ইউজার লগইন

বয়ে গেছে সময় নিজের খেয়ালে।

ব্লগ লিখতে আজকাল আমার মোটেও ভালো লাগে না। তাই লেখার অফুরন্ত সময় পাওয়ার পরেও আমি এখন আর লিখতে বসি না। তাও এখন লিখছি কেন, নিজেই জানি না। আমার ভেতরে সবার মতো অসংখ্য ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আচরন অবিরাম খেলা করে। তারই ফসল হয়তো এই লেখাটা। অনেক লিখলাম তাই এখন আর লিখতে ইচ্ছে করে না ব্লগ। তাঁর ভেতরে এই ব্লগের, একে একে নিভছে সব দেউটি। আগের ব্যাক্তিগত অনুপ্রেরনাও পাই না যে চোখ বন্ধ করে, ভুলবাল সমানে লিখে যাবো। তাও এই পোষ্ট লিখছি, যদি লিখে শেষ করতে পারি তবে তা প্রথম পাতায় দিবো না। তবে সব যে নিরাশার কথা তা না, কিছু নতুন ব্লগারদের দেখছি, পোষ্ট লিখছে ভালো, কমেন্ট করছে। তাঁদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা। ভালো লাগুক তাঁদের এই ব্লগটাকে, লিখুক হাত- প্রান খুলে।

শরীরটা খুব একটা ভালো ছিল না দুদিন। এখন ভালো। কিন্তু দুইদিন পায়ের গোড়ালির নিচের ব্যাথায় খুবই কষ্টে ছিলাম। গতকাল তো ব্যাথায় পুরো জ্বর এসে পড়েছিল। আজ ব্যাথা খুব কম। দশভাগের কাছাকাছি আছে। আশাকরি চলে যাবে তাও। অসুস্থ হলেই আমার ভেতরে যাবতীয় সব কাজ করার কথা মনে পড়ে। নিজের শরীর কতটুকু সইতে পারে যন্ত্রনা তার এক্সামও নিয়ে নেই। যেমন আজ খুড়িয়ে খুড়িয়ে আমি ৪৫ মিনিট হেটেছি। বাসা থেকে বের হয়ে ছিলাম পকেটে ওয়ালেট ঢুকাতে বেমালুম ভুলে গিয়েছি। এখন চায়ের দোকানে যেতে হলো এই পায়ে ব্যাথা নিয়েই হেঁটে, পনেরো মিনিট হাঁটার পথ, আস্তে আস্তে হাটতে হাটতে তা লাগালাম ২৩ মিনিট, আসার সময় ২২ মিনিট। আদরের ছোটভাই ইভান খুব সাধলো বাইকে করে পৌঁছে দিবে, আমি কি আর সেরকম কথা শোনার লোক। আমার কারো বাইকেই উঠতে ভালো লাগে না, সে যত আপন হোক। নিজের মতো চলবো, নিজের আনন্দে। তাই আম্মুর উপর চাপিয়ে দিলাম দোষ। যে উনার নিষেধ আছে মটর সাইকেলে চড়ার উপরে। সত্য বলি, হাটতে ব্যাপক কষ্ট হইছে। সবাই কিভাবে তাকায়, আর পরিচিত সবার একই প্রশ্ন, শান্ত ভাই আপনার কি হইছে? আমি লোকজনকে শুনাতে পারি না যে- মনে খুব রং লাগছে, তাই খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছি দেখি কেমন লাগে। শরীর ভালো থাকা অবস্থায় আমি সবসময় খুব স্পিডে হাটি, আজ নিজের হাঁটাই নিজেকে ঠাট্টা করছিলো? পারলে হাঁট এখন দেখি তোর কত জোর? তবে সবাই বলে আমরা নাকি সেলফিশ মানুষ, কেউ কারো খোজ রাখি না। আমার এই ধীর লয়ের হাঁটার কারনে পরিচিত- অপরিচিত কত মানুষের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হলাম, তা কাউকে বোঝানো যাবে না। আর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে এনেছি, ফেসবুকে বন্ধু না এমন অসংখ্য মানুষ জেনে গেছে আমার পা ব্যাথার গল্প। সাধারণ এইসব হালকা ব্যাপার আমি আম্মু আব্বুকে জানাই না। সেই আম্মুরও ফোন, শুনলাম ফোনে তোর নাকি পায়ে ব্যাথা। একবার জানাইলিও না। এতো বড় মুসিবতে পড়া গেল দেখি।

পায়ে অবশ্য ব্যাথা আগে থেকেই অল্প অল্প টের পাচ্ছিলাম। তবে পাত্তা দেই নাই, শ্যামলী থেকে হেটে আসার সময় থেকেই কেমন জানি লাগছিলো। পকেটে টাকা ছিল, তাও হাটছিলাম। কারন মন ভালো ছিল। সেই ভালো থাকাটাই কাল হলো। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই দেখি থ্রিলিং সারপ্রাইজ, বাম পা ফুলে গেছে। তারমধ্যে আমার কাছে দুদিন ধরে নেট নাই। মোবাইলে সার্চ দিলাম, গোদ রোগ হলো নাকি আবার মশার কামড় খেয়ে। দেখলাম তেমন কোনো চান্স নাই। এক জনের সাথে দেখা করার কথা ছিল। কোনোরকমে নেমেই রিকশা নিয়ে তা উদ্ধার করলাম। রিকশা দিয়ে ফেরার সময় ভাবছিলাম ডাক্তার দেখাই। পরে ভাবলাম এইটা নেভীর হাসপাতাল কিংবা সিএমএইচ না যে আংকেল আংকেল বলে ডাকবো, আর মোটামুটি যত্ন নিয়ে আমাকে দেখবে একদম ফ্রী তে। এখন ডাক্তারের কাছে গেলেই এক্সরে, ভিজিট ফি, এতগুলো ট্যাবলেট ধরায় দিবে। কি দরকার সবুর করি, ভালো হবে আশা রাখি। তখনই মনে হলো বন্ধু শিশিরের কথা। নেভীর লেফট্যান্টেন্ট, এই মাসেই মিশনে যাবার কথা। বউকে নিয়ে বনানীর স্টার থেকে ফিরছিলো বাইকে, এমন সময় এক্সিডেন্ট। ওর পায়ের মোটামুটি প্রায় হাড় দুই ভাগ হয়ে গেছে, মাংস থেতলে গেছে, টিস্যু মিসু ছিড়ে একাকার। ভাগ্যিস বউয়ের কিছু হয় নাই। এখন সিএমএইচে এডমিট, দুটো অপারেশন হয়েছে, আরো হবে। আমার ওদিক যেতেই এলার্জী লাগে, যেমন লাগে মিরপুর ১৪ তে যেতেও, যদিও সেখানেই আমার জন্ম। যাই হোক শিশিরের কথা ভাবছিলাম, ওর নাকি আরো ১৫ মাস হাসপাতালে থাকতে হবে। নেভী-আর্মির চাকরীর এক ব্যাপার আছে, শারিরীক ভাবে আপনে ফিট না হলে পদোন্নতি- চাকরীর মেয়াদ সব কিছুতেই ইফেক্ট পড়ে। আল্লাহই জানে ওর সামনে কি হবে! শিশিরের ফর্সা মুখটার কথা মনে পড়ছে। বিদেশ থেকে দারুন সব কোর্স করে আসা, গানবোটে খুব এক্সপার্ট এই ছেলেটা হয়তো হাসপাতালের মিষ্টি মিষ্টি মুরগীর তরকারী গিলছে, ব্যাথায় কোঁকড়াতে কোঁকড়াতে। আমি সেই তুলনায় অনেক ভালো আছি।

'এক কাপ চা' সিনেমাটা দেখলাম এই থার্সডেতে, একা একা। বাসু চ্যাটার্জী, ফেরদৌস, মৌসুমি, অমল বোস, শাকিব খান, নচিকেতা, হুমায়ূন ফরিদী, হুমায়ূন আহমেদ এত বিখ্যাত সব অনুসঙ্গ আছে সিনেমায়। তাও জমাতে পারে নাই নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল। নাটক তিনি ভালোই বানান, কিন্তু বড় দৈর্ঘ্যের নাটক বানাতে গিয়ে ভালোই হিমশিম খেয়েছেন। সব চেয়ে সব আজব কাষ্ট- ঋতুপর্ণা। দেখলেই মন হবে জোর করে এনে বসিয়ে দেয়া। তাও সিনেমাটা জলিলের সিনেমার চেয়ে ভালো আছে, এফডিসির অনেক বুলশীটের চেয়ে ভালো। ফ্যামিলী এন্টারটেইনমেন্টের ভাবনা মাথায় রেখে বানানো। তবে যা হয় এইসব সিনেমা দেখলে, এত চেষ্টা করেও একটা এভারেজ মানের বিনোদনমুলক ছবি বানানো গেল না। ছবিটা ব্যবসাও করে নি তেমন। আমি যে শো তে দেখলাম, সেখানে দর্শক ছিল গুনে গুনে ২৪ জন। শ্যামলী হলে চলছে এক উইক মাত্র। যাই হোক দেশের সিনেমার সেবায় ১৫০ টাকা চলে গেল। যাওয়া আসা তো হাঁটার উপরেই। বারেক সাহেব ১ কাপ চা বানায় আমার কাছ থেকে বিল নেয় ৬টাকা। আর এখানে এক কাপ চায়ের ১৫০ টাকা। প্রতিযোগীতায় বারেক সাহেবের চা ই এগিয়ে।

পোষ্টটা উৎসর্গ করলাম বন্ধু প্রিয় আর শ্রদ্ধেয় পারভীন আপুকে। এই দুইজনই খবর পেয়ে আমার পায়ের খোজ যথেষ্ট নিয়েছে।

পোস্টটি ১৬ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

তানবীরা's picture


তাঁর ভেতরে এই ব্লগের, একে একে নিভছে সব দেউটি।

লিখছি, দিবো পোষ্ট Big smile

কেন পানথ খানত হও Tongue

আরাফাত শান্ত's picture


আশায় থাকিলাম!

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


কই?

অচেনা  আমি's picture


Smile

আরাফাত শান্ত's picture


Smile

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

আরাফাত শান্ত's picture

নিজের সম্পর্কে

দুই কলমের বিদ্যা লইয়া শরীরে আমার গরম নাই!