সিরিয়াস লেখা
সৌন্দর্য্য এমন একটা বিষয় যেটার প্রতি পৃথিবীর সব মানুষের একটা আকণ্ঠ তৃষ্ণা রয়েছে। অথচ সৌন্দর্য্য বিচার করার স্বাভাবিক ক্ষমতা কিন্তু তাদের বেশিরভাগেরই নেই। সাধারণত আমরা চেহারার বৈশিষ্ট্য যেমন চোখ, মুখ ও নাকের আয়তনিক গড়ন, চুলের রং, দৈর্ঘ্য ও ঘনত্ব, শরীরের বলিষ্ঠতা ও রং-এর মতো কিছু বিষয়কে সৌন্দর্য্যের মূল প্রতিনিধি মনে করি এবং সেগুলোর উৎকর্ষকেই কেবলমাত্র গুরুত্ব দিই। এই বিচারে পৃথিবীর তাবত খাটো, কালো, নাকবোঁচা, টাকমাথা, ভুরিওয়ালা, দৃশ্যমান জায়গায় জন্মদাগ কিংবা জরুল সমৃদ্ধ সবাই বাদ পড়ে যায়। অথচ একবার ভেবে দেখুন এইসব বৈশিষ্ট্যর কোনো একটিরও কি বিনিময়মূল্য রয়েছে? বিশেষ উপায়ে বলিষ্ঠ বানানো শরীরের যৌনকর্মে উপকারী ভূমিকা পালনের সামর্থ্য থাকলেও, সেটি সর্বক্ষেত্রে কার্যকর নয়। এছাড়া অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলো মূলত অফলপ্রসূ।
অথচ তারপরও আমাকে যদি উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ সমৃদ্ধ কিন্তু মানসিকভাবে দৈন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী কারও তুলনা করে, একজনকে সঙ্গী হিসাবে বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে আমি অবশ্যই দ্বিধায় পড়ে যাবো। শেষ পর্যন্ত বিপরীতধর্মী ব্যাক্তিকেই বেছে নেবো জানি, তবে প্রথমে যে দ্বিধা দেখা দেবে সেটাও মিথ্যে না। এটা কি বিবর্তনের ফসল? মনে হচ্ছে বিবর্তনের ওপর লেখা বইগুলো পড়া শুরু করতে হবে। ইদানীং জানার ইচ্ছে বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। সমগ্র পৃথিবীর ভর কতো- আপনারা কি জানেন? প্রশ্নটার উত্তর কিন্তু 'আজ রবিবার' নাটকে দেয়া হয়েছিল। একদম শুরুতে। পৃথিবীর ভর হচ্ছে পাঁচ দশমিক নয় গুণ দশের বর্গ চব্বিশ কিলোগ্রাম। অনেক দিন এই ব্লগে কেউ কারও বানান ভুল কিংবা ব্যাকরণ ভুল ঠিক করে দেয় না। একসময় নুশেরা আপু আর নাজমুল ভাই এই কাজটা করতেন। সে দিনগুলো সম্প্রসারণশীল সময়ের স্রোতে কতোটা পেছনে পড়ে গেছে? প্রযুক্তির উন্নতি কি আমাদের জীবদ্দশায় সেই অবস্থায় পৌঁছাবে যে- আমরা সময় পরিভ্রমণ করে অতীত আর ভবিষ্যতে ঘুরে বেড়াতে পারবো? বিজ্ঞান কিন্তু সরাসরি প্রশ্নটার উত্তর দেয় না। এই জায়গায় এসে ধর্ম আর বিজ্ঞানের একটা মিল দেখতে পাই। ধর্ম বেচারার আপডেট হওয়ার সুযোগ নেই। নাহলে লড়াইয়ে টিকে থাকার আর সব উপাদানই তার ছিল।
মানুষের সৌন্দর্য্য খুঁজে দেখার ভেতর এক ধরনের মজা আছে। কেউ হয়তো বাহির থেকে আর দশজনের মতে 'অসুন্দর' কিন্তু একসাথে সময় কাটালে বোঝা যায়, তার ভেতর কোমল, সুন্দর একটা মন আছে। অনেক সময় পাওয়া যায় চমৎকার সব মানবীয় গুণের দেখা। অাবার হয়তো দেখা যায়, সেই মানুষটার আশপাশে থাকার মধ্যে এক অন্য রকমের মজা আছে। এই সব মজার দেখা পেতে চাইলে বাহ্যিকতা পরিহার করে একটা মানুষের ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখতে হয়। কাজটা কঠিন না, তবে সময়সাপেক্ষ। কেন যেন মানুষের সেদিকে আগ্রহ কম। সবাই শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য্যের পেছনে ছুটছে। যতোদিনে মানুষ আসল বিষয়টা বুঝতে পারছে, ততোদিনে অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কারোরই কিছু করার নেই। মানুষের মনের মতো জটিল আর কোনোকিছুই হতে পারে না। সব জেনে বুঝেও সে বারবার আগুনে ঝাপ দিতে চায়।
শিশুশ্রেণীর মনোবিজ্ঞান ক্লাসের লেকচার লেখার মতো হয়ে যাচ্ছে সবকিছু। সেদিন রবার্টের সাথে কথা হচ্ছিল সিনেমার জনরা নিয়ে। দেখা গেল আমাদের দু'জনেরই সবচে' প্রিয় জনরা হচ্ছে পর্ণ। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে সায়েন্স ফিকশান। বাকি সবকিছু এ দু'টোর পরে। পুরোনো সিনেমাগুলো রিভিশন দিলাম কয়েকদিন। ইনসেপশনটা দ্বিতীয়বার দেখে প্রথমবারের চেয়েও ভালো লাগলো। কেন কে জানে? অবাস্তব গল্প একটা পুরাই। তারপরও জাস্ট হা করে পুরো সিনেমাটা গিলে ফেললাম!
কলাম্বিয়ার মাদকসম্রাট পাবলো এস্কোভারকে প্রথম সীজনে ধরতে পারে নি ডিইএ'র চৌকস গোয়েন্দারা। পরের সীজনে কি হবে বুঝতে পারছি না। ভাল সম্ভাবনা আছে বেশি টানতে গিয়ে গল্পটাকে বোরিং বানিয়ে ফেলার। তারপরও নারকোস্-এর পরের সীজনের জন্য অপেক্ষা করছি। দেশে নেটফ্লিক্স চালু হয়েছে জেনে হালকা আনন্দ পেয়েছি, কিন্তু আমার মনে হয় না মানুষ ভারতীয় রদ্দি সিরিয়ালের নেশা থেকে সহজে বের হতে পারবে।
তুষার ঝরলো কয়েকদিন তুমুলবেগে। এখন সবকিছু এক হাঁটু বরফের নিচে ডুবে আছে। গভীর রাতে বরফের বুকে পায়ের ছাপ ফেলে ফেলে হাঁটতে অদ্ভুত লাগে। তুষারকণাদের মতো কোমল জিনিস পৃথিবীতে কমই আছে। আমি যে মানুষটাকে একসময় ভালবেসেছিলাম, তার হাতের কাছাকাছি মাত্রার কোমল। তুষারকণার সাথে সেই মানুষটার হাতের আরেকটা মিল আছে। ধরে রাখলে দু'টোই অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার হাতের মুঠো ভিজিয়ে দেবে।
আমাদের ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়ায় একেকদিন একেক রকম খাবার রান্না হয়। আর প্রতিদিন ছয়-পাঁচ রকমের খাবার থাকে। যার যেমন খেতে ইচ্ছে, সে তেমন খাবার লাইনে দাঁড়িয়ে সংগ্রহ করে। আমি যেসব দিন ক্যাফেটেরিয়ায় যাই, দেখা যাবে বেছে বেছে সেসব দিনই পৃথিবীর যতো খারাপ খাবার আছে, রান্না করা অবস্থায় রাখা থাকে। কো-ইনসিডেন্স নিশ্চই। পৃথিবী ভরে আছে কো-ইনসিডেন্সে। সেদিন লাইব্রেরীর লবিতে বসে ফেসবুক চালাচ্ছি, একটু আগে ক্যাফেটেরিয়া থেকে মোৎজারেলা স্টিক আর পাস্তা দিয়ে লাঞ্চ সেরে এসেছি; কিন্তু ভুল করে পানির বোতল নিয়ে বের হওয়া হয় নি। পকেটের অবস্থা সঙ্গিন বলে মেশিন থেকে পানির বোতলও কিনছিলাম না কিন্তু পানির পিপাসা পেয়েছিল ভালোই। এমন সময় দেখি বাইরে জিমি দাঁড়িয়ে আছে। হাতে ছয় বোতল পানি। দোকান থেকে কেনা। সম্ভবত সারা সপ্তাহের জন্য। সে আমাকে বাইরে থেকে দেখে, কাঁচের দেয়ালে নক করছিল। ওর বোতলের সংখ্যা দেখেই মন ভালো হয়ে গেল। বের হয়ে তাড়াতাড়ি একটা রেখে দিলাম।
আমাদের করিডোরে নতুন একটা ছেলে এসেছে। নাম সাইফেদ্দিন। বাড়ি মরোক্কো। ছেলেটা সারাদিন হাসে। দেখা হলেই হাসিমুখ। কি খবর, কেমন চলছে দিনকাল, পড়াশোনা কেমন হচ্ছে, ইত্যাদি প্রশ্ন। আমিও অবশ্য হাসাহাসি পছন্দ করি। ওর প্রথাগত প্রশ্নের জবাব শেষে শুরু হয় আমার প্রথাবিরোধী আলাপ, যার বেশিরভাগই সেক্স, নারীদেহ ইত্যাদি সংক্রান্ত। ফলে অবধারিতভাবেই হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ হয়ে যায় একেকজনের। আমি মাঝে মাঝে ভাবি, এতো যে হাসি সেজন্য কি ভবিষ্যতে পস্তাতে হবে? যতো হাসি ততো কান্না?
আইডিকে, অ্যান্ড আইডিসি। এলওএল। ভালো থাকেন সবাই। কথা হবে পরে আবার। মানে আমি লিখবো আর আপনারা পড়বেন, এই আর কি। এরচে' বেশি কথা তো এইখানে সম্ভব না। এটা যদি আমার এখানকার কোনো বন্ধু মহলের আড্ডা কিংবা শাওয়ার নিতে যাওয়ার পথে প্রতিবেশি কারও সাথে দেখা হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া গল্পের মতো কিছু হতো, তাহলে বাজি ধরে বলতে পারি; আমি যতোগুলো বিষয়বস্তু আমদানি করেছি এই লেখাটায় সেগুলোর প্রত্যেকটা নিয়ে একেকজন একেকরকম মতামত দিতো, পাশাপাশি তারাও নানা বিষয় আমদানি করতো; সব মিলিয়ে এমন একটা আড্ডা হতো; যেটা ঘন্টা দুই-তিনেকের আগে শেষ হতো না। এবং সেই সব আড্ডা থেকেই মানবমন জেনে যেতে পারতো, তাকে কার মনের ভেতর উঁকি দিয়ে দেখতে হবে।
যাক সেসব বিবেচ্য বিষয় না। আজ হচ্ছে না, কাল হবে। টেনশন নিয়েন্না। খুদাপেজ। টা টা।
---
এখনতো খুদাপেজ বলারও কেউ নাই... সব্বাই যার যার মত বিজি
কথা ঠিক টুটুল ভাই, তবে বিজি থাকাও ভালো

অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা
সিরিয়াসলি পড়লাম।
সিরিয়াসলি থ্যাংকস্
মন্তব্য করুন