অন্য কোন প্রাণী হলে এত জঘন্য আত্মোপলব্ধি হতো না
পৃথিবীর মানুষের ওপর আমার যে ভয়ংকর রাগ হয়েছে। যদিও চেষ্টা করছি কমানোর। কিন্তু কমছে না। রাগে আসলে কি হয়? নিজের ক্ষতি ছাড়া আর তো কিছু দেখি না। ক্ষতিটাও সহজে বোঝা সম্ভব না। মনের ভেতর গোপনে এ ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। খেয়াল করে দেখলাম, ইদানীং আমার ইতিবাচক মানসিকতা ভয়াবহ হারে নিম্নগামী। রাগ নিয়ে ভাবতে থাকলে, আস্তে আস্তে বেড়ে যায় হৃদকম্পনও। যা শরীরের জন্য ভাল না কোনমতেই। তারপরও প্রায় প্রায়ই মানুষ নামক এই প্রাণীটির ওপর আমার অক্ষম নিষ্ফলা আক্রোশ সৃষ্টি হয়। কিন্তু যদি রাগ সরিয়ে সঠিক তথ্যের আলোকে বাস্তবের দিকে দৃষ্টিপাত করি তাহলে দেখা যাবে, দোষের মূলভাগটি আসলে আমারই।
আমি নিজেই নিজেকে অতি ভদ্র, বোকাসোকা, মাইডিয়ার-টাইপ হতভাগা হিসেবে তুলে ধরতে ধরতে, মানুষের ভেতর এমন ধারণা দিয়েছি যে তারা যা খুশি তাই নিজের হক মনে করে করতে পারে। মানুষকে যা খুশি তাই না করতে দিলে এমন ভাব করে যেন, তাদের হক মেরে দিলাম আমি মাত্রই। এখন নিজেকে আলাভোলা, সার্কাসের ক্লাউন হিসেবে মানুষের সামনে উপস্থাপনের ভুলটা প্রথমে তো আমিই করেছিলাম, নাকি? মানুষ সম্পর্কে প্রথম অনুচ্ছেদে যা লিখলাম, তা কি আমি নিজেকে ওভাবে উপস্থাপনের আগে জানতাম না? জানতাম। বাড়ি থেকেও সেই ছেলেবেলা থেকে পইপই করে শেখানো হয়েছে, সবাইকে বিশ্বাস না করতে। সাবধানে পথ চলতে। নিজের অধিকারের জন্য লড়াই করতে।
আমি বেওয়াকুফ আমি শিখেছি, নিজের যা কিছু আছে, সব নির্দ্বিধায় বিলিয়ে দিতে। নিজের সব শেষ হয়ে গেলে, অন্যের কাছ থেকে ধার করে হলেও নিজেকে মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিয়ে যেতে। এমন আজগুবি, ফালতু, বেকুবস্য বেকুবের মতো একটা চিন্তাকে আমি ধারণ করতাম। মনে করতাম, আমার হিন্দি চুলের মনকে বড় করার মধ্যেই সব সমাধান নিহিত। মানুষের তরে নিজেকে বিলানো 'মারাতে' হবে। যতখানি সম্ভব ততখানি। এবং তারপর যখন আর সম্ভব না, তারপরই আসল। সেটাকে বলে 'এক্সট্রা মাইল যাওয়া'।
স্বার্থপরতা ছাড়া আর কোনকিছু নিয়ে বাঁচা যে কত বড় পরাজয়, তা জানা উচিত আমাদের সবার। আসলে আজকাল একটা কথাই ঘুরেফিরে মনে হয়, আমি বড় ভুল এক প্রাণী'র গোত্রে জন্ম নিয়েছিলাম। অন্য কোন প্রাণী হলে এত জঘন্য আত্মোপলব্ধি হতো না।
---
মন্তব্য করুন