মিশু'এর ব্লগ
লাল সবুজের মাঝের হলুদ মানচিত্র
খুব সাধারণ একজন ব্লগার, হয়তো ব্লগার হিসেবে খুব কম মানুষের কাছেই পরিচিত, তবুও আজ মনের কিছু অব্যক্ত কথা আর চেপে রাখতে না পেরে কি-বোর্ড নিয়ে বসে পড়ি।
গত চারদিন, খুব বেশি অনিচ্ছা স্বত্তে অনলাইন থেকে দূরে ছিলাম। না, আমি দূরে ছিলাম না। কৌশলে চোখ রাখছিলাম কিছু পুরোন বন্ধুর উপর। হ্যাঁ। কারণ, তারা বার বার আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার পূর্বে বলছিলো তারা নাকি চায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কিন্তু তা হতে হবে স্বচ্ছ নিরপেক্ষ। আমি তাদের কথায় দ্বিধান্বিত ছিলাম না মোটেই, কিন্তু তাদের জন্য করুণা হচ্ছিলো আমার খুব। কেন? কারণ তারা তাই করছিলো যা তাদের দ্বারা করাতে চাচ্ছে তাদের পরিচালকবৃন্দ তথা জামায়াত-শিবির।
খুব ছোট বেলার এক বন্ধুর সাথে আমার সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে যা এর আগের পোস্টে উল্লেখ করার কারণে কিংবা ব্যক্তিগত পরিচয় থাকার কারণে জানেন অনেকেই। আজ কি তার কথা বলবো? হ্যাঁ কিছুটা তবে আজ শুধু তার কথায় বলবো না।
কি হয়েছিলো সে রাতের পরে
শশাংক সাহেবের বই থেকে জানা যায়, সেদিনের সেই গোপন মিটিং এর পরে সর্বাধিক গোপনীয়তায় আরো দুইবার, বঙ্গবন্ধু, মানিক মিয়া এবং তিনি গোপনে দেখা করেছিলেন, যার উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের ভারতের কাছ থেকে চাওয়া সম্পর্কে আরো ভালো ধারণা নেয়া।
বড়দিন ১৯৬২ - যে রাতের কথা অজানা অনেকেরই
যেভাবে বিকৃত হয়েছে ১৯৭৫ এর ১৫ই আগষ্টের পরে আমাদের ইতিহাস, তাতে ২৫শে মার্চ মধ্যরাত্রিতে বঙ্গবন্ধুর বেতারে ভেসে আসা সেই বাণীগুলোর আগ পর্যন্ত কিংবা ৭ই মার্চের আগ পর্যন্ত অনেকেই মনে করি স্বয়ং বঙ্গবন্ধুও নাকি চেয়েছিলেন স্বায়ত্ত শাসন। দোষ আমাদের নয়, ঠিক এভাবেই প্রচার করা হয়েছে দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশী সময় ধরে। আজ জানবো জাতির এই মহান নেতা কত আগেই মনস্থির করে ফেলেছিলেন স্বাধীন রাষ্ট্রের, কত আগেই তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বাধীন বাংলার তার অন্যতম এক ঘটনা।
আঁটকে থাকা কাঁটা
আমাদের দেশ সংস্কৃতি এবং সাহিত্যে বেশ সমৃদ্ধই বলা যেতে পারে। বক্তার সংখ্যার হিসেবে বিশ্বে ৭ নম্বর অবস্থানে রয়েছে আমাদের ভাষা। ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ জাতী তার মুখের ভাষা হিসেবে ধরে রেখেছে এ ভাষাকে। এজন্য অবশ্য ইউনেস্কো থেকে আমরা একটি দিনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও আদায় করে নিয়েছি। আমাদের এই ভাষায় কিছু বললে এনকার্টার আনুমানিক হিসেব অনুযায়ী অন্তত বিশ্বের বিশ কোটি মানুষ তা বুঝতে পারার কথা। আর যারা লিখাপড়া জানেন তারাতো বাংলায় কিছু লিখলে পড়তে পারার কথা। এটা আমাদের ভাষার লেখকদের বেশ উৎসাহ যুগিয়েছে। এটা অবশ্যই একটা ভাল দিক। তবে একথাও সত্য যে ব্লগিং এর একটা বিশার ভূমিকা আছে নবীন লেখকদের সাহস যোগানোর পেছনে।
রাঁঙিয়ে দাও লাল সবুজে
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কম বেশী সকলেরই জানা, আমরা জানি ১৯৭১ সালে একটা যুদ্ধ হয়েছিলো আর সেই যুদ্ধে বাঙ্গালী জাতি পরাজিত করেছিলো ততকালীন পশ্চিম পাকিস্তানকে, আর ছিনিয়ে এনেছিলো লাল সবুজের পতাকা।
আজ আর সেই কথা বলবো না, আজ বলবো অন্য এক বিজয়ের কথা।
মাস্টারদা আমাদেরই
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে আমাদের বাঙ্গালীদের অনেক বড় ভূমিকা থাকলেও স্বীকৃতি যেটুকু আছে তার কৃতিত্ব পুরোটায় দাবী করে বর্তমান ভারত, তবুও ইতিহাস বলে বাঙ্গালীদের দাবিয়ে রাখা যায়নি কোন কালেই, কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি এই জাতি, কোন লোভ কিংবা ভয় দেখিয়ে বাঙ্গালী জাতির কোন আন্দোলনকে রুখে দিতে পারেনি কেউ কোন কালেই। শুরুটা করে দিয়েছিলেন মাস্টারদা সূর্যসেন। চট্টগ্রামের সেই সূর্যসন্তান। ১২ই জানুয়ারী ১৯৩৪ এর দিবাগত রাত ১২টা ০১ মিনিটেই মাস্টারদা কে এবং তার সঙ্গী তারেকেশ্বর দস্তিদারকে ফাঁসী দিয়েছিলো ততকালীন বৃটিশ সরকার।
হিন্দু ধর্মের রীতি অনুযায়ী তাদের লাশের সংস্কার করা হয়নি। ফাঁসীর পর লাশদুটো জেলখানা থেকে ট্রাকে করে ৪ নম্বর স্টীমার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর মৃতদেহ দুটোকে ব্রিটিশ ক্রুজার "The Renown" এ তুলে নিয়ে বুকে লোহার টুকরা বেঁধে বঙ্গোপসাগর আর ভারত মহাসাগরের সংলগ্ন একটা জায়গায় ফেলে দেয়া হয়।
ফিরে দেখা ৭১ - পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ (পর্ব - ১)
[প্রথমেই বলে নিচ্ছি এই সিরিজটা প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে অন্য একটি ব্লগে দিয়েছিলাম, তবে এবার আরো বেশী তথ্য হাতে নিয়ে শুরু করলাম, তাই বেশ কিছু পর্বে খুব বেশি মিল থাকলেও পুরো সিরিজটা হুবুহু মিলবে না। নতুন অনেক তথ্য যোগ করার আশা রাখছি।]
পাকিস্তান শাসনামল (১৯৪৭ - ১৯৭১)
পাকিস্তান মুলত এমন একটি দেশ ছিলো যার দুই খন্ডের মানুষে মানুষে শুধুমাত্র ধর্ম ছাড়া আর কোনই মিল ছিল না। হাজার মাইলের দুরত্ত ছারাও তাদের মধ্যে ছিল অনেক অমিল। সংস্কৃতি, ভাষা, আচার-আচরন এমনকি অর্থনৈতিক ব্যবধান।
পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের সাধীনতা আন্দোলনের সুত্রপাত মুলত ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই। পাকিস্থানিরা সেদিন আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে কিতে ছেয়েছিল যা এই অঞ্চলের মানুষ মেনে নেয়নি। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী পৃথিবীতে প্রথম কোন জাতি ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল।
[In 2001, UNESCO declared 21 February as International mother language day]
জামায়াত-শিবির কেন আমাদের স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি
বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে বিভিন্ন সামরিক সরকার এবং রাজনৈতিক দলের কাঁধে ভর করে বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একথা যেমন সত্যি, তেমনি সত্যি এই রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের স্বাধীনতা কখনো মনে প্রাণে স্বীকার করেনি এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সময়কালীন তাদের অবস্থানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনাতো দূরের কথা, বিন্দুমাত্র লজ্জ্বিত হতে তাদেরকে দেখা যায়নি। উলটো জনগনের সামনে নির্লজ্জ্বের মত বলতে দেখা গেছে, “দেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই।”
এছাড়া এই জামায়াতে ইসলামী আরেকটা মিথ্যা প্রপাগান্ডার আশ্রয় নেয় তা হলো, বঙ্গবন্ধু সকল যুদ্ধাপরাধীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে গেছেন।
স্বাধীনতা রক্ষার দ্বায়িত্ব কার?
স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। এটা ধ্রুব সত্য। তবে এই সত্যের অনেকগুলো তাৎপর্য রয়েছে। যেমন স্বাধীনতার মর্যাদা না দেয়া, বহিশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করা এবং সবচেয়ে ভয়ংকর এবং চ্যালেঞ্জিং হলো ভেতরের ছদ্মবেশী শত্রু চিহ্নিত করে তাদের কাছ থেকে সাবধান থাকা। আর এই ছদ্মবেশীদের চিহ্নিতকরনের জন্য মোটামুটি একটা উপযুক্ত স্থান হলো অন্তর্জাল তথা ইন্টারনেট।
আমাদের হতাশ করবেন না
বেশ কিছুদিন যাবত একটা ব্যাপার খুব মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, কিছুতেই বের করতে পারছিনা আর তা হলো, এই যে গত নির্বাচনে নতুন প্রজন্ম এভাবে রায় দিয়ে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় বসালো একটি যুগপোযোগী নির্বাচনী ইশতিহারের পুরষ্কার স্বরূপ, সেই আওয়ামীলীগ সরকার এই নতুন প্রজন্মকে শেষ পর্যন্ত হতাশ করবে না তো?
১
গত নির্বাচনে আমি দেশেই ছিলাম। নির্বাচনের পরপরই দেশ ছেড়েছি। ১/১১ এর পরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়টুকুতে বেশ শান্তিতে ছিল সাধারণ জনগন। এখানে সাধারণ জনগন বলতে বুঝিয়েছি আমাদের মত মধ্যবিত্তশ্রেণীর কথা। উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মানুষ বেশীরভাগ সময় শান্তিতেই থাকেন। কোন সরকারী অফিসে ঘুষ লাগতো না, থানায় যেয়ে কোন ব্যাপারে অভিযোগ করলে চমৎকার ব্যবহার পাওয়া যেত। তবে সেক্ষেত্রেও একটা ব্যাপার ছিল, যাদের কোন নিকট আত্মীয় অথবা পরিবারের কেউ সেনাবাহিনীতে ছিল তাদের জন্য ছিল সেটা স্বর্ণযুগ। যাই হোক আজ সেই কথা বলবো না।
অন্য রকম জয় - ২৯শে জুলাই ১৯১১
ভারত উপমহাদেশ ইংরেজদের শাসনাধীন (শোষনাধীন) ছিল ১৯০ বছর (১৮৫৮ - ১৯৪৭)।
ঐ সময়কালে দক্ষিণ এশিয়ার ব্রিটিশ শাসনাধীন অঞ্চলকে বৃটিশ ভারত বা ব্রিটিশ রাজ বলা হত। ১৮৭৬ সালে সমগ্র অঞ্চলটিকে সামগ্রিকভাবে ভারতীয় সাম্রাজ্য ঘোষণা করা হয়। ১৮৫৮ সালে এই অঞ্চলের শাসনভার রাণী ভিক্টীরিয়া নিজ হাতে শাসনভার তুলে নেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী হতে ব্রিটিশ রাজ শক্তির নিয়ন্ত্রনে।
ছবিঃ ব্রিটিশ রাজ এর তৎকালীন পতাকা
আমরা বন্ধুর সোস্যাল ক্যাচাল
আমরা বন্ধু, তাইলে আমাগো ফেইসবুকে সবাই এড থাকবো না কেন?
আশিক ভাইয়ের ঠিক অনেকটা এমন কথা দিয়েই হঠাৎ ফেইসবুকে আমরা বন্ধু গ্রুপটা প্রানবন্ত হয়ে উঠলো। আপনারা যারা এখনো সেই মজা থেকে নিজেদের বঞ্চিত রেখেছেন, তাহলে মিস করছেন অনেক কিছুই।
আড্ডার ডাক
ভূমিকা ছাড়াই শুরু করলাম, আমরা যারা দেশের বাহিরে আছি, তারা সব সময় আমরা বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও এই গ্রুপের আড্ডা/পিকনিক সব মিস করি। আপনারা যারা আমাদের ফেইসবুক গ্রুপে আছেন তারা হয়তো খেয়াল করেছেন, এইবার আমরা যারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তারা ঠিক করেছি আড্ডা দিব, তবে ভার্চুয়াল। এর জন্য আপাতত নাটকের রিহার্সালের মত একটা ট্রায়াল আড্ডা দিতে যাচ্ছি আমরা এবি এর কতিপয় বখাটে সদস্য।
আমরা বন্ধু স্মৃতিগাঁথা - ২
আজ বলবো সেদিনের সেই আড্ডা থেকে ফিরে আসার পরের অনুভুতির কথা। সেদিন আড্ডা থেকে ফিরে গ্রুপে একটি মেইল করেছিলাম। বোঝার সুবিধার্থে সেদিন যেই ইমেইলটি করেছিলাম তার অনুবাদ করার চেষ্টা করছি।
ইমেইলের বিষয়ঃ আজকের আড্ডা
তারিখঃ ৮ই এপ্রিল ২০০৬, শনিবার, সময়ঃ রাত ১০টা ১৮ মিনিট
ইমেইলের বিষয় বস্তুঃ
আমরা বন্ধু স্মৃতিগাঁথা - ১
অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম ব্লগে ফেরার কথা, সময় এবং সুযোগ এক হয়ে উঠছিলোনা কোন ভাবেই। এরপর যখন সময় হলো, কিভাবে ফেরা যায় তা ঠিক করতে করতে আরো বেশ কিছু দিন। শেষমেষ ঠিক করলাম, আমরা বন্ধু এই গ্রুপে কিভাবে আমার আগমন এবং এরপর এতগুলো বছর, এতগুলো মানুষকে চেনা, তাদের সাথে আড্ডা দেয়া, মাঝে মাঝে বিভিন্ন বড় ভাইদের বিরক্ত করা, এভাবেই পেরিয়ে গেল ৬টি বছর আমার এই গ্রুপে এসব ক্যাচাল নিয়েই ফিরি। বর্তমানে যা ব্লগ হিসেবে বেশ সুপরিচিত।