সারাদিনে দুটো জায়গায় থাকি আমি চরম কমফোর্ট নিয়ে। বাড়িতে আমার নিজের ইজি চেয়ারে ঠ্যাং লম্বা করে বসে কোলে ল্যাপটপ নিয়ে ফেসবুকে টুকুর টুকুর আর এবিতে কুটুর কুটুর। ফেসবুকের উন্নয়ন সাধনে আমার অবদানেরতো শেষ নাই সবাই জানেন। এখন ভাবলাম এবির জন্য কি করা যায়। এবি ভর্তি আবিয়াইত্তা পোলাপান, খালি ম্যাসেজ দেয় ইনবক্সে, আপু ডাচ যোগাড় করে দেন, আলুই খাই তবুও খাই। বিমার বিয়েতো দেখা যায় আগুনে ঘৃতের কাজ করেছে। কেউ কেউ মনের দুঃখে ফেসবুকে নিজের খোমার ছবি সরাইয়া দিয়া, মোমবাত্তির ছবি লাগাইয়া শোক পালন করতেছে। আমার ফেসবুকের ইনবক্স তাদের দুঃখে কষ্ট উথলাইয়া উথলাইয়া উঠছে আর ঠারে ঠোরে আমারে বড় হওয়ার দায়িত্ব কর্তব্যে সম্পর্কে জ্ঞান দিচ্ছে। ভাবছি বড় বড় ব্যবসায়ীরা মূল ব্যবসার সাথে কিছু সাইড ব্যবসা রাখেন, প্রোডাক্ট বাই প্রোডাক্ট। টেক্সটাইল মিলের মালিকরা আস্তে আস্তে গার্মেন্টস খুলেন, এরপর খুলেন নিজের শোরুম আর তারপর নিজের মার্কেট। জীবনে শেখার শেষ নাই, ভাবতেছি এখান থেকে কি শেখা যায়। নতুন মার্কেট ডেভেলাপ ফর ওল্ড প্রোডাক্ট নাকি নতুন মার্কেট ফর নতুন প্রোডাক্ট। ভাবিতে ভাবিতে আমি পেলাম কিছু আইডিয়া .........

এবি ব্লগের বাইরে একটা ঘটক পাখি ভাই এজেন্সী খুলতে পারে। একটু ডিজুস টাইপ ট্র্যান্ডি নাম দিতে পারে “এবি বেবি”। তাতে শুধু ব্লগারদের বিয়ের জন্য ঘটকালি করা হবে। কার সাথে কার সংসার টিকবে কিংবা মিলবে এটার ব্যাপারে নাজমুল ভাই তার অভিজ্ঞতা ব্যবহার করতে পারেন। তবে নুশেরার সিদ্ধান্তই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত ধরা হবে। তরুণ মানসিকতা তরুণরাই বেশি ধরতে পারবে। নাজমুল ভাই এর সরলতার সুযোগ নিয়ে কেউ ফাঁকি দিতে পারে। এবি’র রেজিস্ট্রেশন ফর্মে বয়সের উল্লেখ থাকতে পারে, ১৮ এর নীচে আর ২৮ এর ওপরে বয়স যাদের তাদের আর ব্লগে রেজিস্ট্রেশন দেয়া হবে না। এবং এই ১৮ থেকে ২৮ বয়সধারীদের অবশ্যই অবিবাহিত এবং অপ্রেমিত হতে হবে। এছাড়া প্রেমের আবশ্যিক উপাদান মোবাইল কোম্পানী খুলতে পারে, “এবিটেল”। এবির ম্যারেজ ব্যুরো যারা ইউজ করবেন তাদের অবশ্যই সেটসহ সিম নিতে হবে এখান থেকে, সেই সেট থেকে প্রতিরাতে মিনিমাম ঘন্টা দুয়েক প্রেমের কবিতা আদান প্রদান করতে হবে। অর্থনৈতিক ব্যাপারটা দেখবেন নীড়দ আর মাসুম ভাই। সেই প্রেমের কবিতা লিখবেন এবির কবিরা। ভাস্করদা লিখবেন অভিমান আর বিরহের গুলো আর মীর, নাহিদ ভাই,লিজাসহ বাকিরা প্রেমেরগুলো। ম্যারেজ ব্যুরোর জন্য ফটোসেশন করতেই হবে। সেখানে টুপাইস কামাবেন মেজর আর সাঈদ সাহেব।

কাপলদের ডেটিং করতে অবশ্যই আসতে হবে এবি ক্যাফেতে। অন্য কোথাও গেলে রেজিস্ট্রেশন বাতিল। শাপলা স্পেশাল কফি – চা দিবে। এক কাপ কফি ৮৫০ টাকা আর চা ৮০০ টাকা। দেয়া হবে এবির মনোগ্রামখচিত কাপে। আর প্রেমের গভীরতা মাপা হবে গিফটের দাম ও পরিমান দিয়ে। সেই এবি গিফটও কিনতে হবে এবি’স গিফট কর্নার থেকে। মোষ্ট এলিজেবল ব্যাচেলর সমূহ মানে শর্মি, জয়িতা, রুমিয়া, জেবীন, ফারজানা, মুক্ত, বাফড়া থাকবে গিফটশপ আলো করে। তাদের পটানোর জন্যও যে পরিমান লোক গিফট শপ ভিজিট দিবে তাতেই পয়সা উশুল হয়ে যাবে। টুটুল ভাই নিরিবিলি সব অভজার্ব করবে আর ল্যাপটপে গুটগুট নোট রাখবে। টুটুল ভাইকে উদ্দীপনা উৎসাহ দেয়ার দায়িত্বে থাকবে নাজ আর ঋহান। মেসবাহ ভাই সবাইরে রাখবে ঝাড়ি আর দৌড়ের ওপর। প্রোডাক্টের সাথে প্রমোশনের ব্যাপার আছে। একটা টিভি চ্যানেল খুলতে পারে “এবি টিভি”। সেখানে কোরিয়ান মেয়েদের সাথে বাংলাদেশি ছেলের প্রেম নৃত্য – গীত প্রচারিত হবে। কোরিওগ্রাফার হবেন আমাদের বকলমদা। গায়ক অবশ্যই বাংলার ঐতিহ্য শারিফুদ্দিন। নৃত্য পরিচালনায় তানবীরা। গার্জিয়ানদের সাথে পুলিশি কোন ঝামেলা হলে সেটা সামলাবেন লীনাপা। আর পাত্র পাত্রী ব্লগারদের কাজ হবে রোজ একটা করে লুতুপুতু প্রেমের গল্প কিংবা কবিতা লিখে ব্লগে পোষ্ট দেয়া। ডেভুদেরকে নতুন নতুন প্রেম ভালোবাসা মার্কা ইমো ডেভেলাপ করতে হবে। বিয়ের খাবার দাবারের ক্যাটারিং এর দায়িত্বেও থাকবেন লীনাপা।

কাপলদের নিয়ে মাঝে মাঝে নানা ধরনের ফ্যান্টাসী গেমের আয়োজন করবেন আমাদের জ্বীনের বাদশাহ। এটা দিয়ে কাপলদের আইকিউ টেষ্ট করাও হবে। অবশেষে বিয়ের সানাই বাজলে এবিও তার তরফ থেকে নতুন দম্পতিকে আশীর্বাদ করবে। না অবশ্যই খালি হাতে আশীর্বাদ না। সাহাদাত উদরাজীর লেখা, একশ চৌত্রিশ পৃষ্ঠার বই “বিবাহিত জীবনের যাবতীয় গোপন সুখ, দায়িত্ব-কর্তব্য ও ফজিলত সমূহ” প্রত্যেক দম্পতিকে এক কপি করে দেয়া হবে। বিয়ের দশ বছর পরে একই লেখকের লেখা রিভার্স বুক দেয়া হবে। গরীবের কথাটা বাসি না করে চলেন আজ থেকেই কাজে লেগে পড়ি। শাদী মোবারক।

ডিং ডং
তানবীরা
১২.০২.১১

হলুদ বাটো মেন্দী বাটো

শেয়ার করুনঃ

 |   |   |