ইউজার লগইন

গল্প থেকে গল্প বলার দিন

গল্প থেকে গল্প বলার দিন

এক.
নিবারুন ভট্রাচার্যকে ভালোবাসি
এই কথা শোনার পর তুমি আসলে আমাকে যে প্রশ্নটা করলে তাতে আমি বিব্রত হইনি কারন তুমি আমাকে সমকামি মনে করনি,তুমি আমাকে পাগলও ঠাহর করনি,তুমি কেবল আমার দিকে একটা প্রশ্নবোধক শব্দ ঠেলে দিলে,কেন?

বেশ তাহলে এই কেন উত্তর দিতে গিয়ে আমাকে মনে করতে হোলো একটা বিশেষ ইচ্ছার মিল-অমিলের কথা! আমি এবং নবারুন দু'জনেই পুরুষ!আমি এবং নবারুন দু'জনেই কবি এবং আমরা দু'জনেই কুকুর দেখলে ঢিল মারি না।আবার ধলা চামড়ার মানুষদের মতো কোলে তুলিয়া লই না।আমরা কেবল কুকুর দেখলে জিজ্ঞাসা করি রাতের পাহারায় তুমি গাফলতি করো কিনা? আর যদি দেখি সে বড্ড বেশি ঘেউ ঘেই করছে তাহলে তার প্রতি উৎসর্গ করি দু'পিচ রুটি এবং তার রুটি খাওয়া শেষ হবার আগেই টমি টাটা বলে বিদায় নেই।

খ.এই জাতীয় ঘটনা ঘটার পরের দিন আমরা সাধারনত পূর্বে দেখা কুকুরটিকে চিনতে পারি না। সে কারনে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে আমরা পূর্বের দিনের মতো আর আচরন করি না। কারন সম্পর্কচর্চার ধারাবাহিকতার কারণে যে সমস্ত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে আমাদের ক্ষেত্রে ওরকম বলার মতো কিছু নেই।

গ.আচনক আমরা দু'জনেই কুকুরটিকে চিনে ফেললাম। ফেলাস্ট্রিটের উপর দখল করা ভোদকা আম গাছটার দিকে পা' উঠেয়ে প্রচ্ছাপ করে দু' পাক দিয়ে পশ্চিম দিকের রাস্তা বরাবর তাকিয়ে আছে । তাকিয়ে আছে যুবতী একটি পাগলীর দিকে। পাগলীর শরীর পেঁচানো শাড়ীটি দেখতে নতুন। কিন্তু নতুন শাড়ী যেভাবে মেয়েরা পরে পাগলী ঠিক সেভাবে পরেনি। পাগলী এমনভাবে পরেছে দেখলে মনে হয় ছেড়া শাড়ী গ্রামের মহিলারা পর পুরুষ দেখে যে ভাবে লজ্জা ঢাকতে চায় ঠিক এমন ভাবেই পরেছে। তার এরকম শাড়ী পরার যে দিকটিতে প্রথমেই নজরে পড়ার কথা সেটা হচ্ছে বোগলের পাশ দিয়ে শুভ্র একটি স্তন। উপমা ব্যাবহার করলে যা দাঁড়ায় তা হোলো নারকেলের উপরের এলোমেলো ছোবরা বা আঁশ ভেদ করে ,ফাটালে যেমন ভেতরের কোপরা বা ক্রিম কালারের ফুল দেখা যায় ঠিক তেমনি।আমরা দু'জনেই বিপরীত পাশের স্তন দেখার আগ্রহ বোধ করি নাই। তবুও আমাদের রাস্তার ঠিক বিপরীত পাশে যেতে হোলো।
এই দুই পাশের দুরত্ব কর্ণকুহরে শব্দ প্রবেশ করতে পারে,বাধা বা হালকা হ'য়ে যায় না।

নবারুন তাকিয়ে আছে। অথচ ওর হাতে প্রবেশ করানো হয়েছে সুঁই। রক্ত নেবার প্রয়োজনে। দেখা দরকার বেটার শরীরে বেড়েছে কিনা ডাইবেটিকের প্রকপ। আহা নবারুনের সে দিকে মন নেই। শরীরে যে তার কিছু একটা ঢুকেছে এবং সেটা যে কষ্টদায়ক,নবারুনকে দেখলে তা মনে হয় না।
আমিও কৌতুহল বশে তাঁকালাম নবারুনের চোখের দিকে। নবারুনের চোখ যেদিকে তাকানো আমিও ঠিক সেদিকেই তাঁকালাম।
কি দেখা গেল এই প্রশ্ন তুমি করবে!
কি দেখা গেল এই প্রশ্ন আমি করেছি !
কি দেখা গেল এই প্রশ্ন নবারুন করেনি!

অনেক দুর থেকে হেঁটে আসছে পুলিশের পোষাক পরা একজন লোক। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে ফেলাস্ট্রিট দিয়ে। পাগলীর দিকে। আমরা আশা করেছিলাম লোকটির উদ্দেশ্য পাগলীকে অতিক্রম করে সে তার কাজে যাবে।
লোকটির তো এইভাবে হাঁটা ঠিক না! গাড়ীর নিচে পড়বে তো! এই কথা বলতে বলতে ফার্মাসীর লোকটি কুকুর মারার ইনজেকসন হাতে নিলো।
আমি বললাম,গাড়ী কি ফুটপাতে উঠে যাবে! না হলে লোকটির মরার কোন সম্ভাবনা নাই!
ওদিকে নাবরুনের দৃষ্টি সচল। লোকটি কোথায় তাকিয়ে এগুচ্ছে! লোকটি কোথায় তাকিয়ে এগুচ্ছে ! পাগলিটির কাছাকাছি এসে যখন লোকটি আরো কিছুটা ঘাড় নামিয়ে দেখার চেষ্টা করছে, ঠিক তখনই পাগললীটি তার ছায়া শাড়ী পেঁচানো কাপড়টি জাগিয়ে চিৎকার করে বলছে,‌দেখ দেখ তোর মায়ের মুখ দেখ*!

গ.নবারুনের মুখের দিকে না তাকিয়েই কুকুর মারার ইনজেকশন প্রায় ঢুকিয়ে দিতে শুরু করছিলো ফার্মাসীর লোকটি। আমরা তখন দু'জনে আলাপ করে একই সংলাপ ভিন্ন ভিন্ন কন্ঠে ফার্মাসীর লোকটিকে শুনালাম।আমরা বললাম আমরা আগামীকাল আপনার সাথে পুনরাবৃত্তিমূলক দৃশ্য আর কখনও দেখবো না।

*নবারুন ভট্রাচার্যের একটি গল্পে এই বাক্যটি রয়েছে। ঠিক কোন গল্পে তা আমার মনে নেই। পরে জানানো যাবে।

পোস্টটি ৭ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

তানবীরা's picture


ঠিক বুঝিনি Puzzled

গোঁসাই পাহ্‌লভী's picture


এইভাবে বললে হবে না বন্ধু।এত সহজ করে গল্পের আকারটা দিলাম!

আচ্ছা গল্পের কোন দিকটা না বোঝার মতো?
আর কোনও একটি বাক্যও কি ভালোলাগেনি বা বোধগম্য হয়নি?

উচ্ছল's picture


ঠিক বুঝিনি

----- তানবীরা আপুর সােথ সহমত।।

হাসান রায়হান's picture


দারুন লাগতেছিল গল্পের স্টাইল, ভাষা, বর্ণনা কিন্তু শেষ প্যারায় এসে খেই হারায় ফেললাম।

গ.নবারুনের মুখের দিকে না তাকিয়েই কুকুর মারার ইনজেকশন প্রায় ঢুকিয়ে দিতে শুরু করছিলো ফার্মাসীর লোকটি। আমরা তখন দু'জনে আলাপ করে একই সংলাপ ভিন্ন ভিন্ন কন্ঠে ফার্মাসীর লোকটিকে শুনালাম।আমরা বললাম আমরা আগামীকাল আপনার সাথে পুনরাবৃত্তিমূলক দৃশ্য আর কখনও দেখবো না।

এইখানে বুঝলামনা । আর ফার্মেসিতে কুকুর মারার ইনজেকশন থাকে নাকি?

গোঁসাই পাহ্‌লভী's picture


প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ দিতে চাই।গল্পের স্টাইলটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে।

আর ফার্মাসীতে কুকুর মারার ইনজেকশন থাকে না কি?
এটা আনার প্রশ্ন ছিলো।আবারও ধন্যবাদ ।

ফার্মাসীর এই ঘটনাটার আমি প্রতিস্থাপন করেছি।কোথায় থেকে করিছি?যেমন ধরেন এক সময় প্রশ্ন উঠতো এমন যে ছাত্রদের হাতে অস্র থাকে নাকি? এখন এই প্রশ্ন উঠেনা। ধরেন ছাত্রদের হাতে অস্র এই দৃশ্যকে আমি স্থাপন করেছি ফার্মাসীতে।এক সময় আমি জানি এরকম প্রশ্ন আর উঠবে না।

আর যে অংশটুকু আপনি বলেছেন বোঝেননি। সেটা নিয়া একটু বলি।আসলে এইখানে ফার্মাসীর লোক আমি আর নবারুন একই দৃশ্য দেখছি নবারুনের ডাইবেটিকের মাত্রা পরীক্ষা করার সময়। আমরা যে দৃশ্য দেখছি তাতে আমাদের প্রতিক্রিয়াটা স্পষ্ট না হলেও ফার্মাসীর লোকটির প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট। তিনি দৃশ্য দেখে বা দৃশ্যর দেখার সময়ে তার মধ্যে এমন প্রতিক্রিয়া ঘটলো যাতে সে কুকুর মারার ইনজেকশন হাতে নিলো। এর মানে বুঝাতে চাইলাম যে ফার্মাসীর লোকটা ঘটনা যেখানে ঘটছে তার কেন্দ্রিকতা ভেবে সে ইনজেকশন হাতে নিলো। এবং একটা পর্যায়ে সে উত্তেজনা বসত সেটা নবারুনের দেহে অসচেতনভাবেই প্রবেশ করাতে চাইলো।

আসলে এই গল্পটির মূল জায়গাটা বা মূল চরিত্রটা বা কোন জিনিসটাকে দেখাতে চাইলাম,সেইটা ধরতে পারলে পড়ার আনন্দটা বেড়ে যাবে নিশ্চিত।

জ্যোতি's picture


আম্মো বুঝি নাই। কাল রাতেই পড়েছিলাম কিন্তু বুঝি নাই বলে কিছু বলি নাই।:ডি

গোঁসাই পাহ্‌লভী's picture


একটা বাক্যও কি ভালো লাগেনি। যদিও গল্প মানে একটা বাক্য নয়। কিন্তু বাক্যের মাধ্যমে যেহেতু গল্প বলা হচ্ছে সে কারনে একটা বাক্য অন্তত বোঝাটা তো দরকার!

আমি ব্যর্থ! আমি ব্যার্থ!

জ্যোতি's picture


প্রথম থেকে ভালো লাগছিলো কথাবার্তাগুলা কিন্তু গল্পটা বুঝি নাই।

গোঁসাই পাহ্‌লভী's picture


গল্পটায় পুলিশের আচরনের দিকে একটু তাকান প্লিজ।এরপর পাগলীটির দিকে

১০

জ্যোতি's picture


এই গভীর রাইতে পাগল আর পুলিশের ডর দেখাইতাছেন? যাইগা তাইলে।

১১

গোঁসাই পাহ্‌লভী's picture


তাইলে কেমনে হইবো বাপ!

১২

রায়েহাত শুভ's picture


দারুণ একটা দৃশ্যকল্প দেখতে পেলাম...

১৩

গোঁসাই পাহ্‌লভী's picture


বৃত্ত সম্ভবত বিষয়টা বুঝতে পারছেন

ধন্যবাদ বৃত্তবন্দী

১৪

জ্যোতি's picture


Laughing out loud

১৫

মীর's picture


গল্প ভালো লেগেছে। Smile

১৬

লীনা দিলরুবা's picture


লেখার ধরন একদম ভিন্ন ঘরানার। অন্যরকম লেগেছে। ভালো লেগেছে।

১৭

রন্টি চৌধুরী's picture


এটা কি জিনিস?

১৮

শওকত মাসুম's picture


বোঝার চেষ্টা করতাছি

১৯

রন্টি চৌধুরী's picture


হোজ্জা নাসিরুদ্দিনের গল্পের মত ব্যাপার। গল্প লিখে তা বোঝানোর জন্য মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে হবে লেখক কে Smile

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

গোঁসাই পাহ্‌লভী's picture

নিজের সম্পর্কে

অনার্স মাস্টার্স করেছি চারুকলায়,ভাস্কর্য্যে। বর্তমানে একটি প্রদর্শণী করার প্রস্তুতি নিচ্ছি