দৈনিক আমার দেশ-এর ভূমিকায় প্রথম আলো?
দৈনিক আমার দেশ যে ভূমিকা পালন করেছিলো স্থূলভাবে, সুক্ষ্মভাবে সেই একই কাজ করতে শুরু করেছে প্রথম আলো। কুলেখক হাসনাত আবদুল হাইকে দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত লেখা লিখিয়ে ছাপানো, দেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধীর বিচার চায় না বলে 'জরিপ' প্রকাশ করা... আরো কত কী!
এই নষ্টামির প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন প্রথম আলোর চট্টগ্রাম অফিসের আবাসিক সম্পাদক আবুল মোমেন। প্রথম আলোতে 'সাধাসিদে কথা' কলাম লিখতেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনিও পত্রিকাটির বর্তমান বিপথগামিতায় লেখা বন্ধ করে দিয়েছেন।
গতকাল (৫ জুলাই, শুক্রবার) শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের অনুষ্ঠানে, নাম উল্লেখ না করে প্রথম আলোর এসব নষ্টামি তুলে ধরেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। কিন্তু পত্রিকায় প্রথম আলো খবর ছেপেছে, কিন্তু নিজেদের নষ্টামি নিয়ে বলা কথাগুলো বেমালুম চেপে গেছে!
আমার প্রিয় সম্পাদক হিসেবে চোখ বন্ধ করে মতিউরের রহমানের নাম উচ্চারণ করতাম। কিন্তু এখন একটু ভেবেচিন্তেই নামটা উচ্চারণ করতে হবে! প্রথম আলোতে কাজ করেন আমার অনেক প্রিয় মানুষ। (আমরা নিজেরাও একসময় প্রথম আলোতে লিখতে পছন্দ করতাম।) তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আনিসুল হক ও মশিউল আলমও। মশিউল আলম কিছুদিন আগে প্রথম আলোতে ২ কিস্তিতে কলাম লিখলেন। ইনিয়েবিনিয়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার দোহাই তুলে অনেক যুক্তি দেখালেন। সব কথার সার কথা, মাহমুদুর রহমানের মুক্তি চাই, আমার দেশ চালু চাই!
আরেকজন প্রিয় মানুষ আনিসুল হক। শহীদ রুমিকে নিয়ে লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস 'মা'। এই উপন্যাসটি ছাড়াও তাঁর আরো অনেক লেখা পড়ে আমরা উদ্বুদ্ধ হয়েছি, উজ্জীবিত হয়েছি দেশপ্রেমে।
আনিসুল হকের বক্তব্যে শুনেছি, মুহম্মদ জাফর ইকবাল তাঁর আদর্শ। জাফর ইকবাল স্যার কেডস পরেন, তাই তিনিও কেডস পরেন। জাফর ইকবাল স্যারের কাঁচাপাকা চুল, তাই তিনিও কাঁচাপাকা চুলই রেখেছেন; কলপ করেন না।
এখন জাফর ইকবাল স্যার প্রথম আলো বর্জন করেছেন, আনিসুল কি করবেন?
আবুল মোমেন প্রথম আলো থেকে পদত্যাগ করেছেন; মশিউল আলম কি সেই সৎ সাহস দেখাতে পারবেন?
হয়তো পারবেন। হয়তো পারবেন না। পারবেন না এই কারণে- এক বা একাধিক অপশক্তির এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে প্রথম আলো; এ 'স্বপ্ন' বাস্তবায়নে যদি আমার প্রিয় এইসব মানুষ নিয়োজিত থাকেন- তবে কিছুই হবে না। যা যেমন ছিলো, তেমনই থাকবে।
পাঠক হিসেবে, দেশের নাগরিক হিসেবে নিজেদের দুর্ভাগ্যের কথা ভেবে আফসোস করেও বা কী করবো। আমরা, সারা বাংলাদেশের হাজার হাজার তরুণ-তরুণী বছরের পর বছর নিজেদের ব্যাপৃত রেখেছিলাম প্রথম আলো পাঠক সংগঠন 'বন্ধুসভা'র সাথে। সেই আমাদের সাথে চরমভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করা হলো। কাদের জন্য আমরা কাটিয়ে দিয়েছি জীবনের অনেকটা মূল্যবান সময়?
এসব ভেবে ব্যথিত হই, বিমর্ষ হই- কিন্তু তাতে কি কিছু আসে-যায় আমাদের এসব 'বুদ্ধিজীবী'দের? যারা নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থে দেশ বিক্রি করে দিতেও পিছপা হন না...!
সবাই যেখানে হিপোক্রেট সেখানে এসব লেখা ড্রয়ারে চাপা দিয়ে রেখে দিন। যাদের যাদের গুরু মেনেছেন তাদের মধ্যে বিশাল ফাঁক আছে ব্রাদার। পীর সাহেবও খুব জুইতের লোক না।
মন্তব্য করুন