একাকীত্বের অবসরে
-এক্সকিউজ মি!
-আমাকে বলছেন?
-এখানে তো আর কেউ নেই!
চারিদিকে তাকিয়ে উত্তরদাতা বলে- হ্যাঁ, বলুন কি করতে পারি আপনার জন্য ?
-এটা কি অনিরুদ্ধ সাহেবের বাসা?
লোকটি কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে অপরিচিত ভদ্রমহিলার দিকে, তারপর বলে- জি, এটাই অনিরুদ্ধ সাহেবের বাসা। আপনি কোত্থেকে এসেছেন?
-চিটাগাং থেকে, ওনাকে একটু ডেকে দিবেন?
-নিশ্চয়ই! বসুন, বাগানের পাশে রাখা চেয়ারটা দেখিয়ে বলল লোকটি, আপনার পরিচয়টা কি জানতে পারি?
-আমি শম্পা
-জি আপনি শম্পা, আমি আসলে অনি’র সাথে আপনার সম্পর্কটা জানতে চাচ্ছিলাম। ভদ্রলোক হেসে জবাব দেয়
-সম্পর্কটা কি জরুরী?
-না, মানে জানতে চাচ্ছিলাম অনিকে ঠিক কতদিন ধরে চেনেন? আপনাকে তো এর আগে কখনো দেখিনি!
-দেখেন, আসলে প্রয়োজনটা ওনার সাথে, কাইন্ডলি ওনাকে ডেকে দিলে ভাল হয়!
-আমি দুঃখিত, আপনি রেগে যাচ্ছেন। আসলে অনির বাসায় ফিরতে একটু দেরি হবে, আপনাকে যে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে! বাগানের পাশে রাখা চেয়ার দেখিয়ে শম্পাকে বসতে বলে লোকটি গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
-আমি কি তাহলে পরে আসবো?
-না না, একটু অপেক্ষা করুন, আপনার সাথে কি আর কেউ এসেছে? কিছু মনে করবেন না, আসলে এতদূর থেকে এসেছেন আবার অনিকে ঠিক চেনেনও না, তাই প্রশ্নটা করলাম।
-একজন অপরিচিত মহিলাকে এতক্ষণ দাঁড় করিয়ে রেখে তার ব্যক্তিগত ব্যাপারে এত প্রশ্ন করা একটু অশোভন নয় কি! শম্পা আরও কিছু বলতে মুখ খুলতেই দেখে লোকটির মুখে হাসি ছড়ানো, তার দৃষ্টি গেটের দিকে নিবদ্ধ। পিছনে তাকিয়ে দেখে গেট দিয়ে প্রবেশ করছে নীলা ভাবী!
-কি রে, তোদের পরিচয় হয়েছে ? শম্পাকে উদ্দেশ্য করে বলল নীলা
-দেখো না ভাবী, এই ভদ্রলোক সেই তখন থেকে আমার সাথে কথা বলে যাচ্ছে কিন্তু তোমার অনিরুদ্ধকে তো ডেকে দিচ্ছে না!
-কে অনিকে ডেকে দিবে, ও ই তো অনি!
এবার শম্পার অবাক হবার পালা। লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো শম্পা, কি বোকা সে! এতক্ষণ ধরে লোকটা হেঁয়ালি করে যাচ্ছিল আর ও বুঝতেই পারল না। লোকটির দিকে তাকাতেই পারছিল না। পরিবেশটা সহজ করে দিল অনিই-
-দোষটা আমারই, আমিই পরিচয় দেইনি ওনাকে। মনে হচ্ছিল কোথাও কোন গোলমাল আছে, সেটা বুঝতেই কিছুটা সময় নিচ্ছিলাম। নীলাপু, কোন খবর না দিয়ে তুমি হাজির!
-আমি একা না, আমরা সবাই এসেছি! তুই রেডি হয়ে নে!
-কোথায় যাব? আর কথা ছিল তোমরা এখানে এলে আমাকে জানিয়ে আসবে, আমি তোমাদের থাকার ব্যবস্থা করব
-আরে হঠাত করেই আসার প্ল্যান হল। শিহাব আগে থেকেই সব ঠিক করে আমাকে জানাল, তাই তোকে আর খবর দেয়া হয়নি। তখনি মনে মনে ঠিক করলাম তোকে একটা সারপ্রাইজ দিব!
-সারপ্রাইজ তো ভালই হয়েছে, তা তোমরা উঠেছ কোথায়?
-সী প্যালেসে
-ওনাকে ঠিক চিনলাম না! তুমি এরকম একজন সুন্দরী রমণীকে অচেনা অজানা একজনকে খোঁজে পাঠালে, নাহ! নীলাপু, তুমি ঠিক আগের মতই রয়ে গেছ!
-তুইও তো সেরকমই আছিস, একটুও বদলাস নি। ও শম্পা, আমার মামাতো ননদ। ও না চিনলে কি হবে, আমি তো পিছন থেকে সবই দেখছিলাম!
-ও, এই কাহিনী! ওনাকে সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে আমাকে বোকা বানানো হল, দাঁড়াও আমিও সুযোগ পেয়ে নেই! শম্পা নিচু স্বরে নীলার কানের কাছে বলে উঠল!
-নীলাপু, তোমরা ভিতরে আস, বলে অনি বাসার দিকে এগিয়ে যায়
-অনি, আমরা বাগানেই বসি, তুই রেডি হয়ে আয়। তোর বাগানটা খুব সুন্দর! নিজ হাতেই সেবা করিস, না?
-হ্যাঁ, বাসার সামনের খালি জায়গাটা কাজে লাগিয়েছি আর কি! তুমি কি এখান থেকেই চলে যাবে? আরে, আমার ডেরাটা একটু দেখবে না! আর উনি প্রথম এলেন তার উপর এতক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখলাম!
-অসুবিধা নেই, অন্য সময় সবাই মিলে বেড়িয়ে যাব। ওরা সবাই বীচে অপেক্ষা করছে, তুই তাড়াতাড়ি চল তো!
অনি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নীলার দিকে আর মনে মনে ভাবে- নীলা’পুকে আজ অনেক খুশি লাগছে!
বীচে পৌছে ছেলেমেয়েরা স্পীডবোটে চড়ার বায়না ধরলে শিহাব ওদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠলো। শম্পা ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা নিয়ে ওদের পিছনে ছুটলে কিছুক্ষণের জন্য একা হয়ে যায় নীলা আর অনি
-অনি, তোর কি মন খারাপ? অনিকে কিছুটা আনমোনা দেখে বলল নীলা
-কেন বল তো!
-চুপ করে আছিস যে! আমি এসে তোর মন খারাপ করে দিলাম, না!
-নাহ, তা কেন! তোমাকে দেখছিলাম আর ভাবছিলাম আমাদের ফেলে আসা দিনগুলির কথা!
-পিছনের কথা ভেবে আর কি হবে, ওগুলো তো আর ফেরত আসবে না! ভবিষ্যতের কথা ভাব। তুই একটা বিয়ে করে ফেল, দেখবি জীবনটা অনেক গোছালো হবে।
-বিয়ে করলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয় নীলাপু?
-সব সমস্যার কথা বলতে পারব না তবে জীবনের উপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আসে, অনেক গোছানো হয়
-তুমি ভাল আছ নীলাপু?
-হ্যাঁ, ভালই তো! আমাকে দেখে কি মনে হয় খারাপ আছি?
-অনি হাসে, তোমার চোখ বলছে তুমি ভাল নেই!
-বাদ দে আমার কথা। তুই নিজে খুব আছিস, তাই না! আপনজনদের থেকে এতটা দূরে একাকী পড়ে আছিস, এটাকে কি ভাল থাকা বলে !
অনি মন মনে ভাবে, আমার ভাল থাকা নিয়ে তুমি এত ভাবছ কেন, কারো বিরুদ্ধে আমার তো কোন অভিযোগ নেই! আমার একাকীত্ব নিয়ে বেশ আছি আমি
-আমার উপর তোর অনেক রাগ, তাইনা অনি?
-হঠাত এই প্রশ্ন!
-এমনিই মনে হল, সেই যে ট্রেনে তোর সাথে দেখা হল তারপর আর যোগাযোগ রাখলি না, একবার ফোনও করলি না!
-আসলে সময় পাইনা, তাছাড়া অঞ্জন থেকে তোমার সব খবরই পাই!
-তুই, আমি, অঞ্জন, কি চমৎকার সময় ছিল আমাদের! অঞ্জন বাসায় আসলে তোর কথা খুব বলে। আমার একটা জিনিস খুব ভাল লাগলো, তুই ঠিক আগের মতই ইমোশনাল আছিস। মনে আছে কি রকম পাগলাটে ছিলি! তোর সেই পাগলামিগুলো মাঝে মাঝে খুব মনে পড়ে। আমাকে নিয়ে লেখা তোর কবিতাগুলোর কথা আছে অনি? বেশীর ভাগ কবিতার বিষয়বস্তু ছিল আমার চোখ! মনে হলে এখনো হাসি পায়!
অনি মনে মনে বলে, ওগুলো পাগলামি ছিল না নীলাপু, ওগুলো সব সত্যি ছিল। আমার মনের কথা ছিল, তুমিও তা জানতে। আমি বুঝি আজকের তোমার এই যে উচ্ছ্বাস তার পুরাটাই বাইরের রুপ, ভিতরটা যে অনেক কষ্টের তা তোমার চোখ বলে দিচ্ছে, সবকিছু কি ঢেকে রাখা যায়!
-কি রে, কি ভাবছিস!
-না তেমন কিছু না, আমার চেনা সেই তোমার সাথে আজকের তোমাকে মিলিয়ে দেখছিলাম!
–কি দেখলি! হাসতে হাসতে বলে নীলা
-কি ছেলেমানুষ ছিলাম আমরা! আচ্ছা নীলাপু, মনে আছে বিয়ের আগে জীবন নিয়ে তুমি কত কথা বলতে! আমি, অঞ্জন এই নিয়ে কত হাসাহাসি করতাম!
নীলা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে, তারপর বলে- অপরিণত বয়সে মানুষ অনেক কিছুই ভাবে, বাস্তব জীবনে তার সব চাওয়া কি পূরণ হয়! বিয়ের পরের জীবনটা আসলে দুজনের বোঝাপড়ার উপর নির্ভর করে। এখানে কিছুটা স্যাক্রিফাইস করতে হয়।
-স্যাক্রিফাইস করার পরও কি হিসেবটা মেলে?
কিছু বলে না নীলা। চোখের কোনটা ভারী হয়ে ওঠে, অনি থেকে আড়াল করতেই একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সাগরের দিকে! অনেকক্ষণ পর বলে
-জানিস অনি, আমাদের জীবনের সোনালী সময়গুলো খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়! তবুও সেই সেগুলো মনে গেঁথে থাকে, আমরা সেই ভাল সময়গুলোকে খুঁজে ফিরি এই সময়ের ভিড়ে। এটা আসলে ভুল। যে দিন চলে যায় তাকে ভেবে কষ্ট পাওয়া ঠিক না। আমাদেরকে বর্তমান নিয়েই বাঁচতে হবে। জীবন মানেই কম্প্রোমাইজ!
-অনি আবার হাসে, ভাল বলেছ, কম্প্রোমাইজ! বুঝতে পারছি আমরা সবাই কম্প্রোমাইজ করছি। তুমি করছ, আমিও করছি প্রতিনিয়ত, নিজের সাথে! কেন মানুষকে এত কম্প্রোমাইজ করতে হয় বলেতে পারো? কেন আমাদের ছোট ছোট চাওয়াগুলো পূরণ হয় না?
-মানুষের সব চাওয়া কি পূরণ হয়? নীলা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে আসলে আমরা অনেক সময় ভুল করে ভুল ডিসিশন নেই আর যখন বুঝতে পারি তখন আর শোধরানোর উপায় থাকে না।
- কিছু কিছু ভুল থাকে যার কোন সমাধান হয় না, সারা জীবন ধরে মাশুল দিতে হয়!
-তুই আর কোন ভুল করিস না। আচ্ছা শম্পাকে তোর কেমন লাগলো? ও খুব ভাল মেয়ে। তুই চাইলে আমি ওর বাবা-মার সাথে আলাপ করতে পারি!
-তারপর আবার কম্প্রোমাইজ!
-দূর! কি যে বলিস না! ওটা একটা কথার কথা। একসাথে থাকতে হলে দুজনেরই বোঝাপড়া লাগে। কিছুটা ছাড় দু পক্ষ থেকেই দিতে হয়, এটা হয়ে যায়।
অনি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেঁড়ে বলে- সবার সাথে কি আর বোঝাপড়া হয়!
শম্পা ক্যামেরা নিয়ে ওদের দিকে আসতে থাকলে থেমে যায় আলাপচারিতা। কাছে এসে অনেকটা হাপাতে থাকে।
-ওফ! ওদের সাথে আমি ছুটে পারি! ওরা অনেক দূরে চলে গেছে, আমি একটু রেস্ট নিব
-তোমরা কথা বল, আমি দেখে আসি ওরা কতদূর গেল, বলে উঠে দাঁড়ায় অনি ।
-না না, তুই বস আমি দেখছি বলে ক্যামেরাটা নিয়ে উঠে সামনের দিকে হাঁটতে থাকে নীলা।
-তারপর, অনিরুদ্ধ সাহেব! ভাবী আমাকে আপনার পাহারায় রেখে গেল, বুঝেছেন?
-আজকাল কারো পাহারা দরকার হয় নাকি? মেয়েরা এখন অনেক স্বাধীন! হেসে বলে অনি
-তবুও গার্জিয়ানরা কিন্তু ইন্সিকিউরিটি ফিল করে!
-নীলাপু করবে না এটুকু জানি। দেখলেন না আপনাকে একাই আমার ওখানে পাঠালেন!
-সে তো আপনার ওখানে, কারণ ওনার ধারনা আপনি খুব গুড বয়! এখন দেখেন আবার আপনাকেই পাহারায় বসিয়ে গেলেন! ঠাট্টাচ্ছলে বলে শম্পা
-নীলাপু শেষ পর্যন্ত আমাকে পাহারাদার বানিয়ে দিল, তাও এ রকম একজন সুন্দরী মহিলার! বলে হাসতে থেকে অনি
-বুঝেছি জনাব, মেয়েদের পাহারাদার হতে আপনার আপত্তি আছে। থাক, আপনাকে আর পাহারাদার হতে হবে না! শুনলাম আপনি অনেকদিন ধরে কক্সবাজারে আছেন! এক জায়গায় এতদিন ভাল লাগে?
-হ্যা, অনেকদিন হয়ে গেল! সবার কথা জানিনা তবে আমার কাছে এ জায়গার তুলনা নেই, কখনো পুরনো হয় না।
-একা একা থাকেন, খারাপ লাগে না?
-এটা আসলে অভ্যস্ততার ব্যাপার, একা থাকার একটা মজা আছে, নিজের মত করে থাকা যায়। আর একা বলতে তো আর সম্পুর্ন একা না, আশে পাশে কত মানুষ, বন্ধু বান্ধব! বাসায় শুধু একা, এই যা।
-আমি ওটাই বুঝিয়েছি। সাগর আপনার অনেক পছন্দের, তাই না!
-এখানে থাকতে থাকতে ওকে বড় বেশী ভালোবেসে ফেলেছি! তাছাড়া সাগর অপছন্দ এমন মানুষ বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবে না!
-ঠিকই বলেছেন, সাগরকে সবাই ভালবাসে। আমরাও তো সাগারের টানেই বার বার ছুটে আসি এখানে! ঐ তো নীলা ভাবী আসছে!
-কি রে তোরা কি নিয়ে আলাপ করছিস?
-এই কক্সবাজার, সাগর, ওনার একা থাকা- এইসব। ভাইয়ারা ফিরেনি এখনো?
-হ্যাঁ, স্পীডবোট ভ্রমণ শেষ, এখন সাঁতার কাটা চলছে! শম্পা, আমার ভাইটিকে কেমন লাগলো?
-ভাল, তবে তোমার ভাই তো মেয়েদের পাহারাদার হতে রাজি না!
-ঠিকই তো! অনি পাহারাদার হবে কেন, প্রয়োজনে দায়িত্ব নিবে।
-তোমরা কথা বল, আমি দেখে আসি ওদের কি অবস্থা বলে উঠে পড়ল অনি
ছেলেমেয়েদের সমুদ্রস্নান শেষ হলে ওরা ফিরে চলে হোটেলে আর অনি ওর বাসার দিকে
-অনি, সন্ধায় এসো, গল্প করা যাবে- শিহাব বলে ওঠে
-আপনারা সবাই মিলে আমার বাসায় আসেন, এমনিতেই তো আমার ওখানে আসার কথা ছিল!
-আগে বিয়ে কর, তখন তোমার বউর হাতের খাবার খেতে আসব
-শিহাব ভাই আপনিও নীলাপুর মত আমার বিয়ে নিয়ে লাগলেন!
-জি, ভায়া আমরা অবিবাহিত পুরুষ মানুষের বাসায় আসি না, হাসতে হাসতে বলে শিহাব
-বুঝেছি, সব নীলাপুর ষড়যন্ত্র!
-এই অনি, তুই কিন্তু সন্ধ্যার পর অবশ্যই আসবি, আমরা একসাথে রাতের খাবার খাব
-ঠিক আছে তবে একটা শর্ত, আজ রাতে তোমরা আমার গেস্ট হবে
নীলা হেসে বলে- আচ্ছা ঠিক আছে
সন্ধ্যার পর রেস্টুরেন্টে আড্ডা বেশ জমে ওঠে! শিহাবই বেশির ভাগ সময় মাতিয়ে রাখছে সবাইকে। অনিকে চুপচাপ দেখে শিহাব বলে কি ভায়া, তোমার কথা এত শুনেছি নীলা আর অঞ্জনের মুখে যে আজকে ঠিক মিলাতে পারছি না! তোমার দুষ্টুমির অনেক গল্পই আমার মুখস্থ। দাবা খেলা হয় এখনো?
-হুম, মাঝে মাঝে চলে। আসলে লোকজন সবাই ব্যস্ত, এত সময় কোথায়!
-শুনেছি তুমি মাঝে মাঝে চিটাগাং যাও, বাসায় চলে আস। জমিয়ে আড্ডা মারা আর দাবা খালা যাবে
-চিটাগাং মাঝে মাঝে আসা হয় তবে কাজ সেরে দ্রুত ফিরে আসতে হয় এখানে। ইচ্ছে থাকলেও সময় করতে পারিনা
-ব্যাচেলর মানুষ, এখন সময় করতে না পারলে বিয়ের পর তোমার দেখাই পাওয়া যাবে না!
কথার ফাঁকে ফাঁকে অনি খেয়াল করল নীলা বেশ চুপচাপ! বেশীর ভাগ সময়ই ছেলেকে খাওয়ানোর কাজেই ব্যস্ত।
খাওয়া আড্ডা, গল্পে বেশ রাত হয়ে গেল, এবার ফেরার পালা। সবাই একটু সামনে এগিয়ে গেলে নীলা অনির সাথে কথা বলতে বলতে এগুতে থাকে
-অনি কাল সকালে আমরা চলে যাব, পারলে একবার আসিস।
-আচ্ছা
সকালে অনি হোটেলের সামনে এসে দেখে ওরা চেক আউট হয়ে মালামাল গাড়িতে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অনিকে দেখে এগিয়ে আসে নীলা
-তোর সাথে আবার কবে দেখা হবে জানিনা! চিটাগাং এলে অবশ্যই বাসায় আসবি। না আসলে আমি ভীষন রাগ করব
-তুমি এমনভাবে বললে যেন আমাদের আর দেখা হবে না!
-আমি বুঝি, তুই আমার সাথে দেখা হবার ভয়েই বাসায় যেতে চাস না!
-আসলে তোমার কষ্ট বাড়াতে চাই না!
-বাড়লে বাড়ুক, তুই অবশ্যই আসবি।
-আচ্ছা দেখি
-আবার দেখি!
শিহাব লাগেজগুলো গাড়িতে তুলে ডাকতে থাকলে গাড়ির দিকে এগিয়ে যায় নীলা
-ভাল থেকো নীলাপু!
নীলা কিছুদূর এগিয়ে পিছন ফিরে তাকায়, অনি দূর থেকে দেখে নীলার চোখের কোনটা চিক চিক করছে!
আগের পর্ব পড়ুন - এখানে
সুন্দর!
এত ফ্যান্টাস্টিক সময় কাটালে সবকিছুই সুন্দর লাগে!
ভাল্লাগছে।
ভাল্লাগার জন্য ধইন্না
গল্পটা বেশ ভাল লেগেছে, খুব সুন্দর। আগের পর্বের লিঙ্ক না দিয়েও এটা একটা আলাদা পূর্নাংগ গল্প হিসেবে বেশ ভাল যাবে।
আরো এমন অনেক চাই
ধন্যবাদ সুন্দর কমেন্টের জন্য।
আমারো তাই মনে হয়েছে -- আগের পর্বের লিঙ্ক ছাড়াও গল্পটা ভালো লাগলো
পুরো গল্পই সংলাপ নির্ভর। পড়তে একটু অসুবিধা লেগেছে যদিও, কিন্তু গল্পটা সুন্দর।
মন্তব্য করুন