তানবীরা আপু, জন্মদিনের শুভেচ্ছা নিন!
শিরোনামটা কি দিবো ভাবছিলাম, বেশীর ভাগ এক্সপেক্টেড শিরোনাম দিয়ে আগেই পোষ্ট লিখে ফেলেছি। গুগলে ক্লিক করলেই ভেসে উঠে আমার আগের লেখা। দিন তো খালি চলেই যাচ্ছে। চোখের সামনে হারিয়ে যাচ্ছে সময়গুলো। সেদিন ২০১৬ শুরু হলো। এখন চলে জুলাই, নিমিষেই আসবে সেপ্টেম্বর অক্টোবর, ব্যস বছর শেষ। অঞ্জন দত্ত তাই আগেই হুশিয়ার করে গেছেন, কিছুই তো হলো না বাজানো গেল না সময়। সেই আমাদের কিছুই হলো না, এই দেশটার অবস্থাও দিন দিন জঘন্য। জীবনে ভাবি নাই, ঈদের দিন সকাল বেলা, শোলাকিয়াতে মানুষ মরবে, জংগীদের উন্মত্ত আক্রমণে। ঈদ এমনিতেই আমার বোরিং কাটে, এবারের ঈদ গেল অবষাদ আর বিষণ্ণতায়। আমাদের জন্যেও অঞ্জন দত্তের গান আছে, কত কি করার ছিল যে। আসলেই আমরা কিছুই করি নাই, তাই তিলে তিলে এই দশা, এই পরিনতি। তবুও দিন চলে যায়, ঘটনা দুর্ঘটনায়। এসে পড়লো দিন, তানবীরা আপুর জন্মদিন। আমার প্রিয় সিস্টার কাম বন্ধুর এত খুশীর দিনে একটা ব্লগ না লিখলে কি চলে। কিন্তু ল্যাপটপ নিয়ে আসি নাই। অনেকদিনে পর মোবাইলে লিখছি। জানি না লেখা শেষ করতে পারবো কিনা!
এখন জন্মদিন মনে রাখার ডিউটি সব ফেসবুকের কাছে। আগে মানুষ ডায়রীতে লিখে রাখতো, ক্যালেন্ডারে দাগাতো, ইয়াহুতে দেখাতো। এখন ওসবের দিন শেষ। ফেসবুকে দেখো দল বেধে উইশ করো। দুনিয়ার যত লোক কাতারে কাতারে উইশ করো। এইজন্য তানবীরা আপুদের মত কতিপয় লোক জন্মদিন হাইড করে রাখে, যেন একদম নিকট লোকেরা ছাড়া আর কেউ না জানে। আমার অবশ্য জন্মদিন এম্নিতেই মনে রাখতে হয়। কারন আমার রিয়েল লাইফ বন্ধুরা আমার ফেসবুকে এড নাই। আমার ধারনা আসল ফ্রেন্ড যাদের সাথে দেখা হয় কথা হয় তারা রিয়েল লাইফেই সুন্দর। ফেসবুক অনেক কিছুই মিস ইন্টারপ্রেট করে, যা ক্ষতিকারক। তাই বন্ধুদের জন্মদিন মনে রাখার অভ্যাসটাই রয়ে গেছে। যেমন আজ বিকেলেই মনে হলো তানবীরা আপুর জন্মদিন, উইশ করবো না এইটা একটা কথা। উইশ করলাম মেসেঞ্জারে, আপু খুশী। আমি নাকি প্রথম। জীবনে কোনও কিছুতেই তো প্রথম হতে পারলাম না। প্রথম হওয়াটাও আজকাল জটিলতা। আমার এক বন্ধু ছিল সে তার বিবাহিত বান্ধবীকে সবার আগে সব সময় উইশ উইশ করে স্বামীর চক্ষুশূল হয়েছিল। মেয়েরা খুব চালাক, কথা গুছিয়ে বলে, বললো আমার বন্ধুকে, আমাকে প্লিজ সকালে উইশ করো, রাতে আর্লি ঘুমাইতো, ফোন আসলে বিরক্ত হই, ঘুম কেটে যায়। আমার বন্ধু উইশ করাই বাদ দিছে। আমরা খেপাই, ছি তুমি বন্ধু না ইভটিজার, আমার বন্ধু বিরসবদনে বলে, সামান্য বার্থডে উইশ টলারেট করতে পারে না, এতদিন সংসার টিকে কি ভাবে? আমি ঝাড়ি দিয়ে বলি এডজাস্টমেন্ট যার যার, সংসার তার তার। যাই হোক বাজে কথা রাখি। খুব ভাল লেগেছে যথা সময়ে উইশটা করতে পেরে। পরে যখন মনে পড়তো হতো খুব মেজাজ খারাপ। এমনিতেই আজকাল নিজের মেমোরিটা ঠিকঠাক কাজ করছে না।
তানবীরা আপু নিয়ে নতুন করে আর কি বলার আছে। দেশে আসে না, উনাকে দেখি না অনেক দিন। উনার ফেসবুকে লেখা আগের চেয়ে তীক্ষ্ণ হচ্ছে প্রতিদিন। মুক্তমনায় ঢুকতে পারি না তাই জানিনা ওখানে উনি লিখছে কিনা। এবিতে উনি লিখে না কারন রেসপন্স নাই। আমরা দু চারজন অনিয়মিত লেখক ছাড়া এখানে আর কেউ লিখে না। তানবীরা আপুরটাই স্বাভাবিক কারন সামান্যতম লেখা নিয়ে রেসপন্স না আসলে লেখার মুটিভেশন কোত্থেকে আসে। আমরা তো আর যন্ত্র না। তানবীরা আপুর একটা গল্পগ্রন্থ আর একটা উপন্যাস বেড়িয়েছে। দুটোই আমার প্রিয়। আমার না হয় মায়ার বাধন আছে তাই ভালো লাগে কিন্তু আমার এক বন্ধুকে পড়তে দিয়েছিলাম যে চিনে না, তার নাকি খুব পছন্দ হইছে। কথাটা যখন শুনেছিলাম গত বছর আমার কাছে মনে হয়েছে আমার লেখা বইয়েরই প্রশংসা হচ্ছে। কিছু কিছু বন্ধু্-বড়ভাই-বোনকে আমি নিজের অংশ বলে মনে করি। তানবীরা আপু আমার সেরকম কাছের মানুষ। উনার অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী গুনগ্রাহী ভাইবোন বন্ধু আছে, আমিও তাদের একজন। তবে নিজেকে মনে মনে অগ্রগামী ভাবি। একান্তভাবে নিজস্ব ভাবনা। দুলাভাই, মেঘকে নিয়ে আপুর সুখের দিনযাপন আরো সুখের হোক, স্বস্তির হোক। উনাদের পরিবারের সবাইকেই কম বেশী চিনি। সামিয়া তো বন্ধুই, আর সুমি আপু আমাকে যথেষ্ট স্নেহ করে। তানবীরা আপাই যোগসূত্র।
আমরা বন্ধু যখন লোকজনে মুখর থাকতো। তখন তানবীরা আপুর লেখা এবির হিট টপিক। দিনগুলো কি দারুণ ছিল। আমি জানতাম না আগে উনি সচলেও খুব লিখতেন। একদিন দেখে তো অবাক। তবে যা হয় সচলে ন্যাকামীর চুড়ান্ত। ভালো হয়েছিল, না হলে উনি এবিতে লিখতেন না, আমিও চিনতাম না। উনি আমি সহ এবির যত ব্লগারকে যে মুটিভেশন করতো আগে তা দেখে আমি খুব অবাক হতাম। লীনাপু বলতো, তানবীরার এই স্পোর্টিং স্বভাবটা দারুন। এখনও আমার লেখায় উনার মন্তব্য, আগ্রহপূর্ণ মতামত, আমাকে লেখার অনুপ্রেরণা দেয়। উনি অনেক কিছু পারেন, কবিত পাঠ, ভালো ট্রাভেল ব্লগ লেখা, ছবি তোলা, নাচ, অভিনয়, সাংস্কৃতিক সংগঠন চালানো বিদেশে বসে সংসার জবের পাশাপাশি সব উনি করেন। উনি তো আসল অলরাউন্ডার। তার ভেতরে উনার লেখার হাত তো অসাধারণ। অভিজিতের হত্যার পর আপু যেভাবে লিখে গেছেন তা সত্যিই অনবদ্য। ভালো থাকুন আপা। বেচে থাকা হোক খুব ঝলমলে। অনাবিল সুখে ভেসে বেড়ান। আমাদেরকে মনে রাখুন।
জন্মদিনের প্রথম প্রহরে প্রথম উপহার
এমনিতেই এ বয়সে উপহার পাওয়া কমে গেছে অনেক ----- নিতান্ত কাছের মানুষ ছাড়া কেউ হাত খোলে না।
মেঘ কে বললাম কি দিবি আমাকে, ভেবেছিস? বলে, মাদার্স ডে তে এত্তো দামী পারফিউম না দিলাম!!! চিন্তা কর অবস্থা!!! এখনি এমন হিসেব কষে!
অনেক প্রিয় জন, কাছের জন, অনেকেই জন্মদিন ভুলে গেছে, সামনে হয়ত আরো যাবে। নিতান্ত দু চারজন যারা মনে রাখে তাদের মধ্যে তুমি একজন। অফিসে তোমার ম্যাসেজ পেয়ে মনে হলো, তাই তো .--- নিজেই অনেকটা ভুলে গেছিলাম যেনো
এই যে মনে রাখো তার খারাপ দিক হলো, এখন একটা এক্সপেকটেশান এসে গেলো, জীবন ভর মনে রাখবা ----
লেখাটা অত্যন্ত মিষ্টি হয়েছে। কোন কার্পণ্য রাখো নাই লিখতে --- কালকে শেয়ার দিবো -------- কারণ তো জানোই
ভাল থেকো ছোট ভাই
শুভ জন্মদিন তানবীরা আপু!
ভালো-খারাপ মিলায়ে সব সময় ভালো থাকুন, সবাইকে নিয়ে
শুভ জন্মদিন তানবীরা'পু। এত্তগুলা ভালোবাসা ... ।

শান্ত'র সারপ্রাইজ গিফটটা বেশ দারুণ হয়েছে, তাই না? আমার তো ভীষণ পছন্দ হয়েছে। ও এমন ভালোবাসা নিয়ে লেখে যে খুব ছূঁয়ে যায়।
শান্তকে একটা স্পেশাল থ্যাংকস মাঝে মাঝে প্রিয় মানুষদের জন্য এমন সারপ্রাইজ পোষ্ট দেয়ার জন্য।
শান্ত ইজ শান্ত
শুভ জন্মদিন আপু। সুন্দর ও কল্যানময় হোক আপনার ও আপনার পরিবারের ভবিষ্যৎ দিনগুলো। শান্ত ভাইয়ের লেখাটা দারুন হয়েছে।
ধন্যবাদ জাকির, আপনিও ভালো থাকবেন, শুভেচ্ছা নিরন্তর!
মন্তব্য করুন