মেঘকন্যা'এর ব্লগ
একটি মেডিক্যাল ডায়াগনোসিস এবং ছোটখাটো মানুষের ভাগ্যলিপি(!)
ঘটনার শুরু কি আসলে হিস্টেকটোমি বা জরায়ু অপসারণ দিয়ে? তাই বা বলি কি করে! সেই ৯১ সালের পর থেকে তো বাড়ন্ত রক্তচাপ আর হার্ট এনলার্জ ছাড়া আর সব ঠিকই ছিল। মানব শরীরের সব ই তো হরমোনের খেলা, সেই হরমোনের খেলায় ফাউলটা হয়ে গেছে জরায়ু অপসারণ দিয়েই হয়তো। ছোট সাধারণ মাথায় কত কি ভাবি রাত বিরাতে! আহা যদি পেতাম কোন উপায় বা টাইম মেশিন, এ আয়ুর কিছুটা দিয়েও যদি তাকে আমি ধরে রাখতে পারতাম!
ডায়াবেটিস নেই, পঁয়ষট্টি বছরের প্রায় পাঁচ ফুট ছোটখাটো মানুষটা টুকটুক করে রিটায়ারমেন্টের পর থেকে কাজ করে যায় বাসায়। মামুলি কিছু অসুখ বিসুখ ছাড়া তেমন কোন শারীরিক অভিযোগ নেই।
আমার কর্পোরেট কয়েদী জীবন: এগারো বছর
অন্যের জন্যে আমরা প্রতিদিন বাঁচি-সে বাঁচা ঘরে বাইরে সর্বত্র। নিজেকে খুঁজবার দেবার মতো সময় আমাদের নেই। অদ্ভূত রুটিনে আমাদের প্রত্যহ কেটে যায়। সবার কাটছে, এ জাল যারা ছিন্ন করতে পারে তারা গুটিকয়েক সৌভাগ্যবানদের মাঝে পড়েন; যারা সাহস করে ভুল জীবন যাপনে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। গড়পড়তা মানুষের সাথে যুদ্ধে যেমন আনন্দ নেই, তাদের সাথে যূথবদ্ধতায় ও তেমন কোন ভিন্নতা নেই। এরকম উত্তেজনাহীন সময় কাটাতে কাটাতে আমরা ভোঁতা হয়ে যাই। যে যত বেশী ভোঁতা তাকে আমরা ততো বেশী পরিপক্ব, প্রফেশনাল, প্রকৃত কর্পোরেট কর্মী বলে থাকি। আমাদের জগতে নিজেরা নিজেরা কিছু নিয়ম কানুন বানাই-কেউ তা ভাঙ্গতে চাইলে আমরা তার মেরুদন্ড সুনিপুণভাবে ভেঙ্গে দেই। আমরা কোন ব্যতিক্রম সহ্য করি না। আমাদের রুটিন ঠিক করে দেয় আমরা কি খাবো, কতটুকু খাবো, কেমন পোশাক পরব, ঠিক কতটা আরেকজনের সাথে মিশব, কেমন করে পরিমিত হাসব, কি করলে ভালো বলব আর কি করলে খারাপ।
দ্রোহ ও দহন ১৯০৪১৪
http://www.amrabondhu.com/meghkanya/7265
সিলেট যাবার জন্যে রূপা সিঙ্গাপুরে পাওয়া ট্রেনিংটা ও একরকমের এভয়েড ই করেছে। বাসের টিকেট ফেরত, হোটেল বুকিং ক্যান্সেল সব মিলিয়ে মেজাজটা চটাং হবার জন্যে যথেষ্ট। মাথা ব্যথায় অস্থির হতে হতে কোনরকমে রূপা একটা রিকশায় চড়ে বসে। বাসায় গিয়ে ঢুকতে পারলে হয়, সটান শুয়ে পড়বে। আজকে বাসায় মানুষজনও কম। মা বাবা গ্রামের বাড়ী, ভাই ভাবী আছে হয়তো। শরীর এত খারাপ লাগার কোন যুতসই কারণ খুঁজে পাচ্ছে না রূপা মোটেই।
এই গতানুগতিক গল্প লিখে আমি কি করব? রূপার গল্পটা তেমন জমছে না, এজন্যই তিনবছর হলেও লেখা হয় না। মেয়েদের সেই স্ট্রাগলের প্যানপ্যানে কাহিনী।
-রূপা তুই বাসায় আসার পরে কি হলো?
ফোনের সাউন্ডটা লাউড স্পীকারের মতো, মোবাইলের ভলিউম একটু কমিয়ে রূপাকে জিজ্ঞেস করলাম।
দ্রোহ ও দহন
রূপবতী কন্যাদের কাহিনী যেমন হয় ঠিক তেমন লাগলো না আমার রূপার গল্পটা। কয়েক দশক ধরে রূপা নামের যে চরিত্র আমরা চিনি তেমন নয় কেন রূপা এ প্রশ্নটা স্ট্র দিয়ে জ্যুস খেতে খেতে আমার মনে হচ্ছিলো। এ মনে হওয়াটা আজ প্রায় তিন বছর হতে চললো কিন্তু আমার মাথা থেকে অক্ষরের রূপ দিতে সময় পাওয়া গেল না। আজ আবার রূপার সাথে দেখা হওয়াতে আমার মাঝে ফ্ল্যাশব্যাক মতো হচ্ছে। এও আমি জানি বরাবরের মতো নিজের দৈনন্দিনে আবার ডুবে যাবো। এসব মনে করার মতো যে মনটা লাগে সেটা আমার ঘুমিয়ে পড়বে কোন উত্তেজনা ছাড়াই।
কেন যে লেখালেখি নামক ঘুণপোকা এভাবে ঘোরে! বাচ্চাদের চিৎকারে কথায় মনোযোগ কি কোথাও থিতু হবার জো আছে! এ রাত সাড়ে আটটায় কোথায় জ্যান্ত হাতি পাওয়া যাবে চিন্তা করতে করতে চুল আরেক দফা পেকে যাবার যোগাড় যখন তখন রূপা আমার সাথে একই টি-শার্টের নীচে ঘুরতে থাকাই ভালো।
গান কবিতা ছন্দের দেশে ভিখারী বেশে-অনেকদিন পর
বহুদিন কিছু লিখা হয় না, সময়ের সাথে আমি ছুটছি, এদিকে বান্ধবী জেরীন সুদূর আমেরিকা থেকে জানতে চাচ্ছে কেন আমার কোন লিখা সে দেখছে না- একজন পাঠক আমাকে মিস করছে এই ই বা কম কী!
পাখির বুলি
পাখির বুলি কত যে শুনি
হায় মহাসময় হয়ে যায় ক্ষয়
শূন্য ঝুলি, ফাঁকা হৃদয়
এ জীবন বুঝি কয়েদীর ও নয়!
নিয়ম শাসন জীবিকা
দুচোখ পায় না কোনকালে
সূর্যের দেখা-
নদীর স্রোত দিন-রাত
মাখামাখি চলে যায়
হায় মহাসময় হায় আয়ু
সমারোহবিহীন দিকশূন্যপুরে ধায়।
(২১.০১.২০১৪, ৬:৪৫ সন্ধ্যা-অফিস মিটিং এ বসে লেখা)
পারমিতা
এভাবে ভালোবাসা হয় না পারমিতা
হয় না দেখা হয় না কথা
বোঝে না কেউ বুকের ও ব্যথা
এভাবে ভালোবাসা হয় না পারমিতা
কত শত উৎসবে মুখর শহর
একা একা কাটে আমার অষ্টপ্রহর
খোজেঁ না কেউ মেঘ বারতা
এভাবে ভালোবাসা হয় না পারমিতা
বিচ্ছেদ এবার হবে ই হবে জানি
একেকদিন
একেকদিন খুচরো পয়সা, অজান্তে খরচ হয়ে যায়
একেকদিন খুব সুস্থ থেকেও মন অসুস্থতার গান গায়
এক এক দিন করে বছর চলে যায়
হাহাকারগুলো বিদ্রুপের ছায়াতলে
তোমার বিছানার সাইড টেবলে
অবহেলে পড়ে রয়
কেন যে এমন হয়!
তোমাকে কাছে পাবার তৃষ্ণা
জাগ্রত বিগ্রহ দেহ
সটান নগ্নতায়
একেকদিন একেকদিন বিরহ
সব কিছুর দখল পায়
তোমাকে ডাকা অনেক নাম
তোমাকে বলা না বলা অনেক কথা
নীরবতায় ছেয়ে যায়
একেকদিন নিজেকে লাগে
বড্ড অসহায়
পালাই পালাই
অস্থির, উদ্দাম, সিদ্ধান্তহীনতা, নিজেকে নিজের অপছন্দ, মনের বিরুদ্ধে পড়ালেখা সব মিলিয়ে ১৯৯৯ সালটা আমার জন্যে অদ্ভূত একটা সময়। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে হবে এই সংকল্প আমাকে এমন এক বিষয় পড়তে বাধ্য করলো যা পড়তে ভালো লাগে কিন্তু পরীক্ষার খাতায় আমার জন্যে আশানুরূপ নাম্বার যোগ বয়ে আনে না- সেই বিষয়ের নাম দর্শন।আমার মুখস্থ বিদ্যা বরাবরই শূন্যের কোঠায়। বন্ধুদের দেখেছি পাটীগণিত পর্যন্ত না বুঝলে মুখস্থ করে ফেলতে। আমি ব্যর্থ। না বুঝলে এক কলমও এগোতে পারি না। দর্শন পড়ি, ভালো লাগে পড়তে কিন্তু পরীক্ষার খাতায় আমি ২০ পৃষ্ঠা মুখস্থ উগড়ে আসতে পারি না। ফার্স্ট ইয়ারে আমার রেজাল্ট বলে দিচ্ছে আমি থার্ড ক্লাস নম্বর পেতে যাচ্ছি চলমান চার বছরে।সেই সম্ভাবনা পরবর্তীতে উৎপাটন করলেও ৯৯ সালে আমি আতংকে অস্থির।
পিরামিড প্রাচীনতা
২৫.১০.২০১৩
প্রগাঢ় স্বপ্নে তোমার অধরে এঁকে দিতে গিয়ে
একটি উষ্ণ চুস্বন,
আমি দ্বিধায় কুঁকড়ে উঠি যখন-
ভেসে উঠে একটি হাহাশ্বাস-হায় জীবন!
লঘু জোনাকী অথবা নির্ভীক নারী
নক্ষত্রের ছায়াতলে নিবিড় করে
না পাওয়ার বেদনায় জ্বলে,
ডেকে নিয়ে সমূহ পতন-
বলে যায় মূঢ়তার সময়
বেড়াল ফাঁদে, মন যদি কাঁদে জানি
ভালোবাসাহীনতাই জীবন।
স্বাধীনতা মানে অনিঃশেষ নিঃসঙ্গতা
মরাল গ্রীবায়,
সর্পিণী সহোদরার প্রেমহীনতায়
খোঁজা জীবনের মানে
শীতরাতে ডুবে যাওয়া
পিরামিড প্রাচীনতায়...
বন্ধু তোকে মনে পড়ে
১৬.১০.১৩
নিবিড় সন্ধ্যায় পাখিদের সংকীর্তণ
গুচ্ছ আঁধার জমে থাকা
বৃক্ষরাজির শির্ করে রাতের আবাহণ
মিথ্যে হয়ে যায় নাগরিক জীবন
কী-বোর্ডের ঠক্ঠক্ মুছতে পারে না
প্রাচীন জলের ঐকতান
দায়বদ্ধ চরণে বাঁধা শেকল
মন চায় উপড়ে ফেলতে শেকড়
যেখানে আছে পোঁতা যাবজ্জীবন কারাবন্দী যুগল।
-------
শ্লোক এবং শোক
একে অপরের
ভুল সেখানেই
বৈরাগীকে বানানো ঘরের!
-----
মৃত মাছের সাথে ভেসে ওঠে
প্রাণহীন বন্ধুর মুখ
ভুলতে পারি না
জলে ডুবে তোর চলে যাওয়া
তোকে হারানোর দুখ্!
-------
ঘেরাটোপ চারদেয়ালের
পেরেক ঠুকে বিসর্জন সব খেয়ালের
নবান্নে বিদ্রোহী হবার সাধ জাগে
লোভ নেই আর দ্রব হবার
কারো অনুরাগে।
একার রূপকথা
১৯.
সুন্দর মাত্রই আমার আরাধ্য
মননে ও মেধায়
হোক সে নারী অথবা পুরুষ,
অন্তরে থাকুক মোহাম্মদ কৃষ্ণ
বুদ্ধ বা যীশুর ক্রুশ।
১২.১০.১৩
সুরে সুরে মাতোয়ারা কত না দিন
সেইসব সময় আমাদের
দু বন্ধুতে কেটেছে কি যে উচ্ছ্বল বর্ণিল!
ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় কাটকাটি
হ্রস্ব তরল নেশা ভুলিয়েছে
ব্যক্তিগত-পেশাগত হতাশা।
ঐ সব আকাশ পৃথিবী ছোঁয়া আড্ডা
ফিরে আসে না আর
আমরা এখন করি শুধু সংসার!
পূর্ণিমা বর্ষা কেমন করে পার হয়ে যায়,
রিকশাগুলো একাকী ঘোরে
বামপাশ পড়ে থাকে ফাঁকায়।
যায় দিন যায়-মাস-বছর যায়
কত মোবাইল নেট চ্যাট
সাগর পেরোনো কথা উড়ায়,
আমার অপক্ষো তোমার আশায় আশায়
চোখ মুছিয়ে কেউ দেয় না
এন্টিসেপ্টিক হাগ্,
কেউ বলে না যত সমস্যা আসে আসুক
আমরা তুমুল বাঁচব বন্ধু
মরণকে বালাই ষাট্।
ইনবক্স খালি, মেসেজে নেই তোমার
ভালোবাসার বিলোড়ন,
আমার একাকী সময় ক্ষয়ে যাচ্ছে
শুভ মন-বোধন।
হিংসুক মনের ভাবনা!
অতিথি পাখির ডানায় মায়া বাঁধা থাকে
মুঠোফোনে ছুঁড়ে দেয়া শব্দে
প্রবাসী আপনজনের উদ্বিগ্নতা
কখনো কখনো ভালোই লাগে।
১১.১০.১৩- মন খারাপের একদিন
১.
ও কি আমার মতো লিখতে পারে কবিতা
ছুঁতে পারে তোমার মন!
জানে কি তোমার ভালো লাগা মন্দ লাগা
কিংবা ছন্দপতন!
তবু ও জিতে যায় সামাজিক নিয়মে,
এলে না তুমি, রাখতাম বুকের ভেতর
পদ্যের ওমে।।
২.
ঐ রোদ ঐ বরফ সব তোমাকে ছোঁয়
ঐ জল ঐ হাওয়া সব তোমাকে ছোঁয়
কার্নিশে বসা পাখিটাও তোমার কথা
ঠোটেঁ তুলে কয়;
তুমি শুধু আমাকেই করলে অচ্ছুৎ
বুঝেও বুঝলে না আমার মানুষী ভালোবাসার
অমানবিক ক্ষয়
৩.
তুমি সাগর জলে
তুমি মধুচন্দ্রিমায়
তুমি করছো স্নান
বিস্ময় ঝর্ণায়
আমি ডুবে যাই
অগাধ বেদনায়
৪.
মিথ্যা মদিরা মিথ্যা ধোঁয়ার চুম্বন
যতক্ষণ চোখে দেখা ততোক্ষণই
আনন্দের আলোড়ন
৫.
অনবদ্য ভ্রান্তি সাথে সান্দ্র দুচোখের পাতা
পুজিঁবাদ করে যায় নিনাদ
কাজ এবং কাজ, অলখে রয়ে যায়
ব্যক্তিজীবন রং ছাড়া সাদা।
ছয়দিন নেই সাতদিন নেই
ঘুরছে পুজিঁর চাকা
প্রথম বিশ্ব বাঁধা চল্লিশ ঘণ্টার শ্রমে
তৃতীয় বিশ্ব সেসব মানে না
চলে সপ্তাহে বাহাত্তর ঘণ্টা
আহা দেহ তো পঁয়ত্রিশেই জেরবার
অজান্তে অক্বা পায় মন টা।
কড়ির কাছে বিক্রি হয়ে গেছি সেই কবে
কবি মন বয়ে চলে দহন
সামনে নিয়ে অমানুষিক ভীড়ভাট্টা
ভাবে একটাই জীবন
আবছায়া বিকেলে
শেষ বিকেলের আলো-আঁধারের কাঁধে মাথা রাখবে বলে
ঝুঁকছে রাতের দিকে।
কেউ বাঁধছে খোঁপা, কেউ জুতোর ফিতে
ছুটির দিনের উৎসবে যোগ দেবে বলে;
মগ্ন নিদ্রায় কি বিনোদনের খোঁজে সবাই ব্যস্ত
শুধু আমার কোন কাজ নেই-
ঝলসে ওঠা আড্ডার সলতে নেই;
তোমাদের মন খারাপে আমি উপশম
তোমাদের যে কোন বিপদে আমি বন্ধু পরম,
আমারও মনের পর্দা ছিঁড়ে যায়,
আমারও কখনো কখনো অশ্রুজল্ ই সহায়,
আমাকে খই-রঙা সকাল কি সর্ষে বিকেল
উপহার দেবার কেউ নেই - আমার আশ্রয়
আজ আধফোটা বোলের একমাত্র আত্মজাই।
২৭.০৯.১৩ [৫:৫৫ বিকেল, শুক্রবার]
নাগরিক বতুতা
আপ্তবাক্য-নাগরিক জীবনে বিনোদনের অভাব, ঘোরার জায়গা নেই, নিরাপত্তা নেই, অর্থের অভাব; এ কথাগুলো আমি মানুষের মুখে ঘুরবার ব্যাপারে হরহামেশা অভিযোগ হিসেবে শুনতে পাই। ক্ষুদ্রজীবনে ঘুরবার জায়গার কখনো কোন অভাব বোধ করিনি। নিরাপত্তাকে থোড়াই কেয়ার করেছি, টাকা কস্মিনকালেও ছিল না। শুধু পায়ে হেঁটে ঢাকা শহরের কত জায়গায় যে গিয়েছি - কি এক দ্রষ্টব্য বস্তু ছিলাম মানুষের চোখে- হাড় জিরজিরে একটা মেয়ে জিন্স আর পাঞ্জাবী পরে, কোমর ছাপানো চুল নিয়ে ভয়াবহ রোদে হাঁটছে কিংবা রিকশায় হুড ফেলে বৃষ্টিতে ভিজছে-কখনো ভাবিনি এগুলো খুব আহামরি কোন কাজ, কেউ কিছু বললে বা ক্ষরচোখে তাকালে আমি দৃষ্টি ফেরত দিয়েছি।
ওড়াওড়ি
মানসিক অস্থিরতার কিছুকাল থাকে। এক একজনের এর প্রকাশ এক একরকম হয়।কি সাংঘাতিক বন্য সে সময়, কোনকিছুই প্রাণে লাগে না। আমার সকল অনুযোগ অস্থিরতা ঢেলে দিয়েছি ছোটাছুটি করে। এইচএসসির পরীক্ষার বছর কি অদ্ভূতভাবে যে কেটেছে! আজ আমি এখানে তো কাল সেখানে, এবেলায় এ গ্রুপ তো সে বেলায় সে বন্ধু। ৯৬ তে একটা জায়গা সবার মাঝে খুব পপুলারিটি পেল ঢাকার কাছে ঘুরবার জায়গা হিসেবে সেটার নাম ওয়াটার ফ্রন্ট। এয়ারপোর্ট এর কাছে খুব না কি সুন্দর জায়গা ঘুরবার। এর কাছে শুনি তার কাছে শুনি।বিশেষ করে কাপলরা সেই জায়গার ভূয়সী প্রশংসা করে। আমার বন্ধু সনি ৯৬ এর সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখে আমাকে নিয়ে ওয়াটার ফ্রন্টে গেল। একটু পানি, কিছু গাছপালা, আর বিমানের উঠানামা। এখানে কি আছে তেমন আমি বুঝলাম না। গেলাম বন্ধুর মন রক্ষার্থে। কিছুক্ষণ পর আমরা একটা নৌকায় উঠলাম। পানির ভেতর ঘুরেটুরে যখন পাড়ে এলাম নামতে তখন আমি এবং সনি দুজনই কাদায় পড়ে গেলাম। কাদামাখা সনি কাদামাখা আমাকে এখানে বলবে সে আমাকে একটু একটু লাইক করা শুরু করেছে, আমি মনে মনে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ব এবং ইয়ে দোস্তি কত তাড়াতাড়ি শেষ করা যায় তার প্ল্যান করব।