প্রেম যদি চাঁদ দেখা হয়, বিয়ে হচ্ছে চাঁদে গিয়ে চাঁদ দেখা
যাঁরা এখনো একটা প্রেম করতে পারেন নি, তাঁরা সুযোগ পেলেই আক্ষেপ করেন- হায়, জীবনে কিছুই হলো না। এই আক্ষেপ যৌক্তিক। কারণ - ক) প্রেম না করলে ছোট্ট এই জীবনের অনেক সৌন্দর্য অনাবিষ্কৃত থেকে যায়, খ) চাঁদকে ঝলসানো রুটির মতো লাগে।
প্রেমে পড়লে বোঝা যায়- টিপে টিপে বাদাম খাওয়ার মতো সামান্য জিনিসে কী মজা! আর বাদামের খোসাটা যদি অন্যজন ছাড়িয়ে দেয় তাহলে তো কথাই নেই। আবার, প্রেমে পড়লে চাঁদ আপনাকে জোছনার গালিচায় চড়িয়ে উড়িয়ে নিয়ে যাবে রংয়ের রাজ্যে। সুতরাং যাদের প্রেম নেই তাঁরা আক্ষেপ করতে থাকুন। কলার নাড়িয়ে দোয়া করি, দ্রুত প্রেমে পতন ঘটুক আপনাদের।
তবে প্রেমের বিয়ের পক্ষে নই আমি। এটা আমার অনেক পোড় খাওয়া শিক্ষা। কারণ- ক) সৌন্দর্যে পতিত হয়ে পরবর্তীতে আপনাকে খাবি খেতে হবে, শুশুকের মতো মাঝেমাঝে লুকিয়ে নাক তুলে শ্বাস নিতে পারবেন- এই যা। খ) প্রেম যদি চাঁদ দেখা হয়, বিয়ে হচ্ছে চাঁদে গিয়ে চাঁদ দেখা। ওটা বড় বেশি এবড়োখেবড়ো। অক্সিজেন নেই, দম বন্ধ হয়ে যাবে। ওখানে আপনি ওজন হারাবেন, যাকে বলে ওয়েটলেস।
তাই বলে প্রেম করুন তবে বিয়ে করবেন না- এটা আমার বক্তব্য নয়। এহেন কাণ্ড এক ধরনের ভণ্ডামি।
আমার কথা- প্রেম করে বিয়ে করবেন না। মানে প্রেমই করবেন না। কারণ হাজার হাজার। দুয়েকটা বলছি।
১। প্রেম স্বপ্নময়, সংসার কঠিন বাস্তবতা। আগে যদি প্রেম থাকে, আপনার স্বাপ্নিক চরিত্রটা আপনার সঙ্গী জেনে যাবে। অথচ সংসারে ভালো থাকতে হলে কত রকমের অভিনয় করে যেতে হয় প্রতিনিয়ত। আপনার আগে পরের চরিত্র স্বভাবতই মিলবে না। তখন আপনি হয়ে যাবেন মূর্তিমান ভণ্ড!
২। (মেয়েদের ক্ষেত্রে) প্রেম নকশি কাঁথা। আহা, কী সুখের শৈল্পিক উষ্ণতা! কিন্তু বিয়ে? নকশি কাঁথার উলটো পিঠ। যেখানে সুতাগুলো এলোমেলো, হাজারো গিট্টু। সংসারে তাই প্রায়ই গিট্টু লাগে। আপনার ইচ্ছে হবে বাবার বাড়ি চলে যেতে। প্রেমের বিয়ের ক্ষেত্রে আপনি সেই সুযোগ হারাতে পারেন। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে মা বাবার বক্তব্য এমন হতে পারে- তুমি তো নিজের পছন্দে বিয়ে করেছো, এখন সমস্যা হচ্ছে কেন? মা বাবা এমনটা না বললেও তাঁদের মুখ থেকে এমন কিছু শোনার ভয় থাকবে আপনার। ফলে আপনি ওঁদের শরণাপন্ন হতে পারবেন না। বরং গিট্টুর চাপে চ্যাপ্টা হতে থাকবেন।
৩। (েছলেদের ক্ষেত্রে) বউ শাশুড়ির সম্পর্কের ব্যাপারটা সবাই বোঝেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ- বউ পছন্দের কাজটি আপনার মায়ের ওপর ছেড়ে দেওয়া। তাহলে আপনি আরামসে পায়ের ওপর পা তুলে বলতে পারবেন- পছন্দ তো তোমাদের, তোমরাই সামলাও। যদি উল্টোটা হয়, অর্থাৎ প্রেমের বিয়ে হলে যৌক্তিক-অযৌক্তিক সব যন্ত্রণা আপনাকে পোহাতে হবে।
৪। আপনি মেয়ে হলে আপনার স্বামী যখন তখন বলে দেবেন- যাও, বাপের বাড়ি চলে যাও। উনি ঠিকই জানেন আপনি বাপের বাড়ি যেতে পারবেন না। কারণ এটা প্রেমের বিয়ে। আর জেনে শুনেই স্বামী আপনাকে খোঁচাবে।
৫। আপনি ছেলে হলে স্ত্রী আপনাকে সন্দেহ করবে। ভাববে, যেহেতু আপনার সাথে প্রেম করেছে অতএব লোকটার নির্ঘাৎ প্রেমের বাতিক আছে। পুরুষ মানুষ বলে কথা!
৬। ''কোন কুক্ষণে যে তোমাকে ভালোবেসেছিলাম''- এমনতরো অপমানজনক কথা শুনতে হতে পারে।
৭। ''বিয়ের আগে তো আমার হাত পা ধরে বলেছিলে- তোমাকে ছাড়া বাঁচব না। নিকুচি করি এখন!'' - এমনটাও শোনা যাবে।
৮। আরো শোনা যাবে- ''আগে কত বলতে তোমাকে সুখে রাখব, একটুও কষ্ট পেতে দেবো না। সে সব মনে পড়ে না এখন? ভণ্ড, প্রতারক।''





আফসুস, এইসব পোস্ট আমার মতো বুড়া মানুষের জন্য না
প্রেম করে বিয়ে না করা, অথবা বিয়ের পর প্রেম করা বিষয়েও কিছু বলেন
এসব বিষয়ে অভিজ্ঞতা নাই
আপনাদের নিয়ে আর পারা যাবে না!এসব কথামালায় অবিবাহিতরা ভয় পেলে সারা দুনিয়ার কি অবস্থা কি হবে!
যে যেভাবে পারুক তবুও বিয়ে করুক - 'প্রেম' করে বা 'না' করে! চাঁদে গিয়ে চাঁদ দেখুক সবাই।
অবিবাহিতরা কখনোই ভয় পায় না
ভাবসিলাম, বলবো যে এই লাইনটা পড়ে হাহাপগে। কিন্তু এরপর উঠে বাকি লাইনগুলো পড়ার পর আরো অনেকবার হাহাপগে হলাম। সেই অবস্থাতেই আছি বেশ ক'মিনিট ধরে।

আপনার প্রশংসাটা বরাবরই বেশি পাই, মীর
প্রেম করতে আমি বলিনা, তবে প্রত্যেক মানুষের অবশ্যই প্রেমে পড়া উচিৎ । প্রেমের আনন্দ, বেদনা, জ্বালা,যন্ত্রনা, বিরহ, মিলন ইত্যাদি না-ই যদি জানা হল, তা'হলে জীবনে আর জানা হল কী ? বিয়ে করা বউ বা স্বামী তো কলসীর পানি, বাড়ির পুকুর - হাত বাড়ালেই হলো । আর প্রেমিক বা প্রেমিকা এত আপন অথচ ধরা-ছোঁয়ার নাগালের বাইরে । প্রেম হলেই তা বিয়েতে না গড়ালে সে প্রেম প্রেম নয়, তাইবা কেন? আবার একবার প্রেমে পড়েই প্রেমের ঘাটের সব পানি খেতে হবে বা খাওয়া যাবে, তা-ও নয় । একই জীবনে বারবার প্রেম আসতে পারে, প্রতিবার ভিন্নভিন্ন অবয়বে, ভিন্ন আংগিকে । কোনটিই অলীক নয়, কোনটিই অবজ্ঞার নয় । যেখানে প্রেম নেই, সেখানে কবিতা নেই । যেখানে প্রেম নেই, সেখানে গল্প নেই -উপন্যাস নেই । যেখানে প্রেম নেই, সেখানে বইয়ের কালো অক্ষরে, পূর্ণিমার চাঁদে প্রিয়তম/প্রিয়তমার প্রতিচ্ছবি দেখা যায় না । ফুল নাই, পাখির কূজন নাই, মৌমাছির গুঞ্জরণ নাই, তেমন প্রেমহীন দুনিয়া মেনে নেওয়া সম্ভব নয় ।
নীড় সন্ধানীর মতে বলি- রবিবাবু এসব ব্যাপার অনেক আগেই খোলাসা করে গেছেন
বাদাম খেয়ে প্রেম ধৈর্য্যর ব্যাপার বটে। যাউকগা, জীবনে প্রেম আর বিয়ের বাইরেও বহু কিছু আছে। এটাই আশার কথা
তবুু আমরা সেই বহু কিছু রেখে প্রেম আর বিয়ে নিয়ে মজে থাকি। মানব জাতির (নাকি পুরুষ জাতির?) এই এক সমস্যা
পরকীয়া নাকি?!! তওবা তওবা।
তওবা তওবা ছাড়াও আরো অনেক জিনিস আছে বকলমদা।
লেখালেখি, ফটোগ্রাফি, ফেসবুকিং, গান, নাচ, রান্না, খাওয়া, সিনেমা, ভ্যাকেশন, ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি
এই চা ছাড়া আর কোনো চা কপালে নাই, ধৈরা নিলে স্বাদ ভালো না খারাপ হৈল, সে চিন্তা করা লাগে না।
ভাগ্যিস অনেকেই জীবনে চা'এর থেকে অন্যকিছুকে গুরুত্বপূর্ন ভাবেন। নইলেতো কোন টমাস আলভা এডিসন, নিউটন, বিদ্যাসাগর কিংবা জগদীশ চন্দ্র বসুর উদয় হতো না।
শুধু শরৎচন্দ্র পাওয়া যেতো দেবদাস নিয়ে
@সিরাজী: আপনাকে প্রেম এবং বিবাহ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মনে হচ্ছে, আপনার বিয়েটা কি প্রেমের...?
@হুদাভাই: প্রেমকে এত সুন্দর উপমা দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা তার পক্ষেই সম্ভব, যার এই বিষয় ব্যপক বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে। হুদাভাই, আপনার মুখে আপনার নিজের প্রেম অর্থাৎ ষাট কংবা সত্তর দশকের প্রেমের গল্প শুনতে চাই।
সব কিছু বলা যায় না ঈশান ভাই
নাজমুল ভাই, ঈশানের প্রস্তাবটা বিবেচনায় নিতে পারেন
লজ্জা লাগে ! সবাই মুখ টিপে হাসবে যে !
ধুর, লজ্জা কিসের? বলে ফেলুন!
জীবন থেকে শিক্ষা নেয়া পোষ্ট পড়ে ব্যাপক মজা পাইছি।
কষ্টের কথায় মজা পাওয়া ভালো না। কারো পৌষ মাস...
জীবনে ঘড়াও দীঘি দুটোরই প্রয়োজন অনিবার্য।

রবি বুড়ো এইসব ব্যাপার অনেক আগেই খোলাসা করে গেছে।
আমার মনে হয় ..............
প্রেমে পড়া উচিৎ , তারপর বিয়ে না করা উচিৎ
তবে ভন্ড না হয়ে , সেটার উপায়ও একটা আছে । সেটা হল প্রেম শেষে ছ্যাঁকা খেয়ে ।
তাহলে কোনও আফসোস থাকল না মনে
দরুণ আইডিয়া!
বিয়ের পরের কিছু কমন ডায়লোগ:
স্ত্রী: আমি বলে তোমার সংসার করেছি/ করছি।
স্বামী: কেন্ যে বিয়া করলাম
(মনে মনে)।
স্ত্রী: বিয়ের পর তুমি আমাকে কি দিয়েছ? (যেন কিছুই দেয়া হয়নি)
স্বামী: মা'ও ভুল বুঝে, বউও ভুল বুঝে।
স্ত্রী: আমি আজই বাপের বাড়ি চলে যাব।
স্বামী: ষ্টার প্লাসের জ্বালায় একটু শান্তিমত ক্রিকেট দেখার জো নাই।
স্ত্রী: আমার ঘুম পাচ্ছে মশারি টাঙাও। লাইট বন্ধ করো।
এখন আর মনে আসছে না। ভুক্তভোগীরা বাকীগুলো এ্যড করুন।
আসল কথাই কওয়া হয় নাই। লেখা মচমচে আর সুস্বাদু হইছে।
এবং শেয়ার করুন
বাপরে , এতো দেখি চরম গিট্টু যুক্ত অবস্হা ...
মন্তব্য করুন