কেটে যাচ্ছে, রক্ত কিন্তু বের হচ্ছে না...
অনেকদিন পরে ব্লগে লিখতে বসলাম। এক সময় ছিলো, যখন প্রতিদিন ব্লগে বিচরণের পাশাপাশি সপ্তাহে ২/৩ টা লেখা লিখতাম। সর্বশেষ কবে লিখেেছি, মনে নেই। মিস করি খুব। ব্লগ, ব্লগের বন্ধুদের। প্রতিদিন একবার করে হলেও আমরা বন্ধুতে ঢু মারি। কদাচিৎ কারো লেখায় কমেন্টস করি। কিন্তু দেখি সবার লেখাই।
দিনকাল কাটছে মহা ব্যস্ততায়। ব্লগের পিকনিক হলো- আমি যেতে পারলাম না। ব্লগের সবার সাথে দেখা হয় না সেও ম্যালাদিন। আড্ডা দেবার কথাতো ভুলেই গেছি ! জীবন আর জীবীকার তাগিদে একদম সময় করে উঠতে পারি না।
অনেকেই ইনবক্সে/ফোনে বা দেখা হলে অভিযোগ করে- আমাকে নাকি সারাদিন ফেবুতে দেখা যায়। আসলে তা কিন্তু নয়। সকালে অফিসে ঢুকেই লগ ইন করি। অফিস থেকে বেরুনোর সময় কেবল সাইন আউট করি।
সারাদিন ফেবুতে লগ ইন থাকার কারনে কেউ কেউ ভুল ও বুঝে। ভাবে তার লেখার কোনো উত্তর দেই না। আরে ভাই, আমি হলাম গিয়ে চাকর প্রাজাতির মানুষ। কিছু কাজ-কর্মতো এটলিষ্ট করতে হয় আমাকে। নইলে মাস শেষে টাকা দেবে কে ? থাবো কী ! এই নিয়ে মহা যন্ত্রণায় আছি। খুব সকালে অফিসের পথে বেরিয়ে পড়ি। কোনো ছুটির দিন নেই। এমন কী, মাসে অন্তত ২ শুক্রবারে অফিস করতে হয় আমাকে। যদিও পরে সেই শুক্রবারের ছুটি অন্যদিন পাই। কিন্তু আমি যখন ছুটি পাই, তখন অন্যরা আবার অফিসে ব্যস্ত থাকে।
সকালে বেরিয়ে সন্থ্যার পরে এক বন্থুর অফিসে গিয়ে সময় দেই একটু তারে। বাসায় ফিরতে ফিরতে ১০/১১ টা। তারপর চারটা খেয়ে বিছানায়। এর মধ্যেও অনেক সময় একটু নেট-টেট ঘুরে ঘুমাতে যেতে ১/২ টা বেজে যায়। আবার খুব সকালে উঠি।
বাসার লোকদের সময় দিতে পারি না। বন্ধুদের সময় দেওয়া হয় না। প্রাণের ছবির হাটেও আমি অনিয়মিত। অনুযোগ করে সবাই। কালে ভদ্রে দেখা হয় ছবির হাটের হাটুরেদের সাথে।
ঢাকার একটু বাইরে থাকে আমার এক দোস্ত। সময় করে তার সাথে নেটে কথা বলতে হয়। ফোনে কথা বলতে হয়। নইলে সে আবার মনে বড় ব্যাথা পায়। রাগ করে। ছেলে সমুদ্দুর ফোন করে বলে- বাবা, তোমাকে ২/৩ দিন দেখি না। শুনে পরাণটা কেমন কেমন করে। সত্যিইতো, সকালে বেরুনোর সময় ও ঘুমে। রাতে যখন ফিরি তখনও সে ঘুমে। তার আর দোষ কী ! অবুঝ শিশু। বড়রাই মানতে পারে না- আমার এই ব্যস্ততা। সময় দিতে না পারার জন্য কত জনের কত্ত রকমের রাগ, অভিযোগ, অনুযোগ, কথার জবাব দিতে হয় !
নতুন বছর আসছে। বছরের দ্বিতীয় দিন থেকে ব্যস্ততা কমিয়ে দেব। প্রথম দিন ঢাকার বাইরে থাকবো। যেখানে যাব- সে জেলায় আমি এর আগেও গিয়েছি। লেখাবাহুল্য যে, দেশের ৬৪ জেলা কবেই ঘোরা হয়ে গেছে আমার। কিন্তু এবারের যাওয়াটা একটু অন্যরকম। এক ভদ্রলোকের অনুরোথে তার শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যাব। অনেকদিন গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাই না...। এবারের গ্রামে যাওয়াটা অন্যরকম। সেখানে নাকি রিকশা, বাস, লঞ্চ/স্পিড বোট, হোন্ডা এবং হেঁটে যেতে হয়। শুনে আমি পুলকিত। কতদিন জোনাকির আলো দেখিনা। গ্রামে রাত কাটাই না। শীতের পিঠা নিশ্চয়ই খাওয়াবে শ্বশুরবাড়ির (আমার না) লোকজন ! এছাড়াও ভালো মন্দ খাবার-দাবারতো রয়েছেই...
বেড়িয়ে ঢাকায় পৌঁছে এদ্দিন যাদের সময় দিতে পারিনি, তাদের সময় দেব। সুবোধ বালক হয়ে যাব। জানুয়ারি থেকে অফিস ও পাল্টাতে পারি। নিশ্চিত না। ফিফটি ফিফটি। সো, দোস্ত-বন্ধুরা- ওই কথাই রইলো। আরেকটি কথা, আজ থেকে দেখি কত কমসময় ফেবুতে লগ ইন থাকতে পারি ! সবাই ভালো থাক। সবার মঙ্গল হোক।
এতদিন পর আপনেরে দেখে মন ভালো হয়ে গেল। আগে তো তাও মাঝে মাঝে গলির মুখে দেখা হয়ে যেত, এখন তাও নাই।
নতুন বছরে আপনার চমত্কার ইচ্ছাগুলো সব সত্যি হয়ে আসুক।
ভালো থাকেন, অননেক ভালো। সবসময়।
আরো ভালো কাটুক সময়। বেড়ানো আনন্দময় হোক।
সমুদ্দুর আর তাঁর মা ও ভাইকে নিয়ে দারুন কাটান দিনগুলো।
লেখা খুব ভালো হয়েছে।
পরিবার এবং স্বজনদের সময় দেবার জন্য সময় বের করুন। আপনার আগামী দিনগুলো ভালো কাটুক।
ব্লগের পিকনিক হলো- জানতে পারলাম না
।
এই বছর পিকনিক হইছে?!
মন্তব্য করুন