দশ এগার বার
আজ অনেক দিন পর ব্লগে বসা। একদমই সময় করতে পারি না। এবি আমাকে ডাকে, আমি আসতে পারি না। বন্ধুরা আড্ডা দেয়, আমার থাকা হয় না। হঠাৎ হঠাৎ উঁকি মারি ব্লগে। একটু স্থির হতে পারি না। নতুন অফিস। কাজ-কর্ম গুছিয়ে উঠতে উঠতে দিন শেষ। প্রতিদিন ভাবি, আজ ব্লগে বসব, বসা কিন্তু হয়ে উঠে না। আমার অফিস টাইমটা বিচিত্র। যদিও সেটা মেনে চলতে পারি না। সকাল ঠিক দশটার মধ্যে আঙ্গুলের ছাপ মেরে অফিসে ঢুকতে হয়। দুপুর বারোটা নাগাদ ফ্রি হয়ে যাই। তারপর বাসায় যেয়ে দুপুরের খাবার টাবার খেয়ে আবার চারটার দিকে অফিসে আসি। রাত আটটা-নয়টা নাগাদ থাকি। যাবার সময় অফিসকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাই মানে আবারও থাম্ব ইম্প্রেশন দিতে হয়। জয়েন করার দিন দশেকের মাথায় একটা বড় ইভেন্ট করতে হল। এক দুদিনের হলে কথা ছিল। পুরো সপ্তাহ জুড়ে। বই মেলা, ছবি আঁকা, লিখন-পঠন কর্মশালা, ছড়া পাঠ, কবিতা পাঠ, পাঠ উন্মোচন... এইসব করতে করতে জান শেষ।
তারপর এল ঈদ। গরুর দাম এবার এতটাই কম গেল যে, আমার মত মানুষও আস্ত একটা গরু কোরবানী দিয়ে ফেল্লাম। একটু আয়েশ করে গরুর গোশত খাব তারও যো নেই। ঈদে মাত্র ৩ দিনের ছুটি। আবার অফিস। নারায়ণগঞ্জ থেকে মোটর সাইকেলে কয়েকবার ঢাকায় আসা যাওয়া করতে যেয়ে ঠান্ডা লেগে গেছে। সেই ঠান্ডাকে উসকে দিয়েছি আমি নিজেই। নভেম্বরের ১ তারিখে ছিল আমাদের বিয়ের দিন। হঠাৎ করেই চলে গেলাম সিলেট। সেখানকার আবহাওয়া ঢাকার চেয়ে শীতল। ফলে গরম আর শীতলের টানাপোড়েনে আমার দফা-রফা। কাশ আর ঠান্ডা আর ছাড়ছেই না। আদা চা খেতে খেতে চায়ের প্রতি ঘেন্নাই ধরে গেছে। লোকজনের কাছে পরামর্শ চাইলাম। কেউ বলে- আদা চা, কেউ টুশকা, কেউ 'ডাইল' খাবার পরমর্শ দেয়। সিগারেট খেতে পারি না। বউতো মহাখুশি। এইবার নাকী আমার শিক্ষা হবে ! আমি অবাক হয়ে তার দিকে অসহায়ের মত তাকাই। রাতে ঘুমাতে পারিনা। কাশতে কাশতে উঠে বসি। এইভাবে কি দিন চলে ? গতকাল থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করলাম। সাথে সিরাপও। একটা ট্যাবলেটের দাম ৩০ টাকা। ভাবা যায় ! ভাগ্যিস ২৪ ঘন্টায় মাত্র একটা ট্রাবলেট...।
সমুদ্দুর মানে আমার ছোট ছেলেটা সারাক্ষণ বক বক করে। একটাও পুরো বাক্য বলতে পারে না। আধো আধো বোলে কত কথা যে বলে! সব মনোযোগ দিয়ে শুনতে হয়। শ্রোতা হিসাবে অমনোযোগী হলে আর রেহাই নাই। হাতের কাছে যা পাবে, তাই ছুঁড়ে মারবে। এবং অভিমান করে কাঁদবে। ফলে তার কথা শুনতে হয় মনোযোগ দিয়েই। সিলেট ঘুরে এসে সে মহাখুশি। ইনিয়ে বিনিয়ে সিলেটের গল্প বলে আমাকে। লালাখাল গিয়ে গোলাপ ফুল ছেঁড়ার সময় ওর হাতে কাঁটার খোঁচা লেগেছিলো। সে গল্প দিনে ৫/৭ বার বলবে। জাফলং নদীর পানিতে পাথর কিভাবে ছুঁড়ে মেরেঝে- সেটা অভিনয় করে দেখাবে। ট্রেনে যাবার সময় শেখা ছড়াটা যখন কথন বরবে। রেল গাড়ি ঝমাঝম, পা পিছলে আলুর দম... সুর করে বলবে আর এরুম থেকে ওরুমে দৌড়াবে। বাবা কোথায় চাকরী করে জানতে চাইলে বলবে- আমাদেল থময় পত্তিকায়...
তো, এই ভাবে আমার ব্যস্ততম দিনগুলো কেটে যাচ্ছে। সময় পেলেও নানা কাজে সুযোগ পাই বড় কম। ফেসবুকে একবার করে ঢু মারি। বন্ধুদের অভিযোগ আর অনুযোগ শুনতে হয়... আমি ওদের সময় দেই না। ঠিকই বলে ওরা। আমিও বুঝি।
আজ কী সুন্দর একটা দিন। বলছিলাম আজকের তারিখ নিয়ে... দশ এগার বার... আজ শহীদ নুর হোসেন দিবস। ৯০ এর আজকের দিনে এরশাদ সরকারের পুলিশ বাহিনীর গুলিতে জীবন গেল নুর হোসেনের। স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক... এটাই চেয়েছিল নুর হোসেন। গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছে কীনা জানি না... নুর হোসেন মুক্তি পেয়েছে এই পৃথিবী থেকে... আমরা, আমাদের বেহায়া রাজনীতিবিদরা বহাল তবিয়তেই আছে। মিছে এই প্রাণ দেয়া- ভাগ্যিস, সেটা জেনে যায়নি নুর হোসেন... ওর আত্মার শান্তি হোক।
অনেক ব্যস্ততার মাঝেও ব্লগে মেসবাহ ভাইয়ের উপস্থিতি আমাদের জন্য বেশ আনন্দদায়ক।
মেসবাহ ভাই, কী সুন্দর ঘর সংসার সামলে ঘুরেঘুরে একটা জীবন পার করে দিচ্ছেন।
এমন একটা জীবন না পাওয়ার আফসোস হচ্ছে খুব।
ভালো থাকবেন মেসবাহ ভাই,প্রতিটা মুহূর্ত।
আফসুস করার কি আছে ? সময়তো শেষ হয়ে যায়নি। সময়-সুযোগ করে বেরিয়ে পড় মাঝে মাঝে... ভালো লাগবে... কাজের স্পিডও বাড়বে
কতদিন পর আপনাকে ব্লগে পেলাম। দিনগুলো ভালোই কাটছে জেনে ভালো লাগলো খুব। ভালো থাকেন সবসময়।
একটা দাবী, ডিসেম্বরে পিকনিক করতেই হবে। ব্যবস্থা করেন। আপনিই একমাত্র ভরসা।
জায়গা / তারিখ এইসব ঠিক করে পিকনিক নিয়া একটা পোস্ট দেও... আমিতো আছি... হয়ে যাবে
দশ এগার বার'র কারনে অন্ততঃ আপনার দেখা পাওয়া গেল...ভাল থাইকেন
~
ধন্যবাদ। আপনেও ভালো থাকবেন
তাত্তাড়ি সুস্থ্য হইয়া পিকনিকের হাল ধরেন... দেরী হইলে কিন্তু লেইট হইয়া যাইবো...
হ, তাত্তাড়ি কৈরা পিকনিকের স্থান আর তারিখ জানাইয়া পোস্ট দেও... দেরী হইলে কিন্তু লেইট হইয়া যাইবো...
মেসবাহ ভাই ব্যাক ইন দ্যা একশন।
আশা করি অফিস যত পুরাতন হবে আপনাকে তত বেশী সময় পাবো ব্লগে!
শুভকামনা থাকলো মেসবাহ এন্ড সন্সের জন্য!
থ্যাংকু, থ্যাংকু

ভাগ্যিস বলিসনি, মেসবাহ অ্যান্ড গং...
আরে! এই তারিখটাই তো স্মরণীয় হয়ে গেলো। প্রিয়স্য প্রিয়-সর্বোচ্চ প্রিয় মেসবাহ ভাই এই তারিখ উপলক্ষে পোস্ট দিছে! গুড গড।
ভাইজান নতুন চাকুরী মন দিয়ে করেন। শুভকামনা রাশি রাশি, আপনারে ম্যালা ভালোবাসি।
আর হ্যাঁ, এইবারের প্রো-পিকটা আপনের বিগত সকল ফেবু ও ব্লগ প্রো-পিকের চাইতে ভালো হইসে। শুধু ভালোও না আবার, অনেকগুণ বেশি ভালো।
এবং মোস্ট অনটপিক কথাটা হচ্ছে, সমুদ্দুর নামের শিশুটিকে আমার কয়েক কোটি বস্তা ভর্তি আদর পৌঁছে দিয়েন।
টিটকারী মাইরেন না ভাই, ম্যালা ব্যস্ত ছিলাম সত্যিই।



অন্য লোকজন যে পোস্ট দেয় না, সেইটা বুঝি আপনের চোখ্খে পড়ে না !
কোন পিকটার কথা কৈলেন ভাইসাহেব, ঠিক সাইন করতে পারলাম না...
সমুদ্দুররে আপনের আদর দিলাম
আছেন কিরাম ?
ইয়াহু কি ভুইলা গেছেন, যাকগা কিছু কমু না
এইতো সময় বের হইতাছে
.... যত পুরান হইবেন তত সময় বেশী হবে
... এরজন্যই চাক্রি বদলাইতে মানা করি 
আজকে অফিসের কাজে এসিআইতে গিয়েছিলাম। আমার অফিসের কাছেই্ । সেখানকার এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর সৈয়দ আলমগীর আমার এক্স বস। আমারে কী কারনে জানি পছন্দ করেন। বললেন, "তুমি মিয়া এসিআই না ছাড়লে আজকে কৈ থাকতা... তোমার ধারে-কাছেও কেউ থাকতো না...."। আসলেই, চাকরীতে লেগে থাকতে হয়... তবে সবাইরে দিয়া সব হয়ও না...
মেজবা ভাইয়ের অপিষে একদিন আড্ডাইতে যাওন দরকার
আইসা পড়, তবে জানাইয়া আইসো।
কবে অাসব?
অনেক ব্যস্ততার মাঝেও ব্লগে মেসবাহ ভাইয়ের উপস্থিতি আমাদের জন্য বেশ আনন্দদায়ক।
মেসবাহ ভাই, কী সুন্দর ঘর সংসার সামলে ঘুরেঘুরে একটা জীবন পার করে দিচ্ছেন।
এমন একটা জীবন না পাওয়ার আফসোস হচ্ছে খুব।
ভালো থাকবেন মেসবাহ ভাই,প্রতিটা মুহূর্ত।
টাইপ করতে কষ্ট লাগে
এত কথা লেখছে।
আমার সাথে এত্তবার দেখা হইল,
আমার কথা কয় না! কেমুন প্রতিবেশি!!
বিষন্ন খুব ভালো ছেলে। ওর সাথে আমার প্রায়ই দেখা হয় এখানে, সেখানে।

প্রতিবেশী বলে কথা...
ও সবসময় আমার কুশলাদি জানতে চায়, চা খেতে বললে খায় না...
ভাল লাগলো লেখাটি।
আপনেরে থ্যাংকু
আপ্নের ফিরা আসার্সুভেচ্চা।
আরো যে কত মাইনসে ফিরা আসে না... হেগোরেও শুভেচ্ছা জানাও
তাইলে যদি ফিরা আসে
মন্তব্য করুন