রাজনীতি, পেটনীতি , পেশীনীতি ও বড়লোকের নীতি!
শিরোনাম দেখে টেনশন নিয়েন না কেউ, এইটা অতি সাধারণ দিনলিপি ঘরনারই পোষ্ট। রাজনীতি নিয়ে তথ্যভিত্তিক জ্ঞানগর্ভ পোষ্ট লেখার বিদ্যে আমার ছিল না কোন কালেই। রাজনীতি ও ইতিহাস নিয়ে পড়তে ভালো লাগে তা নিয়ে সর্বোচ্চ চায়ের দোকানেই আলাপ করি এর বাইরে আমার রাজনীতি করার কোনো চেষ্টা নাই। মাঝে মধ্যে প্রেস ক্লাবে বা শাহবাগে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি, মিছিলের আগে বাম নেতাদের বক্তব্য শুনেছি এতটুকুই আমার রাজনৈতিক অংশগ্রহন বলা চলে। এর বাইরে মোহাম্মদপুরের এক চিপায় দিনের পর দিন বসে বসে আড্ডা পিটানোর কারনে সেখানকার রাজনীতির হাওয়া বাতাস সমন্ধে জানি। আর পত্রিকার পাতায় দেশ নিয়ে দুঃসংবাদ পড়ে টেনশন নেই নিজে নিজে তারপর ভুলে যাই এই করেই চলছে। তাও আমি আজ লিখতে বসলাম ইদানিংকালের নিজের চোখে দেখা পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে!
আমি হলাম গিয়ে সেই নতুন ভোটারদের একজন যারা ২০০৮ সালে চোখ বন্ধ করে আওয়ামীলীগে নিজেদের প্রথম ভোটটা সাত সকালে গিয়ে দিয়ে আসছিল। সরকারের প্রতি আমার আশা ছিল ক্ষুদ্র তা হলো যুদ্ধাপরাধের বিচার। সেই আশা পুরণে সরকার লেটার মার্ক না পেলেও সেকেন্ড ডিভিশন পেয়েছে বলা যায়। অনেক কাঠখর পুড়িয়ে কাদের মোল্লার রায়টা একদম চুড়ান্ত করা গেল। আরো চার পাচটা রায় হয়েছে তার কার্যকর হবার আশায় দিন গুনছি। সরকারের ব্যার্থতা হিমালয়সম তাও আমি তাদের তীব্র সমালোচক না আবার অনলাইন আওয়ামী ভক্তদের মত দলকানা তালগাছবাদী নই। তবে আমি মনে করি রাজাকারের চেয়ে বাকশালের শাসন ভাল। বিএনপি আওয়ামীলীগ একই ধরনের দল হলেও আমি এখনও আওয়ামীলীগের পক্ষেই কারন তারা মুখে মুখে অন্তত হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, স্বাধীনতার এনে দেওয়া নিয়ে ব্যাবসা করলেও তারা অন্তত সাম্প্রতিক কালে রাজাকারের ভরন পোষন করছে না। যদিও অতীত সুবিধার না সামনে ঘোর কলিকাল তাও যতক্ষণ বিএনপির সাথে জামাত আছে ততক্ষণ আমি তাদের সাথে কোনও ভাবেই নাই। এইটা আমার ব্যাক্তিগত থিসিস। আওয়ামীলীগের নষ্টামির সীমানা নাই সামনের ইলেকশন নিয়েও ভাওতাবাজী করবে তাও সেই জন্য বিএনপিকে ভোট দেয়ার মানে নাই। তারেক রহমান যদি দেশ চালায় তবে জামাত হবে উনার মেয়ে জামাইসম মিত্র। তারেক রহমান জামাতীদের মন্ত্রী বানিয়ে দেশ চালাচ্ছে তা আমি স্বপ্নেও ভাবলে গা গুলিয়ে আসে। নরেন্দ্র মোদী যদি ভারতের আগামী প্রধানমন্ত্রী হয় তাহলে ভাববো চেন্নাই এক্সপ্রেসের মত আজাইরা ছবিকে যারা সর্বকালের ব্লকব্লাস্টার হিট ছবি বানাতে পারে তাদের পক্ষেই সম্ভব এমন করা। তখন সানি লিওন কেন্দ্রীয় শিল্পমন্ত্রী হলেও অবাক হবো না! বাংলাদেশেও এমন হতেই পারে কি আর করার আপদ আর বিপদের রাজনীতি দেশটা জুড়ে!
এবার মহল্লার রাজনীতি নিয়ে বলি। গত শুক্রবার মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটি ও নবোদয় মিলে যা ওয়ার্ডের একটা ইউনিট তাদের কাউন্সিলর ছিল। উদ্দেশ্য এক সভাপতি অনেকদিন যাবত তাই নতুন কমিটি গঠন হবে। নতুন কমিটিতে যারা ঢূকবে তারা এই কাউন্সিল নিয়ে খুব আশাবাদী, নানককে প্রধান অতিথী করার করার জোর চেষ্টা চালানো হলো। কিন্তু শেষ মুহুর্তে নানক আর আসে নি। নানক যে আসবে না তা আগের দিনই জানা যায়। এতেই পুরাতন সভাপতি আশান্বিত। তিনি আবার আমারে অনেক ভালো পায়। দেখা হলেই বলবে শান্ত মামা কেমন আছেন? কম দেখি কেন? আমি অবাক হই সারাদিনই তো দেখে তা আবার কম দেখা কিভাবে? কোনো অদ্ভুত কারনে তিনি আমার ফ্যান। লোকজনের সাথে নাকি গল্প করে শান্ত মামার মত সৎ ভদ্র ছেলে একশোতে একটা নাই। আহারে উনার সুন্দরী, বিদুষী কোনও মেয়ে নাই থাকলে কত ভাল হতো! আর আমার সততার লিটমাস টেস্ট তিনি কবে নিলেন তা বুঝে পাই নাই। যাই হোক উনি বললেন এই কাউন্সিল মিটিং ভন্ডুল করতে হবে যদি উনাকে সভাপতি না বানায়। ভন্ডুল করার জন্য ছাত্রলীগের হেডমওয়ালা নেতার সাথে বৈঠক হল, অন্য ইউনিটের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে আলাপ হলো। সিদ্ধান্ত একটাই সভাপতি না হলেও সব ভন্ডুল। শুক্রবারে তাই হলো দীর্ঘদিনের সভাপতি কাউন্সিলে বাদ পড়লেন। আর তাতেই পেশী শক্তির পুর্ন ব্যাবহারে সভা ভন্ডুল করা হলো। নতুন সভাপতি মার খাওয়ারর হাত থেকে পালিয়ে বাচলেন। নানক সাহেব এই হাউকাউয়ের খবর শুনে কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বাতিল করলেন। যা হবার তাই হলো আগের সভাপতিই থাকলো। সভাপতি ডায়লগ দিলেন আমি যা চাইছি তাই পাইছি, ফাইনাল খেলায় গোল দিয়ে দিলাম। নান্নু হাসতে হাসতে বলে 'চাচা আপনে মেসি নাকি?' এই খুশীতে দলবেধে মদ্যপান চললো। এই হলো গিয়ে সামান্য এক মহল্লার রুলিং পার্টির গনতন্ত্রের অবস্থা! ছাত্রলীগের যে সব নেতাদের চিনি জানি তাদের প্রধান কাজ ধান্দাবাজি ও ফিটিং দিয়ে খাওয়া। দল ক্ষমতা ছাড়লে তারা যে কী বিপদে পড়বে তা নিয়ে তারাই চিন্তিত!
এখন আসি বিএনপির খবর নিয়ে । বিএনপির বড় নেতাদের আমি চিনি না এলাকার, চিনি মহল্লার ছাত্রনেতা আর যুবনেতাদের। যাদের বয়ানে এলাকায় থাকা দায়। মনে হয় অলরেডী তারা পাওয়ারে চলে আসছে। আর ছাত্রলীগ বা আওয়ামীলীগের তারা খারাপ লোক হলেও এলাকায় রেপুটেশন খারাপ না। কিন্তু বিএনপির নেতারা মানুষ তো খারাপই তাদের রেপুটেশন এলাকায় আরও খারাপ। যেমন এক সংগ্রামী নেতা নাম তার এক্সেল বাবু। কি তার পরিচয় সে আগে চাঁদাবাজী করতো এক্সেল হুন্ডায় চেপে। র্যাবের মার খেয়ে এখন সে গ্যারেজ চালায় আর পোলাপান পালে তরুন যুব নেতা হিসেবে। মাদক বেচার অপরাধে কিছুদিন জেলে ছিল তার মুক্তি চাই পোষ্টার পুরো এলাকা গরম। আরেকজনের নাম হেলাল। সে কি করে সে আগে চাঁদাবাজি করতো, বিএনপির আমলে কন্ট্রাক্টারি করে ভালো টাকার মালিক, এখন করে আদম ব্যাবসা, থানায় ডজন খানেক মামলা আছে খুনের সহ নিয়ে সে বিএনপির ফেল্টু আলালের যোগ্য হেলাল। আর ছাত্রনেতারা তো সারাদিন নান্নুর দোকানেই বসে তাদের হাড়ে হাড়ে চিনে। বাবাখোর আর গাজাখোরের আখড়া। একটা ছেলে একটূ যুতের ছিল সেও নষ্ট হয়ে গেল সামনেই! সামনের বার তো নানক পার হবে তা তারাই বলে তাদের ছোট্ট আশা দল পাওয়ারে আসবে এতটুকুই! এখনই যে তাদের তাফালিং তাতেই টেনশনে পড়ে যাই।
এই হলো গিয়ে একটা সামান্য ইউনিটের রাজনীতির অবস্থা। ওয়ার্ডের রাজনীতিতে আরও সমীকরন, সংসদীয় আসনে তো আরো গেঞ্জাম সব মিলিয়ে দেশের রাজনীতির অবস্থাতো কত বাজে তা সহজেই অনুমান করি। আমাদের এখানে আবার বুদ্ধিজীবিও আছে। ডঃ আবুল বারাকাতের এনজিওর অফিস এখানেই। তিনি কিছুই বলেন না। একবার তার একটা হ্যান্ডব্যাগ হারিয়ে ছিল ড্রাইভারের ভুলে। তিনি র্যাব পুলিশ এনে একাকার করে যে ভয় দেখিয়েছেন তাতে ব্যাগ আর পাওয়া যায় নি। শেষে তিনি চার লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষনা করলেন তাতেও লাভ শুন্য। এরপর থেকে তিনি এলাকা নিয়ে আর ভাবেন না। লোকজন গিয়েছিল কারেন্টের সমস্যা জানাতে তিনি বললেন কফি খেতে খেতে " কারেন্ট যায় সেটা ইম্পর্টেন্ট না, আসে তো তাই গুরুত্বপুর্ন"। লোকজন সব মাননীয় স্পিকার হয়ে ফেরত আসলো!
এই মুলত রাজনীতি। বড়লোক বাড়ীওয়ালারা সুখেই আছে ভাড়া বাড়িয়ে, আওয়ামীলীগওয়ালারা সুখে কারন তারা আবার আসছে, বিএনপির লোকজনেরাও আনন্দিত সামনে সুদিন তাদের, জনগন ব্যাস্ত পেটনীতি নিয়েই, বুদ্ধিজীবি আছে তার মতোই নিভৃতচারী হয়েও মাঝখানে আমরা যারা বেকার কনসার্ন পিপল তারাই চিন্তা করছি আর দেখে যাচ্ছি এই ঠাট্টা তামাশার রাজনীতি!
এই ঠাট্টা তামাশা যেন অন্ত হীন ভাবে চলছে
হ
আমাদের হলো জলে কুমীর ডাঙ্গায় বাঘ, মজা না?
সাংগাতিক মজা। মজাটাই সাজা হয়ে গেল আমাদের!
আমরা পাকা আম জনতা সকল জীব তো খায়,খায় আবার পোকা মাকড় ও খায়। যেহেতু আমের পরে জনতা আছে তাই শ্বাপদের ও খুব প্রিয়।
হক কথা!
আমিতো দেশে থাকিনা, আপনাদের চোখ দিয়েই রাজনীতি দেখা ! তয় একদম ঠিক ঠিক মিলে যাচ্ছে । চার দশক থেকে দেখে আসছি এই রং-তামসা । কভুও কি অন্ত হবে এ সবের ?
লেখা ভাল হয়েছে ।
থ্যাঙ্কস এ লট!
হুমায়ুন আজাদ স্যার অনেক আগেই বলে গেছেন, আমাকে কষ্ট দিয়ো না রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে!
কথাটা আজও স্মরণ করি।
আসলেই স্মরন করবার মতোই কথা!
রাজনীতি, কুনীতি সাথে বাড়িভাড়া বৃদ্ধি। তামশাই তামশা
অন্তহীন তামাশা। থ্যাঙ্কস জেডি কষ্ট করে এসে কমেন্ট মারার জন্য!
আমি ছদ্ম নামে লিখি না জানি ব্লগার হিসাবে কবে কি মুস্কিলে পড়ি। তা শান্ত সাহেব আপনে আঃ লীগ বি, এন পি হজ্ঞললে এক হাত নিলেন। আমি আপনের হাত নিয়া চিন্তায় আছি। আফনের হাত গেলে, আমরা রোজ নামচা কেমনে পামু। যাক বালা থাহেন।
দোয়া কইরেন!
এক্সেল বাবুর কথা পড়ে ভাবছিলাম, যাক্ অন্তত এক্সেলটা তো পারে। ভালো হিসাব তিসাব করতে পারবে অন্ততঃ। তারপর দেখি এক্সেল হোন্ডা
হাহাহা
মন্তব্য করুন