চাঁদের আলোয় হারিয়ে যাওয়া দিন!
আমাকে কেউ পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন করলে বিশেষ করে তা যদি হয় বন্ধু আড্ডামেটদের কেউ তবে সিরিয়াসলি মেজাজ খারাপ হয়। নিতান্তই লোকজন শেয়ার দিতে বলে তাই ফেসবুকে শেয়ার দেয়া। নয়তো নিজের পোস্ট শেয়ার দিতে আমার সিরিয়াস বিরক্ত লাগে। যারা ব্লগার যারা আমার লেখা চিনে জানে তাদেরকেই শুধু লেখা পড়াতে ইচ্ছা জাগে। আর কাউকে নয়। রিয়েল লাইফ ফ্রেন্ডদেরকে তো আরো নয়। কারন আমি যদি কোনো জাতীয় ইম্পর্টেন্ট কিছু লিখতাম তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের শেয়ার দিয়ে জানাতাম। তাদের পাশে চাইতাম। কিন্তু আমি লেখি সাদামাটা দিনলিপি যার বেশীর ভাগের বুক জুড়ে থাকে নিজের কথা, নিজের দিনযাপনের কথা আর বন্ধুদের কথা। তাদের সমন্ধে কি কি ভাবছি তা যদি ব্লগ পড়েই জেনে এসে আমাকে প্রশ্ন করে তখন খুবই ইরিটেটিং লাগে। আর প্ল্যান করি কিভাবে ফেসবুক থেকে তাকে বাদ দেয়া যায়। আমার ফেসবুকে রিয়েল লাইফ ফ্রেন্ড এই জন্যই এড নাই। কারন বন্ধুরা বাস্তবেই ভালো আর ফেসবুকের বন্ধুরা ফেসবুকে। কিন্তু সবাই কে তো আর ডিলেট মারা যায় না তাই শেয়ার ঝটকায় লাইক না পেলেও পোস্ট পড়ে তাদের নানান কিছুর উত্তর দিতে হয়। কোনোটা বাড়িয়ে লেখেছি, কোনটা কমিয়ে লিখছি, কোনটা বাদ পড়েছে, কোনটা লিখেছি তা তাদের পছন্দ হয় নি। এ এক বিপদের ব্যাপার। কারন একেকজনের কাছে আমার একেকরকমের ইমেজ। কারো কাছে ইমেজ হলো আমি সাচ্চা মুসলমান, কারো কাছে ইমেজ হলো আমি কিছুটা এংরী ইয়াংম্যান আর কারো কাছে আমি খুব সরল সাদামাটা বন্ধু। এখন প্রতিটা ইমেজ সেইভ করে লেখা আমার কাজ না। তাই পড়ি বাটে। আসলে আমার যেমন সবার প্রতি অনেক আশা ঠিক তেমনি আমাকে নিয়েও অনেক আশা সবার। এতো আশাবাদীতার ভীড়ে ব্লগে নানান অনুভুতির সরল বিবরন দিয়েই প্রশ্নবানে পড়ি। তাই চায়ের দোকানের পুরা সার্কেলই আমার ফেসবুকে ফ্রেন্ডলিস্টে নাই। এতো সচেতনতার পরেও বন্ধুরা ফেসবুকের শেয়ারের কল্যানে বা যেভাবেই হোক পড়ছে আর ডায়লগ দিচ্ছে!
আজ অদ্ভুত সুন্দর চাঁদের আলোর রাত। যদিও প্রচন্ড গরম, বাতাস নাই তাও অসাধারন। শহুরে মানুষ আমি তাই আমার কাছে এই জ্যোৎস্নাই ভালো লাগে। মফস্বলের ধবধবে সাদা দিনের আলোর মতো জ্যোৎস্না আমার ভালো লাগে, ফীল করি আলো কিন্তু ঘুরে ফিরে সেই নিজের বাসার পাশেই যে ছাদ তার জ্যোৎস্নাতেই বিমোহিত হই। এই পালটে যাওয়া প্রতিদিনের দুনিয়ায় চাঁদ সমুদ্র বর্ষা, এই সবের প্রতি ভালোবাসা সব সময়ই একি রকম। লাইফ যতো বেশী বোরিং হয় তার সাথে তাল মিলিয়ে এই ভালোবাসা আরো বাড়ে। আমি অনেক দিন যে চিরচেনা সমুদ্রের পাশে বসে থাকি না দিনের পর দিন, তবুও তার একটা ছবি সব সময় আমার মনে লুকানো থাকে। সাগরের কথা মনে হলে আমার সেই ছয় সাত বছর আগের একা একা বসে থাকা উদাস বোকা বোকা দিন গুলার কথাই মনে হয়। এবিতেই একটা পোস্ট লেখছিলাম যে স্মৃতিকাতরতা আমার কম্মো না। কথাটা আংশিক মিথ্যা। ওতটা নষ্টালজিক না হলেও আমি মোটামুটি নানান কিছুর সাথে নিজের সম্পর্কের স্মৃতি নিয়েই বেচে আছি।
আজকের দিনটা কাটলো ভালোই। ভাবি নাই এতো বাজে শুরুর দিন এতো ভালো কাটবে। বাজে শুরু এই কারনে বললাম সকালে হাটি না আর। পিসিতে হুদেই বসে থাকা কিংবা রাত জেগে বই পড়া তারপর ঘুমিয়ে দশটায় উঠে রংচা বানানো। যে তিন কেজি ওজন কমাইছিলাম ছয় সাত দিন না হেটে মনে হয় তা আগের অবস্থানেই ফিরে গেছে। যাক আবার হাটবো কি আর করা। এমনিতেই চেহারা সুরত ভালো না তারপর সামনের মাসে প্রচুর খানাদানা যে ভুড়িটা হবে তা তো সামলিয়ে রাখতে হবে। ভুড়ি নিয়ে ভাব নিবো সেরকম ভাবের দরকার নাই। তাই হাটতে হবেই অলসতা জয় করে। হাটলে ভালো লাগে কারন একেকটা হাটার জায়গা একেকটা নিজস্ব জগত। জিয়া উদ্যানের যেমন মধ্যবিত্ত মধ্যবিত জগত ধানমন্ডির তেমন একটু উচ্চবিত্তের গন্ধের জগত। এক সকালে ধানমন্ডি লেকে গিয়ে দেখি অনেক আংকেল আন্টির সাথেই অল্প বয়সী ছেলে। প্রথমে বুঝি নাই। পরে বুঝলাম সেই ছেলে গুলা জগিং কারীদের মাল ছামানা টানে। পানির বোতল, তোয়ালে, মোবাইল এই সব আর কি। আহ দেশে কতো ধরনের চাকরী আছে ভেবে অবাক হই। আর একটু বসে থাকলে দশটার দিকে নব্বই দশক থেকে শুরু করে হাল আমলে টেলিভিশনের ছোটোখাটো কাজের বুয়ার চরিত্র থেকে শুরু করে নায়িকা অবধি সব হাটতে নেমে যায়। একেকজনেই সাইজ বিএনপি আওয়ামীলীগের মহিলা এমপিদের মতোই সুঠাম। তারা হাটে কম চাপা মারে বেশী। ভাগ্যিস তাদের চাপা তেমন কেউ মন দিয়ে শুনে না। শুনলে ভিমড়ি খেতো। চাপা শুরু হয় এইভাবে ভাবী ওমুক প্রডিউসার তো বলে আপনার জন্যেই ওমুক রোলটা। করবেন না কেন? আমি তো আর মানা করতে পারি না! নিয়মিত যদি যেতাম তাহলে আরো হয়তো মজার গল্প শুনাতে পারতাম। কিন্তু যাই জিয়া উদ্যানে। সেখানে মধ্যবিত্তদের ভীড়ে ঠাসাঠাসি। তারা রাজনীতি নিয়ে প্যাচাল পারে, মেয়ে কোথায় ইন্টার্ন করছে তা নিয়ে আলাপ জুড়ে দেয়, ছেলে বিদেশে থেকে বাঙ্গালীদেরকে কিভাবে গালি দেয় তা নিয়ে আলাপ। আর যারা গরীব তারা হার জিরজিরে শরীর নিয়ে জীবিকার জন্য বেড়িয়ে যায় তাদের কোনো গল্পই করতে হয় না।
গতকাল ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখ জিতছে। গোল ডট কমে লাইভ আপডেট রাখছি এতোটুকুই। ফুটবল খেলা আমার ভালো লাগে না। জানি না কেনো। ভালো লাগে দেশের ফুটবলের কথা ম্যাচ নিয়ে জানতে তার অবস্থাই জবর জং। আগে আমি সেই অনেকদিনের পুরানো ক্রীড়ালোকও পড়তাম শুধু দেশের ফুটবল নিয়ে জানার জন্যে। মাঝখানে ইন্ডিয়ান ফুটবলও খুব দেখছি। কিন্তু ইপিএল বা লা লীগা কিছুই আমাকে টানে না। নিজেকে ডিসওরিয়েন্টেড লাগে। আমার সব চাইতে প্রিয় খেলা ক্রিকেট। টিভি নাই তাও খুব মন দিয়ে খেলার খবর রাখা আর ভিডিও দেখার চেষ্টা করি। ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ডের টেস্টের আপডেট যখন বারবার মোবাইলে নেই তখন সবাই অবাক হয় আইপিএল বাদ দিয়ে এসব কি? যাক বালের আইপিএল শেষ। সামনেই এসেজ- তা নিয়ে আমার আগ্রহের কমতি নাই। আশা করি ততদিনে ডিসের লাইন লাগিয়ে নিবো। তবে মিউনিখের জয়ের উসিলায় আজ আমরা সবাই কাদেরের চাপ খেলাম। বাজীর খাওয়া। এই গরমে বিকেলে চাপ খেয়ে একেবারে যাচ্ছে তাই অবস্থা। স্টারের লাচ্ছি বা মিরিন্ডা কিছুতেই গরম কাটে না। নান্নুর দোকানে গিয়ে খেলাম চা আহ কি শান্তি। ভেবেছিলাম আগামী মাসে বিসিএসের ডেইট দিবে ভাইবার। সামনের মাসেও স্বাস্থ্য ফাস্ট চয়েজ দেয়াদেরই এক্সাম। আরেকটা বিসিএসের প্রিলি দিলাম। কিছুই পড়িনাই ভালোই ভুল করে আসছি। তাও মনে হইছে এতো সোজা হবার মানে কি? যাই হোক একটা গতি চাই জীবনের। এরকম নিরদ্ধেশ লাইফ আর ভালো লাগে না!
শুরুটা পইড়া মজা পাইলাম।
মাঝামাঝি অংশটা অনেক চেনা।
শেষে এসে মিক্সড ফিলিং বলা চলে।
আমি মোটামুটি ২০০০ থেকে টপ ইউরোপিয়ান লিগ ফলো করি। দেশের ফুটবল দেখা অনেক কঠিন তবে কাল মনে হল আমাদের মেয়েরা আমাদের অনেক ছেলে ফুটবলারদের চাইতে খেলাটা ভালো বোঝে এবং সেভাবেই খেলার চেষ্টাটা অন্তত করে!
টেনিস ও আমার বেশ ভালো লাগে, গ্র্যান্ড স্ল্যাম গুলা তো দুর্দান্তিস!
ক্রিকেটে ওয়ানডেটাই আমার ফেবারিট তবে ইদানিং বাংলাদেশ বাদে আর কারো খেলা দেখার মুড পাইনা। টেস্ট মাঝে মাঝে দেখি একটু আধটু, এশেজে লর্ডস এর দর্শকদের দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। টি টুয়েন্টি বিন্দুমাত্র ভালো লাগে না, ইন্টারটেইনমেন্ট নামের ফাউ টাইম পাসে খেলাটারেই অপমান।
রাত জাগায় মাঝে মাঝে আপনের পোস্ট টাটকা পড়তে পারলে খুব খুব ভালো লাগে, ফ্রেশ ফ্রেশ একটা ফিলিং হয়!
নিওয়ে
ভালো থাকেন।
দোয়া করি
আরো ভালো দিন আসুক।
থ্যাঙ্কস। দিনের পর দিন আমার সব পোস্ট এতো মন দিয়ে পড়ো তাতে শুকনা ধন্যবাদই শুধু যথেষ্ট না। আমি লেখি তো আমার মতোই যা ইচ্ছে তাই। আমি আসলে খুব মিস করবো যদি সামনের এশেজ দেখতে না পারি। ইউরোপীয়ান ক্লাব ফুটবলের অনেক খোজই রাখতে হয় সবার সাথে আলাপ জমাতে হলে। আমিও রাখি। কিন্তু খেলা আর দেখা হয় না! টেনিসও সেরকম খালি খবর রাখি কে কোনটা জিতছে আর কে কার রেকর্ড ভাঙ্গলও! রাত জেগে প্রতিটা পোস্ট লিখে একটাই আশাবাদ থাকে আর কেউ পড়ুক না পড়ুক সকাল উঠেই বিষণ্ণর কমেন্ট পাবো
সবুজ বোতল ভর্তি চা! আহ!
ধানমন্ডিতে হাটতে গেলে আমার মা'র সাথে দেখা হবে
ধানমন্ডিতে কম যাওয়া হয়। আন্টি হাটে শুনছিলাম সামিয়ার মুখে কিন্তু দেখি নাই!
গতিতো জীবনের হবেই। কিন্তু এরকম লাইফ চালানো ঈর্ষা জাগায়
শান্তি পাই আপনার মুখে এই কথাটা শুনলে:D
একেকজনেই সাইজ বিএনপি আওয়ামীলীগের মহিলা এমপিদের মতোই সুঠাম।@ সাবধানে থাকবেন।
আপনার লেখা পড়লে ফিরে যাই আপনার বয়সে। ভাল থাকবেন।
থ্যাঙ্কস ভাইয়া। আপনারা পড়েন বলেই লেখা!
পড়লাম ও ভাললাগা জানালাম।
সময় নেই, দৌড়ের উপর আছি
এতো ব্যাস্ত?
মন্তব্য করুন