অতিপ্রাকৃতিক সমান্তরাল
সেদিন অচেনা বন্ধুর সঙ্গে ই-মেইল চালাচালি হচ্ছিলো। এটা একটা ভালো জিনিস পাওয়া গেছে চালাচালি করার জন্য। ফ্রিজবী'র মতো অনেকটা। যাই হোক, আমাকে ২টার সময় ঘুম থেকে উঠতে দেখে তিনি যথারীতি হতাশ হলেন এবং আমার লাইফস্টাইলকে ‘ল্যাভিশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করলেন। সেটা পড়ে আমি যারপরনাই খুশি হলাম। কেন জানি না।
চলতিপথে একদিন মেজর অনন্তের সঙ্গে দেখা। মতিঝিল কাঁচাবাজারে বাজার করছিলেন। বললাম, এই করেই তো জীবনটা পার করলেন। এখন কিছুক্ষণের জন্য একটা ব্রেক নেন। কক্সবাজারে লং বীচ নামে একটা সুন্দর হোটেল আছে। সেখান থেকে ঘুরে আসেন। আর ওখানে কিন্তু রেজিস্টার্ড বার আছে একটাই। হোটেল সীগালে সম্ভবত। গিয়ে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন। মেজর অবশ্য আমার কথায় খুব প্রভাবিত হলেন বলে মনে হলো না। বরং রাজধানী ঢাকার রাস্তায় ঘুরঘুর করতেই নাকি উনার বেশি ভালো লাগে। আর ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে। আমরা নিজেদের চা-বিড়ি ধ্বংস করায় নিয়োজিত অবস্থার একটা ছবি তুললাম। সেই ছবিটা আমি কভারে লাগিয়েছি।
রিহানকে দেখলাম ব্যাকপ্যাক কাঁধে হন্তদন্ত হয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটের দিকে যাচ্ছিলো। ডাক দিলাম, কই যাও সোনামনি? সে চকিতে আশপাশে একবার নজর বুলিয়ে আমাকে বললো, আঙকেল আপনে কোনো একদিন নিশ্চিত আমার প্রেস্টিজটা খাবেন। আমি একটা টোয়েন্টি ওয়ান ইয়ার ওল্ড প্রি-গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট অথচ আপনি কিনা আমাকে রাস্তার মধ্যে ডাকলেন সোনামনি! আমি বললাম, ইয়াপ। এটা ছাড়া তোমাকে আর কি ডাকা যেতে পারে সে ব্যপারে আমার তো কোনো আইডিয়া নাই। তুমার আব্বু কুথায়? আব্বু ফেসবুকে- বলতে বলতে সে যেভাবে হন্তদন্ত হয়ে আসছিলো, সেভাবেই রওনা হয়ে গেলো।
আমি অফিসে ঢুকে পড়লাম। অফিস থেকে বের হয়ে দেখি বড়ভাই বুকটুশ দাঁড়িয়ে আছেন। ওরে তোর ভাবীকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। তোর অফিস দেখে ভাবলাম ঘুরে যাই। আমি বললাম, বাহ্ ভালো তো। চলেন আলু পুরি খাই।
আমার অফিসটা অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় তো, সেখানে সন্ধ্যার পর শুধু আলু পুরি আর চা পাওয়া যায়। ভাবীর সঙ্গে পরিচয় হলো। ভারী মিষ্টি দেখতে। আমি একটু উনার সঙ্গে দুষ্টামীও করলাম ভাইয়ের চোখ এড়িয়ে।
বুকটুশি ফুপুর সঙ্গে একদিন ছবির হাটে দেখা। অনেকক্ষণ হাঁটলাম। গল্প করলাম। চা খেলাম। সন্ধ্যা নেমে গেলো। সুন্দরী ফুপুটার সঙ্গে ঘুরতে ভালো লাগছিলো। সবাই বার বার উনার দিকে তাকাচ্ছিলো। উনি সেদিন চলে যাবার সময় আবার দেখা হবার কথা বলে গিয়েছিলেন। সেটা এখনো হলো না।
বসে বসে সেই আক্ষেপটাই করছিলাম। এমন সময় মটরসাইকেল চালিয়ে মহল্লায় এসে ঢুকলেন দাদাভাই। এসেই চোটপাট, জগত সব রসাতলে গেলো। চাল নেই, চুলো নেই, একটা ডিগ্রী নেই, দুই লাইন ইংরেজি লিখতে জানে না; সব এসে জুটেছে আমার কপালে। জানতে চাইলাম, দাদাভাই ক্ষেপেছেন কেন? কি হয়েছে বলবেন তো।
-হবে আর কি? গুষ্টির পিন্ডি এসে উঠেছে অফিসে। একটা কাজ ঠিকমতো করতে পারে না।
আচ্ছা।
-কি আচ্ছা? জীবনে দেখেছো দুই লাইন ইংরেজি পারে না সেই লোক গাট্টি গাট্টি টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে একটা অফিস থেকে?
হ্যাঁ।
-হ্যাঁ? কি আশ্চর্য! তুমিও বললে হ্যাঁ? জগতের সবাই সবকিছু দেখে বসে আছে, খালি আমি বাদে।
বুঝতে পারলাম ভাবীও উপরের প্রশ্নের জবাবে হ্যাঁ-ই বলেছিলো। সেটা বুঝে একটু ফিক করে হেসে দিতেই দাদাভাইয়ের সে কি অভিমান! আমরা কেউ তাকে মানি না। সম্মান করি না। এই দেশটার আসলে কি হবে? রসাতলে যাচ্ছে সবকিছু, ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাড়াতাড়ি উনার হাতে এককাপ চা তুলে দিলো লাবণী। লক্ষী ধরনের মেয়ে তো, তাই সবসময় সবার সব কাজ সে করে দেয়। আর জোনাকিটা বসে বসে শুধু হাসে। ওর বয়ফ্রেন্ডটা বোধহয় রসিক ধরনের। আর দুনিয়ার সবার সব সমস্যা সমাধান করে দেবার গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বসে আছে শান্ত। দাদাভাই আসার আগ পর্যন্ত এই এলাকায় চোটপাট যা কিছু হচ্ছিলো, সেগুলো সেই করছিলো। এখন লাবণীর কাছ থেকে পাওয়া চাএর কাপটি ধরে সম্মোহিতের মতো বসে আছে কোনো কারণ ছাড়াই।
সেই পড়ন্ত দুপুরে আমি আর শাতিল ভাই বসে বসে কি করবো বুঝতে না পেরে, দাবা খেলা শুরু করে দিলাম। সেটা দেখতে স্কাইপিতে নক করলো রুমিয়া। আমি তখন ট্যাবটাকে আমার জায়গায় সেট করে দিয়ে উঠে পড়লাম। খেলুক তারা দুইজন। আমি বরং সেলফোন বের করে অচেনা বন্ধুকে একটা ফোন দিই।
---
ও ভালো কথা, এই লেখাটা মেজর অনন্তের নির্দেশে ক্যাপ্টেন ববির উদ্দেশ্যে লিখিত। মেজর বলে দিয়েছেন, তাকে উৎসর্গ করতে। সেটাই করা হলো। আমি বুঝি না, উনি নিজের কথা নিজে বলেন না কেন!
হাহাহাহা। অফিসের ঠিকানাটা?? আলুপুরী খেতে যেতেই হয় একদিন
এই লেখাটা দিয়ে কি একটা বিজ্ঞাপন বানানো যাবে কিনা বলেন।
পুরাই কেরাম খেলা দেখি
~
প্রিয় ফেরী ভাইএর পদার্পণে অতীব আনন্দিত হলুম
ভালোই
হেই ব্রো! কই থাকেন? দেখি-টেখি না। আছেন কেমন?
আছি রে ভাই.....ব্যস্ত জীবন....চাকুরী-সংসার.....তবে আছি ... ডাকলেই পাইবেন...
মেজর অনন্ত ব্্যপক ভালো, তাকে সবাই ভালোবাসে কিন্তু সেটা বুঝার মন তার নেই
দাদাভাই অলওয়েজ রক্স।
বুকটুশ তো মিষ্টি খেতে খেতে ডায়বেটিস বানাইছে মনয়, আজ তাকে দেওয়া ক্যাপ্টেন ববির মিষ্টির ফটুক দেখে সে ঘোষনা দিলো যে এটা মিষ্টি না
বুকটুশ ফুপুর দিনকাল কাটছে অস্থিরতায় । কোথাও কিছূ ভালো লাগে না যে!
দারুণ একটা পোষ্ট। সন্ধ্যাটা মিষ্টি হলো ।থ্যাংক্স মীর।
আহা এই কমেন্টটা বড় মিষ্টি হয়েছে জয়িতা'পু। আছেন-টাছেন কেমন বলেন? কোথাও কিছু ভালো লাগে না কেন? আপনার একটা নতুন লেখা যে কতদিন পড়ি না! আর একটা বড় ও নতুন লেখা যে কত বছর পড়ি না!!
সত্যি কত কি আগডুম বাগডুম লিখতে ইচ্ছা করে! কিন্তু মনের সেই স্থিরতা নেই। কেন নেই জানি না।:(
মন মেজাজ খারাপ ছিলো ভালো হয়ে গেলো পড়ে!
ক্যাপটেন মেজর জেনারেল সবাই ভালো থাকুক আর আমাদের মতো ল্যান্স কর্পোরালরা বেচে থাকুক যায় যায় দিন ভাবেই!
আপনে ল্যান্স কর্পোরাল? তাইলে কর্ণেল সাবের ছবি লাগাইসেন ক্যান?
উনার মতো সাহস নিয়ে মরতে চাই তাই কর্নেল সাহেবের ছবি!
বাহ! সুন্দর চিন্তা তো
আমরা বন্ধু ব্লগের বিজ্ঞাপণ!
বড়ভাই বুকটুশ আর বুকটুশি ফুপু বড়ই ঝামেলা করছে কিন্তু খুব মজা পেলাম।
উনারা কি ঝামেলা করছে রুনা'পু? কবে করছে?
মীর, কী খবর?
খুব ভালো খবর রশীদা আপু। আপনার কি খবর? দেখি না কিন্তু অনেকদিন।
বেশি কিছু কৈলাম না...
মেসবাহ ভাই, আপনে বেশি কিছু না বললে কি ভালো লাগে বলেন?
এক্ষুণি একটা বেশি কিছু বলে যান। আপনারে আমার অনেকগুলা প্লীজ লাগে।
উপহার কি ববি স্বীকার করেছে?
মেজর অনন্ত কি লাজুক মানুষ নাকি?
মেজর অনন্ত লাজুক মানুষ। এইটা নিশ্চিত কিন্তু উপহার ক্যাপ্টেন ববি স্বীকার করছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলতে পারতেসি না। তবে ক্যাপ্টেন অত্যধিক৭৮৮ রুমান্তিক মানুষ হওয়ায় স্বীকার করার সম্ভাবনা ৯৫ শতাংশ।
হাই রুমিয়া'পু! কিরামাছেন? আপনারে এই ব্লগে দেখা যায় না কেন? কই হারালেন?
পুরাই পাত্থর হইছে স্যার
কিরম আছেন?
ভালো আছি।
আপনে বহুদিন আমার কোনো খোঁজ-খবর নেন্না। এই-ই হয় আসলে, গরীবের খবর কেউ রাখেনা
রায়হান ভাই!!!!
আমার পোস্টে!!!!
মাথাটা হঠাৎ চক্কর দিয়া উঠলো আর চৌক্ষে খুশিতে পানি আয়া পর্লো।
বাহ খুব মজাতো!
নাজনীন আপু কেমন আছেন?
আপনার নতুন কোনো লেখা পড়ি না অনেকদিন। মিস করতেসি ভীষণ।
আমি নাই!
পুরাই মাইনাস আর মাইনাস! বাজে পোস্ট!
আপনে নাই কে বলসে ভাইয়া? আপনেই তো গল্পটার কত্থক, মনে নাই?
হুট করে মনটা ভালো করে দেয়া পোস্ট
মন্তব্য করুন