ইউজার লগইন

সোনালী চুলের পুতুল

চলন্ত বাসের জানালার কাঁচের উপর বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে। বৃষ্টির ছাটে জানালার এপাড়েও ঘোলাটে হয়ে আছে। তানিয়া বারবার হাত দিয়ে কাঁচ পরিষ্কার করে তাকিয়ে আছে চলন্ত দৃশ্যের দিকে। গ্রাম জলা গাছপালা পুকুর ঘরবাড়ি সব দ্রুত বেগে পেছনে পড়ে যাচ্ছে, সেই সাথে তানিয়া তার বাড়িকে ফেলে আসছে অনেক দূরে। আসার সময় ছোট ভাইবোন দুটি বারবার তাঁকে জড়িয়ে ধরছিল আর বাবা মা দুজনেই নিরবে কাঁদছিল।
মাত্র ষোল বছর বয়সেই তানিয়া ছুটছে জিবীকার তাগিদে। পাশের বাড়ির শিল্পী শহরে গার্মেন্টসে চাকুরী করে। মাস শেষে বাড়িতে ৩/৪ হাজার টাকা পাঠায় তাতেই দিব্যি চলে যায় শিল্পীদের সংসার। তানিয়ার মা সেই থেকেই শিল্পীকে তাগিদ দিয়ে আসছে তানিয়াকে শহরে গার্মেন্টসে একটা চাকুরীর ব্যাবস্থা করে দিতে। এবার ঈদের ছুটিতে শিল্পী বাড়ী ফিরে জানায় তার ফ্যাক্টরীর সুপারভাইজারকে বলে তানিয়ার কাজের বন্দোবস্ত হয়েছে। বাবার শত আপত্তি থাকা স্বত্তেও তানিয়া আজ শহরে যাচ্ছে গার্মেন্টসে চাকুরী করতে।
বাসের বাইরে তখনো অঝরে বৃষ্টি ঝরছে। তানিয়া তার কপাল ঠেকিয়ে আছে ঠান্ডা কাঁচের সাথে আর ভাবছে এমন বৃষ্টিতে মায়ের বকুনী অগ্রাহ্য করে ছোট ভাইবোন নিয়ে বেপরোয়া ভিজত তারা। ঘরে ফিরে শুকনো কাপড় পড়ে নারিকেল মুড়ি মাখা নিয়ে কাড়াকাড়ি করত ছোট ভাইবোনের সাথে। ছোট ভাইটিকে সে কথা দিয়ে এসেছে তার জন্য একটা রিমোট গাড়ি নিয়ে আসবে শহর থেকে আর ছয় বছরের বোনটির বায়না একটা সোনালী চুলের পুতুল। ভাবতে ভাবতে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে তানিয়ার।
বাস থেকে নেমে দুরু দুরু বুকে শিল্পীর পেছনে পেছনে হাটে তানিয়া। এক সময় একটি টিনের ঝিঞ্জি বাড়িতে চলে আসে ওরা। দুই সাড়ির ছয়টি করে বারোটি রুমের মাঝখানে আসা যাওয়ার জন্য সরু রাস্তা, এক কোনায় দুটো টয়লেট ও একটি চার চুলা বিশিষ্ট রান্না ঘর। এরই একটি রুমে ঢুকল শিল্পী আর তানিয়া। রুমটিতে ঢুকেই তানিয়ার চোখে জল চলে এলো। ছোট রুমটাতে তিনটি চৌকি পাতা আছে। অন্য কোন আসবাব রাখার যায়গা নেই। ছোট্ট রুমটিতে তিনজন শেয়ার করে থাকে। যার যার চৌকির পাশে টিনের বেড়ায় দড়িতে ঝুলছে ব্যাবহৃত কাপড়।
শিল্পীর চৌকিতে তানিয়াকে বসতে বলে সে কিছু হাড়িপাতিল চাল আর আলু নিয়ে রান্না ঘরের দিকে রওনা দিল। ছুটিতে থাকায় বাজার করা হয়নি তাই ডাল আলুভর্তা দিয়েই রাতের খাবারের আয়োজন আজ। একা ঘরে তানিয়া হাটু ভাজ করে মাথা রেখে ডুকরে ডুকরে কাঁদছে, বারে বারে মনে পড়ছে মায়ের কথা, ফেলে আসা ছোট্ট ভাই বোন দুটি নাজানি কি করছে!
শিল্পী রাতের রান্না করা খাবার নিয়ে ঘরে পৌছার কিছুক্ষন পরেই রুমের বাকি দুজন মেয়ে এসে পড়েছে কাজ সেড়ে, ওরা গতকালই ফিরে কাজে যোগ দিয়েছে। তানিয়াকে ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার পর ওরা মলিন মুখে একটু হাসল, সেই হাসিতে প্রান নেই। সারাদিন খাটুনির পর সমস্ত প্রান শক্তি বিলিন হয়ে যায় যা তাদের চেহারায় স্পষ্ট। রাতে তানিয়া আর শিল্পী ছোট্ট চৌকিতে চাপাচাপি করে ঘুমোল যদিও তাকে ঘুম বলা চলে না। আগামী সপ্তাহে শিল্পীর রুমের একটা চৌকি খালী হবে কারণ সেই চৌকির মেয়েটা অন্য একটা ফেক্টরীতে ভাল বেতনে চাকুরী পেয়েছে। শেষরাতের দিকে তানিয়ার একটু তন্দ্রা মতো হলেও ভোর ছয়টার দিকে শিল্পী তানিয়াকে ডেকে তোলে। হাতমুখ ধুয়ে চটজলদি রান্নাঘরে ছুটে চলে। দ্রুত কিছু রান্না করে সকালের নাস্তা করে দুপুরের জন্য একটা টিফিন ক্যারিয়ারে কিছু ভাত ও একটা ডিম ভাজা নিয়ে তারা সাতটার দিকে রওনা হয় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর দিকে।
সুপারভাইজার স্যারের সাথে তানিয়ার পরিচয় করিয়ে দিয়ে শিল্পী চলে যায় তার মেশিনে। সুপারভাইজারের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেনা আড়ষ্ট তানিয়া। অবশেষে তাকে অফিসে নিয়ে গিয়ে কাগজপত্র ফাইল, এডমিট কার্ড ও হাজিরা কার্ড বানাতে বানাতেই লাঞ্চ পিরিয়ড হয়ে যায়। তানিয়াকে হেল্পার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, বেতন ধরা হয়েছে চার হাজার টাকা। শিল্পী তাকে আস্বস্ত করে যে কিছু দিন কাজ করার পর কাজ শিখলে বেতন বাড়ানো হবে।
তানিয়ার এভাবেই চলে যায় বেশ কিছু দিন। ভোর ছয়টায় উঠে রান্না ও আনুসাঙ্গিক কাজ সেরে ফেক্টরীতে যাওয়া। সন্ধ্যায় ক্লান্ত শরীরে ঘরে ফিরে আবার রান্না করে খেয়েদেয়ে শিল্পীর সাথে গ্রামের বাড়ির গল্প করে ঘুমানোর প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে তানিয় নিজের চৌকি পেয়ে গেছে। এখন বাতি নেভানোর পর তানিয়া যখন বাড়ির জন্য কাঁদে তখন অন্য কেউ টের পায়না।
তানিয়ার গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা হলেও চেহারা আর শরীরের গড়ন ভালো। বুঝাই যায় না যে সে গরীব ঘরের মেয়ে। ইতি মধ্যে ফ্যাক্টরীতে বেশ কিছু ছেলে তানিয়াকে নানান ভাবে দৃষ্টি আকর্ষন করতে চায়। আর কেউ কেউ তানিয়াকে একটি মোবাইল সেট উপহার দিতে চাইলেও তানিয়া চুপচাপ মাথা নিচের দিকে দিয়ে কাজ করে। শিল্পী তাকে বলে দিয়েছে এই সব মতলব বাজদের কথায় ও প্রলোভনে পা না দিতে, এমন ছেলেরা অনেক মেয়েকে নষ্ট করেছে। তবে গার্মেন্টের কিছু মেয়ে চড়া মেকাপ করে আসে, হাতে থাকে দামী ফোন তখন তানিয়া কিছুতেই হিসেব মেলাতে পারে না। শুধুই এক মনে টানা দশ ঘন্টা কাজ করে যায়। মায়ের দেয়া পাঁচশত টাকা প্রায় শেষ হয়ে এসেছে তবু শুক্র বার মাকে ফোন দেয় করিম চাচার দোকানের মোবাইলে।
তানিয়া যখন সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাসায় ফেরে তখন পথে কয়েকটা চায়ের দোকান থেকে কিছু লোক প্রায়শই নানান রকম বিশ্রী কথা বলে। তানিয়া শুনেও না শোনার ভান করে। একদিন একটা তাগড়া মাস্তান মত ছেলে তানিয়াকে উদ্যেশ্য করে বলে “ ঐ ছেমড়ি যাবি আমার সাথে? আদর দেব সোহাগ দেব, টাকা দেব আর দামী মোবাইল দেব” ছেলেটার পাশে থাকা কয়েকটা ছেলে তখন খেক খেক করে হেসে উঠে। তানিয়ার কান দিয়ে লজ্জায় বাষ্প বের হতে থাকে, মাথাটা যেন রাস্তার সাথে লেগে যেতে চাইছে। তার গ্রামে এমন বিশ্রী লোক কখনো দেখেনি তানিয়া। গার্মেন্টস ছুটির সময় ছিল সেটা তাই তানিয়ার সাথে অনেক মহিলার ভিড় ছিল, এতেই তানিয়া কিছুটা সাহস পায়। দ্রুত পা চালিয়ে চলে আসে আপন টিনের ডেড়ায়। তখনো তানিয়ার বুক ধরফর করছিল, শিল্পীকে সব খুলে বলার পর সে জবাবে বলে, ওগুলো এলাকার বখাটে, এদের কথা শুনেও না শোনার ভান করে দ্রুত চলে আসবি। এদের সাথে ঝগড়া করতে গেলে আর এখানে থাকতে হবে না। ওরা অনেক ভয়ঙ্কর। তানিয়া একটা দীর্ঘস্বাস ছাড়ে।
আজ তানিয়ার বেতন হয়েছে। ওভার টাইম মিলিয়ে সে পুরো পাঁচ হাজার টাকা পেয়েছে। এতো টাকা হাতে পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলতে ইচ্ছে করে। শিল্পীর কথা মতো সেখান থেকে দুই হাজার টাকা বাবামায়ের কাছে বিকাশ করে পাঠিয়ে দিয়ে মাকে ফোন করে অনেক্ষন কথা বলে আজ। গতমাসের রুম ভাড়া ও শিল্পীর মেসের বিল দিয়ে তার কাছে আরো সাতশো টাকা থেকে যায়। রাতে শুয়ে শুয়ে তানিয়া অনেক্ষন সুখ কল্পনা করে, তার বাড়ির ভাঙ্গা টিনের বেড়াগুলো বদলাবে সে। মাকে আর বাবাকে অনেকগুলো নতুন কাপড় কিনে দেবে। ছোট ভাইবোনকে নিয়ে ঢাকার চিড়িয়াখানায় বেড়াতে যাবে আর অনেকগুলো আইসক্রীম খাবে যতোক্ষন না পেট ভরে যায়। এইসব সুখ কল্পনায় এক সময় তানিয়া ঘুমিয়ে পড়ে।
এভাবেই প্রায় তিন মাস কেটে যায়। তানিয়া খুব মন দিয়ে কাজ করে, নিয়মিত ওভারটাইম করে। আস্তে আস্তে তার কাছে কিছু টাকা জমতে শুরু করেছে। সব কিছুই ঠিক ঠাক মতো চলতে থাকে শুধু রাস্তার চায়ের দোকানগুলোর সামনে এলেই তার বুকের ধরফরানি বেড়ে যায়। সেখান থেকে ভেসে আসা নানা রকম কটু উক্তি তানিয়ার কলিজাতে মোচড় দিয়ে ধরে। তবু ফেলে আসা পরিবারের জন্য সে সব কিছু নিরবে হজম করে যায়। এরই মাঝে বিপত্তি ঘটে যায় একদিন। রুমে ফেরার পথে ভিড়ের মধ্যে হঠাত কিছু বুঝে উঠার আগেই পেছন থেকে একটি থাবা তার নিতম্ব খাঁমচে ধরে আর একটি থাবা তার স্তন চেপে ধরে আবার মুহুর্তের মধ্যেই ছেড়ে দেয়। হতভম্ব হয়ে তানিয়া চিৎকার করার শক্তি পায় না। তানিয়া পেছনে ফিরে দেখে সেদিনের সেই মাস্তানমতো দেখতে লোকটির কুতসীৎ হাসিমুখ ধীরে ধীরে ভীড়ের পেছনে হারিয়ে যাচ্ছে, আশেপাশে থাকা লোকটির সাথীদের তীব্র উল্লাসধ্বনী আর খেকখেক হাসি কানে আসতেই তানিয়া সর্বশক্তি দিয়ে তার ঝিঞ্জি রুমটার দিকে দৌড় দেয়। তার সমস্ত পৃথিবীর ভিত নড়ে গেছে, ঘরে ফিরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সে। শিল্পীকে সব বললে শিল্পী চিন্তিত মুখে চুপ করে থাকে আর ঘনঘন দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। অসুচীতে ঘিন ঘিন করছে তানিয়ার শরীর। অনেকক্ষন ধরে গোসল করেও তার অসূচি কাটে না। সে রাতে আর খেতে পারে না তানিয়া। অনেকক্ষন কাঁদার পর শিল্পীকে বলে চল আমরা অন্য কারখানায় চলে যাই, এই এলাকা একদম ভালো না। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শিল্পী জবাব দেয়, “বাংলাদেশের সব এলাতেই গার্মেন্টসে কাম করা মাইয়ারা হইল যন্ত্রের পুতুলের মতন। যার যা খুশী তাই করব, বিচার চাইলেই উলটা চরিত্রহীন বানায়া চুল কেটে দিয়ে এলাকা ছাড়া করব। আমাগো যাওনের যায়গা নাইরে বইন, এই জানোয়াররা দেশের সব খানেই বিরাজ করে”।
সময় কেটে যেতে থাকে আর তানিয়া আস্তে আস্তে সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়, মাঝে মাঝেই সুপারভাইজার কাজ দেখার নাম করে তানিয়ার শরীর ছুয়ে দিতে চায় আর তানিয়া যতোটা সম্ভব নিজেকে বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করে। কাজ শেষে প্রায়ই মাকে ফোন করে লোডের দোকান থেকে,ছোট ভাইবোন দুটিও তানিয়ার জন্য কান্নাকাটি করে। মা তাকে একবার ছুটিতে আসতে বলে কিন্তু কারখানায় কাজের চাপ বেশী চাইলেই ছুটি মেলেনা। অতঃপর একদিন সুপারভাইজারকে অনেক বলেকয়ে তিনদিনের ছুটি পায় সে। তানিয়া আগামীকাল বাড়ি যাবে ভেবেই আনন্দে বিহ্ববল হয়ে পড়ে। সেদিনের মতো কাজ শেষ করে সন্ধ্যায় বের হয় ফ্যাক্টরী থেকে, আজ আকাশের অবস্থা ভালো ঠেকছে না; দ্রুত কিছু কেনা কাটার করতে হবে। শহরের ফুটপাতের থেকে বেছে বেছে ছোট ভাইয়ের জন্য আর বোনের জন্য গাঢ় লাল জামা কিনে। মায়ের জন্য একটা সুতি শাড়ি আর বাবার জন্য একটা চেক লুঙ্গী কিনতে কিনতে রাত নটার মতো বেজে যায়। কয়েক দোকান ঘুরে বোনের জন্য একটা সোনালী চুলের পুতুল কিনলেও ভাইয়ের আবদার রিমোট গাড়ি আর কেনার মতো টাকা থাকে না।
বাড়ির সবার জন্য উপহার কিনে খুশী মনে ঝিঞ্জি ঘরের পথ ধরে তানিয়া। ততক্ষনে আকাশে ঘনঘন বাজ পড়তে শুরু করেছে, একটা রিক্সাও দেখা যাচ্ছে না যে সে সব কিছু ভিজে যাওয়ার আগেই রুমে ফিরে আসবে। দ্রুত পা চালাচ্ছে তানিয়া ঘন ঘন বাজ পড়ছে, প্রচন্ড বাতাসে তানিয়ার চুল উড়িয়ে নিতে চাচ্ছে, মনের আনন্দে যেন তানিয়া দমকা বাতাসের সাথে উড়ছে! রুমের অনেকটা কাছেই চলে এসেছে, হয়তো বৃষ্টি এড়ানো যাবে। অন্ধকার মোড়টা ঘুরতেই কিছু বুঝে উঠার আগে একটা হাত তানিয়ার মুখ চেপে ধরে। দুতিনজন পাজাকোলা করে তানিয়ে একটি অন্ধকার রুমে নিয়ে যায়। ছাড়া পাওয়ার জন্য তানিয়া প্রচন্ড ছটফট করতে থাকে, বুকের ভেতর অজানা একটা দানবীয় ভয় তানিয়ার সমস্ত চেতনাকে গ্রাস করে। একজন মোমবাতি জ্বালালে সেই গুন্ডাটাইপ ছেলেটার মুখ চোখে পড়ে তানিয়ার। তানিয়ার মুখে ওড়না গুজে দেয় ছেলেটি আর দুই হাত ধরে রাখে সাথে থাকা চ্যালা দুটো। এরপর শুরু হয় এক নারকীয় তান্ডব। তানিয়ার কোমল শরীরকে খুবলে খেতে থাকে হায়েনাগুলো। ততোক্ষণে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি পড়ছে টিনের চালে। তানিয়ার গোঙ্গানীর শব্দ চাপা পড়ে যায় টিনের চালে বৃষ্টির শৈল্পীক শব্দে। তিনজন মিলে কতক্ষন তানিয়া ধর্ষন করেছে সেটা মনে নেই কারণ কিছুক্ষন পরই জ্ঞান হারিয়ে মূর্ছা যায় সে।

জ্ঞান ফেরার পর সেই অচেনা রুমটিতে তানিয়া আর অন্ধকার ছাড়া কেউ নেই। বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি ঝড়ছে। উঠে বসতে গিয়ে লক্ষ করল তার সাড়া শরীরে তীব্র বেদনা। বুকের দিকে প্রচন্ড রকম ব্যাথা আর নাভীর নিচের দিকে তীক্ষ্ণ একটা অনুভূতি যেন কেউ ব্লেড দিয়ে চিড়ে ফালাফালা করে দিয়েছে তলপেট। দরজা দিয়ে ঢোকা বজ্রপাতের আলোর দিকে মুখ করে তানিয়া হঠাত দৌড় দিল। অসহ্য যন্ত্রনায় বারবার সে পড়ে যেতে চাইছে তবু কোন মতে টাল সামলাচ্ছে। বাইরের মূষল ধারায় ঝরে যাওয়া বৃষ্টিতে উদ্ভ্রান্তের মতো দৌড়ুচ্ছে এক তরুনী। ছিড়ে ক্ষত বিক্ষত হয়ে যাওয়া যোনীপথ দিয়ে শীর্ণ ধারায় বয়ে যাওয়া রক্ত উরু বেয়ে ধুয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির জলে। পাগলনীর মত অন্ধকার বৃষ্টিতে দৌড়ুচ্ছে একটি অবয়ব। পেছনে কাদাজলে লুটুপুটি খাচ্ছে ভাজ না খোলা একটি সুতি শাড়ি একটি লুঙ্গী লাল জামা লাল পেন্টালুন আর একটি সোনালী চুলের পুতুল।

নোটঃ এটি নিছকই একটি গল্প কিংবা কয়েক হাজার গার্মেন্টস কর্মী তানিয়ার জীবনে ঘটে যাওয়া নির্মম দুঃস্বপ্ন!

পোস্টটি ১৭ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

টুটুল's picture


Sad

তানবীরা's picture


বড্ড নির্মম বাস্তবতা Sad(

সামছা আকিদা জাহান's picture


নির্মম জীবন ও নিয়তি।

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

সোহেল কাজী's picture

নিজের সম্পর্কে

আমার অন্তরের অলিতে গলিতে জট লেগে আছে থোকায় থোকায় অন্ধকার। দৈনন্দিন হাজারো চাহিদায় পুড়ছে শরীরের প্রতিটি কোষ। অপারগতার আক্রোশে টগবগ করে ফুটে রক্তের প্রতিটি কণিকা। হৃদয়ে বাস করা জন্তু-টা প্রতিনিয়ত-ই নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানে ব্যাস্ত।

প্রতিদিনের যুদ্ধটা তাই নিজের সাথেই। সেকারণে-ই হয়তো প্রেমে পড়ে যাই দ্বিতীয় সত্ত্বার, নিজের এবং অন্যের।