ব্লগ এবং ব্লগর ব্লগর
লিখতে তো বসলাম। মনে যে কত কথা, কত ক্ষোভ, রাগ, হতাশা, অস্থিরতা! কিন্তু সব কথা বলার মতো অবস্থা বোধ হয় এখন আর আমাদের নেই। অস্থিরতা, অনিশ্চয়তায় কাটছে আমার মতো অনেকেরই দিনকাল। দিন দিন বদলে যাওয়া মানুষ, পরিস্থিতি, সময় সবকিছু দেখে হতাশা বাড়ছে দিন দিন, খুবই ব্যর্থ মানুষ মনে হয় নিজেকে। টিভিতে তাকিয়ে দেখি, পত্রিকায় দেখি মানুষ মরছে, গুরুতর আহত হচ্ছে। এসব দেখে চোখে পানি আসে। আহারে আমার প্রিয় দেশ! এই দেশে এমন অস্থিরতা! কিছুই করতে পারি না বলে কি ভীষণ কষ্ট হয়! জানি সেটা আমাদের সবারই হয়।
কিছুদিন আগে সকালে ফেসবুকে ঢুকে দেখলাম ৩ জন ব্লগার আটক। তাদের একজন রাসেল ভাই। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। যখন নিশ্চিত হলাম সত্যিই রাসেল ভাইকে আটক করা হয়েছে... স্তব্ধ হয়ে গেলাম। ব্লগে যারা আছে তারা সবাই জানে কি অসাধারণ এক মানুষ রাসেল ভাই! দুর্দান্ত এক লেখক। অসাধারণ এক মানুষ। তাকে কেন আটক থাকতে হবে? জানিনা কেন এমন হচ্ছে, আরো কি হবে! আমাদের কি স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকারটুকুও চলে যাচ্ছে!!!!
অনেক বছর ধরে শুধু প্রথম আলো পত্রিকাই পড়ি নিয়মিত। জনপ্রিয় এই পত্রিকার এবার নববর্ষ সংখ্যায় এক গল্প ছাপালো "টিভি ক্যামেরার সামনে মেয়েটি" নামে। জনপ্রিয় লেখক হাসনাত আবদুল হাই লিখেছেন গল্পটি। গল্পটি পড়ে ভাবতে পারছিলাম না যে প্রথম আলোতে কিভাবে এমন গল্প ছাপা হলো? আর এই লেখক কিভাবে এমন একটা গল্প (!) লিখলেন!!! কি নোংরা মনমানসিকতা! লেখক হলেই যে মনে আলো থাকে না এই লেখক তার বড় উদাহরণ। কুৎসিত মনমানসিকতার লেখকের লেখাটি ছাপিয়েছে প্রথম আলোর মত জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এক দৈনিক পত্রিকা। ফেসবুকে, ব্লগে এই লেখা নিয়ে সমালোচনা, ঘৃণার ঝড় দেখে পরদিন পত্রিকাটি ক্ষমা চেয়েছে যে তাদের নাকি অসাবধানতায় লেখাটি ছাপা হয়েছে। কতটা নাটুকে একটা কথা! এত বড় একটা গল্প, বিশাল জায়গা জুড়ে সেটা অসাবধানে কিভাবে ছাপা হয়! এই লেখাটা পড়ে যে অনেকের মনেই অন্দোলন করা অগ্নিকণ্যাদের সম্পর্কে প্রশ্নবোধক অনুভূতি আসবে সেটা তারা পারবে মুছে দিতে!! এক পত্রিকা নাস্তিক নাস্তিক রব তুলে দেশটাকে পুরো টালামাটাল করে দিলো। আর এই পত্রিকা মেয়েদের স্বাদীনভাবে চলার, সভা সমাবেশে নের্তৃত্ব দেওয়া বন্ধে যেন আরেক ঝড় উঠে তাদের পরিবার থেকে, চারপাশ থেকে সেই দায়িত্ব হাতে নিয়েছে। আর এজন্য তো পুরা কৃতিত্ব হলো এই সংখ্যাটির দায়িত্বে থাকা লোকটির। কে জানে উনি কারো থেকে কতটা লাভবান হয়েছেন কারো উদ্দেশ্য সফল করতে!! ছি!
ফেসবুক, ব্লগে যারা বিশাল বাণী দেন, লাইক পেতে চান, ফলোয়ার বাড়াতে চান, টক করতে চান তাদের কারো মতে ব্লগে অনেক অনেক মানুষ আছে কিন্তু সবাই তো আর বিরাট ব্লগার না, গণজাগরণ মঞ্চের সাথে সম্পৃক্ত না। খুব লেগেছিলো কথাটা, অপমানে, দু:খে চোখে পানি চলে আসছে। আমি জানি আমার মত আমব্লগার যারা, তারা নি:স্বার্থভাবে প্রতিদিন ছুটে গেছেন আন্দোলনে যোগ দিতে। ভালোবেসে গেছেন, বুকে আবেগ, ভালোবাসা নিয়ে গেছেন। তারা তো প্রত্যেকে সম্পৃক্ত, তারা নিজের বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে সাথে থেকেছেন, থাকছেন। তাদের খাটো করে যারা দেখে তাদের জন্য করুণাই হয়। কিন্তু আমি এতই ভীতু যে শক্ত করে প্রতিবাদ করতে পারি না এই ভয়ে যে যদি কেউ তাতে আমাকে কটু কথা বলে সহ্য করতে পারব না। আম ব্লগার হলেও আমি একজন ব্লগার বলেই কেউ যদি কটু কথা বলে ব্লগ নিয়ে, ব্লগারদের নিয়ে --কষ্ট হয়। আজ যেমন আজ সাত সকালে ঘুম ভেঙ্গে ফেসবুকে ঢুকে দেখলাম অনেকেই বলছে কাল রাতের চ্যানেল আই এর তৃতীয় মাত্রার টক শোতে ব্লগারদের নিয়ে কটুক্তি করার কথা। যা দেখলাম বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে এভাবে বলতে পারে! তৃতীয় মাত্রা দেখি না অনেক দিন। শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক বিষন্ন, কাঁদো কাঁদো চেহারা করে বক্তাদের সাথে আলোচনা করেন। ব্লগারদের, শাহবাগ আন্দোলনকারীদের প্রতি তিনি ব্যপক নাখোশ। উনি চান বক্তারা বিষ ঢালুক তাদের কথায় এই আন্দোলনকারীদের নিয়ে। কেন জানিনা খুব নিরপেক্ষভাবে কথা বলতে খুব কম মানুষকেই দেখি। দলভিত্তিক কথাবার্তা প্রায় সবার। সেজন্য টকশো দেখাই বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু আজ আবার সকালে তৃতীয় মাত্রা দেখার অপক্ষোয় বসে থেকে এক বক্তার মুখে নিজের কানে শুনলাম তিনি বলছেন --- ব্লগারদের কম্পিউটার, মোবাইল ফোন সামনে রেখে দাঁড় করিয়ে রাখা না শুধু তাদের কান ধরে নাকি দাঁড় করিয়ে রাখা উচিত ছিলো। তারা কি আশা করেছিলা যে তাদের কি রজনী গন্ধার স্টিক দেওয়া হবে!!!!----- নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না! আরো বললেন -- এটাই নাকি ঠিক যে গণজাগরণ মঞ্চ নাস্তিকদের মঞ্চ!!!!! এসব বাণী দেওয়া লোকটা এমপি হবেন, হয়ত দেশ শাসন করবেন। আর আমরা!! আমরা এসব দেখে শুনে হতাশ হতে হতে, কষ্ট পেতে পেতে মরে যাব একদিন। আমাদের সোনার বাংলাদেশে, আমাদের মায়ের মত দেশে আমরা হয়ত আর সুখ, আনন্দ নিয়ে বাঁচতে পারব না।
আমাদের প্রায় সবারই মনের কথাগুলো বলে দিলা..
এখানে মনের ১% কথাও না। কথা তো বলাই যাবে না। সবদিকে নানা ধরনের চোখ, নানান দৃষ্টি। ভাত খেলাম, ঘুম পাচ্ছে ছাড়া তো নিরাপদ কথা বলা কঠিন।
সামনে দিন আরো খারাপ হবে মনে হয়
আল্লাহ আমাদের সহায় হোক। কত যে দোয়া পড়ি এখন! শুধু আল্লাহকে ডাকি ।
আসলেই কি যে খারাপ সময়ে দিন যাইতেছে আমাদের। তার ভিতরে মানুষজন ফেসবুকে আমাদের নানান ছবি টবি দেখলে মনে করে খুব মওজে আছি। কত যে গেঞ্জামে সবার জীবন যায় তা কেউ বুঝে না!
সব জায়গায় আমি আমি আমিময় বাণী দিয়ে দিয়ে নেতা হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করার চেয়ে নানা রঙের ছবি পোস্ট করা অনেক ভালো।
ঠিক কথা কইছেন আপু!
গণজাগরণ যে কত মানুষের চেহারা সামনে আইনা দিলো
হ
মাঝে মাঝে আইজু হইবার মন চায়!
কি আর কমু। কত রঙ-তামশা যে দেখলাম! এখন হতাশ!
ভোট টাকা পয়সা রাজনীতি ম্যাটারস মানুষ না।
ব্লগারদের ভোট কয় পারসেনট বলো?
খুব হতাশ খুব কিছু লেখাই ভিতর থেকে আসছে না
(
সামনেও ভাল দিন দেখছি না
অই, ঝিম মাইরা আছো ক্যান?নয়া লেখা দাও..
মন্তব্য করুন