ইউজার লগইন

আনন্দবাবু'এর ব্লগ

আয় আরেকটিবার আয়...

অনেক দিন ধরেই স্কুল নিয়ে কিছু লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হলো স্কুল নিয়ে লিখতে গেলে পাতার পর পাতা যদি লিখে ফেলি তবুও শেষ হবে না। অল্প পরিসরে স্কুল নিয়ে কিছু লেখা শুধু কষ্টকরই না, অসাধ্যও।

স্কুলে ভর্তি হওয়া নিয়ে আমার একটা কাহিনী আছে। প্লে গ্রুপে ভর্তি করানোর জন্যে আম্মু আমাকে নিয়ে গেলো সুরবাণী সংসদে। সেখানে আমাকে আমার নাম লিখতে বলা হলো। বাসা থেকে খুব করে নাম লেখা শিখে গেছিলাম। কিন্তু ওখানে গিয়ে কনফিউজড হয়ে গেলাম। “দ” এর হাঁটুটা ভাঙ্গবে কোনদিকে? ডানদিকে না বামদিকে। “দ” যদি ডানদিকে ভেঙ্গে লিখতে হয় তাহলে “ন” নিশ্চয়ই বাম দিকে ভাঁজ দিয়ে লিখতে হবে। কি লিখবো না লিখবো ভাবতে ভাবতে নিজের নাম “আনন্দ” না লিখে লিখলাম “আদদ্ন”। আমাকে আর সুরবাণী সংসদ ভর্তি নিলো না। মোটকথা আমি আমার জীবনের প্রথম এডমিশান টেস্টে কৃতিত্বের সাথে ফেল করলাম। আমার এডমিশান টেস্ট ফাঁড়া জীবনের পরবর্তী পর্যায়েও খেল দেখিয়েছে। সে কথা এখন না হয় থাক।

আবারো নিজের কথা

১।

আমার বয়েস যেদিন ঊনিশ শেষ করে বিশে পড়লো, সেইদিনটা আমার মনে আছে। আমি ট্রেনে ছিলাম। ট্রেনে চেপে বাড়ি থেকে ঢাকা আসছিলাম। পুরা রাস্তা এসেছি পাগলের মতন লাফালাফি করতে করতে। ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা আমার একটা বিপদজনক শখ। সেই ট্রেনের কামড়ার দরজায় দাঁড়িয়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে চিৎকার চেঁচামেচি করছিলাম। দুধের বাচ্চা থেকে শুরু করে থুত্থুড়ে বুড়ো সবাইকে "টা টা" দিতে দিতে এসেছি।

এরমাঝে একজন আমাকে না পারতে জিজ্ঞেসই করে ফেললো, "ভাই, সমস্যা কী আপনের?"

আমি বুক ফুলিয়ে উত্তর দিলাম, "আমি আমার টিন-এজ লাইফের শেষ দিন উপভোগ করছি!"

আজ আমার আরেকটি জীবন শেষ হলো বলে। কাল থেকে চাকুরী জীবন শুরু। প্রজাতন্ত্রের গর্বিত চাকর হতে আমি কাল যাচ্ছি। পেছনে ফেলে যাচ্ছি আমার সুখ-দুঃখে মেশানো বর্ণিল ছাত্রজীবনটাকে।

২।

ব্লগর ব্লগর

১।

আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি যখন ছোট তখন আমাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম একবার। পাঁচ-ছয় বছর বয়সের স্মৃতি যতটা পরিষ্কার হওয়ার কথা তার থেকেও ভাল করে ওই বাড়িটির কথা আমার মনে আছে। বিশাল উঠান, শানবাঁধানো সিঁড়ি, আধাপাকা বড়সড় বাড়ি। সেটা ঘিরে আরো কিছু ঘর, বাসার সীমানার বাইরে সারি সারি সুপুরি গাছ। ডান দিকে একটা খেলারমাঠ, তার পাশে এক বিশাল বটগাছ। বাম দিকে প্রমত্তা যমুনা। বগুড়া জেলার একটি গ্রাম, নাম খাবুলিয়া।

ওই বাসাতে বেশীদিন থাকার ব্যাপারে আমার ঘোরতর আপত্তি ছিল, কারন, টিভি দেখা যেত না, ইলেক্ট্রিসিটি ছিল না বলে। টিভি না দেখে তো থাকা অসম্ভব। কতদিন পর ওখান থেকে বাড়িতে ফিরেছিলাম তা মনে নেই, কিন্তু এটা মনে আছে যে ওই জায়গায় আমি আর কখনই যেতে চাইতাম না।

এই বয়সে এসে আমার খুব ইচ্ছে করে আর মাত্র একটি বারের জন্য ওই জায়গাটাতে যাব। ছোট বেলায় কোন টান না থাকার পরও গ্রামটি আবছা আবছা আমার চোখে কেন ভাসে তা আমার দেখা খুব দরকার ছিল। কিন্তু বাড়িটা আর আমাদের নেই। রাক্ষুসী যমুনা শুধু বাড়িটা নয়, পুরো গ্রাম এবং এর আশেপাশের সবকিছু খেয়ে ফেলেছে। তাও অনেক দিন আগে।

২।

শীর্ণ শীতের লতা... আমার মনের কথা...

খুব বড় কিছু হয় নি। জীবনের বিশালতার তুলনায় কোন কিছুকেই ইদানীং আর খুব বেশী বড় বলে মনে হয় না।

তারপরও কিছু প্রাপ্তি আর এর পিছনে ফেলে আসা বহু অপ্রাপ্তির হিসাব মিলানোর সময় মাঝে মাঝে অনেক ছোট বিষয়গুলো বড় হয়ে সামনে চলে আসে।

আজ আমার বিসিএস এর চূড়ান্ত ফলাফল দিলো পিএসসি। আমাকে প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার হিসাবে বাংলাদেশ রেলওয়েতে নিয়োগ দেওয়ার জন্যে সুপারিশ করা হয়েছে।

এই ঘটনাটাকেই বললাম তেমন বড় কিছু নয়। আবার বড় কিছুও।

এর পিছনে আমার অনেক দিনের সাধনা রয়েছে। রয়েছে অনেক ত্যাগের ইতিহাস। এভাবে বলছি শুনে কেউ যদি উপহাস করে বলেন, "মনে হচ্ছে যেন রাজ্যজয় করসো মিয়া" তো বলতেই পারেন কিন্তু আমি জানি আমি দীর্ঘ আটটা বছর ধরে কতখানি যন্ত্রণা বুকে চেপে এই একটি দিনের জন্যে অপেক্ষা করে এসেছি।

অপেক্ষার যাতনা বড় ভয়ংকর। আর সেই অপেক্ষা যদি বছরের পর বছর ধরে করতে হয় আর তার শেষে যদি মোটামুটি একটা সুসংবাদ পাওয়া যায়, তাহলে রাজ্যজয়ের অনুভূতিটাই হয়। আমার বিশ্বাস জীবনের কোন না কোন সময়ে প্রত্যেকেই এরকম অনুভূতির স্বাদ পেয়েছেন।

আজ আমি অনেক খুশী।

দুর্‍্যোগ, দুর্বিপাক, কেলেঙ্কারি...

১।
পরশুদিন আমার ক্যামেরা হাত থেকে পড়ে গিয়ে আর কাজ করছে না। সেটার ঝামেলাটা কী বুঝার জন্যে তখন তখনই আই ডি বি নিয়ে যাচ্ছি। যাওয়ার পথে এক বন্ধুর সাথে দেখা করে যাবো, ওকে ইন ডোর স্টেডিয়ামের সামনে দাঁড়াতে বলেছি। হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি। হঠাত দেখি এক সিকিউরিটি গার্ড আমাকে হাত দিয়ে ফুটপাথ থেকে নেমে যেতে বলছে। অন্য সময় আমি গার্ড বা পুলিশের কথায় খুব একটা পাত্তা না দিলেও কী মনে করে যেন তখনই ফুটপাথ ছেড়ে দিলাম, আর তখনই একটা ইট এসে ধুপুস করে নিচে পড়লো। উপরে তাকিয়ে দেখি নতুন বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে।

২।

আগুন লাগানোর বাসনা।

আমাদের উপরতলার মানুষজন আজব আজব কথা বার্তা বলবেন, আমরা এতে হাসতেও পারবো না, ক্ষোভও প্রকাশ করতে পারবো না। মুখে বলা হবে বাকস্বাধীনতার কথা, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার কথা। সেটা পাচ্ছি না, তাও বলার উপায় নেই। তারা উঠতে বসতে মিথ্যে কথা বলে যাবেন, আর সেই খবর ছাপিয়ে দিলেই পত্রিকা হয়ে যায় মিথ্যেবাদী।

ব্লগে লেখালেখি করার অনেক বিষয় থাকে। আমার আগ্রহ আগাগোড়াই "নিজ" জীবন-কেন্দ্রিক। একে ঘিরে যে রাজনৈতিক, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট তাকে আমি এড়াতে তো পারি না। এ নিয়ে লিখতে গেলেই মনে মনে ভয় পাই। ভয় না বলে একে আতঙ্ক বলা বেশি যুক্তিযুক্ত। ব্লগে লিখেন এমন কাছের মানুষদেরকেও একই রকম ভয় বা আতঙ্ক পেতে দেখেছি। লঘু ধরনের ব্লগর ব্লগরের সময়ও মাথায় চিন্তা রাখতে হয়, "দেশদ্রোহিতা" করে ফেললাম না তো!

উত্তরাধিকারঃ প্রাসঙ্গিক বিষয়ে (অ)প্রাসঙ্গিক ভাবনা

জজ হবার খায়েশ নিয়ে ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিচ্ছি। গতকাল “পারিবারিকসম্পর্ক বিষয়ক আইন” এর লিখিত পরীক্ষা দিয়ে আসলাম। যেহেতু পরীক্ষার জন্যে প্রয়োজনীয় পড়াশুনার পরিমান অত্যন্ত কম, কাজেই লেখার সময় অনেক ভাবনাচিন্তা করে লিখতে হয়। পরীক্ষায় উত্তর লিখতে গিয়েই ভাবতে ভাবতে একটা বিষয়ের দিকে আমার মনোযোগ চলে গেল, এবং আজকের লেখার বিষয়টা সেই ভাবনা থেকেই উৎসরিত।

NOW

WAR CRIMES and CRIME AGAINST HUMANITY are not same things.

What ALBADAR, AL-SHAMS and their filthy Brother-Concerns did throughout 1971 were not only WAR CRIME but also "CRIMES AGAINST HUMANITY".

WE NEED JUSTICE against those bustards who killed HUMANITY.

We need it ...NOW.

শিরোনাম জানি না

কত কথা মনের মাঝে ঘুরপাক খায়। কত কথা বলতে ইচ্ছা করে। কত কিছু বুঝতে ইচ্ছা করে। কতকিছু করতে ইচ্ছা করে।

মাঝেমাঝে মনে হয় আমি যদি মফস্বলের একটা ছেলে না হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ছেলে হয়ে জন্মাতাম, আমার জীবনটা কেমন হত? হিসাব মেলে না। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ছেলে কেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে কীভাবে জীবনযাপন করে সেটাই তো আমি কোনওদিন বুঝতে পারব না। সেই জীবন অবশ্যই আর দশজনের জীবন না!

আবার যদি বেশ অবস্থাসম্পন্ন ভদ্র-সভ্য-স্বাভাবিক বাড়ির ছেলে না হয়ে আমি যদি কোন একটা ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তান হতাম। এমন যদি হতো আমার বাবা-মাকে কোন দিন কাছে থেকে দেখি নি। এমন যদি হত জীবনে কখনো কাউকে মা বলে ডাকতেই পারি নি, জানিও না মা কাকে বলে; তখন আমার জীবনটা কেমন হত? এমন যদি হত যে বাবা জন্মের পর পর ফেলে দিয়ে চলে গেছে কোথাও, বা আমার জন্ম যদি কোন বেশ্যামায়ের পেটে হতো?

চাকরানী।

একটা বাচ্চা। খুব আদরের। যখন সে জন্ম নিলো তখন সবার মনে আনন্দের বন্যা বয়ে গেল। নানাবাড়িতে সে একমাত্র "নাতি"। কাজেই এক্সট্রা খাতির। অনেক পরিচর্যা।

বাড়িতে অনেকদিন কোন ছেলেসন্তান হয় নি। অনেক দিন পর একটা ছেলে সন্তান আসার পর সবাই মহাখুশী। ছেলেটির মাকে অকথ্য মানসিক নির্যাতন চালানো হত কেন না, ১৯৮৪ সালে ছেলেটির বাবার প্রেম করে বিয়ে করা পরিবারের আর কেউই মেনে নেয় নি। যদিও ছেলেটির বাবা চিকিৎসক আর মা মাস্টার্স পাশ করা মেধাবী মেয়ে। সন্তানটিকে জন্ম দেওয়ার পর থেকে পরিবারে সেই মা-এর আদর অনেক খানি বেড়ে গেল। মা টি যেন হাতে পেল ঈদের চাঁদ। ছেলেটি একদিন অনেক বড় হবে। কখনো কারো পেছনে পড়ে থাকবে না। ছেলেটিকে নিয়ে শুরু হলো সে মা-এর পথচলা। সঙ্গী ছেলেটির বাবা। আর পিছনে রয়েছে পুরো পরিবার।

ঘৃণা

অনেকে বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের কোন দরকারই ছিল না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা তথা পাকিস্তানের বিভাজন শুধু মাত্র স্নায়ুযুদ্ধকালীন বিশ্বরাজনীতির একটা উদাহরণ। এই বক্তব্যের পিছনে তাদের যুক্তিও থাকে, এবং আমি নিজেই বুঝি, তাদের সব যুক্তি ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেবার মতন নয়।
কিন্তু, বিশ্বরাজনীতির মতন নোংরা আর প্যাঁচালো বিষয়কে মনে আনতে চাই না। পৃথিবীর শুরু থেকে সব সৃষ্টিই যুদ্ধের মাঝে দিয়ে গেছে, যাচ্ছে। সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট এর ধারনাকে পাকা পোক্ত করেছে। সেই সূত্র ধরেই বিংশ শতাব্দির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যুদ্ধ চলে আসছে। যুদ্ধ হচ্ছেই। এবং হবেই। যুদ্ধ বন্ধ করার জন্যে হলেও যুদ্ধ করতে হবে।
এরকমই একটা যুদ্ধই হলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ।
এই যুদ্ধ আমাকে একটা স্বাধীন দেশে জন্ম নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে।

অনুক্রমনিকা

আজ আমার মনে পড়ছে আমার প্রথম ব্লগিং এর কথা। আমি শুরু করেছিলাম “আমার ব্লগ” দিয়ে। আমার খুব প্রিয়, আপন মানুষ, অগ্রজপ্রতিম রায়হান সাঈদ এর আগ্রহ এবং অনুপ্রেরণায়। প্রথম লেখাতে অনেক সাড়া পেয়েছিলাম। খুশি হয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম রোজ রোজ লিখব। না লিখি, কমেন্ট তো করবোই। সমস্যাটা হলো, আমি আমার “প্রিয়” কোন কিছুর সাথেই সুবিচার কোনদিন করতে পারি নি। কথাও রাখতে পারি নি। আমি পারি না। সিরিয়াসনেসের অনেক ঘাটতি আছে আমার। তার উপর কোন এক ছাগুশ্রেণীর প্রাণী আমার আবেগভরা একটা লেখাতে আজাইরা কিছু লিখে আমার মন-মেজাজ খারাপ করে দিয়েছিল, ওই সময় আমার অন্য ব্লগার ভাই-বোনেরা আমাকে সাপোর্ট দেন নাই। অনেকটা অভিমান থেকে আমি “আমার ব্লগ” ছেড়েছিলাম।