ভাল ব্রেকিং নিউজ : তাহেরের বিচার ছিলো অবৈধ: হাইকোর্ট
আমরা অনেক দিন ধরে দাবি করছি কর্নেল তাহের বিচার (আসলে প্রহসনমুলক বিচারের নামে হত্যা) এর নথি প্রকাশের ।
আজ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এম এ তাহেরের সামরিক আদালতে গোপন বিচারের নথি তলব করেছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি তাহেরের গোপন বিচারের জন্য জারি করা সমারিক আইনে জারি করা আদেশ ও এর আওতায় গোপন বিচার ও তাহেরের ফাঁসি কার্যকর করাকে কেনো অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানাতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। (বিস্তারিত প্রতিবেদন এখানে )
প্রাসঙ্গিক বিবচনায় কর্নেল তাহেরকে নিয়ে আমার এক পুরনো রচনা নিচে তুলে দেয়ার জন্য দুঃখিত ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় সামরিক বুৎপত্তি অর্জনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি পাকিস্তান থেকে ছুটিতে এসে এদেশকে স্বাধীন করতে লড়াকুদের ট্রেনিং দিতেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি
যিনি পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি
যিনি সর্ববৃহৎ ১১ নং সেক্টর এর অধিনায়কত্ত্ব করেছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি কামালপুর সম্মুখযুদ্ধে তার বাম পা হারিয়েছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি সেনা অফিসারদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্ছার হয়েছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি সেনাবাহিনীকে উৎপাদনমুখী করার পরকল্পনা করেছিলেন ।
হ্যা
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি
যিনি জাসদ’র বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ও গণবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যিনি সিপাহি জনতার বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ,
মুক্ত করেছিলেন জিয়াকে ।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি-
যাকে জিয়া বলেছিলেন ‘ইউ আর মাই ব্রাদার ,ইউ আর মাই সেভার ’।
হ্যাঁ
আমি কর্ণেল তাহের এর কথাই বলছি -
যিনি ছিলেন প্রথম মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার যাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল ।
তারিখ ২১ শে জুলাই ১৯৭৬ , ভোর ৪টা ।
জীবন মৃত্যুর মুখে একেছো মোহর
পোষ্টম্যান ফেরী করে এখন তোমাকে;
তুমি আর ব্যক্তি নও , তুমি যে খবর
আমাদের প্রতিপক্ষ সে খবর রাখে ?অলক্ষ্যে নিজের মৃত্যু যে পায়নি টের
সে জানে না বিপ্লবের পতাকা তাহের ।
-মুহম্মদ নূরুল হুদা
হ্যাঁ, বিপ্লবের পতাকাই যদি হোন স্বয়ং তাহের তবে, তাকে হত্যা করতে পারে কোন শালা ! নিঃসঙ্ক চিত্তের তাহের কি মরতে পারে ? নাকি কেউ পারে তাকে মারতে ? তাহের নিজেও এটা জানতেন আর তাই "সকালে দাড়ি কেটে, পছন্দের নীল শার্ট পরে, আম কেটে খেয়ে, নিজের রচিত বিপ্লবের কবিতা আবৃত্তি করে ফাঁসির মঞ্চে ওঠেন আর ফাঁসির রশি নিজ হাতে গলায় পরেন " ।
আর এভাবেই কাপুরুষেরা যখন নিজ গৃহকেই পৃথিবী ভেবে আত্মপ্রসাদ লাভ করেছিল তখন তাহের সারা পৃথিবীকেই তার আপন ঘর করে নিয়েছিলেন ।
আর এভাবেই বাঙালীর সংগ্রামী প্রেরণায় তিতুমির, ক্ষুদিরাম, সুর্যসেন, আসাদ, লে. ক. মোয়াজ্জেম , সিরাজ শিকদার প্রমুখের নামের পাশে কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম এর নামও যুক্ত হলো ।
হ্যাঁ যা বলছিলাম , এই সব বিপ্লবীদের শারীরিক হত্যাকান্ডে যারা উল্লাসিত হয়েছিল তাদের মত হাদারামরা বোঝেনি তাতে আসলে বেড়ে গেছে বিপ্লবেরই স্পর্ধা ।
একটু খেয়াল করে দেখুন তো, তিতুমির, ক্ষুদিরাম, সুর্যসেন, আসাদ, লে. ক. মোয়াজ্জেম , সিরাজ শিকদার , তাহের - আজও তাদের উপস্থিতি টের পান কিনা ? স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে-কানসাটে -ফুলবাড়ীতে-ভবদহে ।
অবশ্য, পরবর্তীতে তাহেরের সহযাত্রীদের -
কেউ হয়েছেন জিয়ার জাতীয়তাবাদী থিসিস প্রণেতা
কেউ জাসদ থেকে ইস্থফা দিয়ে বর্তমানে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রধান সওদাগর
কেউ হয়েছেন এরশাদের সংসদের গৃহপালিত নেতা
কেউ হয়েছেন খালেদা সরকারের থিফ অফ বাগদাদ
আর অধিকাংশই পুজির নষ্ট সংগমের বেশ্যা ।
এখানেই জন্ম নেয় নিরাশার বীজ
কিন্তু তারপরও আমি আশাবাদী কারণ
বিল্পবের পতাকা তাহের ।
তাহের মরেনি
তাহেররা কখনো মরে না ।
আমার সাথে তাহেরের দেখা হয় কানসাটে -ফুলবাড়িতে- ভবদহে- নারায়ণগঞ্জে-সাভারে-শাহবাগে-পরিবাগে কিংবা অন্য কোথাও ।
(প্রথম প্রকাশ , স্বাধীনতা যুদ্ধের অপর নায়কেরা // নুরুজ্জামান মানিক ,শুদ্ধস্বর ,একুশে বইমেলা ২০০৯ )
ইটস বেটার লেট দেন নেভার ।
আদালতে দেয়া তাহেরের জবানবন্দী
মানিক ভাই পোস্ট দিলে সেগুলো আসলে প্রিয়তে নেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। পূর্বপ্রকাশিত সংস্করণ পড়ার সৌভাগ্য আমার হয় নি। তাই লেখককে, প্রিয় মানিক ভাইকে অশেষ ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ।
আশাব্যঞ্জক ।
কেমন আছো মানিক? শুভেচ্ছা।
ভাল আছি আপা । ধন্যবাদ ।
আশা জাগানিয়া খবর। সামনে আসুক বিচারের নামে এই সব হত্যার কারণ।
হ ।
কর্ণেল তাহের আমাদের সূর্য সন্তানদের একজন। সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। মানিক ভাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ মনের মধ্যে কালো আলকাতরা লেপে দেয়া এই বিষয়টিতে আলোকপাত করার জন্য। পরবর্তী আপডেটের অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ ।
দারুণ পোষ্ট।
কর্ণেল তাহের লাল সালাম
ধন্যবাদ ।
ইয়েস , ইটস বেটার লেট দ্যান নেভার !
হ ।
একটা প্রিয়তম পোস্ট।
আবারও ধন্যবাদ ।
যাক তাও ত সত্য মানুষের কাছে প্রকাশিত হলো।
সত্য মানুষের কাছে প্রকাশিত হয়নি বরং প্রকাশের পথ খোলা হয়েছে ।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য, কবিতাটা আরেকবার পড়ানোর জন্য।
ধন্যবাদ নুশেরা ।
প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের সময় এসেছে
অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন
সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে কর্নেল তাহেরের প্রহসনের বিচারের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ বন্ধ হয়েছিল। ৩৪ বছর পর আদালত ৫ম সংশোধনী বাতিল করে দেওয়ায় সে বিচার যে প্রহসন ছিল, তা প্রমাণ করার সুযোগ এসেছে। সময় এসেছে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করার। অনেক আশা নিয়ে আদালতের দোরে হাজির হয়েছি। আশা করছি, যে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল, সে অপবাদ দূর হবে। সরকার এ বিচার কাজে সহযোগিতা করবে। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে। কর্নেল তাহেরকে বিচারের নামে সম্পূর্ণ প্রহসন করে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। আমরা ৩৪ বছর পর আপিল করেছি। আশা করছি সরকার এর বিরুদ্ধে দাঁড়াবে না, প্রতিপক্ষ হয়ে বিচার কাজকে বাধাগ্রস্ত করবে না।
১৯৭৬ সালে বৈধ সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আমরা চার ভাই কর্নেল তাহের বীরউত্তম, আবু ইউসুফ বীরবিক্রম, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীরপ্রতীক এবং আমিসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে তৎকালীন সরকার। যে অভিযোগে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে সেই ১২১(ক) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। কিন্তু তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের এ রায়ে তৎকালীন সরকারের প্রধান কেঁৗসুলি এটিএম আফজাল হোসেনও অবাক হয়েছিলেন। বলেছিলেন, 'এটা তো কোনোদিন হতে পারে না।' রায় ঘোষণা হয়েছিল ১৯৭৬ সালের ১৭ জুলাই। তৎকালীন আইন সচিব রায়ের ফাইলসহ জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছিলেন, যে অভিযোগের ভিত্তিতে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, সে অভিযোগে কাউকে ফাঁসি দেওয়া যায় না। কিন্তু জিয়াউর রহমান সে ফাইল ছুড়ে ফেলে নির্দেশ দিয়েছিলেন, 'ফাঁসি কার্যকর করার ব্যবস্থা করেন, আর আইন তৈরি করেন।' সে আইনও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সে আইন হয়েছিল ২১ জুলাই ভোর রাত ৪টায় কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দেবার দশদিন পর ৩১ জুলাই।
৭ নভেম্বর নেতৃত্ব দিয়ে সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেন কর্নেল তাহের। কিন্তু মুক্ত হয়েই তিনি সবাইকে গ্রেফতার করেন। ৩৩ জনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বৈধ সরকারকে উৎখাতের মামলা করেন। ১৯৭৬ সালে সামরিক অধ্যাদেশ ১৬ জারি করে 'এক নম্বর বিশেষ সামরিক ট্রাইব্যুনাল' গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালে ৫ জন বিচারক ছিলেন। চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার ইউসুফ হায়দার মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস ঢাকায় বসে পাকিস্তানিদের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। জিয়াউর রহমান তাকেই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিয়োগ করেন। এছাড়া বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার মোহাম্মাদ আবদুর রশীদ ও নৌবাহিনীর অস্থায়ী কমান্ডার সিদ্দিক আহমদ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ আবদুল আলী ও হাসান মোর্শেদকে ট্রাইব্যুনালে সদস্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কঠোর গোপনীয়তায় বিচার কার্যক্রম চলেছে। অধ্যাদেশের কারণে রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করতে পারিনি। আমাদের কেঁৗসুলিদেরও শপথ নিয়ে শুনানিতে অংশ নিতে হয়েছে। আতাউর রহমান খান, অ্যাডভোকেট আমিনুল হক, অ্যাডভোকেট গাজীউল হক, অ্যাডভোকেট আবদুর রউফ (পরবর্তীকালে বিচারপতি), অ্যাডভোকেট শরিফউদ্দিন চাকলাদার (বর্তমান বিচারপতি), জুলমত আলী খান (মরহুম) আমাদের পক্ষে কেঁৗসুলি হিসেবে কাজ করেছেন। কিন্তু তাদেরও গোপনীয়তার শপথ পাঠ করতে হয়েছে। বিচার কাজের কোনো তথ্য বাইরে প্রকাশ করলে তাদের সর্বোচ্চ ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান ছিল। তাই বাইরের কেউ কিছু জানতে পারেনি। শুধু ১৭ জুলাই যে রায় ঘোষিত হয়েছিল, তা পরের দিন বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
বিচার কাজ শুরুর আগে আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। ১৯৭৬ সালের ২১ জুন বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ওইদিনই তা ২৭ জুন পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। ২৮ জুলাই পর্যন্ত সরকার পক্ষের সাক্ষী, আইনজীবীরা বক্তব্য রাখেন এবং অন্যান্য কার্যক্রম চলে। ১০ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত আসামিপক্ষ বক্তব্য রাখার সুযোগ পায়। প্রথমদিকে আমরা বক্তব্য রাখি। ১৩ এবং ১৪ জুলাই, দু'দিন মিলিয়ে কর্নেল তাহের ৬ ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন। ১৭ জুলাই বিকেলে রায় ঘোষণা হয়। অবশ্য এ রায় আগেই আর্মি হেডকোয়ার্টারে নির্ধারিত হয়েছিল। বিচারক শুধু তা পাঠ করেছিলেন। কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ১৭ জনের সাজা হয়েছিল। বাকি ১৬ জনের মুক্তি।
আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধু খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে কত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। কত সময় লেগেছে। কিন্তু কর্নেল তাহেরকে দণ্ডাদেশের রায় ঘোষণার মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ১৭ জুলাইর বিকেলে রায় ঘোষণা এবং ২১ জুলাই ভোর রাতে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করারই সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি যে রায় ঘোষণা হয়েছে, সে রায়ের কপিও আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ অনিয়মের বিরুদ্ধে গত ৩৪ বছর লড়াই করেছি। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকার একটি সংবাদকে ভিত্তি করে পুরো প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। (সমকাল )
এই অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন কর্নেল তাহেরের ছোট ভাইটা না?
হ । ঠিকই ধরেছেন ।
আসলেই একটা ভাল নিউজ।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে এসব রাজনৈতিক ও সামরিক হত্যাকান্ডের বিচার নতুন করে শুরু হয় বা চেষ্টা চলে। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জিয়া হত্যার রহস্য বের করার কোনো আগ্রহও দেখা যায় না। আজব একটা দল।
হ । খালেদার রাজনীতি আসলে বোঝা বড় দায় । ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ জিয়ার গ্রেফতারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল মেজর হাফিজের যাকে তিনি দলের মহাসচিব ও মন্ত্রী বানান ! ৩০ মে ১৯৮১ জিয়া হত্যার পর মঞ্জুরের পক্ষে এরশাদের সাথে দরকষাকষিতে লিপ্ত ব্রি হান্নান শাহ খালেদার উপদেষ্টা !! পাওয়ারে আসার ৬ মাসের মাথায় জিয়া উৎখাত ও ক্যুর নায়ক খুনি ফারুকের ফাসিতে খা লেদা ছিলেন প্রতিক্রিয়াহীন !! ব্লগাস্ফিয়ারে দেখা গেছে খুনিদের প্রতি এদের মায়াকান্না আর তেনা পেচানি !! জিয়া হত্যা মামলা খালেদার আমলেই করা হয় স্থবির !!
এই হাফিজ অন্য হাফিজ। মন্ত্রি হাফিজ না।
আর খালেদার অনাগ্রহরের আরেকটা কারণ হতে পারে যে, এরশাদ ছাড়াও জিয়ার মুত্যুর অনেক বড় বেনেফিসিয়ারি তিনি নিজে ও তার পুত্ররা।
এই হাফিজই সেই হাফিজ । জিয়াকে গ্রেফতার করেন ক্যাপ্টেন হাফিজুল্লাহ কিন্তু নেপথ্যে ছিলেন শাফায়াতের ব্রিগেড মেজর হাফিজ ।৭ তারিখে হাফিজ গ্রেফতার ও বঙ্গভবনে বন্দী ছিলেন । চলুন ঘুরে আসি -
নভেম্বর ৩ , ১৯৭৫ লিখেছেন : নুরুজ্জামান মানিক ০৩ নভেম্বর (মঙ্গলবার), ২০০৯
১৯৭৫ সালের নভেম্বর ৩-৭ এই অশান্ত পাঁচদিনে ঘটনা ঘটছিলো অত্যন্ত দ্রুততার সাথে । এখানে আমি শুধু ৩ তারিখের ঘটনাগুলি তুলে ধরবো।ঘটনা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেবার ভার পাঠকের উপর ছেড়ে দিলাম।)
রাত ১ টার মধ্যে বঙ্গভবনে মোতায়েন মেজর ইকবালের ১ম বেঙ্গলের সব ট্রুপস প্রত্যাহার করার মাধ্যমে সিজিএস ব্রি. খালেদের নেতৃত্বে অভ্যুথান সূ্চনা। [১] ক্যাপ্টেন হাফিজউল্লাহ রাত ১২ টার সঙ্গে সঙ্গেই জেনারেল জিয়াকে গৃহবন্দী করেন ।[২]পরে ক্যাপ্টেন তাজ ( বর্তমান সরকারের প্রতিমন্ত্রী ) গিয়ে জিয়ার বাসার টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন করেন ।[৩] অবশ্য এর আগেই জিয়া কর্ণেল(অব) তাহেরের সাথে কথা বলেন । জিয়ার গ্রেফতারে গুরুত্বপূর্ণ ভূ্মিকা ছিল ব্রিগেড মেজর হাফিজের।[৪] রাতের অন্ধকারে ৪৬ ব্রিগেডের ইউনিটগুলো ক্যান্টনমেন্ট ও শহরের বিভিন্নস্থানে কৌশলগত অবস্থান নেয় । ট্যাংক হেডকোয়ার্টার থেকে সম্ভাব্য হামলা মোকাবেলায় স্টাফ রোডের রেলক্রসিং রোড ব্লক করেন লেঃ কর্ণেল গাফফারের নেতৃত্বে একটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন ও ২য় বেঙ্গলের দুটি কোম্পানি । বেতার -টিভির নিয়ন্ত্রণ নেয়া হয় । বেতার কার্যক্রম বন্ধ করা হয় । চতুর্থ বেঙ্গল থেকে অপারেশন পরিচালনা করছেন ব্রি. খালেদ । সাথে আছেন কর্ণেল শাফায়াত জামিল , কর্ণেল মালেক , ব্রি. রউফ, ব্রি. নুরুজ্জামান, মেজর হাফিজ, মেজর ইকবাল, মেজর নাসির প্রমুখ ।[৫] এভাবেই শুরু হল এক রক্তপাতহীন নিরব অভ্যুথান ।
মোশতাকের উপদেষ্টা জেনারেল ওসমানী জেনারেল খলিলকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেন বিডিআর-এর দু’টো রেজিমেন্ট বঙ্গভবনে পাঠিয়ে দিতে । ফারুককে বলা হয় রেসকোর্সে তার ট্যাঙ্ক রেজিমেন্টের কাছে চলে যেতে। ফারুক সাথে সাথে ট্যাঙ্কগুলি সচল করে। রশিদ আর ওসমানী বঙ্গভবনে থেকে টেলিফোন করছেন খালেদকে। জিয়ার সাথে আলাপের চেষ্টা করে ব্যর্থ ।বঙ্গভবন ও রেসকোর্সের সবগুলি ট্যাঙ্ক ফাইটিং এর জন্য তৈরি । এদিকে ২য় ফিল্ড রেজিমেন্টের কামানগুলিও আক্রমনাত্বক পজিশনে । "লড়বো নয় মরবো" । [৬]
এদিকে রিসালদার মোসলেমের নেতৃত্বে একটা ঘাতকদল প্রবেশ করে কারাগারে | দিবাগত রাত ৪টায় ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিআইজি(প্রিজন) ফোন করেন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাকেকে।
রাষ্ট্রপতির আদেশ আসে- ওরা যা করতে চায় করতে দিন।[৭]এরপরে এক সারিতে দাঁড় করিয়ে কারাগারে অন্তরীণ মুক্তিযুদ্ধের চারস্তম্ভ তাজউদ্দিন আহমেদ,আ.হ.ম.কামরুজ্জামান ,সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং মনসুর আলীকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হলো। [৮] অবশ্য,তাজউদ্দিনকে শুধু ব্রাশফায়ারে মারা যায়নি । মৃত্যুর আগে পানি পান করতে চেয়েছিলেন তিনি। [৯] পিঁপাসা মেটানো হয়েছিলো তাঁর হৃদপিন্ডে বেয়নেট চার্জ করে যে হৃদয়ে বাংলাদেশ ছিলো। [১০]
এদিকে খালেদের অভ্যুথানের পক্ষে আকাশে দুইটা মিগ জঙ্গী বিমান ও একটি রাশিয়ান হেলিকপ্টার বঙ্গভবন ও রেসকোর্সের উপর দিয়ে বৃত্তাকারে উড়তে থাকে । এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূ্মিকা পালন করেন স্কোয়াড্রন লিডার লিয়াকত ।[১১]
খালেদের সাথে আলাপ ও সমঝোতা করতে ডালিম নুরকে সাথে নিয়ে ফুলার রোডে প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাকের বাসা থেকে খাকি পোষাক বদলে সাধারণ কাপড় পরে রওনা দিল ক্যান্টনমেন্টে ।[১২]
কিছু পরে আলোচনায় সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদের প্রতিনিধি কর্ণেল মান্নাফ এবং কর্ণেল মালেক (এরশাদের আমলে মন্ত্রী,ঢাকার মেয়র )কে সাথে করে ডালিম-নুর ফিরে এলো বঙ্গভবনে খালেদের দাবিনামা সমেত। খালেদের দাবিনামা ছিলঃ (ক) ট্যাঙ্ক বহরকে নিরস্ত্র করে সেনানিবাসে ফেরত পাঠাতে হবে । (খ) জেনারেল জিয়ার স্থলে একজন সেনাপ্রধান নিয়োগ করতে হবে । (গ) মোশতাক প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন তবে,বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে এবং যে সব দেশসমুহ দুঃসময়ে বাঙ্গালী জাতির বন্ধু হিসেবে এগিয়ে এসেছিলো তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে । [১৩]
দাবিনামা শোনার পর মোশতাক-ওসমানি ব্যর্থ পদত্যাগ নাটক করে । ডালিম রাগান্বিত হয়ে ওসমানিকে বলে , আপনি ফারুক-রশিদদের আত্মসমর্পন করতে বলুন । [১৪]এভাবে ঘন্টা তিন ধরে দরকষাকষি চলে । দরকষাকষি চলাকালিন বঙ্গভবন ও রেসকোর্সের উপর দিয়ে মিগ জঙ্গী বিমান ও রাশিয়ান হেলিকপ্টারের টহল অব্যাহত থাকে ।
জেনারেল খলিল আইজি পুলিশ মারফত জানতে পারেন জেলে চারনেতা হত্যার কথা । খলিল জানায় মোশতাকের সচিব চাষীকে । চাষী মোশতাকের রুমে ঢুকে । কয়েক মিনিট পর চাষী বেরিয়ে এসে বলেনঃ "উনি জানেন !" জেনারেল খলিল অজ্ঞাত কারণে এই খবরটি আর কাউকে জানাননি |[১৫]
মেজরদের ব্যারাকে ফেরত পাঠানোর কথা শুনে রশিদ মোশতাককে বলে , স্যার আমরা কিছুতেই ওখানে যাবো না । এর চেয়ে বরং আমাদের দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিন । খালেদকে মোশতাক অনুরোধ করে মেজরদের নিরাপদে দেশত্যাগ করতে দেয়ার জন্য । খালেদ গ্রুপ তাতে সম্মত হয় । এভাবে উভয়পক্ষের সম্মতিতে মেজরদের দেশত্যাগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় । বিমান বাহিনী প্রধান তোয়াব আর পররাষ্ট্র দপ্তরকে দায়িত্ব দেয়া হয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহনের যেন মেজররা নিরাপদে ব্যাংকক যেতে পারে । [১৬]
বিকেলে সেনাবাহিনীর কিছু সংখ্যক সিপাহি, এনসিও, জেসিও নারায়নগঞ্জে কর্ণেল তাহেরের সাথে দেখা করে তাকে পুরো পরিস্থিতি অবহিত করে । [১৭]
সন্ধা ৮:৪৫ মিনিটে তেজগাও বিমান বন্দরে অপেক্ষারত ফক্কর বিমানে আরোহন করে ১৭ মেজর তাদের স্ত্রী পরিজনসহ ব্যাককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করে । [১৮] খালেদদের অলক্ষ্যে ক্যান্টনমেন্টেই রয়ে যায় একজন ! (এর কথা বলবো ৭ তারিখে )
এভাবেই সপরিবারে বঙ্গবন্ধু ও জেলহত্যার হোতারা নিরাপদে দেশত্যাগ করল । জেল হত্যার ঘটনা খালেদ -শাফায়াতরা জানলেন পরেরদিন সকাল দশটায় !![ ১৯]
রেফারেন্সঃ
১। Bangladesh: A Legacy of Blood, by Anthony Mascarenhas, Hodder and Stoughton, 1986
২।একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ রক্তাক্ত মধ্য আগষ্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর , কর্নেল শাফায়াত জামিল ।
৩। ভোরের কাগজ, ৪ নভে ২০০৬
৪। তিনটি সেনা অভ্যুথান ও কিছু না বলা কথা , লে কর্নেল এম এ হামিদ ।
৫। Anthony Mascarenhas, ibid;লে কর্নেল এম এ হামিদ, প্রাগুক্ত ।
৬।Anthony Mascarenhas, ibid; যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি , লে.কর্নেল (অব) শরিফুল হক ডালিম; লে কর্নেল এম এ হামিদ, প্রাগুক্ত ।
৭।প্রাগুক্ত; লে কর্নেল এম এ হামিদ, প্রাগুক্ত ।
৮। প্রাগুক্ত ; জেল হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায় ।
৯।Anthony Mascarenhas, ibid ।
১০। Anthony Mascarenhas, ibid ; পিয়াল ভাইয়ের ব্লগ ।
১১। Anthony Mascarenhas, ibid ; লে কর্নেল এম এ হামিদ, প্রাগুক্ত ;কর্ণেল শাফায়াত জামিল, প্রাগুক্ত ।
১২। যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি , লে. কর্নেল (অ) শরিফুল হক ডালিম ।
১৩।Anthony Mascarenhas, ibid ;মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বরূপ , মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি ।
১৪। মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি,প্রাগুক্ত ; Anthony Mascarenhas, ibid
১৫। Anthony Mascarenhas, ibid ; লে কর্নেল এম এ হামিদ, প্রাগুক্ত ।
১৬। প্রাগুক্ত ।
১৭।ঝন্ঝাবিক্ষুব্ধ সেই দিনগুলো,লুৎফা তাহের ।
১৮। Anthony Mascarenhas, ibid ; লে কর্নেল এম এ হামিদ, প্রাগুক্ত ।
১৯। কর্নেল শাফায়াত জামিল, প্রাগুক্ত।
শাফায়াত জামিলের বইটি আমার কাছে বেশি নির্ভরযোগ্য মনে হয়। গ্রেপ্তার করতে যান হাফিজউল্লাহ। মেজর হাফিজ কি গিয়েছিলেন?
সত্য । কিন্তু আপনি কি একটা ব্যাপার বুঝছেন না নাকি বুঝতে চাচ্ছেন না । হাফিজুল্লাহ কার অধীনস্ত ছিল ? ক্যাপ্টেন হাফিজুল্লাহ কি অভ্যুত্থানের নায়কদের অন্যতম নাকি খালেদ -শাফায়াত-হাফিজ-নাসির-ইকবাল প্রমুখ নায়ক । বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করতে যান হুদা-মহিউদ্দিন , পরে গুলি করেন নূর কিন্তু ফারুক-রশীদ কি দায় থেকে অব্যাহতি পান ? খালেদের ক্যুর সাথে শুধু সংশ্লিষ্টতায় নয় , অন্যতম সক্রিয় নায়ক ছিলেন শাফায়াতের ব্রিগেড মেজর হাফিজ । ৭ তারিখে বঙ্গভবনে হাফিজ -তাজ-জাফর ইমামরা বন্দী ছিলেন ।
আমি সেটা বলি নাই। গত বিএনপির সময়েই এটা নিয়ে বড় বিতর্ক হয়েছিল। কোন হাফিজ সেইটা নিয়ে। কে সশরীরে গিয়েছিল সেইটা আমি জানতে চাইছি।
পুরো ঘটনার পেছনে কে কে সেটাও আমার পড়া আছে। সেখানে বিতর্ক্ও নেই।
মেজার হাফিজের প্রতি কোনো ধরণের টান আমার নাই। সুতরাং এখানে বোঝা না বুঝতে না চাওয়ার কিছু নাই।
মাণিক ভাই রাগলেন মনে হয়। ক্ষেপছেন কেন?
আরে না , রাগলাম কৈ । এই লন আমার হাসি-

ধন্যবাদ । আমি কিন্তু কোথাও বলিনি যে , মেজর হাফিজ গ্রেফতার করতে যান ।বরং রেফারেন্সসহ বলেছি
ক্যাপ্টেন হাফিজউল্লাহ রাত ১২ টার সঙ্গে সঙ্গেই জেনারেল জিয়াকে গৃহবন্দী করেন ।[২]পরে ক্যাপ্টেন তাজ ( বর্তমান সরকারের প্রতিমন্ত্রী ) গিয়ে জিয়ার বাসার টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন করেন ।[৩] অবশ্য এর আগেই জিয়া কর্ণেল(অব) তাহেরের সাথে কথা বলেন । জিয়ার গ্রেফতারে গুরুত্বপূর্ণ ভূ্মিকা ছিল ব্রিগেড মেজর হাফিজের।[৪]
যা হোক, সশরীরে গ্রেফতারকারি কিংবা নেপথ্য নায়কদের নিয়ে যেহেতু আমাদের বিতর্ক নেই তাই শুধু শুধু আলাপ বাড়িয়ে সময়-শ্রম নষ্ট করার মানে হয় না । এখানেই ইতি টানছি ।
আপনার পাঠের প্রতি আমার আস্থা আছে । আমি সেরকম মিন করতে চাইনি , আপনার সাথে আলাপের উছিলায় এখানে প্রসঙ্গগুলি তুলেছি এবির ব্লগার -পাঠকদের উদ্দেশ্যে । বেয়াদবির জন্য মাফ চাইছি মাসুম ভাই ।
আরে ধুর। আমরা আমরাই তো।
উপরে কমেন্টে ছবি দেখেন ।
দেখলাম। সিনেমায় নামেন। প্রভা, নোভার মতো কত সুন্দরী নায়িকা আছে, আর আপনে কিনা লুকাইয়া আছেন।
পাগলা ঘোড়া কই থেকে কই চইলা গেল।
প্রভার কথা কইয়েন না।বেচারী এক ডিগবাজী দিতে গিয়া যেই ধরাটা খাইছে।
মাসুম ভাইয়ের মাসুম কমেন্টে হাজার খানেক ঝা জা
মাসুম ভাইকে বিশেষ ধন্যবাদ। মানিক ভাইয়ের কাছ থেকে আরো কিছু মণি-মানিক বের করে দেয়ার জন্য।
আপডেট :
১। কর্নেল তাহেরকে সামরিক আদালতে ফাঁসি দেয়ার পুরো দায় তখনকার সামরিক প্রশাসক জিয়াউর রহমানের। আর সে সময় রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সায়েম ছিল পাপেট (পুতুল)। গতকাল কর্নেল তাহেরের সামরিক আদালতে ফাঁসির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, কর্তার ইচ্ছায় কর্ম হয়। জিয়াউর রহমান যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই বিচার হয়েছে। আদালত এ মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার জন্য কর্নেল তাহেরকে যে সামরিক আদালতে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল ওই আদালতে বিচার হওয়া বর্তমানে জীবিত কয়েকজনকে আমন্ত্রণ জানান। আদালত বলেন, তারা চাইলে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এ মামলায় চলতি সপ্তাহের মধ্যে সাক্ষ্য দিতে পারবেন। এরা হলেন মেজর (অব.) জিয়া উদ্দিন, আসম আব্দুর রব, হাসানুল হক ইনু, সিরাজুল আলম খান, শরিফ নুরুল আম্বিয়া ও মাহমুদুর রহমান মান্না। আদালত তাদের সাক্ষ্য দিতে আমন্ত্রণ জানাতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান ও অ্যাডভোকেট শম রেজাউল করিমকে বলেন। যেহেতু এ মামলায় তেমন কোনো আলামত পাওয়া যায়নি তাই তাদের সাক্ষ্য মামলা পরিচালনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও আদালত মন্তব্য করেন। সুত্রঃ আমাদের সময়, ১১ জানু ২০১১
২। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া অবসরপ্রাপ্ত মেজর জিয়া উদ্দিন মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, "বিচারের আগেই জিয়াউর রহমান উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের সামনে রায় অনুমোদন করিয়ে নিয়েছিলেন। সেখানে মেজর মঞ্জুরসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা তাহেরের মৃত্যুাদণ্ডাদেশের বিরোধিতা করেন। "এতে জিয়া বলেছিলেন, 'তাহেরের ব্যাপারে তিনি মৃত্যুদণ্ড ব্যতিত অন্যকিছু শুনতে চান না।'" মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এএইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের বেঞ্চে সাক্ষ্য দেওয়ার পর সাংবাদিকদের একথা বলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জিয়া উদ্দিন। সুত্রঃবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ।
৩। রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানিতে গতকাল ইনু আদালতে প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টার বক্তব্যে বলেন, ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে শামরিক আদালতে ১৭ দিনের বিচার ছিল একটা ক্যামেরা ট্রায়াল। সেখানে আমাদের কোনো বক্তব্যের সুযোগ ছিল না। জিয়াউর রহমানের ইচ্ছায় সম্পূর্ণ গোপন ওই বিচারে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি এবং আমাকে, মেজর জিয়াউদ্দিন, আসম আব্দুর রব, মেজর জলিল, আবু ইউসুফ খানসহ কয়েকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই বিচার ছিল সম্পূর্ণ অবৈধ ও অসাংবিধানিক। এর মাধ্যমে কর্নেল তাহেরসহ আমাদের অসম্মান করা হয়েছিল। আমরা আদালতের মাধ্যমে আমাদের সম্মান ফিরে পেতে চাই। জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসকারী মীর জাফর উল্লেখ করে তার মুখোশ জনগণের সামনে উšে§াচন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন এ জাসদ নেতা। তিনি বলেন, সমস্ত অপকর্মের হোতা ছিলেন জিয়া। তখনকার রাষ্ট্রপতি সায়েম ছিলেন তার পোষা বেড়ালের মতো।সুত্রঃ আমাদের সময়, ১২ জানু ২০১১
চমৎকার মানিক ভাই
এই মামলায় সাক্ষ্যদের কথাবার্তা থেকে একটা জিনিস শিখলাম আর তা’ হলে সত্য ধ্রুব নয় তাও সময়ের সাথে বদলায় । মুজিবামলে সারাদেশে মরেছে ও মেরেছে জাসদ । সেই জাসদের গণবাহিনীর অধিনায়ক ইনু বা তাহেরের ভাই আনোয়ার স্যার যখন আওয়ামী মুখপাত্রের ভুমিকায় আসিন হন তখন সত্য তো জানালা দিয়ে পালাবেই ।
আপডেট:
জিয়াউর রহমানের পরিকল্পনায়ই সামরিক আদালতে বিচারের মাধ্যমে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয় বলে আদালতকে জানিয়েছেন লরেন্স লিফশুজ। তাহেরের গোপন বিচারের বৈধতা নিয়ে একটি রিট আবেদনে হাইকোর্ট ফার ইস্টার্ন ইকোনোমিক রিভিউ'র এ সাংবাদিকের বক্তব্য শুনতে চেয়েছিলো। ই-মেইলে পাঠানো তার বক্তব্য বৃহস্পতিবার বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী এবং বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের বেঞ্চে উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান চলে। এরই এক পর্যায়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নেওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এমএ তাহেরসহ ১৭ জনকে সামরিক আদালতে গোপন বিচারে ১৯৭৬ সালের ১৭ জুলাই সাজা দেওয়া হয়। এরপর ২১ জুলাই ভোররাতে কর্নেল তাহেরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ওই সময় লিফশুজকে বহিষ্কার করা হয় বাংলাদেশ থেকে। তাহেরের গোপন বিচারের বৈধতা নিয়ে তার স্ত্রী ও ভাই গত বছরের ২৩ অগাস্ট রিট আবেদন করলে বিষয়টি আবার আলোচনায় উঠে আসে। এম কে রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "লিফশুজ গতকাল (বুধবার) তার বক্তব্য ই-মেইলের মাধ্যমে আমার কাছে পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসেও এভিডেভিটকৃত তার বক্তব্যের একটি কপি জমা দেওয়া হয়েছে।"
"লিফশুজ বলেছেন, সব আইন কানুন ও সংবিধান লঙ্ঘন করে তাহেরকে ওই বিচারের মুখোমুখি করা হয়। জিয়াউর রহমানের পূর্ব নির্ধারিত পরিকল্পনায় তাহের সেখানে বিচারিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন", বলেন তিনি।
লিফশুজ আরো জানিয়েছেন, তৎকালীন মেজর জেনারেল এম মঞ্জুর তাহেরের বিচার ও ফাঁসি ঠেকাতে চেষ্টা করেও সফল হননি।
লিফশুজ বলেছেন, তিনি এ বিষয় নিয়ে জিয়াউর রহমানের একটি সাক্ষাৎকার নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জিয়া তাতে রাজি হননি। পরে জিয়ার সম্মতিতে লিখিত প্রশ্ন পাঠালেও তার উত্তর মেলেনি। গত ২০ জানুয়ারি হাইকোর্টের এই বেঞ্চ হংকং থেকে প্রকাশিত পত্রিকা ফার-ইস্টার্ন ইকোনোমিক রিভিউ এর সাংবাদিক লিফশুজকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলো। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ তার সঙ্গে ইমেইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি বাংলাদেশে আসতে পারবেন না। এ সময় আদালত ওই বিচার সম্পর্কিত একটি লিখিত প্রতিবেদন দিতে লিফশুজকে অনুরোধ জানানোর জন্য এমকে রহমানকে নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার আদালত কর্নেল তাহেরের বিচারের সময় সেনাবাহিনীতে কর্মরত মেজর জেনারেল নূরুল ইসলাম শিশুকে আদালতে হাজির হওয়ার সময়সীমা ১৩ ফেব্র"য়ারি পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। শিশুকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। তাহেরের বিচারের বৈধতা নিয়ে রিট আবেদনের পর সে গোপন বিচারের নথি তলব করে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাহেরের বিচারের জন্য সামরিক আইনের মাধ্যমে জারি করা আদেশ এবং এর আওতায় গোপন বিচার ও ফাঁসি কার্যকর করাকে কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না- তা জানাতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সামরিক আদালতে তাহেরের গোপন বিচারের বৈধতা নিয়ে আরো দুটি রিট আবেদনও হয়েছে। (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
সদ্য সংবাদ
তাহেরের বিচার ছিলো অবৈধ: হাইকোর্ট
মন্তব্য করুন