল। কথা বলে অনেকগুলো দিন পার হয়ে গেল। এর মাঝে মুমু তার পরিবারের সাথে এক সপ্তাহের জন্য যায় ব্যংকক। এই এক সপ্তাহে আমি টের পেলাম আমার মনের মানুষটি স্মৃতি নয় মুমু। (কারন জানতে চাইলে আমার সেই বন্ধু উত্তর দিয়েছিলো এটা মনের ব্যাপার শুধু আমার মন জানে যা প্রকাশ করা সম্ভব নয় ।)
মুমু ব্যাংকক থেকে ফেরার আগেই স্মৃতির সাথে আমার সকল সম্পর্ক শেষ করে দিয়েছিলাম । এর কারণ ছিলো স্মৃতির ধার্মিক বাবা এবং পরিবার। স্মৃতি আমাকে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিল সে তার বাবার মতের বাহিরে কিছুই করতে পারবে না। যদিও তখন পর্যন্ত বিয়ের ব্যাপারটা আমার মাথায় ধরতো না।
মুমু ব্যাংকক থেকে ফিরে ফোন দিল আমাকে। প্রথম কথায় ছিল, কতটা মিস করেছি তাকে। সত্যি অনেক বেশি মিস করেছি এবং আমার সেই অনুভুতি আমি গোপন করতে পারিনি। সেও নাকি খুব বেশি মিস করেছে তাই পরদিনই আমার সাথে দেখা করতে চাইল। আমিও না করিনি কিংবা করতে পারিনি। প্রথম বারের মত দেখবো মুমুকে। শর্ত ছিল আমি কোন বন্ধু নিয়ে যেতে পারব না, সেও তার কোন বান্দ্ববীকে নিয়ে আসবে না।
যথাসময়ে, যথাস্থানে হাজির হয়ে দূর থেকে ফোন দিয়ে নিশ্চিত হতে চাইলাম, এটাই মুমু কিনা। দেখি হ্যাঁ, আরও দুই বান্দ্ববীকে নিয়ে সে হাজির। আমি আর সামনে আসলাম না। অনেক দূরে সরে যেয়ে ফোন দিয়ে বললাম, তুমি না একা আসার কথা। তাই দেখা করবনা। সে অনেক অনুনয় করে বলল একটু দেখা করতে এবং তার বান্দ্ববীদের সে বিদায় করে দিয়েছে। বেচারীর কথায় মন গলে যায় আমার। আবারো ফিরে গেলাম। একটি আইস্ক্রিমের দোকানে। সেদিন মুমুর চোখ বলছিল সে কতটা দূর্বল হয়ে পড়েছে। বন্ধুরা বলতো ধনু রাশির জাতকরা নাকি শিকারী হয়। সেদিন তার প্রমান পেয়েছিলাম।
দেখা হবার পরে ফোনে যোগাযোগ বেড়ে গিয়েছিল অনেক। মুমুর সব কিছু ছিল খুব শিশুসুলভ। ওর কথা, আচরণ, আমার কাছে আবদার এবং মাঝে মাঝে অভিমান। এর কয়েকদিন পরে, মুমু আমাকে ফোনে জিজ্ঞেস করে আমাদের মধ্যে কি প্রেম হয়ে গেছে। আমি কোন জবাব দিতে পারিনি সেদিন। শুধু মনে মনে ভাবলাম, আমিতো তাই চাই। মুমু দেখতে অনেক বেশি সুন্দরী এবং স্মার্ট ছিল। ওর চুলগুলো ছিল আমার সব চেয়ে প্রিয়। যখনি সামনে আসতো ওর মাথার কাছে নাক নিয়ে চুলের ঘ্রাণ নেয়া ছিল আমার খুব পছন্দের। যতটুকু মনে পড়ে, মুমু কোনদিন আমার কোন কথায় না করেনি। যখনি দেখা হতো বাচ্চাদের মত করে আমাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকা ছিল তার কাজ। এতে কে কি মনে করলো তার কিছুই যায় আসেনা। ওর কাছে আমিই ছিলাম সবকিছু, আমিই ছিলাম ওর একমাত্র পৃথিবী। এভাবে দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়, আমিও আমার গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে চাকরীতে ঢুকলাম। মুমু বি বি এ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
চলবে ........





অনেকদিন পর পর কেনো?
পড়ছি
হমম পড়ছি।
পড়লাম।
তারপর?????????
পড়ে শেষ করলাম এইমাত্র । এ অংশের কাহিনী ভুলে যাবার আগেই পরের পর্ব চাই ।
চুপচাপ পড়ে গেলাম, চলুক
নাহ্, পড়ে আর চুপচাপ থাকা গেলনা, পরের পর্ব তাড়াতাড়ি কুইক ছাড়েন।
সবার সাথে আমি সহমত জানালাম।
নি:শব্দে পড়ে গেলাম......।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
পরের পর্বের অপেক্ষায়
মন্তব্য করুন