মীর'এর ব্লগ
গল্প: বার্লিনে প্রথমবার খুব মন খারাপ হয়েছিল
১.
বার্লিন মেইন স্টেশন থেকে বের হয়ে আনমনে হাঁটছিলাম স্প্রি নদীর পাড় ধরে ধরে। মনটি ভীষণ খারাপ হয়ে ছিল বিশেষ একটা কারণে। বেশি একটা পাত্তা দিতে চাচ্ছিলামও না, কিন্তু ঘুরে ঘুরে মনে পড়ছিল।
আহা, একজন বিদেশে আসার স্বপ্ন কত যত্নে বুকে লালন করে রেখেছিল! আর আমার কোনো ইচ্ছাই ছিল না দেশ থেকে কখনও বাইরে আসার। অথচ আমার জীবনটাই আজ মিশে গিয়েছে বিদেশের অচেনা আকাশ, অজানা বাতাসে। আজীবন পরিবারের সাথে থাকতে চাওয়া সেই আমি আজ বাবা, মা সবাইকে হারিয়ে একা। যার জন্য সবাইকে হারাতে বাধ্য হয়েছিলাম, সেও ছেড়ে চলে গেছে বহু আগে। তাই আজকাল সবকিছুর ভেতরেও ঘাপটি মেরে বসে থাকে এক অব্যক্ত শুন্যতা। কথাটি সাধারণত সবসময় মনে পড়ে না, কিন্তু যখনই মনে পড়ে তখনই আমার অনেক খারাপ লাগে। তাই ভাবলাম বিষয়টিকে একটি গল্পের রূপ দেয়া যায় কিনা।
সারাটি রাত্রি শুধু তারাদের সাথে তারাদেরই কথা হবে
"আমি কি কথা স্মরিয়া
এ তনু ভরিয়া
পুলক রাখিতে নারি
ওগো কি ভাবিয়া মনে
এ দুটি নয়নে
উথলি নয়ন বারি..."
গভীর নীল সাগরের জলে একবার ভরা চাঁদের নৃত্য দেখেছিলাম। চাঁদের আলো জলের ঢেউয়ে ঠিকরে পড়েই প্রতিফলিত হয়ে দিক বদল করে ফেলে। অন্য কোন দিকে চলে যায়। আমি বসে হারিয়ে যাই সেই প্রতিফলনে সৃষ্ট আলোকচ্ছটা দেখতে দেখতে। দূর অতীতের কোনো এক চন্দ্রালোকিত রাতের স্মৃতিতে।
স্মৃতি যেন ঈশ্বরের এক আশ্চর্য অনুদান। সময় নামক অনাসৃষ্টিটির বিরুদ্ধে সামান্য কৃপা। চলে যাওয়া সময়কে কখনো ফিরে না পাওয়া গেলেও তাই স্মৃতিকে আকড়ে সময়ের ফিকে হয়ে যাওয়া স্বাদ পাওয়া যায়।
যদি স্মৃতি না থাকতো, তাহলে হয়তো সময়ের মূল্যও অন্যরকম হতো। কষ্ট ছাড়া অনাবিল সুখের যেমন কোনো বিশেষ মূল্য থাকে না। স্মৃতি না থাকলে সময়ের ফিরে না আসার বাধ্যবাধকতা মেনে নেয়া হয়তো সম্ভব হতো না।
ফেসবুক পেইজ চালান
১.
আপনারা প্রায় সবাই ফেসবুক পেইজ চালান। ফেসবুক বর্তমানে ব্যাবসার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিশেষত শপিং সেন্টার কিংবা তথাকথিত 'ফিজিক্যাল' বিক্রয়কেন্দ্রবিহীন ব্যাবসাগুলোর কাছে, খরিদ্দারের কাছে খবর পৌঁছানোর অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বর্তমানে জনপ্রিয়তার তালিকায় প্রথম দিকেই অবস্থান করছে ফেসবুক।
এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ফেসবুকের সুবিশাল তথ্য-ব্যাংক। বর্তমান বিশ্বের মোট জনসংখ্যার সাথে তুলনা করে বলতে গেলে-
পৃথিবীতে যতো মানুষ রয়েছে তার এক-তৃতীয়াংশ সমপরিমাণ ফেসবুক প্রোফাইল রয়েছে। যার অন্তত ৫০ শতাংশ নন-ফেক তথা প্রকৃত মানুষের প্রোফাইল। অর্থাৎ পৃথিবীর প্রতি ছয় থেকে সাত জন মানুষের জন্য রয়েছে একটি করে অরিজিনাল ফেসবুক প্রোফাইল!
গল্প: ডুবে যাওয়া সন্ধ্যার মাস্তুল
১.
অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝরছে। বাড়ির টানা বারান্দায় বসে আনমনে মুখ, কপাল আর কপালের ওপর পড়ে থাকা চুলগুলোকে ভেজাচ্ছিলাম। যদিও কতক্ষণ ধরে ভেজাচ্ছিলাম মনে নেই। এর মধ্যে শরীফ এক কাপ রং চা দিয়ে গিয়েছিল। ওকে চা দিতে বলতে হয় নি। নিজে থেকেই আমায় বারান্দায় বসে থাকতে দেখা চা দিয়ে গেছে। বৃষ্টি নিয়ে কোনো কথাও বলে নি। অন্য কেউ, যেমন মা বা বাবা হলে বৃষ্টিতে ভেজা থেকে বিরত থাকার কথা বলতো হয়তো। শরীফটা আমার মনের ভাব বেশ ভাল বোঝে। তাই চুপচাপ চা রেখে চলে গেছে।
সেদিন সিগারেট, চা, বৃষ্টি, বারান্দা, উচুঁ দালানকোঠা, খোপ খোপ জানালা, আধো আলো আর আধো অন্ধকার- সবকিছু মিলিয়ে পরিবেশটা বেশ জমে উঠেছিল। বেতো ঘোড়ার মতো কয়েকটা নাগরিক বৃক্ষকে বাতাসের ঝাপটায় খুব করে দুলতে দেখে হঠাৎ আমার শৈশবের অনেকগুলো স্মৃতি মনে পড়ে গিয়েছিল।
বসফরাসের গাঙচিল আর দুই দরিয়ার গহীন নীল: হারিয়ে যাওয়া যায় না বৃথা যেখানে
১.
দিনের বেলা ঘুমিয়ে কাদা হয়েছিলাম। এখন উঠে মন খারাপ লাগছে। জানি রাতে ঘুমানোটা কঠিন হয়ে গেল ভীষণ। কিন্তু কি আর করা। ঘুমানোর সময় ভেবেছিলাম খুব বেশি হলে আধা ঘন্টা ঘুমানো যাবে। ওমা পাক্কা আড়াই ঘন্টা পর চোখ খুলেছি। মাঝখানে তো ঘুমের মধ্যেই মনে হচ্ছিল ঘড়ির কাঁটা রাত আর দিন পেরিয়ে চলছে অজানা গন্তব্যের পানে।
সাগরের তীরে যতোবার বেড়াতে গিয়েছি, ততোবারই আমার কি যেন হয়েছে। মনে হয়েছে মাত্রই তো কয়েকদিনের জন্য এখানে আসা। এই আসার কি কোনো অর্থ আছে? এসব ভেবে ভেবে মন খারাপই থাকতো বেশি। বহু চেয়েও কখনও উপভোগ করতে পারি নি। অথচ সাগরপাড়ের বাতাস যদি মুঠোবন্দি করে এনে আমার সামনে কেউ ছেড়ে দেয়, আমি বলে দিতে পারবো সেটা সাগরপাড়ের বাতাস। জানি আর না জানি, সাগরের কাছাকাছি গেলেই আমি টের পেতে শুরু করি।
টিটিকাকা হ্রদে ভ্রমণের গল্প : সহজ জীবনের খতিয়ান
১.
জীবনে সুযোগ পেলে একবার আমাজন মহাবনে ঘুরতে যাবো- এমনটা যখন আমি প্রথমবার ভেবেছিলাম তখন বোধহয় আমার বয়স ছিল ১৩। ১৯৯৮ সালের শেষ দিকর কথা। সেবা প্রকাশনী কিশোর থ্রিলার সিরিজ "তিন গোয়েন্দা"-র কোনো একটা সদ্যপ্রকাশিত বইতে সেবার কিশোর পাশা, রবিন মিলফোর্ড আর মুসা আমান মিলে আমাজনের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল। মূল উদ্দেশ্য ছিল চোরা-কারবারিদের পাকড়াও করা। বইয়ের পাতায় পাতায় মহাবন অমাজনের যে জীবন্ত বর্ণনা ছিল তাতে যেন সবকিছু ভেসে বেড়াচ্ছিল আমার চোখের সামনেই। এক দমবন্ধ উত্তেজনায় ঠাসা দুপুরে এক বসায় বইটা শেষ করে আমি মনে মনে ঠিক করে ফেলেছিলাম, একদিন আমাজনে আমায় যেতেই হবে।
জুঁই ফুলেরা জুঁই তলায়
১.
আমি মনে হয় কোন একটা ছোটাখাটো জীবন কাটিয়ে খুব সাধারণভাবে একদিন মৃত্যুবরণ করবো। কথাটা মনে হলো সে সময়টায় যখন হঠাত মনসাগরের গভীর তলদেশ থেকে উঠে আসতে ধরেছিল সেইসব বুদবুদ, যারা দীর্ঘ একটা সময়, প্রায় অর্ধেক শতককাল, শুধু সেই তলদেশ থেকে সাগরের ঢেউয়ের চূড়াটিতে পৌঁছুতেই লাগিয়ে দিয়েছিল। ওরা পৌঁছেছিল গগনে নিশান উড়িয়ে নীল সাগরের ওপর ভাসমান মার্তণ্ড-টার এক মহাজাগতিক আলোকছটাকে নিজের বুকে ঝিকমিকিয়ে উঠতে দেখে মরে যেতে।
২.
গল্প: শঙ্খচিলেরা যেভাবে বকাবকি করতো আমাদের
১.
বিকেলের মাঝামাঝি সময়ে লাল আর সবুজ রং দেখতে দেখতে মাথা খারাপ হয়ে যাবার মুহুর্তে একবার আকাশী নীল রং চোখে পড়েছিলো। বহুদিন পর প্রিয় রংয়ের শাড়ি চোখে পড়লো। আবারও সেই ছিপছিপে লম্বা মেয়েটি। উবায়েদ ভাইয়ের দোকানে যাকে দেখেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম এবার ওর সাথে কয়েকটা কথা বলবো। অথচ ভিড় আমাদের দু'জনকে কাছাকাছি হতে দিলো না।
-নাম্ব সময়ের দিনলিপি, ১৭/১২/২০১৩ ইং
ছিপছিপে লম্বা সেই মেয়েটির সাথে পরে আমার আরও দেখা হয়েছিল। প্রথমে একবার দেখা হয়েছিল ২০১৬ সালের দিকে, কিন্তু অনলাইনে। ২০১৯-এ গিয়ে আমাদের দেখা হয় সামনাসামনি।
পুরোনো গল্প
বেশ কিছুদিন ধরেই লিখতে বসবো বসবো ভাবছি কিন্তু বসা আর হচ্ছে না। প্রচণ্ড গতিময় একটা জীবন কাটছে। যেখানে একটি কাজের কথা ভেবে সাথে সাথে করে না ফেলতে পারলে পরে আবারও কাজটা করার সুযোগ খুব সহজে পাওয়া যায় না। ভাবলাম আজকের বিকেলে একটু উদাস উদাস ভাব আসছে। বসা যাক তাহলে লেখাটা নিয়ে।
ইউরোপে করোনা মহামারীর কালোছায়া আস্তে আস্তে কাটতে শুরু করেছে। আজকাল মাঝে মাঝে সেই মার্চ-এপ্রিলের সময়টার কথা ভাবি। প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণ, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। মানুষের কা্ছে কার্যত কোনো সঠিক তথ্য নেই। সবাই অনুমানের ভিত্তিতে যে যেভাবে পারছে বেচেঁ থাকার লড়াই করছে। সেই সময়টার তুলনায় এখন সবই অনেক অন্যরকম।
ইদানীং ছোট হয়ে এসেছে জীবনের গণ্ডিটা
আজকাল খুব সীমিত পরিসরে জীবন যাপন করছি। সবসময় চেষ্টা করছি যতো কম শ্রম ও সময়ে একটা কাজ সম্পন্ন করা যায়। জীবনের এমন একটা পরিসর যখন শুধুই বেঁচে থাকাটা দরকারি হয়ে দাঁড়ায়, আর কিছু না। চুপচাপ মটকা মেরে পড়ে থাকা, যাতে করে নিজের এবং আর সবার বাঁচার পথে সাহায্য করা। এমনকি ঘুমের পরিমাণও এখন বেড়ে গেছে আগের চেয়ে অন্তত ৪৯ ভাগ। আর গান শোনা হচ্ছে প্রচুর।
কোনো অভিযোগ করছি না মোটেও। খুব ভাল আছি বলতে গেলে। অনেকটা ভাল কপাল থাকলে এই প্রখর সময়ে আঁকড়ে ধরার মতো একটা জায়গা মেলে। সেটাকে মনে-প্রাণে আকড়ে ধরে বসে আছি। শুধু এই সময়টার পার হয়ে যাওয়ার আশায়। তারপরও হয়তো সবকিছু আগের মতোই রয়ে যাবে। শুধু এই সময়টা পার করতে পারার অভিজ্ঞতা মনের ভেতর একটা চিরস্থায়ী ছাপ রেখে যাবে। সেই ছাপ নির্ধারণ করবে অনেককিছুর পথপরিক্রমা। কোনো একটা কাজ আমরা ছয় মাস আগে যেভাবে করতাম, সেভাবে আর কখনও করবো না।
প্রিয় জিল্লুর স্যার আর জাকারিয়া স্যারের জন্য ভালবাসা
বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম শুনে প্রথমে যতোটা মুষড়ে পড়েছিলাম, ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে ওই স্কুলে আমার প্রথম বন্ধু ধ্রুব-র সাথে পরিচিত হয়ে আবার ততোটাই উৎফুল্লতা ঘিরে ধরেছিল আমায়। চট্টগ্রামের মতো বড় আর সুন্দর শহর ছেড়ে, ক্লাস ওয়ান থেকে সেভেন পর্যন্ত যে স্কুলে পড়েছি সেটিকে এবং সেখানকার সব বন্ধু-বান্ধবদেরকে পেছনে ফেলে বাবার বদলীর সুবাদে বগুড়া চলে যেতে হবে, সেটাই ছিল যথেষ্ট হৃদয়বিদারক। সাথে যখন যোগ হলো জিলা স্কুল নয়, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক নয়, এমনকি ব্যাটেলিয়ন স্কুলও নয়- শেষমেষ গিয়ে ঠাঁই মিললো কিনা পুলিশ লাইনে- তখন আমার আসলেই কাঁদো কাঁদো অবস্থা।
সাগরের হাতছানি অ্যাড্রিয়াটিকে
সাগর পাড়ে বসে রোদ পোহানো আমার প্রিয় একটি কাজ। সৈকতের মধ্যে নিরিবিলি একটা জায়গা খুঁজে বের করে, সাগরের ঢেউয়ের সুরে মস্তিষ্কের চিন্তারাজির তালটি মিলিয়ে একবার চোখ মুদে বসে পড়তে পারলেই হলো। ভাল হয় হালকা pH সম্পন্ন কোনো সানব্লক মেখে নিয়ে বসলে। পৃথিবীর সর্বত্রই সূর্যের আলোর অতিবেগুনী রশ্মি সমানমাত্রায় ক্ষতিকর। শুধু মেলানিনের পরিমাণের ভিন্নতার কারণে কারোটা বোঝা যায়, কারোটা বোঝা যায় না।
প্রিয় হলেও সাগর পাড়ে বসে রোদ পোহানোর সুযোগ যে জীবনে অসংখ্যবার পেয়েছি, তা কিন্তু নয়। হাতে গোণা কয়েকবার কক্সবাজার যাওয়া (যার একাধিকই ছিল অন্য কাজে গিয়ে সময় করে একটু সাগরের পাড় থেকে ঢু দিয়ে আসা) বাদ দিলে আর বলার মতো প্রায় কিছুই থাকে না। ২০১৭ সালের ক্রিসমাসের ছুটিতে গিয়েছিলাম ইতালির সাগরপাড়ের ছোট্ট শহর ট্রিয়াস্টে-তে। সেটার কথা বলা যেতে পারে।
অবসরে কি করতে ভাল লাগে?
১.
ছোটবেলায় স্কুলে এই প্রশ্নটা শুনতে হতো অনেক। আমি প্রায়ই একটা গতবাঁধা উত্তর দিতাম প্রশ্নটার, অবসর সময়ে আমার ঘুরতে ভাল লাগে।
আদৌই কি সেই প্রাইমারি স্কুলের বেলায় 'অবসর' কি তা বোঝার অবসর ছিল? মনে হয় না। তাই প্রশ্নটার উত্তর আগ-পাশ না ভেবে দিয়ে দেয়ার মধ্যেও কোনো দ্বিধা ছিল না।
এখন যদি আমায় কেউ জিজ্ঞেস করে, অবসর সময়ে কি করতে ভাল লাগে- তাহলে ভাবনায় পড়ে যাই। কারণ এখন আমি কোনটা অবসর আর আর কোনটা না, কোন অবসরটা কেমন, বড় না ছোট, ডিলাক্স না চিপ- সবই বুঝি। ছোটবেলার সেই কিছু-বোঝার-প্রয়োজন-না-থাকা সময়টা পেরিয়ে গেছে।
তাই প্রশ্নটার উত্তর দেয়া এখন আর আগের মতো সহজ না। অবসরের নানান রকম আছে। এই যেমন নিত্যদিনের কাজের অবসর হচ্ছে একরকম, আবার বছরের এক মাস অফিস ছুটি হচ্ছে আরেক রকম।
সাধাসিধে ছেলেদের কষ্টের কথা
শরতের মাঝামাঝি সময়ে আশুলিয়া ব্রীজের ঢালের পাড়ে- নদীতে পড়ন্ত সূর্য্যের ছায়াটা দেখতে যেমন সাধাসিধা, ঠিক তেমনি সাধাসিধা একটা ছেলে একবার বসবফরাসের গাঢ় নীল জলের ঢেউগুলোর গায়ে ঠিকরে পড়া গ্রীষ্মের রুপালি রোদের ঝিকিমিকি'র মতো চোখ ধাঁধাঁনো একটা মেয়ের প্রেমে পড়ে- হাটু-গোড়ালি ভেঙ্গে এবং কনুই-কপাল ছিলে কোনমতে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে বাঁচতে পেরেছিল। তাকে অপরাধীর মতো কেঁদে কেঁদে ফিরতে হয়েছিল নিজের আঠেরো বর্গমিটারের ছোট্ট খুপড়িটাতে।