ইউজার লগইন

মেসবাহ য়াযাদ'এর ব্লগ

কোথাও কেউ নেই

একদিন আমাদের কুমিল্লার 'যন্ত্রণা' বাসাতে গিয়ে হাজির তিনি। সাথে- বোন, বোনের মেয়ে, নিজের দুই কন্যা নোভা আর বিপাশা, দুইজন প্রকাশক বন্ধু...। ঘন্টা খানেক ছিলেন। তারপর আবার ঢাকায়। সেই প্রথম তাঁর সাথে সরাসরি দেখা। সেটা মনে হয় ৯২ বা ৯৩ সালের কথা। এরপর তাঁর সাথে দেখা হয় আরো কয়েকবার। ধীরে ধীরে মানুষটাকে ভালো লাগতে থাকে। সবসময় নিজেই আসরের মধ্যমনী। সারাক্ষণ কথা চালিয়ে যেতে পারেন। তাঁর 'সেন্স অব হিউমার' এত ভালো যে, কাউকে কখনো বিব্রত হতে হয়নি তাঁর কারনে। রসিকতা কাকে বলে, কত প্রকার- সেটা যারা তাঁর সাথে মেশেনি তারা জানেন না।

এলেবেলে সাতকাহন

এক
রোদ্দুর। আমার বড় ছেলে। এইতো সেদিন ওর এই পৃথিবীতে আসা। এক রাতের মধ্যে তার মা'কে ৬ ব্যাগ রক্ত যোগাড় করে দেয়া। পৃথিবীতে এসেই জীবনের প্রথম ২৪ ঘন্টা ও ইনকিউভিটরে কাটালো। সেই ছেলেটা দেখতে দেখতে বড় হয়ে গেলো। ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। ৬ ক্লাসে পড়ে। গবর্ণমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলে। আজ তার ১২ বছর শেষ হলো। বেঁচে থাক বাবা। মানুষ হ...

দুই
কাল অনেকদিন পরে এক বন্ধুর সাথে দেখা হল। আমার বিগত এক বছরের কাহিনী জানতে চাইলো। বললাম। ... সব শুনে শুভাকাঙ্খী বন্ধুটা বললো, জীবনটা (অর্থনৈতিক) আবার গোড়া থেকে শুরু করেন...

তিন
গতকাল ছিলো ছোট বোন সুলতানা শিপলুর জন্মদিন। কেমন করে ছোট এই মেয়েটি 'মহিলা' হয়ে গেল। এখন তার ২ কন্যা। অন্যতমা আর বর্ণমালা। দুজনেই স্কুলে পড়ে। সেদিনের সে পুঁচকি মেয়েটা এখন পুরোপুরি গৃহিনী। সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে। কিছুই করা হয়নি। দেখা হয়নি কিছুই। হায়রে, জীবন এত ছোট কেনো ?

চার
২ বছর ৪ মাস বয়সি 'সমুদ্দুর' রাতের বেলা তার দাদা 'রোদ্দুর'কে যেয়ে বললো- "হেবি বাদদে দাদা..."। রোদ্দুরের জন্য একটা কালো আর হলুদ মিশেলের হাত ঘড়ি কিনলাম কাল। সেটা সমুদ্দুর গিয়ে তার দাদাকে দিলো...

পাঁচ

গত পরশু রাতের ঘটনা

মোটর সাইকেল চালানো আমার দীর্ঘদিনে অভ্যাস। সেই ছোট বেলায় বাবা যখন দুপুরে বাসায় খেতে আসতেন, তখন তার হোন্ডা ৫০ সিসি চা-চামুচ দিয়ে স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে পড়তাম কলোনী থেকে। সে সাইকেলের কোনো গিয়ার ছিলো না। ক্লাস ছিলো না। স্টার্ট দিয়ে পেছনে গিয়ার দিলেই হতো। তারপর সামনে ২ টা গিয়ার... ব্যস। সেটা চলতে শুরু করতো। বাবা খেয়ে আবার অফিসে যাবার আগেই আবার ফিরে আসতাম। তখন ৭/৮ ক্লাসে পড়ি আমি।

পুলিশদের শাস্তি 'ক্লোজ' বা 'সাময়িক বরখাস্ত' বিষয়টা আসলে কী ?

আমাদের দেশের পুলিশেরা দুটো কাজ খুব ভালো করতে পারে। একটা হচ্ছে: বিনা উস্কানীতেও বিরোধী দলের কর্মীদের/ নেতাদের উপর বেধড়ক লাঠিপেটা। আর অন্যটি হচ্ছে: সাংবাদিকদের পেটানো। অতীতে আমরা অবাক হয়ে দেখেছি- একজন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে কী নির্দয় ভাবে পুলিশ পিটিয়েছে। পুশিদের মার থেকে রেহাই পাননি- সাংসদ এবং নাট্যব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নুর। পুলিশ পিটাতে পিটাতে মতিয়া চৌধুরীর মত নেতাকে রাস্তায় শুইয়ে ফেলেছে। তখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায়। তখনকার পুলিশ ছিলো পিএনপি পুলিশ।

আজ আমার মনটা ভীষন ভালো

মুসা ইব্রাহীম। আমাদের বন্ধু। সেই অনেক কাল আগে থেকে ওকে চিনি। যখন মুসা ছাত্র ছিলো। সে সময় থেকে প্রথম আলোতে লেখালেখি করতো। আরেকটি মেয়েকেও চিনি। রিমি যার নাম। ওর সার্টিফিকেট নামটা খুব বিটকেলে টাইপের। উম্মে সরাবন তহুরা। এই নিয়ে আমরা ওকে ক্ষেপাতাম। ডাকনাম রিমি। রিমিও একদিন লেখালেখি শুরু করলো প্রথম আলোতে। তারপর বুড়িগঙ্গার আশে পাশে কত দখল হলো। মুসা আর রিমির প্রেম হলো। একদিন ওদের বিয়েও হলো। ঠাকুরগাঁয়ের মুসাদের বাড়িতে আমরা দল বেঁধে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেই মুসা একদিন খুব বিখ্যাত হয়ে গেলো। বাংলাদেশের প্রথম মানুষ হিসাবে এভারেস্ট জয় করলো। সেটা ২০১০ সালের ২৩ মে।

' আমার ফেরার উপায় নেই '

শিবাজী ভদ্রলোকের গান অসম্ভব ভালো লাগে। সময় পেলেই তার গান শুনতাম আমি আর ছোট বোনটা। বাসায় আমার একটা সুন্দর ছোট টেপ রেকর্ডার ছিলো। আর ছিলো রাজ্যের ক্যাসেট। ক্যাসেট কেনার একটা নেশা ছিলো আমার। সপ্তাহে ৩-৪ টা ক্যাসেট অবশ্যই কিনতাম। পাশাপাশি সনি বা টিডিকে ক্যাসেট ভরে পছন্দের গান রেকর্ড করে অনতাম। আমাদের বাসায় নিয়ত ছোটবোনের কলেজ পড়ুয়া বান্ধবীরা আসতো। সারাদিন বাসায় থেকে আড্ডা মেরে হাড়ির সব খাবার শেষ করে ওরা হলে ফিরে যেত। যাবার সময় নিজের মনে করে ২/১ টা ক্যাসেট নিয়ে যেত। সে ক্যাসেট আর কোনোদিন ফিরিয়ে দিতো না।

আমার মা

মাকে বুঝতে শুরু করতে না করতেই একদিন মা নাই হয়ে গেলেন। মা ছিলেন আমাদের পরিবারের সব মুশকিল আসানের নাম। বাবার কাছে আমাদের ছয় ভাইবোনের কোনো আব্দার বা আল্লাদ ছিলোনা। সব মায়ের কাছে। মা কী করে জানি সামাল দিতেন। বাবা সরকারি চাকরীজীবি। সামান্য আয়ের মানুষ। মাস পহেলা তার আয়ের বেশিরভাগ তুলে দিতেন মায়ের হাতে। মা সে টাকায় সারা মাস জোড়া তালি দিয়ে চালিয়ে নিতেন। এর মধ্যে বিভিন্ন সামাজিকতা, আমাদের স্কুলের খরচ সবই ম্যানেজ করতেন মা। বছরে দুই ঈদেই শুধু নতুন জামা পেতাম আমরা। ছোট ভাই বোন তিনটা তখনো বেশ ছোট। বাকী আমরা তিনজন মোটামুটি বড়। অতশত না বুঝলেও এটা বুঝতাম- বাবা-মার সামর্থ খুব সামান্য।

পুরণ হওয়া আর না হওয়া শখেরা

ছোট বেলায় খুব মনে হতো, উকিল হব। যুক্তি তর্ক দিয়ে ফাটিয়ে দেবো। সব মামলাতেই আমি জিতবো। প্রতিদিন পকেট ভরে টাকা কামাই করবো। এরপর একটু বড় হবার পর মনে হলো- দুর, কিসের ওকালতি ! আমি পুলিশ হব। গাড়ি থামাবো। চোর বাটপার ধরবো। মানুষরে ভয় দেখাবো। মেলা টাকা কামাই হবে। আসলে সেসময় টাকাটাই আমার কাছে মূখ্য ছিলো। অন্য সব কিছু গৌণ।

আস্তে আস্তে বুঝে গেলাম, জীবনে টাকাটাই সব নয়। স্বাধীনতাটাই হচ্ছে আসল কথা। একটা বাউন্ডুলে ব্যাপার-স্যাপার না থাকলে কিসের কী ? নিজের একটা মোটর সাইকেল থাকবে। সারাদিন সেটায় চড়ে ঘুরে বেড়াবো দেশের এ মাথা থেকে সে মাথা। সে আশা আমার পরবর্তীতে পূরণ হয়েছে। মোটর সাইকেলে না হলেও সারা দেশের কানাচে কানাচে ঘুরে বেড়ানোর দুর্লভ সুযোগ হয়েছে।

২ বছর ২ মাস ২ দিন

সমুদ্দুর

সেই দিনের পিচ্ছি ছেলেটার আজ ২ বছর ২ মাস ২ দিন পূর্ণ হল।
ও এখন টুক-টাক কথা বলে।
সকালে আমি অফিসে যাবার সময় আমার সাথে বেরুনোর জন্য কান্না জুড়ে দেয়।
অনেক কষ্টে ওকে রেখে বেরুতে হয়। ঘুষ দিতে হয় একটা 'মান্নাম'।
দুপুরে মাঝে-মধ্যে বাসায় খেতে যাই। আমাকে পেলে রাজ্যের অভিযোগ করবে সে।
যার অনেক কথাই বুঝিনা। আবার বেরুবার সময় যথারীতি কান্না। আমার সাথে বেরুনোর জন্য। আবার 'মান্নাম' দিয়ে রক্ষা।
রাতে বাসায় ফিরলেই নিজে জুতো পরে নেবে। আমার হাত ধরে বেরুনোর জন্য চিৎকার শুরু করবে। অগত্যা বাইরে যেতে হয় তাকে নিয়ে।
'বাক্কাফ' বা 'আগাগ' কিনে দিতে হয়।

বুঝিনা

বুঝিনা আমি। কেউ কি আছেন, যিনি আমারে বুঝাইয়া দিবেন ?


হাসান রায়হান সাহেব বহুতদিন ধৈরা কোনো পোস্ট দেয়না ক্যান ?


সাঈদ ক্যান বিয়া করেনা ?


জয়িতা এত দুঃখ দুঃখ করে ক্যান ?


মীর ক্যান দেখা দেয়না ?


জেবীন ক্যান বৈদেশ গেছে ?


জেবীনের বান্ধবী ডাক্তার ফারজানা আপার বিয়া হৈবো কবে ?


মাসুম ভাই কবে টক শোতে যাওন কমাইয়া আমগোরে সুযোগ দিবো ?


বিমার বৌ মিথিলা কবে অসুস্থ হবে (ইয়ে, মানে-- এইটা অন্যরকম অসুস্থ Wink ) ?


রাসেল আশরাফ কবে বাড়িত আইবো, কবে আমরা তার বিয়ার দাওয়াত খামু ?


জোনাক কি তার বিয়াতে আমগো দাওয়াত দিবো ?

আইজকা আর কুনু প্রশ্ন করুম না। আরো অনেক প্রশ্ন করনের আছে। এইগুলির ঠিক ঠিক জবাবা পাইলে আবার পরের কিস্তি প্রশ্ন করুম

'আ-মরি বাংলা ভাষা'

আমরা বলি মধু। ইংরেজিতে বলে হানি। আর পানিকে হানি বলে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায়। পানকে বলে হান। পাগলকে হাগল। নোয়াখালীর মানুষদের নিয়ে মজার একটা জোক চালু আছে বাজারে। অন্যজেলার এক ছেলে তার নোয়াখালীর বন্ধুকে একদিন বললো-
দোস্ত, তোরা নাকি 'প' কে 'হ' বলিস সবসময় ? সত্যি নাকি ?
কোন হাগলে কয়... ঝটপট নোয়াখালীর বন্ধুর উত্তর।
নোয়াখালীতে আরো কিছু শব্দ আছে। যেমন, রান্নাঘরকে বলে 'রসুইঘর'। তরকারীর ঝোলকে বলে 'সুরুয়া'। দুষ্টু প্রকৃতির বাচ্চাদের বলে 'খন্নাশ' (জেবীন আরো ভালো বলতে পারবে)।

ঘোরাঘুরি

বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ঘোরা মানুষ আমি। স্কুল জীবন থেকেই আমার সারাদেশে ঘোরাঘুরি শুরু। কখনো এমনিতেই ঘুরতে যাওয়া। কখনো বাবার চাকরীর সুবাদে থাকা। আমার নিজের চাকরীর কারনেও অনেক জেলায় ঘুরেছি। আবার প্রথম আলোর সাথে দীর্ঘদিন জড়িত থাকার কারনেও দেশের অনেক জেলায় ঘুরতে পেরেছি। বিভিন্ন জেলায় ঘুরতে যেয়ে বিভিন্ন রকমের মানুষের সাথে মেশার এক অন্য রকম সুযোগ পেয়েছি আমি। কোথাও যেয়ে মনটা ভালো হয়ে গেছে। এত সুন্দর নিরিবলি ছিমছাম শহর। আবার কোথাও যেয়ে মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সেই সব আজ কেবলই স্মৃতি। সুখের স্মৃতিই বেশি।

হাস্যময়ী মেয়েটা

মেয়েটারে আমি অনেক লাইক করি। আমি যখন আরিফ জেবতিকের কল্যাণে সামুতে ব্লগিং শুরু করি- তখন তার সাথে আমার পরিচয়। সেটা সরাসরি নয়। নেটে মানে ব্লগে। আমার লেখায় মাঝে- সাজে সে এসে কমেন্টস দিয়ে যেত। সে বা তারা তখন হিট ব্লগার। আমি নতুন, নাদান মানুষ। ব্লগিং বুঝার চেষ্টা করতেছি। সেসময় তার চমৎকার একটা প্রো-পিক ছিল। মেয়েটা বরাবরই লিখতো কম। কিন্তু প্রচুর কমেন্ট করতো। তার প্রায় সব লেখাতেই একটা দুঃখ দুঃখ ভাব থাকতো। তবে তাকে দেখলে সেটা বুঝা যেতো না একদম। সারাক্ষণ হাসতে থাকা মেয়েটা...।

আমগো রনি ফাস্ট হৈছে... কী আনন্দ !

শরীরটা শুক্রবার থেকে খারাপ। জুম্মার নামাজের অজু করতে গিয়া কোমরে টান পড়ছে। তারপর থেকে আর সোজা হৈয়া দাঁড়াইতে পারতেছিনা। চিন চিন করে ব্যথা করে। সটান শুয়ে রইলাম পুরাদিন। শনিবার কষ্ট কৈরা অফিসে আইলাম। দাঁড়াইতে পারিনা। বসতেও পারিনা। বস আমার কষ্ট দেইখা কৈলেন- বাসায় গিয়া রেস্ট নিতে। বাসায় আইসা পড়লাম। রেস্ট আর নেয়া হয়না। ছোট পোলাটায় আমারে পাইয়া খালি গায়ে গড়ায়। আমি ব্যথায় চিৎকার দিয়া উঠি। আমার চিৎকারে পোলা ভয় পায়। কান্দে। এইভাবে শনিবার গেল। রবিবারে সকালে আর বিছানা ছাড়তে পারতেছিনা। অফিসে যাই নাই...। হিতে বিপরীত হৈলো। ছোট পোলার লাফালাফি বাড়লো। দম খিচে পড়ে থাকি। উহ আহ ও করতে পারিনা। পোলায় ভয় পায়...। কাঁহাতক আর শুয়ে থাকা যায় ?

৩ পিস বোয়াল মাছ এবং নতুন ইতিহাস

আমার নতুন অফিসের একটা কাজ চলছে সিটি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ে। ৫/৬ দিন আগে গুলশানের সে কার্যালয়ে যাই। পরিচয় হয় ব্যাংকের পিআরও ইয়াহিয়া ভাইয়ের সাথে। ভদ্রলোককে দেখে মনে পড়লো, তাকে আমি আগে থেকেই চিনতাম। যখন সিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ছিল দিলকুশায়। আমার এক বন্ধু কাজ করত সে অফিসে। সেই সুবাদে তার সাথে পরিচয়। সিটি ব্যাংকের সাথে আমাদের অফিসের কিছু কাজ হচ্ছে। এমডি/চেয়ারম্যানের ফ্লোরে কিছু ইনটেরিয়রের কাজ করছি আমরা। তার অংশ হিসাবে বেশ কিছু ছবি লাগানো হচ্ছে সেখানে। আর সেকারনেই সেই অফিসে যাওয়া আমার।