আবোল তাবোল - ১৩
#
অনেক দিন হইছে আবোল তাবোল কিছু লেখি না, লেখা হয়ে উঠে না।
চিন্তা করে দেখলাম আমার এই সিরিজটার একটা প্যাটার্ন দাড় হয়ে গেছে। কিছু হাবিজাবি কথাবার্তা, একটা দুইটা গান আর মুভির কথা। একসাথে দেই ঘুটা, ব্যাস!
এইবারও অবশ্য তার বাইরে যাব না। সাথে এক্সট্রা একটু ঘুরাঘুরি ফ্রি!
#
গত শুক্রবারে এবি'র ফটুওয়াক হইল, সবাই মিলে মজা করে ঘুরে ঘুরে কাশফুলের ছবি তুলে নিয়ে আসছে। জেবিন আপু বলছিল যাইতে, আগেই অন্য প্ল্যান করা ছিল বলে যেতে পারিনাই। পড়ে ফটোওয়াক নিয়ে তানবিরা আপুর ব্লগ পড়ে আফসোস কম হয়নাই। অবশ্য, মজাটাও একটু একটু ফিল করতে পারছি!
নেক্সট টাইম এমন কিছু হলে, মিস করব না। ইন শা আল্লাহ।
#
অনেক দিন ধরেই ভাবতেছিলাম এবি'র কিছু প্রিয় মানুষ কে এফবি তেও এড করে নিব, সাহস পাচ্ছিলাম। এই কয়েকদিন আগে হঠাৎ এড দিয়া দিছি বেশ কয়েকজন কে, একসেপ্ট ও করছে।
এখন মজা বুঝবো!
কয়েকদিন একটু ফাঁকিবাজি করলেই শুরু করুম ঘ্যান ঘ্যান, লেখা দেন লেখা দেন!!
হিঃ হিঃ
এবি'র পুরান মানুষ জন ইদানিং একটু এক্টিভিটি বাড়াইতেছে, মাঝে মাঝে লেখা দেখা যায়। একসাথে যেদিন বেশ কয়েকজন লেখা দেয়, মন টাই ভাল হয়ে যায়। কিছু নতুন বন্ধুর কাজকর্মও রীতিমত প্রশংসা করার মত। নিয়মিত লিখছে, অন্যদের লেখা পড়ছে, কমেন্ট দিচ্ছে। এক কথায় চমৎকার।
মাঝখানে মাথায় ভূত চাপছে, এবির জন্য ব্যানার বানামু।তার জন্য বেশ কয়েকজনরে জ্বালাইয়া এবি ফটোগ্রাফি ক্লাবে ঢুকলাম, ফ্লিকার-এ একাউন্ট ও খুললাম। এখন একেকজনের তোলা ছবি দেখি আর হা হুতাশ করি!
এত্ত সুন্দর সব ছবি সবাই তুলে ক্যামনে!
আমার তো ক্যামরাই নাই! খালি, আফসুস আর আফসুস!
#
লাস্ট কয়েকটা দিন অসম্ভব ভাল গেছে। বন্ধুদের সাথে ভালোবাসার শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
একটা ফ্রেন্ডের পা-এ হালকা ফ্র্যাকচার হওয়ায় দুবাই থেকে তিন সপ্তার ছুটিতে বাড়িতে আসছে। ওর জন্মদিন ছিল ২৮ সেপ্টেম্বর। সকালের ট্রেন ছিল যাবার। মহানগর প্রভাতি তে চট্টগ্রামের লাইনে তিন ঘণ্টার পথ।
ঢাকায় তো চিড়িয়াখানা ছাড়া আর কোথাও কাক আর চড়ুই বাদে অন্য কোন পাখি দেখাই যায় না। ট্রেনের পাশ দিয়ে চলা ল্যাম্পপোস্টের তারে বা গরুর পিঠে ফিঙ্গে, এই দৃশ্যটা কি যে সুন্দর লাগে!
সকালের ট্রেনগুলিতে চড়ার একটা মজার ব্যাপার হল ট্রেন ছাড়ার পর প্রায় ঘন্টাদুয়েক ট্রেনের স্পিকারে পুরানো দিনের সব চমৎকার গান চলতে থাকে।
এই ট্রেনেই প্রিয় শিল্পী মান্না দে'র গাওয়া একটা নজরুল গীতি প্রথম শুনেছিলাম।
'একী সুরে তুমি গান শোনালে, ভিনদেশি প্রিয়'।
এই গানটা শুনলেই কেন জানি অনুপ ঘোষালের গলায় আরেকটা নজরুল গীতি মনে পড়ে যায়, গানের নামও আবার 'মনে পড়ে'!
ভোরের চমৎকার বাতাসে জানলার পাশে বসে। দূরে দিগন্তের শেষ মাথায় সবুজের কোল ঘেঁষে যখন কুয়াশা ফুড়ে রোদ্দুর বের হয়ে আসে, এমন চমৎকার সব গান শুনতে শুনতে ট্রেনের তালে তালে দুলতে দুলতে তখন এক কাপ চা। এই অনুভূতিটা, এক কথায় তুলনাহীন।
ঢাকা চট্টগ্রাম রুটের মহানগর আর ঢাকা সিলেট রুটের পারাবত। এই দুইটা ট্রেন আমার ফেভারিট। যদি কোন কারনে ছাড়তে এদের দেরি হয়, পরে এত স্পিড এত বাড়িয়ে ছুটতে থাকে যে দেখা যায় যে নির্দিষ্ট সময়েরও আগে গন্তব্যে পৌঁছে বসে থাকে।
আমি গেলাম ঢাকা থেকে, আরেক ফ্রেন্ড এসেছিল সিলেট থেকে। দুজনেই উঠেছিলাম দুবাই ফেরতের বাসায়।
এই প্রথম ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেয়েও নানাবাসা বাদে অন্য কোথাও উঠলাম। এজন্য একটু অস্বস্তি ছিল প্রায় সব কটা দিন।
যাই হোক, আমরা তিনজন তো ছিলামই। আরও কয়েকজন নিয়মিত সঙ্গ দিয়েছে, সময় আসলেই বেশ ভাল কেটেছে।
যেদিন গেলাম, তার পরের দিনের কথা।
নাস্তা করে একটু বের হলাম নানুবাসায় যাব বলে। বের হতেই, কথা নেই বার্তা নেই আকাশ কালো করে মুশল ধারায় বৃষ্টি! সাথে, প্রতি মিনিটে দুই তিনবার দুনিয়া কাঁপানো শব্দের বজ্রপাত! নিমিষে রাস্তা খালি। কিছুক্ষণ রাস্তার পাশে একটা দোকানের সাইডে দাড়িয়ে থেকে দেখি অর্ধেক ভিজে গেছি! বৃষ্টি কমারও কোন লক্ষন নেই। কি আর করার, রাস্তায় নেমে পড়লাম।
ঝুম বৃষ্টি, একটু পরেই রাস্তাঘাট দেখি সব পানির নিচে! একটা রিকশা নিলাম। বেশ কিছুক্ষণ হুড নামিয়ে রিকশায় বসে বসে রাজার মত ভিজলাম, তারপর মনে হল এরকম বৃষ্টিতে আরও কিছু করা দরকার। তাই সই। আগুন গরম চা খাইলাম এক চেনা দোকান থেকে। তারপর আরও কিছু পথ যাওয়ার পর ছেলেবেলার প্রিয় পুকুরটা দেখে রিকশা পার্ক করে নেমে পড়লাম। বৃষ্টি পড়তেছে আকাশ ভেঙ্গে, তার মাঝে একলা পুকুরে বাটারফ্লাই। আবার মন চাইলো তো ডুবসাঁতার, মাথার উপরে পানিতে একটু ঝাপসা অদ্ভুত অন্যরকম বৃষ্টি পড়ার শব্দ! অসাধারণ!
ভিজে চুপচুপ হয়ে নানুবাসায় গিয়ে নানুর সাথে দেখা করলাম। তারপর এরকম থাকাটাই স্বাভাবিক টাইপের লেকচার দিয়ে বৃষ্টিতে প্রত্যাবর্তন!
যাকে দেখতে গেলাম সে মনে হয় আমাদের দেখেই অর্ধেক ফিট, পরের দিন নিজে নিজেই ব্যান্ডেজ খুলে মুক্তি! বিকেলে ডাক্তার দেখিয়ে ছাড়পত্র নিয়ে নিল! ব্যাস, বাকি ২ দিন ৩ জনে মিলে মোটরসাইকেলে শহর জুড়ে উড়াউড়ি আর এটা সেটা পার্টি!
তার পরের দিন বিকেলে গেলাম আমাদের শহরের পাশ দিয়ে ছুটে চলা তিতাস নদীর পাড়ে। নদীর পাশ দিয়ে যতটা পথ হাঁটা যায় তা কয়েকমাস আগে পাকা করা হয়েছে। রেলিং দেওয়া ছোট্ট পাকা রাস্তা, বিকেলে হাটার জন্য পারফেক্ট।
কিন্তু, নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে শহুরে ইট সিমেন্টের ফ্রেমে বন্দী করা তা কতটা দূরদর্শীর কাজ হল বুঝতে পারলাম না।
ঢাকায় ব্যাক করার আগের দিন মনে হয় পূর্ণিমা ছিল। লোডশেডিং এর অনেকটা সময় ছাদে বসে ছিলাম চুপচাপ। কাছেই কোথাও কিছু ব্যাঙ আর ঝিঁঝিঁ পোকাদের গানের আসর চলছিল। মুঠোফোনে তখন চারপাশ ভাসিয়ে গান গাইছেন মনিকা'দি, 'ও নিঠুর বাশিওয়ালা' । ছাদের জমে থাকা পানিতে ছায়া পরছিল রূপার থালার মত সুবিশাল এক চাঁদ! মাঝে মাঝে কিছু মুহূর্তে জীবনটা বড্ড বেশি মায়াময় মনে হয়!
#
অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম একটা মুভি নিয়ে লিখব, লেখার সময় মনে না থাকায় লেখা হচ্ছিল না।
ক্রিস্টোফার নোলান এর পরিচালিত মুভি 'দ্য প্রেস্টিজ'।
উনিশ শতকের শেষের দিকের কাহিনি। দুই ম্যাজিসিয়ান বন্ধুর মাঝে সবচাইতে সেরা স্টেজ ইলিউশন সৃষ্টির প্রতিযোগিতা নিয়ে তৈরি মিস্টেরী থ্রিলার।
ধাপে ধাপে নানা চমক, অচিন্তনীয় কাহিনির দুর্দান্ত সব বাঁক। আর সাথে ক্রিস্টিয়ান বেল আর হিউ জ্যাকম্যান এর অনবদ্য অভিনয়। এক কথায় অসাধারণ একটা মুভি। মাস্ট মাস্ট ওয়াচ ফর অল!
২০০৬ সালের মুভি তাই অনেকেরই হয়তো কমন পড়বে, তবুও না দেখে থাকলে এই জিনিস মিস করা টা যে কোন মুভিপ্রেমিকের জন্য বিশাল আফসুসের ব্যাপার হবে। তাই, একটু বেশি দেরি হলেও আজ লিখেই ফেললাম।
#
অনেক হল হাবিজাবি,এতক্ষণ পর্যন্ত যে কয়জন পড়বে সেটাই দেখার বিষয়!
আজকের বকরবকর এখানেই শেষ।
ভাল থাকেন সবাই। অনেক ভাল । প্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষণ!
হ্যাপি ব্লগিং!
ট্রেনের অংশটা সত্যি ভালো। প্রেস্টিজ দারুণ মুভি।
ভালো লেখা, ভালো যাক দিন গুলা!
থ্যাঙ্কস, শান্ত ভাই।
বেড়ানোর অংশটা অসাধারণ লেগেছে। খুদ খেদান ইয়োংগে
'খুদ খেদান ইয়োংগে' মানে কি?
বাই দ্যা ওয়ে, হুমায়ূন আহমেদের মতো তোমার লেখায় চা খাওয়ার একটা বিরাট ভূমিকা থাকে, আর নামাজ পড়ারও খানিকটা
বৃষ্টি আর চা রে আমার প্যাশন বলা যায়!
কিন্তু নামাজের ভূমিকা থাকে কেমন?
টক-ঝাল-মিষ্টি সব ধরনের স্বাদ পাওয়া গেল........... লিখতে থাকুন......বেশী বেশী......
ভালো লাগলো।
জেনে, আমারও ভাল লাগলো।
হাবিজাবি বকরবকর ভাল হয়েছে ভাইয়া। এভাবেই লিখতে থাকেন।
অনেক দিন আপনার লেখা পাচ্ছি না।
ধূসর গোধূলির মত গল্প চাই আবার।
ব্যস্ততা আমাকে দেয়না অবসর... গানটা মনে আছে ?
রুটি-রুজির কাজে ভীষণ ব্যস্ত ভাই!
সময় নিয়ে লিখতে চেষ্টা করব।
তাও মাঝে মাঝে একটু সময় করে নিবেন, প্লিজ।
অপেক্ষায় থাকবো। ভাল থাকুন।
ইয়ে মানে... আপ্নে কি আমার ফেসবুকে আছেন
কি জানি! ইয়াদ আসতাছে না!
লেখা পড়লাম ভাল লাগলো বেড়ানোর অংশটা চমৎকার। সিনেমা এখন কেন যেন টানে না।
মজা লেগেছে শুভোর মন্তব্য। আমার ও একই প্রশ্ন?
পড়া ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
পোলাপাইনের যে কত্ত সুখ ! কত যে ঘূরে বেড়ায়! হুররররর!!!!
আবোল তাবোল ভাল্লাগছে ।
ফ্লিকার একাউন্টে আমার কিছুই নাই
আমি মাত্তর একটা ফটুক দিছি!
আমি আছি আপনার সাথে..
barna'এর ব্লগ?
বিষণ্ণ বাউন্ডুলে?
!!!!????
কনফিউজড কেন?!
একটা সাইন ইন নেম,
আরেকটা ব্লগ নিক! এই তো!
সবাই পইড়া ... চাইটা চুইটা ফালাইছে ....
সবার পড়ে আ...মি... ।। আমি নতুন মানুষ তোমাদের মাঝে ইন করেছি... তাই সবার অনবদ্য লেখা পড়ছি আর মন্তব্যের মাইনকা চিপায় পড়ছি...
যা হোক বহুত পেয়ার কারনেওয়ালা লেখা ,
ভালো লাগলো ভ্রমনবর্ণনা ... ।।।
মন্তব্য করুন