কক্সবাজার নারিকেল জিঞ্জিরা ভ্রমন ৪ : বিদায় দারুচিনি দ্বীপ এবং ২০০৯
সকালে জিশান জানায় মাঝ রাতে মাছ ধরার নৌকা দিয়ে সমূদ্রে ঘুরে এসেছে। এখানে তার বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছে, তাদের সাথে। খুব আফসোস লাগে, এমন সুযোগ কি আর পাওয়া যাবে!
আমাদের আজকের সকালের গন্তব্য ছেঁড়া দ্বীপ। নাস্তা করে জেটিতে গিয়ে ট্রলারে উঠি। আরো বেশ কয়েকটা ট্রলারে মানুষ উঠছে। সবগুলো যাবে ছেঁড়া দ্বীপে। ট্রলার সবুজাভ নীল পানি কেটে এগিয়ে যায় এক পাশে সমূদ্র এক পাশে নারিকেল জিন্জিরা রেখে। ত্রিশ চল্লিশ মিনিট লাগে ছেঁড়া দ্বীপে পৌছতে। তীরে উঠতে আবার নৌকা লাগে, ট্রলার ভিড়তে পারেনা।
তীর জুড়ে পাথরের বড় বড় খন্ডের মত কালো প্রবালের পাথর। জোয়ারের সময় ডুবে যায় দ্বীপটা তাই মানুষের বসতি নাই। কিন্তু ব্যাবসা আছে। মাছ, কাকড়া ভেজে বিক্রি করছে। আমরাও খেলাম ভাজা মাছ ও ডাব। হাটতে হাটতে আমরা পশ্চিম পাশে আসি। প্রবালের উপর আছড়ে পরছে ঢেউ। আশে পাশে শত শত মানুষ। মধ্যবিত্ত বাঙালি বেড়ানো শুরু করছে বোঝা যায়। বয়স্ক মহিলারা পর্যন্ত দেশের সর্ব দক্ষিণ প্রান্তে চলে এসেছে। ভালো লাগে দেখতে সকলের আনন্দ।
গাইড বলে দিয়েছিল বারটার মধ্যে ফিরতে। দ্রুত সময় কেটে যায়। দ্বীপের পুরাটা ঘুরে দেখা হয় না। ফিরতে হয়। বিকালে জাহাজে উঠতে হবে টেকনাফের পথে। নারিকেল জিন্জিরায় এসে আবার সমূদ্রে নামি। মন ভরে গোসল করে খেয়ে দেয়ে ব্যাগ পোটলা নিয়ে জাহাজে উঠি। সেন্ট মার্টিন আরো লোকে গমগম করছে। দ্বীপে থার্টি ফার্সট উদযাপনের জন্য প্রচুর পর্যটক। স্থানীয় লোকের ভাষায় চেন্ট মার্টিনে তার্টি পাস্ট। আমার ইচ্ছা ছিল এই দিনটা টেকনাফে কাটাতে। টেকনাফের সৈকত, নাফ নদী এবং সুযোগ হলে একদিনের টিকিটে বার্মা ঘুরে আসা। কিন্তু থার্টি ফাস্টে কোথাও ব্যাবস্থা করা গেলনা। অনেক চেষ্টার পরও । সবই বুকড। তাই আবার কক্স বাজার।
বিদায় নারিকেল জিঞ্জিরা। বিকালে জাহাজের দল ফিরে চলে টেকনাফের পথে। পেছনে থাকে স্বপ্নের দারুচিনি দ্বীপ। পেছনে তাকিয়ে থাকি আস্তে আস্তে ছোট হতে থাকা দ্বীপের দিকে। হাত নেড়ে বিদায় জানায়। বলে আবার এসো। আমি বলি, আসব ।
টেকনাফ পৌছে মাইক্রো। টেকনাফ টু কক্সবাজার। মাঝপথে গাইড কবির আমাদের চা নাস্তা করায় টেকনাফের কোনো এক বাজারে। হোটেলে ফিরতে ফিরতে রাত। এবার কবির বিদায় নেয় আমাদের কাছ থেকে। তার দায়িত্ব শেষ। আগামী কাল অন্য কোনো মানুষদের ঘুরিয়ে আনবে সেন্ট মার্টিনস। ছোট একটা ছেলে প্রত্যন্ত এলাকার। কিন্তু গাইড হিসাবে তার প্রফেশনালিজম আন্তরিকতায় আমরা সবাই মুগ্ধ।
বিশ্রাম নিয়ে বের হই। প্রথমে পেট ভরতে। তারপর সৈকতের উদ্দেশ্যে। বছরের শেষ দিন কক্সবাজারের সৈকতে কাটাতে সারা দেশের মানুষ যেন চলে এসেছে। ঢাকার মত যাটজট রাস্তায়। জিশানের পরামর্শে শর্টকাটে যাওয়ার আশায় হাটতে হাটতে যান শেষ। মাঝখানে পর্যটনের মোটেল শৈবালের চমৎকার দিঘির পাশে বসে জিড়াই। বালুর উপর হাটতে আরো পরিশ্রমের। পরিশ্রান্ত আমরা যখন সৈকতে আসি তখন অনুষ্ঠান হচ্ছে ক্লোজআপ ওয়ানের শিল্পীদের। রিমঝিম ভীষণ অবাক, টেলিভিশনের ছালমা এইখানে আসল কীভাবে! হাজার হাজার নারী পুরুষে সৈকত পূর্ণ।
বারোটা বাজতেই আতশবাজি ফানুস উড়িয়ে বরণ করা হয় নতুন বছরকে।
কক্সবাজার নারিকেল জিঞ্জিরা ভ্রমন ১ : প্রস্তুতি
কক্সবাজার ও নারিকেল জিঞ্জিরা ভ্রমন ২ : সমূদ্র সৈকতে
কক্সবাজার ও নারিকেল জিঞ্জিরা ভ্রমন ৩ : দারুচিনি দ্বীপে
আমিও ছোটবেলায় এরকম ভাবতাম
ছবি লেখা সব মিলিয়ে দারুণ
আহ্, এখনি চলে যাইতে ইচ্ছা করতেছে
এবিতে খালি লোকজন ভ্রমণের পোস্ট দেয় কেন? এগুলা পড়লেই মন রহে না ঘরেতে আর। যামুগা হালায় যেদিকে দুচোখ
বর্ণনা আর ছবিগুলো দেখে মন আর স্থির থাকে না। দারুণ সব ছবি।
জোশ তোহ!...
নারিকেল জিঞ্জিরায় গিয়া আপনের না একবার পঁচা শামুকে পা কাটছিলো?
ছবি দেখে আমারও নারিকেল জিঞ্জিরায় যেতে মন চায়। আছেন নাকি কোনো মমিন বান্দা পথ দেখাইবেন?
পুরাতন সেইন্ট মার্টিনে গেছিলাম.. যখন কোন বিল্ডিং ছিল না...
এর পর আর যাওয়া হয় নাই
হিংসিত
ব্লগের বন্ধুরা আমারে একটু সাহায্য করবেন?আগামী মাসে আমদের ইউনি তে বাংলাদেশের উপর একটা প্রেজেন্টেশন দিতে হবে এর জন্য ছবি লাগবে.।।।কারন আমি দেখাতে চাই আমরাও কম না পকিস্তান-ভারত-চায়না-উজবুকদের চেয়ে।
আমার ই-মেইল আইডিঃrussel_acct@yahoo.com
মেইল চেক কৈরো। নয়টা মেইল।
জব্বর ফটুক হৈছে
কোন মাছের কত দাম ? ( ভাজা )
ভাই হাসান রায়হান, সুন্দর হয়েছে।
মাছগুলা দেখে তো ক্ষুধা লেগে গেলো। আর এইখানে এত ভ্রমণ পোস্ট পড়ে ক্যান? সবাই দেখি ভ্রমণবিলাসী।
ভাল্লাগে না
মাছগুলো তুলে ছবি তুলে রেখে দিলেন নাকি ভাজালেন বা গ্রীল করলেন?
আমিও গিয়েছিলাম হে হে হে, কিন্তু তখন আমার এইরম ক্যামেরা ছিলো না। কিন্তু দেখেন একদিন আমিও
ফটুক সৌইন্দর্য্য হৈছে।
রুমন,
নজরুল,
জয়িতা,
রুম্পা,
মামুন হক,
টুটুল,
রাসেল আশরাফ,
রাফি,
মেসবাহ য়াযাদ,
মাহবুব সুমন,
সাহাদাত উদরাজী,
মীর ও
তানবীরা
আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
বর্ননা আর ছবি - ২ টাই জুশ।
যখন গেছিলাম সেন্ট মার্টিনে, ডিজিটাল ক্যাম্রা ছিল না । ডিজিটাল ক্যাম্রা নিয়া আবার যাইতে হপে ।
বাহহহহহহ, দারুণ।
এই পোস্টটা আগে পড়ছিলাম মনে ছিলো না। মুগ্ধ হয়ে আবার একটার পর একটা পড়লাম, ছবি দেখলাম। চার পর্বের সিরিজ জানুয়ারীতে শুরু, জুনে শেষ। বাহ্।
এইরাম সুন্দর সুন্দর ছবি দেখে যাওনের লোভ সামলাই কিভাবে ??
মন্তব্য করুন