যুদ্ধাপরাধের বিচারের আজকের রায়.. হতাশা :(
যুদ্ধাপরাধের বিচারের দায় আমরা বয়ে বেরাচ্ছি অনেক দিন। দীর্ঘ ৪১ বছর পর ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে ১৬ কোটি মানুষের আকাঙ্খা'র প্রথম রায় পায় বাংলার জনগন। বাংলাদশের স্বাধীনতা যুদ্ধের চার দশক পর সেই যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। হাসি কান্নায় উদ্বেলিত বাংলার মানুষ... চার দশক ধরে বয়ে বেড়ানো এ দায়... আমরা ভুল রাজনীতির কারণে বয়ে বেরাচ্ছিলাম... প্রথম রায়ের পর স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের দৃষ্টি কেন্দ্রভূত হয় বাকি বিচারের। আজ কাদের মোল্লার অপকর্মের বিচারের রায় ঘোষনা হয়। আমরা মর্মামহত ... সত্যি মর্মাহত..
এক নজরে আজকের বিচারের রায়:
১ম অভিযোগ :
তিনি একাত্তরের ৫ এপ্রিল মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দেন
রায়: ১৫ বছর কারাদণ্ড
২য় অভিযোগ :
একাত্তরের ২৭ মার্চ তিনি সহযোগীদের নিয়ে কবি মেহেরুননিসা, তাঁর মা এবং দুই ভাইকে মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাসায় গিয়ে হত্যা করেন
রায়: ১৫ বছর কারাদণ্ড
৩য় অভিযোগ :
একাত্তরের ২৯ মার্চ বিকেলে সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে আরামবাগ থেকে কাদের মোল্লা ও তাঁর সহযোগীরা জল্লাদখানা পাম্পহাউসে নিয়ে জবাই করে হত্যা করেন
রায় : ১৫ বছর কারাদণ্ড
৪র্থ অভিযোগ :
২৫ নভেম্বর কাদের মোল্লা ও ৬০-৭০ জন রাজাকার কেরানীগঞ্জ থানার ভাওয়াল খানবাড়ি এবং ঘাটারচরে (শহীদনগর) শতাধিক নিরস্ত্র গ্রামবাসীকে হত্যা করেন।
রায়: প্রমানীত নয় বলে বেকসুর খালাশ
৫ম অভিযোগ :
একাত্তরের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনা ও অবাঙালি রাজাকারদের সঙ্গে কাদের মোল্লা মিরপুরের আলোকদী (আলুব্দী) গ্রামে হামলা চালান। ওই ঘটনায় ৩৪৪ জনের বেশি নিহত হন
রায়: যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
৬ষ্ঠ অভিযোগ :
একাত্তরের ২৬ মার্চ কাদের মোল্লা, তাঁর সহযোগী এবং পাকিস্তানি সেনারা মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনে হযরত আলী লস্করের বাসায় যান। কাদের মোল্লার নির্দেশে হযরত, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা করা হয়, ধর্ষণের শিকার হন এক মেয়ে
রায়: যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
সূত্র: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-02-05/news/326915
এত এত হত্যাকাণ্ডের পর ... ধর্ষনের পর... লুটপাটের পর এ রায় আমাদের হাতাশ করে... স্বাভাবিক ভাবেই আমরা আজ মর্মাহত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ঝলক চোখ বুলালেই মানুষের কষ্টের পরিমানের কিছুটা টের পাওয়া যাবে। স্বাভাবিক ভাবেই যখন হতাশায় আক্রান্ত হই অনেক প্রশ্নের উকি দেয় মনে...
গতকাল যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামাতের মিছিল ছিল.. সেখান থেকে আজকের রায়ের দিন হরতাল ঘোষনা দেয় এবং গৃহযুদ্ধের হুমকিও দেয়। কয়েক দিন যাবতই আমরা লক্ষ করছি জামাতের প্রতি পুলিশের সহানুভূতিশীল আচরনের। যেখানে কালকের মিটিংয়ের আগে পর্যন্ত জামাত, বিএনপি, শিক্ষকরা রাজপথে নামতেই পারতেছিল না ... সেখানে জামাতের এত বড় শোডাউন... সাথে পুলিশকে রজনীগন্ধা উপহার... ভাবনায় জট পাকায়। বাতাসে অনেক কথাই ভেসে বেড়ায়... হতে পারে সরকার জামাতের শক্তিমত্তা বুঝতে চায়... হতে পারে সরকার বিএনপির সাথে জামাতের সখ্যতা ভাংতে চায়। হতে পারে পরবর্তী নির্বাচনের হিসাব নিকাষ... অনেক কিছুই হতে পারে..........
আমরা এত কিছু বুঝতে চাইনা... আমরা কলুষিত রাজনীতির নষ্ট ভাবনার প্রতিফলন দেখতে চাই না ... আমার কথা পরিষ্কার এবং স্পষ্ট... যুদ্ধাপরাধীর বিচারে কোন ধরনের অবহেলা চাই না... কোন ধরনের রাজনীতি চাই না... একদম সোজা কথা "যুদ্ধাপরাধীর ফাঁশি চাই"
তাশ,মন খারাপ ও মেজাজ বিলা
জাফর ইকবাল স্যার বলেছিলেন, যুদ্ধপরাধী বিচার কাজে সরকারের পাশে থাকার জন্য, যেহেতু এটি একটি কঠিন কাজ ! এত্ত গুলো মানুষ এত্ত ভাবে সরকার বা ট্রাইবুনাল কে সাহস যোগাল, শক্তি যোগাল, তার রেজাল্ট টা এমন দেখে মন ভেঙ্গে গেলো! মনে হইতেসে একটা যুদ্ধে হেঁড়ে যাচ্ছি!
এরকম প্রহসন কেমনে করতে পারলো সরকার? মানা যাচ্ছে না ।
শিবিরকে শাচলা চত্ত্বরে সমাবেশের অনুমোদন, পুলিশকে রজনীগন্ধা দেওয়া, বাতাস টের পেয়ে তরিকুলের জামাতের সঙ্গে হরতালে নাই বিষয়ক বক্তব্য এবং আজকের রায়-খালি সন্দেহ বাড়ায়
সবই পাতানো খেলা
রায় মানি না।
এ রায় মানি না।
এ রায় মানি না...
"যুদ্ধাপরাধীর ফাঁশি চাই"
মন্তব্য করুন