উপোষের দিন রাত্রী পার্ট টু
গতকাল ইফতার সংক্রান্ত পোষ্ট গুলা দেখে খুব মন খারাপ হয়ে গেলো। গ্রেট মিস কোনো সন্দেহ নাই। আসলে কাকে জানি বলছিলাম জীবন মানেই যা করছি তার জন্য মেজাজ খারাপ হওয়া আর যা করি নাই তা মিস করা। আর এমন অনেক বার হইছে যে ইচ্ছা করেই যাই নাই পড়ে ভাবছি কেনো যে গেলাম না। এই জন্যই শুভমিতার একখান গান আছে
কেঊ চায় কেউ পায়
কেউ বারবার হেরে যায়!
আমি সেই হারু পাট্টীর দলে। জেবীন আপু অনেক বার ফেসবুকে বলছিলো শান্ত আইসো। অনেক দিন কথা বারতা নাই। আমি বারবার বলছিলাম সোমবার ঢাকা ছাড়ার সম্ভাবনা বেশী তাই আসবো না। যথারীতি সাড়ে ছয়টায় ঘুমিয়ে আড়াইটায় উঠলাম। উঠে স্টার গোল্ডে জোরী ব্রেকার নামের এক মুভির শেষ দিক দেখছিলাম। আমার এক বান্ধবী ছিলো ফেসবুকে বলছিলো মুভিটা নাকি ভালোই। কিন্তুর ভালোর কিছুই দেখলাম না। তবে রোজা রমজানে বিপাশারে দেখতে খারাপ লাগে না কিন্তু মুসলমান বলে তো একটা কথা আছে। সংযম দেখালাম বিপাশার অংশ আসলে সংবাদ দেখি আর মাধবনের ডায়লগ আসলে দেখি। কাহিনী জঘন্য। তারা জোরী ব্রেক করে টাকার বিনিময়ে। শেষে তাদের এক জোরী মিলাতে হয়। হালকা কমেডি করার চেষ্টা। তখন বিষন্ন বাউন্ডুলের কথা মনে পড়ে গেলো যে মান খুব নিম্ন হিন্দী ছবির। এই ছবির মান হিন্দী ছবির চেয়েও নিম্ন তাও পাব্লিক হজম করে। যাই হোক যোহরের নামায পড়লাম দেরীতে। তারপর এসএল্পিএল দেখতে ছিলাম। খেলার মান বিপিএলের চেয়েও খারাপ। খালি ফিল্ডিং খুব দারুন। এমন সময় বুয়া আসলো। ভাইয়ার অফিসের বুয়া। বেশি কথা বলে। চাবী আনে নাই তাই নিজে যেয়ে তাকে সী অফ করতে হলো। তাতে আলসেমি কাটলো। এমন সময় আসলো সুখের খবর। মামার ফোনে বললো যে তুমার নামে কিছু টাকা আসছে। ভাইয়ার আদেশে। তা নেয়ার জন্যে অফিসের ছেলে আসবে। নিচে নেমে টাকা নিতে হবে। আবার নামলাম পাচ তলা ভেঙ্গে। তারপর আছর নামাজ পড়ে বের হলাম। উদ্দেশ্য বাইরে ইফতারী করবো। মহাখালীতেও যেতে পারি বা পুলকরে নিয়ে বাইরেও ইফতারী করতে পারি। তার আগে ইয়েলো বে এম্পোরিয়াম থেকে ঘুরে আসি। দেখলাম দামের বহর। সাধারন পাঞ্জাবীর অসাধারন দাম। তাও আবার দামের সাথে ভ্যাট। মনে মনে ভাবলাম মরহুম সাইফুর রহমানের কথা। কোন কামে যা আনছিলেন এই দেশে এই জিনিস। এখন দিতে হয় যারা ক্রেতা তাদের। ঘড়ির দিকে তাকালাম দেখি সময় ৫ টা ২৫। ভাবলাম মহাখালী যাই। জাপান গার্ডেনের সামনে অনেক সিএনজি দাড়ায়া থাকে। জিগেষ করতেই বলে ইফতারীর পরে যান এখন যায়া পাবেন না। একটা পাইলাম রোজার দিনে চাবাচ্ছিলো পান বললো মামা ২৫০ দিতে হবে। আমি দেড়শোতে সমানে যাই। তিনি রাজি হলেন ২০০ বা ২২০ হয়তো রাজী হতেন কিন্তু গেলাম না আর কারন ২২০+ ২৫০+ বাসে আসা অনেক খরচা। এই মাস পুরাটাই তো বাকী। এতো খরচ পোষাবে না। তাই যাওয়া হলো না আর। গেলাম চায়ের দোকানে দেখি নান্নু সাহেব পর্দার নিচে সিগারেট খায়। তাকে বাকির কিছু টাকা দিলাম। তার ট্রেডমার্ক ডায়লগ দেয় "মামা বাকীর কি টাকা চাইছি। আপনি দিবেন না টাকা। যখন আপনার টাকা হবে তখন আমি নিজে গিয়ে আনবো মামা। যখন টাকা দ দরকার হবে।" আমি হাসি আন্তরিক্তায় মুগ্ধ হই। পুলকের বাসায় মেহমান তাই প্ল্যান বি অফ। কি আর করা ভাইয়ার অফিসেই ইফতারী। ইফতারী করে রিক্সায় চায়ের দোকান। সেখান থেকে পুরানো চায়ের দোকানে যাওয়া। চা খাওয়ার সময় দেলোয়ার সাহেবের ডায়লগ "লাস্ট লিকারের দিকে আসলেই আপনার কথা মনে খুব পড়ে। ডানে বায়ে দেখি মামা আসে কিনা। আপনি জামালপুর থাকেন আর চিটাগাং বা বাইরে থাকেন এই সময়টা অনেক মিস করি"। মানুষের এই ভালোবাসায় চোখে পানি আসে অনেক কষ্টে আটকাই। এই জীবনে মানুষের স্নেহ ভালোবাসা যা পাইছি অনেকে তা সাত জনমেও পায় না। সেন্ডেল্টার অবস্থা খুব খারাপ। আমি প্রচুর হাটি। তাই খয়ে যাওয়া সেন্ডেল নিয়েই দিন যাপন। যেগুলা পছন্দ হয় দাম ২০০০+ অতো টাকা তো নাই হাজারে ভেতরেই কিনে ফেললাম। লন্ড্রীর বিল, ফ্লেক্সী লোড চুল দাড়ি কেটে বাসার দিকে রওনা দিলাম।
আজকে সকালেই রওনা দিবো বাসে। যাওয়া নিয়ে অনেক গেঞ্জাম। জামালপুরের বাস ভালো না। মানুষ গুলাও খারাপ। চোর বাটপার মলম পার্টিতে ভর্তি। ট্রেন ছাড়া শান্তি নাই। কিন্তু টিকেট ত পেলাম না। কি আর করা। জান নিয়ে আমার অতো ভয় নাই। মাল নিয়েই ভয়। এই মোবাইল সেটটাকে খুব ভালোবাসি। বাংলা লেখার এই মাধ্যমকে হারাতে চাই না সহজে ।টাকাও নাই যে হারিয়ে গেলে এরকম কিনবো। যাই হোক কি আর করা। তারপর আবা্র দিনে ঘূমানোর অভ্যাস। এই সব বাসে ঘুমালে মহাবিপদ। দোয়া করবেন সবাই। যদি ঠিক করে বাড়িতে যাই তবে মোবাইলেই ব্লগ বাজি চলবে। খুব ভালোবাসি এই ব্লগকে। তার চেয়েও ভালোবাসি ব্লগারদের এই সব নিম্ন মানের লেখাকে প্রশংসায় আসমানে তোলার জন্য। তখনি বুঝি এই স্নেহ ভালোবাসা অতূলনীয়। তাই পোষ্ট লিখতে এতো ভালো লাগে!
বেটার লাক নেক্সট টাইম, শান্ত ভাই! আপনেরে অনেক মিস করছি।
আপনের ঈদ হোক আনন্দময়।
ভাল থাকেন, অননেক ভাল।
যাচ্ছো জামালপুরের পথে, পিরে এসো আল্লাহর রহমতে
বরাবরের মতো এই পোস্টটা দুর্দান্ত হয়েছে। তোমার বাড়ি যাওয়ার গল্প শুনে ঈদে বাড়ি যেতে ইচ্ছা করছে
সুনডুর হইছে। নেক্সট আড্ডায় মিস করেন না। পরিচিত হতে পারলে ভালই লাগবে
যাত্রা শুভ হোক, আনন্দময় হোক ঈদ ....... ভালো থাকবেন...
পৌছাইয়া কমেন্টে জানাইও...
ঈদ আসলে এত মানুষ এত কষ্ট করে ঢাকা ছেড়ে যায়, আবার আসে - এসব দেখলে মনে হয় ঈদ আসলে এসব মানুষের জন্যই ।
আপনার ঈদ আনন্দময় হোক।
ভালোভাবে বাপ-মায়ের লগে ঈদ করো। কয়জনের এই ভাগ্য হয় ? তুমি ভাগ্যবান শান্ত।
এই দেখোনা আমর বাপ-মা কেউ নাই...
তোমার এইসব দিনরাত্রীর কাহিনীগুলি নিয়মিত লিখো... পড়তে ভালো লাগে।
আগাম ঈদ মোবারক।
কাল আসলে ভালো লাগতো। যা হোক। এরপর আর মিস করো না।
তোমার লেখা পড়তে সবসময়ই ভালো লাগে।সহজ সরল কথাগুলি কি সুন্দর গুছিয়ে লিখো! আমাকে মোবাইলে বাংলায় লিখতে শিখাইয়ো তো!
সাবধানে যেও বাড়ী। বাবা-মাকে নিয়ে সুন্দর ঈদ কাটুক।
বাড়ি মোবারক। ঈদ ভালোমতো কাটায়ে আবার ঘরের ছেলে ঘরে মানে ঢাকায় ফিরে আসেন।
যাত্রা শুভ হোক। আগাম ঈদ মোবারাক।
্লেখাটা খুব ভাল লাগল । সুন্দর কাটুক ঈদ ।
মন্তব্য করুন