ইউজার লগইন

গানওয়ালা ও গানওয়ালা গান থামিও না: (অতিথি পাখি)

হা হা হা , না আপনার শেষ লেখায় মন খারাপ হয়নি। বরং আপনার অনুভূতিটাই ধরতে চেয়েছিলাম। কোথায় যেন একটা হারিয়ে যাওয়ার সুর ছিলো। এক সময় আমি মানুষ নিয়ে অনেক ভাবতাম। জীবনটাই ছিলো অন্যরকম। বাবা মাথার উপর বটগাছের মত ছায়া দিয়ে রেখেছিলেন। খাওয়া, পড়া, নিজের ভবিষ্যত কিছু নিয়েই ভাবতে হতো না। কখনো কোন আড্ডায় যাইনি, দস্যিপনা ক'রে ঘর ছাড়িনি। মনের ভুলে কখনো বাস থেকে না নেমে সাগর পা'রে চলে যাইনি।

আমার পৃথিবী ছিলো ছোট্ট একটা রুম, একটা কম্পিউটার আর শহীদ মিনারের সেই বিশাল লাইব্রেরীটি। আমার সুযোগ হয়নি পার্বত্য অঞ্চলে একটা বিশাল পাহাড়ে দুটো রাত কাটাতে অথবা সাঙ্গোনদীর তীর ঘেঁষে নৌকায় চড়তে। ছোট্টসবকিছু নিয়ে ছিলো আমার জীবন, রাস্তার পাশে মাঝে মাঝেই সাপের খেলা দেখে দাড়িয়ে পড়তাম, দেখতাম, কিভাবে ধুরুন্ধুর মানুষগুলো সামান্য আনন্দ দানের বিনিময়ে টাকা রোজগার করতো। আর ছিলো রিয়াজউদ্দিন বাজারের হাজারো অলিগলি। পাখির মার্কেট, স্টিকারের দোকান আর পুরনো বইয়ের দোকানগুলো। এইসব ছোট ছোট আনন্দ বেদনার মধ্যে বড় হয়েছি।

মানুষের সাথে না মিশতে মিশতে আর নিজের মধ্যে ডুবে থেকে থেকে আমি সত্যিকার অর্থেই মানুষের কাছ থেকে দূরে চ'লে যাই। মানুষের ভালোবাসা, সঙ্গ আর বন্ধুত্ব আমাকে কখনোই টানেনি। কারো আনন্দে আমার হৃদয় দোলে না, কারো দু:খে আমার চোখে পানি আসে না, কারো চোখের জলে আমার মন টলে না। এই'ই আমি!

আপাত কার্যকারন ছাড়াই জীবনের প্রয়োজনেই আমাদের পরিচয়, একসাথে থাকা। আমাকে আপনি হয়তো সচেতন ভাবে মিশুক ভাবতে পারেননি কখনো, সত্যি বলতে কি এটা আমার ব্যর্থতা, আমি চেষ্টা করেও মানুষের খুব কাছে যেতে পারি না, হয়তো ইচ্ছাও করে না, তারপরও আমি ছোট বেলা থেকেই মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকেছি দিনের পর দিন। কত মানুষের মুখের দিকে আমি তাকিয়ে থেকেছি দিনের পরদিন। কারো কারো ছায়াকেও অনুসরণ করেছি। খুব কম মানুষের ভেতরই একটা সাদা মন দেখেছি। নিজের ভেতরটা সাদা নয় বলেই হয়তো দিনের পর দিন আমি মানুষ দেখি! হয়তো কারো ভেতর একটা সাদামন দেখবো। আজ এই লেখার মাধ্যমে একটা কথা বলে দেই, আপনার ভেতর আমি চমৎকার একটা সাদামন দেখেছি।

পাঁচ বছর ট্রেনিং দিয়ে একটা মানুষকে ডাক্তার বানানো যায়, ইঞ্জিনিয়ার বানানো যায়, বিচারক বানানো যায়। কিন্তু হাজার বছরের সাধনা করেও মানুষ সাদামনের হতে পারে না, অহিংসার মত চমৎকার গুণটি আপনি ধারন করেছেন যা আমি পারিনি বছরের পর বছর চেষ্টা করে। কত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র না পাওয়ার হতাশায় মন জ্বলতে থাকে! কেউ চোখ গরম করে তাকালেই ঝাপিয়ে পড়তে ইচেছ করে, ইচ্ছে করে ছিড়ে ফেলি তাকে। টের পা্ই কত হাজার রকম কমপ্লেক্স এই আমার ভেতর। নিজের ভেতর তাকালে আঁতকে উঠতে হয়। তাই নিজের ভেতর লুকাতে ভয় পাই আমি। পৃথিবীতে কবি হয়ে জন্ম নেয় অনেকে কিন্তু বাউল হতে পারে কয়জন? রুপকথার চরিত্রটির প্রতি আমার সীমাহীন আগ্রহ আর ভক্তি। আপনার ভেতর আমি বাউলের একটা ছায়া দেখতে পাই। যেদিন সেটি আবিষ্কার করেছি সেদিন থেকে আপনাকে দেখার প্রয়োজন আমার ফুরিয়েছে! হয়তো চেনা আড্ডায়, চেনা কথায়, চেনা হুইস্কি, চেনা হাঁসিতে আমাকে সাথে পাবেন না, কিন্তু যদি কখনো হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে, হারিয়ে যেতে যেতে যদি এমন হয় যে নিজের আঙুলটিও দেখতে পাচ্ছেন না, সেদিনও খুজলে আমাকে পেয়ে যাবেন আশে পাশে।

পোস্টটি ৫ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

নুশেরা's picture


কী শুরু করলেন আপনারা! মন খারাপ করে দেন শুধু। (তার উপর চট্টগ্রামের অলিগলি ধরে টান!)

উৎসর্গের আদানপ্রদান দেখে ব্যাপক হিংসায়িত ও আপসুসিত।

কিছু টাইপো খেয়াল করবেন প্লিজ- এডিট করে
ধুরন্ধর, কার্যকারণ, রূপকথা, খুঁজলে
করে দেবেন।

কাওছার আহমেদ's picture


এইগুলো মোটেও টাইপো নয়, আমি শুদ্ধ বানান জানিনা, এখন জানলাম, তবে আবারও যদি লিখতে বসি যা মনে আসবে তাই লিখবো। বানান আমার কাছে মোটেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। পাবলিক পড়তে পারলেই হলো। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

লোকেন বোস's picture


তবু বানানের বিষয়টা খেয়াল করলে ভালোই তো হয়। ক্ষতি কী? জীবনে তো অনেক কিছুই শিখতে পেরেছেন, বানান শিখতে ক্ষতি কী?
আমাদের প্রাণের যে মাতৃভাষা, সেই ভাষাকে শ্রদ্ধা করাই উচিত না?

বানান ভুলের জন্য পাঠকের কিন্তু পড়তে বা বুঝতে সমস্যাও হতে পারে। ধরা যাক 'কি' আর 'কী', অদল বদল হলে তো বাক্যের অর্থই বদলে যায় তাই না? এরকম আরো অসংখ্য আছে। একটা 'র' আর 'ড়' বদলে গেলেই বাক্যটার অর্থই পাল্টে যায়। পাঠক তখন ভুল বাক্য পড়বে, ভুল অর্থ করবে। আপনি যা বোঝাতে চাইছেন সেটা পাঠক বুঝবে না।

ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ

নুশেরা's picture


কাওছারভাই, আপনার বানানজ্ঞান যথেষ্ট ভালোর চেয়েও ওপরে। অসমাপিকা ক্রিয়া অর্থে "ক'রে" লেখেন আপনি, সেটা ক'জনে করেন বা জানেন! যাই হোক, বিরক্ত করার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত; তবে মাতৃভাষার প্রতি গুরুত্ববশতঃ না হোক, মমতাবশতঃ হলেও আরেকটু বানান সচেতনতা সবার কাছ থেকেই আশা করি।

নীড় সন্ধানী's picture


আমার মনে হয় মানুষের মনের আদি রং সাদাও নয়, কালোও নয়। মানুষের মনের আসল রং লাল। শিশুদের দিকে তাকান, ওরা হাসলেও লাল, কাঁদলেও লাল। বড় হতে হতে কারো লাল হালকা হতে হতে সাদা হয়ে যায়, কারোটা গাঢ় হতে হতে কালো হয়ে যায়।

লোকেন বোস's picture


ধারাবাহিক পত্রনিবেদনপর্ব চলছে।
ব্যক্তিগত পত্র অস্বস্তিকর। তবু ভালো লাগলো।
দুজনেরই অনেক কিছু জেনে নেওয়া গেলো।

জ্যোতি's picture


কি যে শুরু করলেন আপনারা!এত আবেগ দিয়ে লিখলেন দুজনেই যে মনটা অফিসের কাজের মধ্যে থাকার কোন লক্ষন দেখতে পাচ্চি না।

সোহেল কাজী's picture


(ইট জাস্ট আ কপিপেস্ট কমেন্ট)

মাঝে মাঝে বিবেকার পার্ট নিতে ভালো লাগে, মানুষেরে মুরুব্বির মত জ্ঞানের বাণী দেই। কিরাম একটা আত্মপ্রশাদ।
কয় দিন আগে এক কাছের লোকের সাথে এমন কিছু ভাব বিনিময় করছিলাম।
এক পর্যায়ে বললাম। "মানব জীবন পুরাটাই একটা ট্রেনের সফর, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্লাটফরম আসবে ট্রেন কিছুক্ষনের জন্য থামবে আসবে নতুন সম্ভাবনা। প্রতিটা প্লাটফরমেই কিছু যাত্রী নামবে কিছু যাত্রী উঠবে। এতে আমার কিছু আসে যায় না। সহযাত্রীদের সাথে ক্ষণিকের পরিচয় ক্ষনিকের ভাব বিণিময় ক্ষণিকের ভালো লাগা। সবই ক্ষনিকের। কিছুক্ষন পরই আবার হয়তো যাত্রী বদল হবে। কয়েক মুহুর্তেই ভুলে যাবো আগের যাত্রীকে। হয়তো এতোক্ষণ পাশে বসে থাকা লোকটা প্লাটফরমে নামার সময় হোচট খেয়ে পড়েগেল, তার জন্য আমার হৃদয় খান খান হবেনা। শুধুই বলব, আহারে বেচারা!!!!"

এই ধরনের জ্ঞানী কথা কইতে ভালো লাগে। তবে এইটাও ঠিক যে, একদিন আমারো প্লাটফরম আসবে, আমাকেও ট্রেন থেকে নেমে যেতে হবে। হয়তো সেখান থেকেই শুরু হবে অজানা কোন গন্তব্যের।

আমার কোন পিছুটান নাই ভাবতেই একটা বাউলা সুখ লাগে। আবার যখন মাঝে মাঝে মাইগ্রেনের ব্যাথায় কিংবা কোন অসুখে বিছানায় পইড়া কো কো করি তখন পাশের রুমের ফ্লাটমেট ধইরা নিয়া যায় ক্লিনিকে।
মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কটা আসলেই অদ্ভুত। ঠিক বুঝতে পারিনা।

সাঈদ's picture


মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কটা আসলেই অদ্ভুত। ঠিক বুঝতে পারিনা। কপিরাইটঃ সোহেল।

নিজের মাথা ভোঁতা হয়ে গেছে।

১০

আত্তদ্বিপ's picture


কমেন্ট করার মত ভাষা নেই

১১

জ্যোতি's picture


নুষের সাথে মানুষের সম্পর্কটা আসলেই অদ্ভুত। ঠিক বুঝতে পারিনা। কপিরাইটঃ সোহেল।

নিজের মাথা ভোঁতা হয়ে গেছে।

১২

তানবীরা's picture


পাঁচ বছর ট্রেনিং দিয়ে একটা মানুষকে ডাক্তার বানানো যায়, ইঞ্জিনিয়ার বানানো যায়, বিচারক বানানো যায়। কিন্তু হাজার বছরের সাধনা করেও মানুষ সাদামনের হতে পারে না,

আসলেই তাই।

ভাগ্যিস দুই জন পুরুষ মানুষের পত্র বিনিময়, ছেলে - মেয়ে হলেতো হয়েই গেছিলো।

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.