(বর্তমান) প্যাচালঃ রোমান্সিচ্ছা
১। আমার বাবা হিমুর বাপের মত আমারে মহামানব বানাতে না চাইলেও জ্ঞানী বানাতে চাইছিলো, সো সরাসরি দৈনিক ইত্তেফাক দিয়েই বর্নপরিচয় ও পড়তে শেখানো হৈছিলো। কিন্তু ইত্তেফাক থেকে আমি পড়া শুরু করলাম কচি-কাচার আসর-সাহিত্য সামিয়িকী (না বুইঝাই)-সিনেমার বিজ্ঞাপণ আর মোস্ট ইম্পর্টেন্টলী রাশি ফল।
মেষ রাশির জাতক আমি, দৈনিকি "রোমান্স শুভ" থাকে। রোমান্স শব্দটাই কেমন চনমনে উত্তেজনা জাগানোর মত। কিভাবে যেন বুঝছিলাম রোমান্স মানে "ইয়ে" মানে "বিয়ে" আর কি। হয়তো রাজ্জাক-কবরী বা ববিতার সিনেমার একনিষ্ঠ দর্শক হিসেবে সিনেমার শেষে তাদের "মেলামেশা" পরবর্তী বিয়ে ও কাহিনীর সমাপ্তি দেখেই বিয়ের গুরুত্ব ও রোমান্সের সাথে এর অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের সম্বন্ধে ধারনা পাইছিলাম। তাই ছোট বেলা থেকেই আমার বিয়ের খুব শখ, কারন রোমান্সের খুব শখ।
২। এই বিয়ে বা রোমান্সের শখ তাই বৈলা একেবারে লাগামহীন-শর্তহীন-বাছবিচারহীন ছিলো না। ছোটবেলায় দেখা বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে বর-কনেকে একি গ্লাসে পানি বা এঁটো মিষ্টি খাওয়ানো দেখেছি, তাই ধরেই নিয়েছিলাম কোন ছেলে আর মেয়ে একি গ্লাসে পানি খেলে বা এঁটো পানি বা খাবার খেলে বিয়ে হয়ে যায়। তাই আমি খুব সাবধানে থাকতাম। অপছন্দের কোন মেয়ে যেন আমার এঁটো পানি বা খাবার না খায় বা ভাইস-ভার্সা যেন না হয় সেই দিকে খুবই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতাম। কি কষ্টকর দিন গুলিই না গেছে। তবে এই ভাবেই আমার জ্ঞাণী হওয়া শুরু।
৩। জ্ঞাণী হৈতে গিয়ে জ্ঞাণ নিয়ে মজা করা শিখলাম, কৌতুক করা শিখলাম। আমি অবশ্য কৌতুক বলবো না। জ্ঞাণ নিয়ে কৌতুক বলার একটা কাহিনী বলবো।
ঘটনা আমার অফিসের, যেখানে বসে ইদানিং থিসিস লেখার মত ক্লান্তিকর কাজটা করি। আমার অফিসে এক পাকি বসে, আগেই বলেছিলাম অন্য পোষ্টে, এইটা তুলনামুলক টলারেবল। সে আমারে জিজ্ঞেস করায় আমি জানিয়ে দিয়েছি আমি উর্দু পারি না । কিন্তু মাঝে মাঝে কাজের ফাকে ইয়ারফোন লাগিয়ে জগজিৎ এর গজল শুনি, এইটা পাকি দেখেছে। একদিন তার আরেক পাকি বন্ধুসহ অফিসে এসেছে সন্ধ্যার পর, আমি তখন ইয়ারফোন ছাড়াই গান শুনছি। এর পরবর্তী কথোপকথনঃ
পাকিঃ তুমি না উর্দু বুঝো না, এই গজল বুঝো?
আমিঃ হ বুঝি, অনেকদিন ধরে শুনি তো, আর ধীরে ধীরে বলে, সো কিছুটা বুঝতে পারি।
পাকিদের মুখে হাসি দেখা গেলো। এইবার কৈলোঃ ওকে! আমি তোমার উর্দুর নোলেজ চেক করি।
আমি হাসি মুখে কৈলাম, তার আগে বলো নলেজের কৌতুক জানো কিনা?
পাকিরা মাথা নাড়ায়া জানাইলো জানে না। সো আমি সেই "পাত্রীর বাপের কাছে পাত্রের নলেজ সম্বন্ধে ঘটকের বর্ননার" কৌতুকটা কৈলাম ইংরেজীতে। ঐ যে "ছোট বেলায় গোসল করার সময় দেখছিলাম গামছার ফাঁক দিয়া" কৌতুকটা। আশা করি এইখানে রিপিটের দরকার নাই।
তো সহপাঠি কলিগ ফ্যাক ফ্যাক করে হাসলেও অপর পাকি নারাজ হৈলো। আমাকে করা তার পরবর্তী কোশ্চেন থেকে বুঝলাম উনি মাইন্ড খাইছেন, কারন উনার ধারনা উনাদের জিজ্ঞাসারে ব্যংগ করার জন্যই আমি এই কৌতুক বানাইছি।
৪। তো, যেইটা বলতেছিলাম। এই রোমান্স তথা বিয়ের শখ নিয়া বড় হৈলাম। মাঝে বিয়ের সুদুরপ্রসারী প্ল্যান ছাড়াই রোমান্সের দিকে নজর গেছিলো। সে আরেক অপ্রয়োজনীয় কমন কাহিনী, বলার কিছু নাই। তবে সে লাইনে আর পাকাপাকি ভাবে যাই নাই, কারন জ্ঞাণীরা বলেন "ভালোবাসার শেষ বিয়েতে"।
বিয়ের শখ নিয়া বড় হৈলেও চাকরী জীবন ২ বছর কাটানোর পর বাবা যখন বললো "তোমার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতেছি", তখন বিশাল ভয় পাইছিলাম, বুঝতেছিলাম না এইটার জন্য আমি রেডি কিনা। কিন্তু আজন্ম লালিত শখ বৈলা কথা, ১ সপ্তাহের মধ্যে জানায়া দিলাম, "ওক্কে আগায়া যান"
৫। সেই আগাইতে আগাইতে একসময় বিয়ের শখ পুরণ হৈলো ২০০৬ এ আইসা, লাইফের নতুন ইনিংস শুরু হৈলো। টিল নাউ ইনিংস চলতেছে অবিরাম রৌদ্রকরজ্জ্বল কিংবা মেঘাচ্ছন্ন মাঠে......।
৬। বিয়ের ছয় বছরের মধ্যে প্রথম চার বছর গেছে অনেকটা রোলার কোস্টার রাইডে। অনেক বেশী জাজমেন্টাল, পেস আর গুগলী দিয়ে। নিকট অতীতের দুই বছর গেলো অনেক শান্ত-স্ট্যাবল মেরি গো রাউন্ডে। পেস-গুগলী এখনও আছে, তবে ফেস করার কায়দা এখন অনেক পরিশীলিত, আর জাজমেন্টাল না হলেই ভালো লাগে বেশী। জানিনা অন্যদের বিবাহিত জীবনে আবেগের পথচলা আমার মতই নাকি, বাট আমার কাছে মনে হয়েছে আবেগের এই ধারাবাহিক রুপান্তরটাই লাইফটাকে অনেক আনন্দময় করেছে। আর ৪ বছর পর বুঝলাম, বিয়ে আসলে কম্প্রোমাইজ না, কমপ্যাশন।
৭। বিয়ে নিয়ে এত প্যাচালের কারন একটাই, আজ আমাদের ৬ষ্ঠ বিবাহ বার্ষিকী।
কন্যাসমেত আমাদের আনন্দময় লাইফের জন্য দোয়া রাইখেন। আপনারাও ভালো থাইকেন সবাই।
আপনাদের দাম্পত্য জীবনের অনাবিল সুখ ও সমৃদ্ধি কামনায় . . . . . . . .
থ্যান্ক্যি।
আজ সকালটা শুরু হয়েছে আপনার বিবাহ বার্ষিকীর খবরটা পড়ে। ফেবুতে যা বলেছি এখানেও তাই বলি দোয়া কইরেন আমাদের জন্য।
==========================
তাইলে ইদানিং আপনে থিসিস লেখার পাশাপাশি পাকিদের জেনারেল নলেজ টেস্ট করতেছেন ভালোই।
বেগানা শাদি মে আবদুললাহ দিওয়ানা
রাসেল লাইগ্যা সব্বাই দোয়া কৈরেন। পোলাটার বিবাহ জরুরী। কিসব ছাইপাশের রাঁধে আজকাল, তাই ইয়াম্মি ইয়াম্মি কৈরা খায়।
থ্যান্ক্যি।
কিছু খানা পিনার ব্যবস্থা থাকলে আরেকটু খুশি হইতাম, তথাপি, লেখাটার মাঝেই মন খুশি হবার মতন উপাদান পাইয়া গেসি।
আপনাদের দুজনকে ৬ষ্ঠ বিবাহবার্ষিকীর অনেক শুভেচ্ছা।
অনেক অনেক থ্যান্ক্যি।
হ্যাপি ম্যারেজ এ্যনিভার্সারি। কাউকে হ্যাপি থাকতে দেখলে খুব ভালো লাগে।
ভালো একটা কথা বলছেন।
অনেক থ্যান্ক্যি।
বিয়ে আসলে কম্প্রোমাইজ না, কমপ্যাশন।
আপনাদের দুজনকে ৬ষ্ঠ বিবাহবার্ষিকীর অনেক শুভেচ্ছা।
অনেক ধন্যবাদ।
বিয়ে বার্ষিকীর অনেক শুভেচ্ছা।
আপনেরেও অনেক ধন্যবাদ।
বিবাহবার্ষিকীতে অনেক অনেক শুভেচ্ছা
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
পুত্র ও কন্যা নিয়ে সুখে থাকেন
পুত্র পাইলেন কৈ?
এক্খান কন্যা নিয়াই আপাতত খুশী।
ধন্যবাদ।
শুভকামনা রইলো...
অনেক ধন্যবাদ।
বিয়েবার্ষিকীর অনেক অনেক শুভেচ্ছা
আপনি সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করুন।
থ্যান্ক্যু!
১) আমারতো দু'বার হলো, এখনো ঠিক বুঝতে পাইনি কম্প্রো না কম্পে ! কোথাকার কে এসে বিছনার অর্ধেক দখল করে নেবে, অসহ্য যতোসব !
প্রথমবার বাবা যখন জিজ্ঞেস করেছিলেন, ভোঁ দৌঁড়ে পগার পাড় ! পরে শুনেছিলাম আমার এ পালানোর অপর নাম নাকি সম্মতি ! তো হয়ে গেল । অনেক দিন পর মা যখন ২'য়ার জন্য মত চাইলেন সোজা বলে দিলাম 'দরকার নাই' ! মা'র উত্তর - আমার বাচ্চাদের জন্য নাকি ভীষণ দরকার ! অতএব !
২) ভাই মাঝে সাঝে এক আধটু কামড়কামড়ি রাইকেন কিন্তু । নাহয় রোমাঞ্চাইবেন ক্যামনে ! কিছু মনে কইরেন না নেহাত অভিজ্ঞতা থেকে বল্লাম ।
৩) আপনাদের ৬ষ্ট বিয়ে বার্ষিকী মধুর হোক ! শুভ কামনা সহ ।
১। হয়তো না বুইঝাই আমল করতেছেন।
২।কামড়াকামড়ি তো আছেই, গুগলী-পেসের কথা কৈলাম না?
৩। থ্যান্কু।
আপনি সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করুন।
আবারো ধন্যবাদ।
বিয়ে বার্ষিকী তে লেট কইরা আমার ইচ্ছা
সাতটা সারাংশ দেখলাম মনে হইলো। এইগুলার ভাব সম্প্রসারণ কবে পামু?
ভাবসম্প্রসারণ ক্লান্তিকর হয়্যা যাইতারে.... এই থাইক।
বিলম্বিত শুভেচ্ছা। গুস্তাকি মাফ জাঁহাপনা। ৬ একদিন ৬০-এ পৌঁছাক। মিয়া-বিবিরে নিয়া সবাই মিলে একসঙ্গে সেলিব্রেট করবো।
৬ষ্ঠ শাহাদত বার্ষিকীর শুভেচ্ছা
শুভকামনা। দোয়া রইল।
অনেক দিন তো হইল ভাই!
নতুন একটা পোষ্ট দেওন যায় না?!
মন্তব্য করুন