একাত্তরের এদিনে-বঙ্গবন্ধু বললেন -এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসের অবিস্মরণীয় একটি দিন। একাত্তরের এই দিনে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রমনার রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে ঘোষণা করেছিলেন পাকিস্তানের অপশাসন ও নিষ্পেষণ থেকে বাঙালির মুক্তির মূলমন্ত্র। এই ভাষণটির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করা।কবি নির্মলেন্দু গুণ শেখ মুজিবের সাত মার্চের ভাষণকে বলেছেন একটি মহাকাব্য। আর সেই মহাকাব্যের মহাকবি হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কবি গুণের কবিতায় বঙ্গবন্ধুকে কবি অভিহিত করার প্রতিধ্বনি শোনা গেছে লন্ডনের সানডে টাইমস পত্রিকার মতো কাগজে। কাগজটি শেখ মুজিবকে নাম দিয়েছিল 'এ পোয়েট অব পলিটিক্স' ।
চলুন ফিরে যাই একাত্তরে-
৬ মার্চ লে. জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খানকে অপসারণ করে লে. জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্বপাকিস্তানের গভর্নর ও সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই উত্তপ্ত সময়ে নৃশংস বলে কুখ্যাত টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানে প্রেরণের উদ্দেশ্য যে মিলিটারির বুটের নিচে পূর্ব পাকিস্তানের গণ আন্দোলনকে দাবিয়ে দেয়াএটা উপলব্ধি করতে পেরে ঢাকা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জনাব বি এ সিদ্দিকী টিক্কা খানের শপথনামা পরিচালনা করতে অস্বীকার করেন। ফলে সৃষ্টি হয় এক অচলাবস্থার। এদিকে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বাধীন ‘নিউক্লিয়াস’ শেখ মুজিবের ওপর ক্রমবর্ধমান হারে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে যাতে তিনি ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়ার জন্য শেখ মুজিবের ওপর চাপ তুঙ্গে উঠে এবং সেদিনই তার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার দীর্ঘ আলাপ হয়। প্রেসিডেন্ট তাকে অনুরোধ করেন, যেন তিনি এমন কোনো পদক্ষেপ না নেন যাতে আর প্রত্যাবর্তনের কোনো পথ না থাকে। একই দিন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ঘোষণা দেন যে, আগামী ২৫ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসবে। কিন্তু ভাষণে প্রেসিডেন্ট যে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন, তাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের রেডিক্যাল অংশ শেখ মুজিবের ওপর আরো চাপ প্রয়োগ করতে থাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়ার জন্য। পরদিন ৭ মার্চ জনসভাকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডির বাড়িতে চলতে থাকে প্রস্তুতি। এদিকে পাকিস্তানে নিযুক্ত তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জোসেফ ফারল্যান্ড বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করেন এবং হুমকি দেন মার্কিন সরকার পাকিস্তান ভাঙ্গা সহ্য করবে না’। রাতে আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক বসে এবং সিদ্ধান্ত ছাড়াই গভীর রাতে মূলতবী হয়ে যায়।
এই ত্রিশঙ্কু অবস্থায় ৭ মার্চ বেলা ২.৩০ মিনিটে রেসকোর্সের জনসমুদ্রের সামনে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের অপশাসন ও নিষ্পেষণ থেকে বাঙালির মুক্তির মূলমন্ত্র ঘোষণা দিতে দাঁড়ালেন।
ভাইয়েরা আমার,
আজ-দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বোঝেন আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ঢাকা, চট্রগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী,রংপুরে আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। আজ, বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তাঁর অধিকার চায়। কি অন্যায় করেছিলাম? নির্বাচনের পরে বাংলাদেশের মানুষ সম্পুর্ণভাবে আমাকে-আওয়ামী লীগকে ভোট দেন। আমাদের ন্যাশনাল এসেমব্লি বসবে, আমরা সেখানে শাসনতন্ত্র তৈয়ার করবো এবং এদেশকে আমরা গড়ে তুলবো। এদেশের মানুষ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, ২৩ বছরের করুণ ইতিহাস, বাংলার অত্যাচারের বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস, ২৩ বছরের ইতিহাস মুমূর্ষ নর-নারীর আর্তনাদের ইতিহাস, বাংলার ইতিহাস এ দেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস।
১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আয়ুব খাঁন মার্শাল'ল জারি করে ১০ বছর আমাদের গোলাম করে রেখেছে। ১৯৬৪ সালে ৬-দফা আন্দোলনের ৭ই জুনে আমার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৬৯সালের আন্দোলনে আয়ুব খাঁনের পতন হওয়ার পরে যখন ইয়াহিয়া খাঁন সাহেব সরকার নিলেন- তিনি বললেন, দেশে শাসনতন্ত্র দেবেন-গণতন্ত্র দেবেন, আমরা মেনে নিলাম।
তারপর অনেক ইতিহাস হয়ে গেলো, নির্বাচন হলো। আমি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খাঁন সাহেবের সঙ্গে দেখা করেছি। আমি, শুধু বাংলার নয়, পাকিস্তানের মেজরিটি পার্টির নেতা হিসাবে তাঁকে অনুরোধ করলাম- ১৫ই ফেব্রুয়ারি তারিখে আপনি জাতীয় পরিষদের অধিবেশন দেন। তিনি আমার কথা রাখলেননা, তিনি রাখলেন ভুট্টো সাহেবের কথা। তিনি বললেন, মার্চ মাসে প্রথম সপ্তাহের হবে। আমরা বললাম, ঠিক আছে আমরা এসেমব্লিতে বসবো। আমি বললাম, এসেমব্লির মধ্যে আলোচনা করবো- এমনকি এও পর্যন্ত বললাম, যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশী হলেও একজন যদিও সে হয় তাঁর ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব।
জনাব ভুট্টো সাহেব এখানে এসেছিলেন, আলোচনা করলেন। বলে গেলেন, যে আলোচনার দরজা বন্ধ না, আরো আলোচনা হবে। তারপর অন্যান্য নেতৃবৃন্দ তাঁদের সঙ্গে আলাপ করলাম- আপনারা আসুন-বসুন আমরা আলাপ করে শাসনতন্ত্র তৈয়ার করি। তিনি বললেন, পশ্চিম পাকিস্তানের মেম্বাররা যদি এখানে আসে তাহলে কসাইখানা হবে এসেমব্লি। তিনি বললেন, যে যাবে তাকে মেরে ফেলে দেওয়া হবে, যদি কেউ এসেমব্লিতে আসে তাহলে পেশোয়ার থেকে করাচি পর্যন্ত দোকান জোর করে বন্ধ করা হবে। আমি বললাম, এসেমব্লি চলবে। তারপরে হঠাৎ ১ তারিখে এসেমব্লি বন্ধ করে দেওয়া হলো।
ইয়াহিয়া খান প্রেসিডেন্ট হিসাবে এসেমব্লি ডেকেছিলেন। আমি বললাম যে, আমি যাবো। ভুট্টো সাহেব বললেন তিনি যাবেননা। ৩৫ জন সদস্য পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এখানে আসলেন। তারপর হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হলো, দোষ দেওয়া হলো বাংলার মানুষকে, দোষ দেওয়া হলো আমাকে। বন্ধ করে দেয়ার পরে এদেশের মানুষ প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠল।
আমি বললাম , শান্তিপুর্ণভাবে আপনারা হরতাল পালন করেন। আমি বললাম, আপনারা কলকারখানা সব কিছু বন্ধ করে দেন। জনগণ সাড়া দিলো। আপন ইচ্ছায় জনগণ রাস্তায় বেড়িয়ে পড়লো, তারা শান্তিপুর্ণভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাবার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো। কি পেলাম আমরা, জামার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্রুর আক্রমন থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরীব-দুঃখী নিরস্ত্র মানুষের মধ্যে- তার বুকের উপর হচ্ছে গুলি। আমরা পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু-আমরা বাঙালিরা যখনই ক্ষমতায় যাবার চেষ্টা করেছি- তখনই তারা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
তার সাথে আমার দেখা হয়, তাকে আমি বলেছিলাম জনাব ইয়াহিয়া খাঁন সাহেব আপনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, দেখে যান কিভাবে আমার গরীবের উপরে, আমার বাংলার মানুষের বুকের উপর গুলি করা হয়েছে। কি করে আমার মায়ের কোল খালি করা হয়েছে, কি করে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, আপনি আসুন, দেখুন, বিচার করুন। তিনি বললেন, আমি নাকি স্বীকার করেছি ১০ তারিখে রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স হবে।
আমিতো অনেক আগেই বলেছি কিসের আরটিসি, কার সঙ্গে বসবো? যারা আমার মানুষের বুকের রক্ত নিয়েছে, তাঁদের সঙ্গে বসবো? হঠাৎ আমার সঙ্গে পরামর্শ না করে পাঁচ ঘন্টা গোপনে বৈঠক করে যে বক্তৃতা তিনি করেছেন সমস্ত দোষ তিনি আমার উপর দিয়েছেন, বাংলার মানুষের উপর দিয়েছেন।
ভাইয়েরা আমার,
২৫তারিখ এসেমব্লি কল করেছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। আমি ১০তারিখে এসে বলে দিয়েছি যে, ঐ শহীদের রক্তের উপর পাড়া দিয়ে আরটিসিতে মুজিবুর রহমান যোগদান করতে পারেনা। এসেমব্লি কল করেছে, আমার দাবি মানতে হবে প্রথম সামরিক আইন মার্শাল ল উইথড্র করতে হবে। সমস্ত সামরিক বাহিনীর লোকদের ব্যারাকে ফেরত দিতে হবে। যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে। আর জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তারপরে বিবেচনা করে দেখবো আমরা এসেমব্লিতে বসতে পারবো কি পারবো না। এর পূর্বে এসেমব্লিতে বসতে আমরা পারি না।
আমি, আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না। আমরা এ দেশের মানুষের অধিকার চাই। আমি পরিস্কার অক্ষরে বলে দেবার চাই যে, আজ থেকে এই বাংলাদেশে কোর্টকাচারী, আদালত-ফইজদারী, শিক্ষা প্রতিষ্টান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। গরীবের যাতে কষ্ট না হয়, যাতে আমার মানুষ কষ্ট না করে, সেইজন্য সমস্ত অন্যান্য জিনিস গুলো আছে সেগুলোর হরতাল কাল থেকে চলবেনা- রিকসা-ঘোড়াগাড়ি চলবে, রেল চলবে, লঞ্চ চলবে- শুধু সেক্রেটারিয়েট, সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, জর্জকোর্ট, সেমি গভর্নমেন্ট দপ্তরগুলো, ওয়াপদা কোনো কিছু চলবেনা। ২৮ তারিখে কর্মচারীরা গিয়ে বেতন নিয়ে আসবেন।
এরপরে যদি বেতন দেওয়া না হয়, আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোকদের উপর হত্যা করা হয়- তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু-আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি, তোমারা বন্ধ করে দেবে। আমরা ভাতে মারবো, আমরা পানিতে মারবো। তোমরা আমার ভাই , তোমরা ব্যারাকে থাকো, কেউ তোমাদের কিছু বলবেনা। কিন্তু আর আমার বুকের উপর গুলি চালাবার চেষ্টা করো না। সাত কোটি মানুষকে দাবাইয়া রাখতে পারবানা। আমরা যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ আমাদের ডুবাতে পারবে না।
আর যে সমস্ত লোক শহীদ হয়েছে, আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, আমরা আওয়ামী লীগের থেকে যদ্দুর পারি তাঁদের সাহায্য করতে চেষ্টা করবো। যারা পারেন আমার রিলিফ কমিটিতে সামান্য টাকা পয়সা পৌঁছিয়ে দেবেন। আর এই ৭ দিন হরতালে যে সমস্ত শ্রমিক ভাইয়েরা যোগদান করেছেন, প্রত্যেকটা শিল্পের মালিক তাঁদের বেতন পৌঁছাইয়া দেবেন। সরকারী কর্মচারীদের বলি, আমি যা বলি তা মানতে হবে। যে পর্যন্ত আমার এই দেশের মুক্তি না হয় , খাজনা - ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়া হলো- কেউ দেবে না। শুনেন , মনে রাখবেন, শত্রু বাহিনী ঢুকেছে, নিজেদের মধ্যে আত্বকলহ সৃষ্টি করবে, লুটতরাজ করবে। এই বাংলার হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি-নন বাঙালি যারা আছে তারা আমাদের ভাই , তাঁদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের উপরে, আমাদের যেন বদনাম না হয়। মনে রাখবেন রেডিও -টেলিভিশনের কর্মচারীরা, যদি রেডিওতে আমাদের কথা না শোনে তাহলে কোন বাঙালি রেডিও স্টেশনে যাবেন না। যদি টেলিভিশন আমাদের নিউজ না দেয়, কোন বাঙালি টেলিভিশনে যাবেন না। ২ ঘন্টা ব্যাংক খোলা থাকবে, যাতে মানুষ তাঁদের মাইনা পত্র নেবার পারে। কিন্তু পূর্ব বাংলা থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে এক পয়সাও চালান হতে পারবে না। টেলিফোন-টেলিগ্রাম আমাদের এই পূর্ব বাংলায় চলবে এবং বিদেশের সঙ্গে নিউজ পাঠাতে হলে আপনারা চালাবেন। কিন্তু যদি এই দেশের মানুষকে খতম করার চেস্টা করা হয়- বাঙালিরা বুঝেশুনে কাজ করবেন। প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তুল। এবং তোমাদের যা কিছু তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো।
মনে রাখবা, ''রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ''।
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম''।
জয় বাংলা !
বঙ্গবন্ধুর ভাষণে সেনানিবাসে কিরুপ প্রতিক্রিয়া হয়েছিল তার চিত্র পেতে মেজর জিয়া ও শাফায়াতের ষ্মৃতুচারণ দেখি -
তৎকালিন মেজর (পরে জেনারেল , রাস্ট্রপতি ) জিয়া বলেন -"৭ ই মার্চের রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ঘোষণা আমাদের কাছে এক গ্রীন সিগন্যাল বলে মনে হলো আমরা আমাদের পরিকল্পনাকে চূড়ান্ত রূপ দিলাম "

ষ্মৃতুচারণ=স্মৃতিচারণ হবে ।
জিয়ার নিবন্ধটি ১৯৭২ সালে রচিত এবং পাক্ষিক বিচিত্রার ২৬ মার্চ ১৯৭৪ সংখ্যায় প্রকাশিত ।
তৎকালীন মেজর শাফায়াত জামিলের স্মর্তিচারণ -“বঙ্গবন্ধুর আহবান, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু , আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি , তোমরা বন্ধ করে দেবে , এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’-আমাদের মধ্যে আবার দ্রুত উদ্দীপনা ফিরিয়ে আনল । পরে ভেবে দেখেছিলাম , তাৎক্ষণিক উদ্যোগের কথা না থাকলেও বঙ্গবন্ধুর এই ভাষনে যুদ্ধের ইঙ্গিত ও দিক নির্দেশনা তো ছিল ।" ( সুত্র ঃ কর্নেল শাফায়াত জামিল , একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ রক্তাক্ত মধ্য আগষ্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর , সাহিত্যপ্রকাশ , ঢাকা ২০০০ , পৃ ১৫)
গ্রেট! অসাধারণ কাজ মানিক ভাই!
জয় বাংলা!
জয় বাংলা!
জয় বাংলা!
জয় বাংলা!
মনে মনে আপনাকে খুজতেছিলাম
ধন্যবাদ বস...
অসাধারণ....

জয় বাংলা !
ভাষণের অডিও এখানে
ইউটিউব ভিডিও এখানে
আরো একটা গ্রেট কাজ মানিক ভাই এর।
অডিওটা শুনছি...............মুজিব তোমায় মনে পড়ে বেদনায়, বিপ্লবে।
আমার প্রিয় গান-শোন একটি মুজিবরের কন্ঠে
আবার ধন্যবাদ।
আজকে সকালে অফিসে আসতে আসতে টেডিওতে গানটা শুনে সাউন্ড বাড়িয়ে দিয়ে গাইতে গাইতে এলাম। গায়ে কাঁটা দেবার মত একটা গান।
*রেডিও
আমারো প্রিয় একটা গান
জয় বাংলা।
মানিক ভাইকে উষ্ণ শুভেচ্ছা
ধন্যবাদ
জয় বাংলা।

জয় বাংলা!
টিক্কা খানকে কে শপথ করিয়েছিলো?
জামাতি প্রচারণা বা তাদের পাঁতিহাস অনুযায়ী -কে.এম.সোবহান ।
আমি জানতে চেয়েছিলাম আসলে কে পড়িয়েছিলো। ভুলে গেছি যতদূর মনে পরে একই বিচারক তাকে শপথ করিয়েছিল। আমার ভুল হতে পারে।
আপনার স্মরণশক্তি ঠিকাছে ।
On 6th March ........Yahia Khan appointed Lt. Gen Tikka Khan, nicknamed "Butcher of Baluchistan" as the Govornor of East Pakistan. But on 7th March the Chief Justice (Justice B. A. Siddiky of the East Pakistan High Court refused to adminster the oath to him. However later on 9th April he adminstered the oath (perhaps) under threat.(Ref: In Bangladesh: past and present by Salahuddin Ahmed , Dec 1, 2004,Page 174)
Actually, "The Chief Justice who refused oath to Tikka Khan, as the Governor of East Pakistan" is a half truth spread by his grand-nephew Chowdhury Irad Ahmed Siddiky who wilfully omitted the fact that on 9th April 1971, the then Chief Justice Badruddin Ahmed Siddiky adminstered the [oath as on Dhaka High court record].
জয় বাংলা !
জয় বাংলা !
বইটি অনেকেই পড়েছেন। সিদ্দিক সালিকের উইটনেস টু সারেন্ডার। সিদ্দিক সালিক একজন মেজর ছিলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা, ১৬ ডিসেম্বর আত্মমর্পনের পর যুদ্ধবন্দী হিসেবে ভারত যান। মুক্তি পেয়ে এই বইটি লিখেছিলেন। বইটি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত হয়। বলে রাখি সিদ্দিক সালিক বিগ্রেডিয়ার থাকা অবস্থায় ১৯৮৮ সালের ১৭ আগস্ট বিমান দূর্ঘটনায় মারা যান, প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হকের সফরসঙ্গী ছিলেন তিনি।
বলা যায় বইটি একজন পাকিস্তানীর দৃষ্টি দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকে দেখা। অনেকেই বলে থাকেন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চাননি বা স্বেচ্ছায় ধরা দিয়ে দলের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন ইত্যাদি। কিংবা জামায়াতের ভূমিকা নিয়েও অনেকে অনেক কিছু বলেন। বলেন আল বদর-রাজাকার নিয়ে অনেক কথা। অনেক প্রশ্নের উত্তরই পাওয়া যাবে বইটি থেকে।
শুরুটা এরকম। এক অবাঙ্গালি সাংবাদিক শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাতকার নিয়েছেন। তাঁর অজান্তেই সাক্ষাতকার রেকর্ড করা হয়। সেই রেকর্ড পরে শোনানো হয় অনেককেই। গোয়েন্দা সংস্থারা বঙ্গবন্ধুর কথাবার্তার আরো একটি গোপন রেকর্ড সংগ্রহ করে। দলের কিছু নেতাদের উদ্দেশ্যে বলা তার এই রেকর্ড চলে যায় গোয়েন্দাদের হাতে।
কি বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু? 'আমার লক্ষ্য বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। নির্বাচন শেষ হতেই ইয়াহিয়ার করা লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার আমি টুকরা টুকরা করে ছিড়ে ফেলে দেবো। নির্বাচন একবার শেষ হলে কে আমাকে চ্যালেঞ্জ করবে?'
ইয়াহিয়া এই রেকর্ড শোনার পর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেছিলেন, 'সে যদি আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাহলে আমি তাকে ফাঁসিতে ঝুলাবো।'
সিদ্দিক সালিক একাধিকবার বলেছেন যে, যখনই বঙ্গবন্ধুকে ৬ দফা নিয়ে কথা বলতে না করা হতো তখনই তিনি বলতেন যে, 'আমাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান। আর যদি আমি ৬ দফা নিয়ে না বলি তাহলে আমার দলের লোকেরাই আমাকে মেরে ফেলবে।' সিদ্দিক সালিক বলেছেন, এটা ছিল শেখ মুজিবের এক ধরণের কৌশল। এই কৌশল অনেকবারই করতেন তিনি।
৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে সিদ্দিক সালিক কি লিখেছেন সেটা দেখা যাক। তিনি লিখেছেন, সামরিক সরকার জানতে পারলো যে ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারেন মুজিব। এটা নিয়ে প্রবল উৎকণ্ঠা তৈরি হলো। ৬ মার্চ আওয়ামী লীগ গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক করেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারলো না। ইয়াহিয়া কোনো ঘোষণা না দেওয়ার জন্য মুজিবকে চিঠি লেখেন। একই সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান সরকারকে সশস্ত্র অবস্থা প্রস্তুত থাকার জন্য বলে দেওয়া হয়। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট জিওসি আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে ডেকে বলে দেন যদি মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেয় তাহলে রক্তগঙ্গা বইবে এবং এই দেশে শাসন করার লোকও থাকবে না, শাসকও থাকবে না। ঐদিন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফারল্যান্ড মুজিবের সঙ্গে দেখা করে বলে দেয়, মুজিব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো সহায়তাই পাবে না।
এসব কারণেই ঐদিন মুজিব স্বাধীনতার কোনো ঘোষণা দিতে পারেননি।
ধন্যবাদ মাসুম ভাই । উত্তাল মার্চে অনেক রাম শ্যাম যদু মদু স্বাধীনতা ঘোষণা ও নানারকম হঠকারী বক্তব্য দিতে থাকেন কিন্তু একমাত্র বঙ্গবন্ধু সেই চোরাবালীতে পা রাখেননি । আমার মতে , মুজিবের রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বিচক্ষনতার প্রকাশ হয়েছিল ৭ মার্চে । যারা বলেন (আম্বালীগের কট্রর সমর্থক ) বঙ্গবন্ধু ৭ ই মার্চই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তারা যেমন ইতিহাসবিকৃতিকারী তেমনি যারা বলেন তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা দেননি এবং কামটা ভালু হয়নাই এসব তেনা প্যাচানী ও লাদানি করেন তারা ছাগু ।
মাসুম ভাই, উপরে হাসান ভাই একটা প্রশ্ন করেছেন এ ব্যাপারে আপনার জবাব আশা করছি
স্যালুট বস আপনাকে
স্যলুট বঙ্গবন্ধু কে । ।
আজ জানলাম - ৭ই মার্চের ভাষনের পিছনে বেগম মুজিবের অবদান সবচেয়ে বেশী।
সুত্রঃ বিডিনিউজ২৪
হা হা হা
জয় বাংলা!
জয় বাংলা !
জয় বাংলা !
You are great. Thank you so much.
Thanks
আজকের এইদিনে মুজিব তোমায় মনে পড়ে
বঙ্গবন্ধুর ভাষনটা আবার পড়লাম... বার বার পড়লেও এটা পুরাতন হয় না ...
জয় বাংলা !
মন্তব্য করুন